জার্মানির বাভারিয়ার একটি চিড়িয়াখানায় এক মস্ত বন্য শুয়োরের নাম ছিল পুটিন। ব্যাপটিসমের মাধ্যমে তার নাম বদলে রাখা হলো এবারহফার।
বিজ্ঞাপন
বাভারিয়ার ওই চিড়িয়াখানা যথেষ্ট জনপ্রিয়। বছরখানেক আগে সেখানে এসে পৌঁছায় বিশাল আকারের একটি বন্য শুয়োর। শুয়োরটির ওজন ২০০ কিলোগ্রামেরও বেশি। সাধারণত জার্মানিতে এত বড় বন্য শুয়োর পাওয়া যায় না। পার্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই শুয়োরটি রাশিয়ার ব্রিড। সে জন্যই তার ওজন অত বেশি। সাধারণ বন্য শুয়োরের চেয়ে ওই শুয়োরটি অনেক বেশি হিংস্র।
চিড়িয়াখানায় জন্তু-জানোয়ারদের মাপজোক
হামবুর্গ শহরের চিড়িয়াখানায় বাৎসরিক পশু গণনা শুরু হয়েছে৷ বাসিন্দাদের সংখ্যা গোনা হচ্ছে, সঙ্গে তাদের মাপ ও ওজনও নথিভুক্ত করা হচ্ছে৷ সদ্য জন্ম নেওয়া সিন্ধুঘোটক শিশুর প্রথমবার এই অভিজ্ঞতা হচ্ছে৷
ছবি: Lutz Schnier
বয়স ছোট, আকার নয়
থর নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে৷ সদ্যোজাত সিন্ধুঘোটকের এখনো এক বছর বয়স হয়নি৷ কিন্তু এখনই তার ওজন প্রায় ২১৮ কিলো৷ গুটিয়ে না থেকে শরীর টান-টান করলে প্রায় ১ মিটার ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে সে৷
ছবি: Lutz Schnier
মাছ পেলেই খুশি
থর-এর মা ডায়নার বয়স ১৮৷ শরীর প্রায় ৩ মিটার লম্বা৷ তবে তার মাপ নেওয়া সহজ নয়৷ সুস্বাদু মাছ খাইয়ে প্রথমে তার মন জয় করে খেলাচ্ছলে সেই কাজ করতে হয়েছে৷ সেইসঙ্গে জানা গেছে তার ওজনও – ৯৮০ কিলো!
ছবি: Lutz Schnier
বালতির মধ্যে একা কেভিন
গণনার সময় ছোট প্রাণীদের মোটেই ভোলা হয় না৷ মাত্র এক মাস বয়সি উত্তর অ্যামেরিকার এই শজারুর নাম কেভিন৷ দেখতে ছোট্ট খরগোসের মতো৷ তবে স্বভাবে বেজায় কুঁড়ে৷ সারাদিন গাছের ডালে শুয়ে ঘুমাতে ভালবাসে সে৷ ওজন মাপার সময়ও তাকে ঘুম থেকে তুলতে হয়েছিল৷
ছবি: Lutz Schnier
খাড়া কাঁটা, ভীষণ ক্লান্ত
বিশেষ রকমের দস্তানা পরে কেভিনকে ওজনযন্ত্রে বসানো হয়৷ খুব সাবধানে সেই কাজ করতে হয়, কারণ তার কাঁটা একেবারে সুচের মতো ধারালো৷ দেখা গেল, ওজন তার ১,২৮০ গ্রাম৷ কিন্তু এত কাণ্ডের দরকার ছিল কি? অবশ্যই – কারণ যে কোনো কোম্পানির মতো চিড়িয়াখানায়ও যে অ্যাকাউন্টস রাখতে হয়!
ছবি: Lutz Schnier
এখানে আরও একটা হরিণ!
গণনায় জানা গেল, চিড়িয়াখানায় ২৬টি ভিয়েতনামি সিকা হরিণ রয়েছে৷ গত বছরের গণনার পর অনেক প্রাণীর জন্ম-মৃত্যু ঘটেছে৷ অথবা নতুন অতিথি এসেছে৷ কিছু প্রাণী আবার অন্য চিড়িয়াখানায় চলে গেছে৷ এই মুহূর্তে হামবুর্গ চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা ১,৮৫৯৷
ছবি: Götz Berlik
খাঁচার মধ্যে জীবন
চিড়িয়াখানার ২৬টি ভিয়েতনামি সিকা হরিণ গ্রীষ্মকালে তাদের সাদা ছাপ ফুটিয়ে তোলে৷ স্বদেশে তারা বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে৷ অন্য অনেক চিড়িয়াখানার মতো হামবুর্গও তাদের রক্ষা করতে প্রজনন কর্মসূচি চালাচ্ছে৷ তাই তাদের বংশবৃদ্ধি ঘটলে সেটা বড় আনন্দের কারণ৷
ছবি: Lutz Schnier
শুধু দেখতেই বিপজ্জনক
২০১৩ সালেই এই নর্দার্ন কেমেন আইল্যান্ড লিজার্ড-এর মাপ নেওয়া হয়েছিল৷ এই প্রজাতির গিরগিটি ১ মিটার ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে৷ তবে এই প্রাণীটিকে দিব্যি হাতের উপর রাখা চলে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই গিরগিটি দেখতে বিপজ্জনক হলেও বাস্তবে তারা বেশ শান্ত৷ তারা শামুক খেতে বড্ড ভালোবাসে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Heimken
রাজি করানো কঠিন
সবচেয়ে বড় প্রাণীদেরও মাপজোক থেকে বাদ দেওয়া হয় না৷ এবার এশিয়ার এই হাতি পরিবারের পালা৷ বেশি কসরত ছাড়াই ২০১৩ সালে ‘আসাম’ নামের শাবকটির উচ্চতা মাপা সম্ভব হয়েছিল৷ তখন তার উচ্চতা ছিল দেড় মিটার৷ তবে ব্যাপারটা তার পছন্দ হয় নি৷ অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাকে রাজি করাতে হয়েছিল৷
ছবি: picture alliance/rtn
আরে, মুখের মধ্যে কী!
ছোট্ট থর-এর কারণে এ বছর সিন্ধুঘোটকের মাপজোকের ঘটনা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে৷ এই চিড়িয়াখানায় আগামী বছর বাসিন্দাদের সংখ্যা বাড়বে, এমনটাই কর্মীদের আশা৷ যেমন বাঘেদের ঘরে নতুন অতিথি আসার কথা৷ হামবুর্গের হাগেনবেক চিড়িয়াখানা সম্পর্কে আরও জানতে উপরের ডানদিকের লিংকে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture alliance/rtn
9 ছবি1 | 9
রাশিয়ার ব্রিড বলেই শুয়োরটির নাম পুটিন রাখা হয়েছিল বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর। বহু ইউক্রেনীয় জার্মানিতে আশ্রয় নিতে চলে আসেন। বস্তুত, তাদের জন্য বাভারিয়ার ওই পার্কটি টিকিট ফ্রি করে দিয়েছে। কিন্তু চিড়িয়াখানাতে গিয়ে ইউক্রেনের মানুষকে পুটিনকে দেখতে হবে, এটা চাইছিলেন না কর্তৃপক্ষ। সে জন্যই রাতারাতি নাম বদলের কথা মাথায় আসে।
বন্য শুয়োরের নাম পুটিন বদলে কী রাখা যেতে পারে, তা নিয়ে একটি গণভোটের আয়োজন করা হয়। সেখানে বহু মানুষ শুয়োরটির নাম জেলেনস্কি রাখার প্রস্তাব দেন। এছাড়াও বেশ কিছু রাজনৈতিক নাম সামনে আসে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক নাম বাদ দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। সে কারণে একটি জনপ্রিয় গল্পের পুলিশ অফিসার এবারহফারের নামে শুয়োরটির নতুন নামকরণ করা হয়। রীতিমতো ব্যাপটিসমের পদ্ধতি মেনে এ কাজ করা হয়।
কর্তৃপক্ষের দাবি, শুয়োরের নাম বদলের পর তার সামনে ভিড় আগের চেয়ে বেড়েছে।