মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনপন্থিরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাদের তুলতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন মনে করেন, ''গণতন্ত্রে বিরোধিতা থাকবে। কিন্তু বিরোধিতা মানে সহিংসতা নয়। বিরোধিতা যেন বিশৃঙ্খলার দিকে না যায়।''
বাইডেন জানিয়েছেন, ''আমরা স্বৈরাচারী দেশ নয়,যেখানে আমরা যাবতীয় বিরোধকে চুপ করিয়ে দেব। আমরা এমন দেশ নয়, যেখানে আইনের শাসন চলে না। আমরা সভ্য দেশ, যেখানে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।''
বাইডেন এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ''অ্যামেরিকায় ইহুদিবিদ্বেষের কোনো জায়গা নেই। ইহুদি পড়ুয়াদের ভয় দেখানো যাবে না, তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি দেয়া যাবে না।''
বাইডেন বলেছেন, ''কোনো হেট স্পিচ বরদাস্ত করা হবে না। ইহুদিবিদ্বেষ, ইসলামোফোবিয়া, আরব অ্যামেরিকান ও ফিলিস্তিনি অ্যামেোরিকানদের মধ্যে কোনো রকম অন্যায় সহ্য করা হবে না।''
বাইডেন এটাও জানিয়েছেন, ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়ে বিক্ষোভ বন্ধ করার দাবিও তিনি মানছেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি অভিযান, কয়েক ডজন গ্রেপ্তার
গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়৷ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ছবি: Julius Motal/AP Photo/picture alliance
কয়েক ডজন আটক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ কয়েক ডজন ফিলিস্তিন-সমর্থক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে৷ এদের কয়েকজন একটি একাডেমিক ভবন দখল করেছিলেন৷ অভিযান প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলেছে৷
ছবি: Julius Motal/AP Photo/picture alliance
পুলিশকে অনুরোধ
ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকার কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনুশে শফিক নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে দেওয়া এক চিঠিতে পুলিশকে অন্তত ১৭ মে পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকার অনুরোধ জানান৷ ১৫ মে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে৷
ছবি: Mariam Zuhaib/AP/picture alliance
বিক্ষোভের শুরু
গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরোধিতা করে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল৷ এটি পরে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে৷ ক্যাম্পাসগুলোয় তাঁবু খাটিয়ে বিক্ষোভ চলছে৷ নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে অবস্থিত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইভি লিগের অন্তর্গত একটি বিশ্ববিদ্যালয়৷
ছবি: Lokman Vural Elibol/Anadolu/picture alliance
একাডেমিক ভবন দখল
মঙ্গলবার ভোরে বিক্ষোভকারীরা হ্যামিল্টন হল নামে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবনের দখল নিয়েছিলেন৷ অভিযানের সময় পুলিশ সেখানে ঢুকে ভবনটি খালি করেছে৷ ভবনটি দখলে নেওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা ভবনে নাম রেখেছিলেন হিন্দস হল৷ গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিহত ছয় বছরের শিশু হিন্দ রজবের নামে এই নামকরণ বলে তারা জানিয়েছিল৷
ছবি: Alex Kent/Getty Images
শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার
তাঁবু সরিয়ে নিতে ও বিক্ষোভ বন্ধ করতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সোমবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিল৷ কিন্তু সেটি না মানায় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ সে কারণেই মঙ্গলবার ভোরে হ্যামিল্টন হল দখল করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: Ekaterina Venkina/DW
কয়েকশ গ্রেপ্তার
গত শতকের ৬০ ও ৭০ দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ হয়েছিল৷ এরপর আরও কয়েক দফায় বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা৷ তবে এবার গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা করে যে বিক্ষোভ হচ্ছে এবং যতদিন ধরে হচ্ছে তা ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভের পর সবচেয়ে বড়৷ এখন পর্যন্ত কয়েকশ শিক্ষার্থী ও অ্যাক্টিভিস্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ছবি: Elijah Nouvelage/AFP/Getty Images
6 ছবি1 | 6
ইসরায়েলের অভিযোগ
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ''অ্যামেরিকার বিশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এখন ঘৃণা ও ইহুদিবিদ্বেষে কলুষিত হয়ে গেছে। আমরা আতঙ্কের সঙ্গে দেখেছি, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণকে ন্যায্য মনে করা হয়েছে এবং তা উদযাপন করা হয়েছে।''
প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ''ইসরায়েলের মানুষ আপনাদের পাশে আছে, আপনাদের কথা শুনছে, আমরা উদ্বিগ্ন।''
প্রতিনিধি পাঠাবে হামাস
হামাস জানিয়েছে, তারা মিশরে শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে এবং সেখানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিনিধি পাঠাবে।
একটি বিবৃতিতে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ে বলেছেন, তিনি মিশরের গোয়েন্দা প্রধান আব্বাস কামালের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখানোর উপর জোর দিয়েছেন।
তবে হামাস নেতা জানাননি, কবে প্রতিনিধিদল মিশর যাবে। তিনি বলেছেন, আমাদের মানুষের দাবি মেনে নিলে এবং আগ্রাসন বন্ধ করলে যুদ্ধবিরতি সম্ভব।
গত শনিবার ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির শর্ত হামাসের হাতে পৌঁছেছে। তারা এখন সেই সব শর্ত খতিয়ে দেখছে।
হামাসকে জার্মানি, ইইউ, অ্যামেরিকার মতো বেশ কিছু দেশ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে।