1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শৃঙ্খলা-স্বস্তি ফেরানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ

সমীর কুমার দে ঢাকা
৭ আগস্ট ২০২৪

বর্তমানে দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চলছে সেখান থেকে শৃঙ্খলা ফেরানোই হবে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ৷ একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে হবে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে৷

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আন্দোলনকারীদের উল্লাস
বিশ্লেষকরা বলেন, নতুন যে সরকারটি গঠন হতে যাচ্ছে, সেই সরকারের প্রথম কাজ হবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS

বিশিষ্টজন ও শিক্ষাবিদরা এমন অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যেটা চেয়েছে সেটা মেনেই রাষ্ট্র কাঠামোতে সংস্কার করতে হবে৷ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই সেটা করতে হবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নতুন যে সরকারটি গঠন হতে যাচ্ছে, সেই সরকারের প্রথম কাজ হবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা৷ দেশে এখন যে হামলা, লুটতরাজ হচ্ছে, সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করা৷ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে৷ পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি যে কাজগুলো করতে হবে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী যে একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করেন, সেটা কমাতে হবে৷ আবার পার্লামেন্টে কোনো এমপি দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়৷ এটা তো বাকস্বাধীনতা হলো না৷ দলের কোনো সিদ্ধান্তে কোনো এমপি একমত নাও হতে পারেন, ফলে তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে৷ এমন অনেক কিছুই করতে হবে৷ যে কাজগুলো এই অন্তর্বর্তী সরকার হয়ত পারবে না, পরবর্তী সংসদে এগুলো করতে হবে৷''

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে: সিরাজুল

This browser does not support the audio element.

বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান৷ বুধবার বিকেলে সেনাসদরে বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি৷ সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘ড. ইউনূস আগামীকাল দেশে আসবেন৷ আমি তাকে বিমানবন্দরে রিসিভ করবো৷ আশা করি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) রাত ৮টায় অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হবে৷ এ সরকারে ১৫ জন সদস্য থাকতে পারেন৷'' পুলিশ সক্রিয় হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও মনে করেন তিনি৷

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দেশে এখন শৃঙ্খলা ফেরানোই প্রথম কাজ৷ মানুষকে আশ্বস্ত করতে হবে, দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হবে এবং গণতন্ত্র ফিরে আসবে৷ নতুন সরকারের প্রথম কাজ হবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে বসে তাদের কথা শুনতে হবে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সংস্কার করে মাঠে নামাতে হবে৷ এটা করতে হয়ত একটু কষ্ট হবে৷ এই বাহিনীর শীর্ষপদে পরিবর্তন আনতে হবে৷ এখন যে কাজটা বাচ্চারা করছে, সেটা তাদের করতে হবে৷ আমার বাসা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে, ফলে আমার বাসা বাচ্চারা পাহারা দিচ্ছে৷ মানুষের স্বস্তি নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এর সঙ্গে ট্যাগ করে দিতে হবে৷ বাচ্চারা যে কথাটা বলছে, রাষ্ট্র কাঠামো আগে সংস্কার করতে হবে৷ আমি তাদের সঙ্গে একমত৷''

মানুষের কথা শুনতে হবে: রিজওয়ানা

This browser does not support the audio element.

এদিকে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ফ্রান্স থেকে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা নতুন বিজয়ের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করবো৷ কোনো ভুলে যেন আমাদের এ বিজয় হাতছাড়া না হয়৷ আমি সাহসী ছাত্রদের অভিনন্দন জানাই, যারা আমাদের দ্বিতীয় বিজয় দিবস বাস্তবে রূপ দিতে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং অভিনন্দন জানাই দেশের আপামর জনসাধারণকে যারা ছাত্রদের এ আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন৷ আমি সবাইকে বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে এবং সব ধরনের সহিংসতা ও স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদ বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি৷ দলমত নির্বিশেষে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি৷ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দেশটি আমাদের রক্ষা করতে হবে৷''

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রথমেই কিন্তু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে৷ কারণ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন বেশ নাজুক৷ প্রথমেই তাদের মানুষের বাড়িতে হামলা, লুটপাট থামাতে হবে৷ এই কাজটা কিন্তু এখনও শুরু হয়নি৷ এরপর তারা নানা ধরনের উদ্যোগ নেবে৷ কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে, তারা একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন তাদের উপহার দিতে হবে৷ সেই নির্বাচন করতে তাদের যে ধরনের কাজ করা দরকার সেটা তাদের আগে করতে হবে৷ এরপর নানা ধরনের রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে সংস্কার আনা দরকার, সেই কাজগুলো করতে হবে৷''

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে৷ কিছু জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে৷ যেমন সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর৷ এগুলো তো শেখ হাসিনার কিছু না৷ এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ৷ বহু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সেখানে ছিল৷ এগুলো তচনছ হয়ে গেছে৷ ফলে যা গেছে তা তো গেছেই৷ এখন আর কিছু যেন নষ্ট না হয় সেদিকে নতুন সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে৷ এরপর তারা নানা ধরনের উদ্যোগ নেবেন সেটা ঠিক আছে৷ প্রথমেই মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে হবে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে পুনর্গঠন করে কাজে নামাতে হবে৷ তাদের কাজে না নামানো পর্যন্ত মানুষের মধ্যে কিন্তু স্বস্তি আসবে না৷''

‘দলীয় পরিচয় যেন মুখ্য না হয়’

03:00

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ