1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেক্সপিয়ার, গ্যোটে, রবীন্দ্রনাথ?

২৪ আগস্ট ২০১১

শেক্সপিয়ার, গ্যোটে, রবীন্দ্রনাথ, এই তিন মহাকবির নাম একত্রে উচ্চারণ করায় অস্বাভাবিক কিছু নেই, বলে মনে করেন সুকান্ত চৌধুরী৷ ইংরেজি সাহিত্যের এই পণ্ডিতের গবেষণা বাংলা সংস্কৃতি, সাহিত্য, ইতিহাসের ক্ষেত্রেও সমান বিস্তৃত৷

William Shakespeare, English poet and playwright, (c1850). Portrait of Shakespeare (1564-1616), widely regarded as the greatest writer of the English language. Taken from the book "Old England's Worthies", London, c1850.
শেক্সপিয়ার, গ্যোটের পাশেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্থান দেওয়ার পক্ষে সুকান্ত চৌধুরীছবি: picture-alliance / imagestate/HIP

অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী আপাতত তেমনই একটি কাজ করছেন রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি, পাঠ ও পাঠান্তর নিয়ে৷ বিশ্বসাহিত্যের আঙ্গিকে রবীন্দ্রনাথের স্থান কোথায়, এ' প্রশ্নের উত্তরে সুকান্ত চৌধুরী  ডয়চে ভেলে'কে বলেন: ‘‘যদি আমরা রবীন্দ্রসাহিত্যের ব্যাপকতা, তার গভীরতা, তার তাৎপর্য, এটা বিবেচনা করি, তাহলে তিনি যে শেক্সপিয়ার বা গ্যোটে বা দান্তে, এদের চেয়ে কোনো অংশে কম যান, এটা কিছুতেই বলা যাবে না৷ তাঁর এতোগুলি আঙ্গিকে - কাব্য, নাটক উপন্যাস, বিভিন্ন ধরনের - যাকে আমরা এক কথায় প্রবন্ধ বলি আর কি, ‘নন-ফিকশনাল প্রোজ' - এতে এতো রকম লিখেছেন, এতো বিষয়ে লিখেছেন এবং এতো গভীরভাবে লিখেছেন, যাতে সমগ্র মানবজাতির যে কতগুলি সাধারণ মানসিক ও সামাজিক অভিজ্ঞতা, এগুলি যতো গভীরভাবে, সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে, এটা তো আমরা শেক্সপিয়ারে যা পাচ্ছি, গ্যোটে'তে যা পাচ্ছি, তার তুলনীয় তো বটেই - তা ছাপিয়ে যাচ্ছে না, তা'ও বলা যায় না অনেক ক্ষেত্রে৷ কিন্তু এ' সবই তো আবদ্ধ থেকে যাচ্ছে একটা ভাষায়, যেটা যদিও জনসংখ্যার বিচারে পৃথিবীর একটা খুব বহুপ্রচলিত ভাষা, কিন্তু বিশ্ব সংস্কৃতিতে এই ভাষার স্থান কিন্তু এখনও একপ্রান্তে৷ এবং এ' পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের ক'টা আর ভালো অনুবাদ হয়েছে? ফলে একজন বিশ্বকবি বা বিশ্বসাহিত্যিক হতে গেলে বিশ্বময় যে প্রচার ও স্বীকৃতি আমরা আশা করি, সেটা তো রবীন্দ্রনাথ পাননি৷''

কুষ্টিয়ায় কবিগুরু রবিঠাকুরের স্মৃতিময় কমপ্লেক্সছবি: DW

তাঁর নিজের সর্বনতুন প্রকল্প রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি নিয়ে, ‘টেক্স্ট' নিয়ে৷ এখানে ঠিক কোন দিকে এবং কী ধরনের কাজ তিনি করছেন এবং করাচ্ছেন, সে'বিষয়ে সুকান্ত চৌধুরী জানালেন: ‘‘এটা সত্যিই একটা নতুন ধরনের কাজ আমরা করছি৷ কাজটা কিন্তু শুধু পাণ্ডুলিপি নিয়ে নয়৷ এটা হচ্ছে পাণ্ডুলিপি এবং ছাপা বই যা, মুদ্রিত পাঠ যেগুলো, রবীন্দ্রনাথের ‘টেক্স্ট', রবীন্দ্রনাথের পাঠ, এটা নিয়ে৷ এই কাজে আমার প্রধান সহযোগী হচ্ছেন আমার সহকর্মী অধ্যাপক শুভা চক্রবর্তী-দাশগুপ্ত৷ এবং আরো অনেক রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে আমরা পরামর্শ পাচ্ছি, বিশেষত শঙ্খ ঘোষ মহাশয় এবং স্বপন মজুমদার মহাশয়৷ বিশ্বভারতী এবং বিশ্বভারতী রবীন্দ্র ভবনের থেকে আমরা প্রচুর সহায়তা পাচ্ছি৷ না হলে কাজটা করা সম্ভব হতো না৷ এবং আমাদের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা প্রযুক্তিবিদ, বিশেষত কম্প্যুটার দিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের অনেক সাহায্য পাচ্ছি৷ কারণ কাজটা হচ্ছে, একটা খুব বড় ওয়েবসাইট তৈরি করা, যা'তে রবীন্দ্রনাথের এক একটা রচনার যে নানা রকম পাঠান্তর আছে, সেই সবগুলি তুলে ধরা হবে এবং পাশাপাশি মেলানোর একটা সুযোগ থাকবে৷''

ওয়েবসাইটের ইতিমধ্যেই নামকরণ করা হয়েছে কিনা, প্রশ্ন করলে সুকান্ত চৌধুরী জানালেন: ‘‘ঠিক হয়নি৷ পুরো প্রকল্পটার আবার একটা নাম দিয়েছি৷ এই প্রকল্পটার নাম হচ্ছে ‘বিচিত্রা'৷''

কবে নাগাদ এই ওয়েবসাইটটি ঠিকমতো কাজ শুরু করবে? সুকান্ত চৌধুরী বললেন: ‘‘আমাদের এই প্রকল্প অল্প কয়েক মাস হল শুরু হয়েছে, এই সার্ধশতবর্ষে৷ এর জন্যে ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক, তারা আমাদের যথেষ্ট অর্থসাহায্য করছেন৷ এই প্রকল্পটা শেষ হওয়ার কথা ২০১৩ সালের মার্চ মাসে৷ আমরা আশা করছি যে, সব কিছু যদি ঠিকঠাক চলে, তাহলে আগামী বছর, ২০১২-তেই কোনো সময় একটা টার্গেট ডেট আমরা ঠিক করেছি, ধরে রাখতে পারব কিনা জানি না,  কিন্তু সেটা হচ্ছে পঁচিশে বৈশাখ৷ অর্থাৎ ২০১২ সালের মে মাসের গোড়ার দিকে আমরা অন্তত কিছু রচনার পাঠান্তর দিয়ে এই ওয়েবসাইটটা চালু করে দিতে পারব৷ এখন প্রশ্ন, ওয়েবসাইটে থাকবে কি৷  থাকবে তাঁর প্রত্যেকটি পাণ্ডুলিপির প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার একটা চিত্র৷ মুদ্রিত যে গ্রন্থগুলি, তাদেরও প্রামাণ্য পাঠ যে সব সংস্করণে আছে - কতগুলি বিশেষ সময়ে দেখা যাচ্ছে যে মুদ্রিত পাঠও বদলাচ্ছে৷ যেখানে আমরা এই বদলগুলি দেখতে পাচ্ছি, এই সংস্করণগুলি, সেগুলিরও চিত্র, ‘ইমেজ ফাইল' সেখানে থাকবে৷ তার পাশাপাশি থাকবে ‘টেক্স্ট ফাইল'৷ এবং যেটা হয়তো সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক, আমরা একটা সফটওয়্যারের উদ্ভাবন করেছি, সেই সফটওয়্যারটার নাম ‘পাঠান্তর'৷ এই ‘পাঠান্তর' সফটওয়্যার, এই যে বিভিন্ন পাঠান্তরগুলি আছে, সেগুলি মিলিয়ে, তুলনা করে, তফাৎগুলি আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরে৷''

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ