হিলারি ক্লিন্টন যখন অ্যামেরিকার আগামী প্রেসিডেন্ট হবেন বলে প্রায় নিশ্চিত, তখনই হ্যালোউইনের ভূতের মতো উদয় হলো নতুন এক বিপত্তি৷ অন্যদিকে হতাশা ঝেড়ে গর্জে উঠছেন ট্রাম্প৷
বিজ্ঞাপন
একেই বলে ‘অক্টোবর সারপ্রাইজ'৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব নভেম্বর মাসে৷ তার ঠিক কয়েক সপ্তাহ আগে কোনো চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রার্থীদের ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে৷ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন যখন জনমত সমীক্ষায় রিপাবলিকান দলের প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে ছিলেন, তখনই অঘটন ঘটলো৷ ফলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ফারাক অত্যন্ত কমে গেছে৷
হিলারি ক্লিন্টন তাঁর ‘ই-মেল কেলেঙ্কারি'-র জের ধরে শুরু থেকেই কিছুটা কোণঠাসা ছিলেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ব্যক্তিগত ই-মেলের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় বিষয় চালাচালি করে তিনি দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছিলেন, এমন অভিযোগ তাঁকে চরম বিব্রত করেছিল৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো মারাত্মক গাফিলতি প্রমাণিত না হওয়ায় তিনি রেহাই পেয়েছিলেন৷ ভোটারদের কাছেও বিষয়টি গুরুত্ব হারাচ্ছিল৷ নির্বাচনের ঠিক আগে খোদ এফবিআই কর্তা জেমস কোমি জানালেন, ই-মেল কেলেঙ্কারি নিয়ে নতুন করে তদন্ত করতে হচ্ছে৷
মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সম্পর্কে মজার ও উদ্ভট তথ্য
জাপান সফরে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কোলে বমি করেছিলেন জর্জ বুশ!
ছবি: Imago/Agencia EFE
বমি করেছিলেন জর্জ বুশ
১৯৯২ সালে জাপান সফরের সময় অসুস্থ ছিলেন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ৷ ফলে রাতের খাবারের সময় যখন তাঁর সামনে জাপানি বিফ স্টেক নিয়ে আসা হয়েছিল তখন তিনি জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কোলে বমি করে দিয়েছিলেন৷ এই ঘটনার পর জাপানি ভাষায় ‘বুশু-সুরু’ নামে একটি বিষয় যুক্ত হয়েছে৷ এর মানে হচ্ছে ‘বুশের মতো কিছু করা’!
ছবি: AFP/Getty Images
আব্রাহাম লিংকন
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে একটি পানশালার যৌথ মালিক ছিলেন লিংকন৷ যদিও মদ্যপানের বিশেষ ভক্ত ছিলেন না তিনি৷ অবশ্য যার সঙ্গে তিনি পানশালা চালু করেছিলেন তিনি ছিলেন উলটো, অর্থাৎ একেবারে আসক্ত৷ এই ভিন্নতার কারণে ব্যবসাটি কখনও লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি৷ অবশেষে অংশীদারের মৃত্যুর পর পানশালাটি বন্ধ হয়ে যায়৷
ছবি: National Archives/Newsmakers
জেরার্ল্ড ফোর্ড
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মডেলিং করতেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮তম প্রেসিডেন্ট৷ ১৯৪২ সালে একবার ‘কসমোপলিটন’ ম্যাগাজিনের কভার মডেল হয়েছিলেন৷ অবশ্য খুব বেশিদিন এই পেশায় ছিলেন না ফোর্ড৷
ছবি: picture alliance/United Archives/WHA
জিমি কার্টার
তাঁকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইউএফও (অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু) প্রেসিডেন্ট৷ ১৯৬৯ সালে তিনি আকাশে ইউএফও দেখার কথা জানিয়েছিলেন৷ এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার সময় তিনি ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে ইউএফও দেখা নিয়ে যত তথ্য আছে, প্রেসিডেন্ট হলে, সেগুলো তিনি সাধারণ জনগণ ও বিজ্ঞানীদের জন্য উন্মুক্ত করবেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Betancur
কেলভিন কুলিজ
সকালে বিছানায় নাস্তা করার আগে তিনি নাকি মাথায় পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে নিতেন৷ এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে বিশ্বাস করতেন তিনি!
ছবি: picture-alliance/dpa
রোনাল্ড রেগান
একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি তালাকপ্রাপ্ত৷ অবশ্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার অনেক আগের কথা এটি৷ ১৯৪০ এর দশকে তিনি অভিনেত্রী জেন ওয়াইম্যানকে বিয়ে করেছিলেন৷ ১৯৪৮ সালে তাঁরা পৃথক হয়ে যান৷ এরপর ১৯৫২ সালে তিনি আরেক অভিনেত্রী ন্যান্সি ডেভিসকে বিয়ে করেন৷ জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি ন্যান্সির সঙ্গেই ছিলেন৷
ছবি: AFP/Getty Images/Carlos Schiebeck
ক্রীতদাসের বংশধর ওবামা?
দুই বছর ধরে গবেষণা শেষে ২০১২ সালে অ্যানসেস্ট্রি ডটকম জানায়, ওবামা সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রিকান দাস জন পাঞ্চ-এর ১১তম ‘গ্রেট-গ্র্যান্ডসান’৷ ১৬ শতকের শুরুতে দাস হিসেবে অ্যামেরিকায় গিয়েছিলেন পাঞ্চ৷ এরপর মালিকের কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি৷ এর শাস্তি হিসেবে তাঁকে আজীবন দাসত্ব করতে বাধ্য করা হয়৷ ফলে পাঞ্চই অ্যামেরিকার প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত আফ্রিকান ক্রীতদাস৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Monsivais
7 ছবি1 | 7
কিন্তু সেই তদন্তের কারণ বা ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নিয়ে তিনি এখনো মুখ খোলেননি৷ ক্লিন্টনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হুমা আবেদিন ও তাঁর বিচ্ছিন্ন স্বামী অ্যান্টনি ওয়াইনার-এর বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে নাকি এ বিষয়ে নতুন কিছু জানা গেছে৷ এফবিআই ক্লিন্টনের ই-মেল পরীক্ষা করতে শমন জোগাড় করেছে৷
তবে নির্বাচনের ঠিক আগে এফবিআই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করায় প্রবল ধাক্কা খেয়েছেন ক্লিন্টন৷ তিনি জেমস কোমি-র প্রবল সমালোচনাও করেছেন৷ এদিকে জয়ের সম্ভাবনা যখন তুঙ্গে, তখনই অনেক ভোটার তাঁর প্রতি আর সমর্থন দেখাতে পারছেন না৷ উল্লাস প্রতিপক্ষ শিবিরেও৷ পরাজয়ের আশঙ্কা কাটিয়ে ট্রাম্প নতুন উদ্যোমে প্রচার শুরু করেছেন৷ ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, ক্লিন্টন প্রেসিডেন্ট পদের যোগ্য নন৷
এমন অবস্থায় কি ট্রাম্প আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন? ভোটের দিন পর্যন্ত অনেক কিছু বদলে যেতে পারে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷ ট্রাম্প নিজেও একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জেরবার৷ শেষ মুহূর্তে নতুন কোনো কেলেঙ্কারি তাঁকে বিপাকে ফেলতে পারে৷ তাছাড়া তিনি নিজেই একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করে তিনি অনেক ভোটারের সমর্থন খুইয়েছেন৷