শোভন ও রাব্বানী থেকে শিক্ষা নিন
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯![Bangladesch Rezwanul Haque Chowdhury Shovon und Golam Rabbani](https://static.dw.com/image/50421277_800.webp)
ছাত্রলীগের নেতাদের অভিষেক, বাড়ন ও পরিণতি থেকে শিক্ষা নেয়া দরকার৷
ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে৷ আমরা জেনেছি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেছেন তারা৷ অন্যদিকে ঠিকাদারকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে খোদ উপাচার্যের বিরুদ্ধে৷ একজন ছাত্র এতটা সাহস কার কাছ থেকে পায়. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটা আপনার খতিয়ে দেখতে হবে৷ মনে রাখতে হবে এই দুইজন শুধু উপসর্গ মাত্র, আপনাকে রোগটি খুঁজে বের করতে হবে৷
আপনাকে জানতে হবে কোন কারণে বালিশের পর পর্দা কাণ্ড ঘটে বা আরো অনেক ঘটনা কেন পর্দার আড়ালে রয়ে যায়, কেন সরকারি কর্মকর্তার বাসায় ৮০ লাখ টাকা পাওয়া যায়, রাস্তা, সেতু করতে সবচেয়ে বেশি টাকা লাগে আবার তার কোনো কোনোটি নিয়ম করে ভেঙে পড়ে, কেন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায়, কেন টাকা পাচার হয়, ঋণখেলাপিদের কেন শাস্তি হয় না, কেন এমপি মন্ত্রীদের অনেকের সম্পদের পরিমাণ প্রতিবছর রকেটের গতিতে বাড়ে৷
শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের ঠাঁই তার সরকারে বা প্রশাসনে হবে না৷ কিন্তু প্র্রশাসন তো বটেই, সমাজের সব স্তরে এখনো দুর্নীতির পঁচা গন্ধ রয়েই গেছে৷ যতই দলের সাধারণ সম্পাদক বালিশ-পর্দাকে ছ্যাঁচড়ামি বা সভাসদেরা জামাত-বিএনপির ষড়যন্ত্র বলুন না কেন৷
গণমাধ্যমে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর আপনার উদ্দেশে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি ঘোরাঘুরি করছে৷ সেখান থেকে কিছুটা উদ্ধৃত করা যাক, ‘‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অভিযোগ আপনার কাছে ভিন্নভাবে উত্থাপন করা হয়েছে৷ উপাচার্য ম্যামের স্বামী ও ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে কাজের ডিলিংস করে মোটা অঙ্কের কমিশন বাণিজ্য করেছেন৷ যার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদুল আজহার পূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেওয়া হয়৷ এ খবর জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শুরু হয় এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য ম্যাম আমাদের স্মরণ করেন৷ আমরা দেখা করে আমাদের অজ্ঞাতসারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি বিব্রতবোধ করেন৷ নেত্রী, ওই পরিস্থিতিতে আমরা কিছু কথা বলি, যা সমীচীন হয়নি৷ এজন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী৷''
আপনার কানে কি কোনো ঘণ্টা বাজছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আমার কিন্তু মনে হয়, এই সতর্কবাণী আর হালকাভাবে নেওয়া ঠিক হবে না৷
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এই সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক আপনার নিজের বাছাই করা৷ আপনি তাদের উপর ক্ষুব্ধ জানার পর সারাদেশের সবাই তাদের সম্পর্কে কী বলছেন, আপনি নিশ্চয়ই জেনেছেন৷ আপনার স্নেহের ছায়া সরে গেলে আরো অনেকের সম্পর্কেই এমন কথা শুনতে পারেন৷ শুধু আওয়ামী লীগের নয়, সারা দেশের সব মানুষের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সবাইকে নিরপেক্ষভাবে বিবেচনা করার শক্তি পান এবং শিক্ষালাভ করেন৷