1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা, ছাঁটাইয়ের ঘটনায় উদ্বেগ

সমীর কুমার দে ঢাকা
১ মার্চ ২০১৯

মজুরি নিয়ে আন্দোলনের জেরে প্রায় ছয় হাজার পোশাক শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷ চাকরি হারিয়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক৷ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রচারণা শুরু করেছে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠন৷

Bangladesch Industriepark Ashulia Frauen Arbeiterinnen
ছবি: picture-alliance/dpa

শ্রমিক সংগঠনের আন্তর্জাতিক জোট ‘ক্লিন ক্লথ ক্যাম্পেইন' গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লন্ডন, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, জেনেভা, বার্লিন, ব্রাসেলস, মাদ্রিদ ও দ্য হেগে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনের সামনে কর্মসূচি পালন করে৷ সেখানে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও ছাঁটাইয়ের ঘটনায় উদ্বেগ জানায় সংগঠনটি৷ এছাড়া অনলাইনে ‘উইস্ট্যান্ডউইথগার্মেন্টওয়ার্কার্স' হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও প্রচারণা হয়েছে৷

এদিকে, শ্রমিকদের আরেক আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ইন্ডাষ্ট্রিঅল গোবাল ইউনিয়ন' এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার ও ছাঁটাইয়ের ঘটনায় আমরা মর্মাহত৷ শ্রমিকদের মধ্যে যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটি বন্ধ করা উচিত৷''

‘ইন্ডাস্ট্রিঅল'-এর বাংলাদেশ শাখা ‘ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল' আইবিসি সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, ৯৯টি কারখানার ১১ হাজারের বেশি শ্রমিক ছাঁটাই ও বরখাস্ত হয়েছেন৷ অনেক নিরীহ শ্রমিকের পাশাপাশি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন৷

‘তাদের এই ক্যাম্পেইন অযৌক্তিক’

This browser does not support the audio element.

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনের জেরে ৫ হাজার ৮৪৫ পোশাক শ্রমিককে আসামি করে ২৮টি মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে গাজীপুরের কোনাবাড়ী ও গাছা, সাভার, আশুলিয়া ও টঙ্গী পূর্ব থানায় ২৭টি কারখানার করা মামলায় ৪ হাজার ৩৪৫ শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ৫১৫ শ্রমিকের নাম উলেখ আছে, বাকিরা অজ্ঞাতনামা৷ সাভার থানায় শিল্প পুলিশের করা এক মামলায় আসামি ১ হাজার ৫০০ অজ্ঞাত শ্রমিক৷

কী বলছে বিজিএমইএ?

পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের পোশাক খাতনিয়ে ষড়যন্ত্র আগাগোড়াই চলছে৷ তার মধ্য দিয়ে আমরা সামনে এগুনোর চেষ্টা করছি৷ এখন কারখানায় ভাঙচুর হয়েছে৷ এই ভাঙচুরে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থাতো নেবেই৷ আর চাকরি যাওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, আমরা আইন মেনে যদি কাউকে চাকরিচ্যুত করি তাহলে তো আপনি কিছু বলতে পারবেন না৷ আর আমি কারখানা চালাতে গেলে কাউকে বাদ দিলে কিন্তু পরেরদিনই অন্য কাউকে নিতে হবে৷ ফলে শ্রমিকদের বাদ দিয়ে মালিকদের কোনো লাভ নেই৷ দেখেন, ভাঙচুরের মামলায় যারা জেলে গিয়েছিল তাদের সবাই এখন জামিনে মুক্ত৷ তারপরও তাদের এই ক্যাম্পেইন অযৌক্তিক৷''

এই ধরনের প্রচারণা অব্যাহত থাকলে দেশের পোশাক খাতের ভাবমূর্তি সংকটে পড়বে বলে স্বীকার করেন বিজিএমইএর সভাপতি৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃত ঘটনা না জেনেই আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনগুলো আন্দোলন করছে৷ আমরা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে (আইএলও) বিস্তারিতভাবে পুরো ঘটনা জানিয়েছি৷''

‘মালিকেরা সুপরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও ছাঁটাই শুরু করেছেন’

This browser does not support the audio element.

শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য

‘বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটি'র নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যারা ক্লিন ক্লথ ক্যাম্পেইনকে ষড়যন্ত্র মনে করে তাদের বিষয়ে কিছুই বলার নেই৷ এই সংগঠন সারা বিশ্বে শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করে৷ আমাদের দেশে তো ইচ্ছে করলেই আমরা সব কথা বলতে পারি না৷ ফলে তাদের সহযোগিতা আমাদের নিতে হয়৷ তবে একটা বিষয় আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারি, মালিকেরা সুপরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা ওছাঁটাই শুরু করেছেন৷ মালিকেরা নিজেদের পেশিশক্তি দেখানো এবং তাঁরা যে সরকারের মধ্যে আছেন, সেটি দেখানোর জন্যই এমনটি করছেন৷ তবে এসব কাজ নেতিবাচক হয়েই শিল্পে ফিরে আসে৷''

 

‘আন্দোলন যৌক্তিক ছিল'

গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শ্রমিকদের আন্দোলন যে যৌক্তিক ছিল সেটা তো পরে প্রমাণিত হয়েছে৷ সরকার মজুরি কাঠামো সংস্কার করেছে৷ ফলে শ্রমিকরা অন্যায় দাবি নিয়ে আন্দোলন করেনি৷ তাহলে প্রশ্ন হলো তাদের কেন রাস্তায় নামতে হবে৷ এখন এই ধরনের মামলা-গ্রেফতার বাদ দিয়ে সরকারের উচিত হবে মামলাগুলো নিশর্তভাবে প্রত্যাহার করে নেয়া৷ এসব মামলায় গ্রেফতার করে শ্রমিকদের জেলে পাঠিয়ে ভালো ফল আসবে না৷ মামলা ও ছাঁটাইয়ের শিকার হওয়ায় শ্রমিকেরা আতঙ্কে আছেন৷ তাদের মধ্যে থেকে এই আতঙ্ক দূর করতে হবে, যাতে কাজের পরিবেশ ফিরে আসে৷''

‘শ্রমিকরা অন্যায় দাবি নিয়ে আন্দোলন করেনি’

This browser does not support the audio element.

 

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ