‘শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কথা না বললেও পারতেন বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট’
৫ জুন ২০২০
করোনা ভাইরাস সংকটে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কথা বলে বিতর্কের জন্ম দেওয়া বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক এখনই এ কথা না বললেও পারতেন বলে মনে করেন সালমান এফ রহমান৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে বাংলার ইউটিউব চ্যানেলের ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ আনুষ্ঠানে এসে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এ কথা বলেন৷
তিনি বলেন, ‘‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ মার্চ মাসেই যখন অর্ডার বাতিল হতে শুরু করে তখন আমরা বুঝতে পারি এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বেতন নিয়ে সমস্যা হবে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগে বেতনের সমস্যা সমাধান করতে চাইলেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এ খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেন৷’’
সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজে অত্যন্ত কম সুদে ঋণ পাওয়ার পরও পোশাক কারখানাগুলো সক্ষমতার অর্ধেক ব্যবহার করে কাজ চালাতে পারছে জানিয়ে বৃহস্পতিবার অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে রুবানা বলেছিলেন, ‘‘এটা একটা অনাকাঙ্খিত বাস্তবতা। কিন্তু এই মুহূর্তে কিচ্ছু করার নেই। কারণ, শতকরা ৫৫ ভাগ সক্ষমতায় কারখানাগুলো চললে আমাদের পক্ষে ছাঁটাই ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’’
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘‘যদিও বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট এ (শ্রমিক ছাঁটাইয়ের) কথাটা বলেছেন, কিন্তু আমি মনে করি কী পরিমাণ শ্রমিক ছাঁটাই হবে সেটা বলার সময় এখনো আসেনি৷ এখন ইউরোপ খুলে যাচ্ছে৷ অনেক অর্ডার ফেরত আসছে৷ লকডাউনের প্রভাব তো পড়বেই৷ কিন্তু কতটুকু পড়বে এটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না৷ উনি হয়তো মানসিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য এ কথা বলেছেন৷ তবে তিনি এ কথাটা না বললেও পারতেন৷’’
এ অনুষ্ঠানের আরেক আলোচক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা ঈদ উপলক্ষ্যে উনার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম৷ মূলত উনার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছি৷ উনি দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিরোধী দল হিসেবে আমাদের মানুষের কাছাকাছি থেকে মানুষকে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করতে বলেছেন৷’’
এ আলোচনায় পুঁজিবাজার, ব্যাংক ঋণের সুদ, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের সমন্বয়হীনতাসহ আরো নানা বিষয় উঠে আসে৷
এসএনএল/এসিবি
আধুনিক যুগের দাসত্ব
বিশ্বজুড়ে দাস প্রথা নিষিদ্ধ হয়েছে সেই কবে৷ কিন্তু প্রথা নিষিদ্ধ হলেও এখনো দাসত্ব বিলীন হয়নি৷ বিশ্বের চার কোটির বেশি মানুষ এখনো দাসত্বের জালে বন্দি৷
ছবি: Michael Hylton/Anti-Slavery International
অবৈধ শ্রমিক
উন্নত জীবনের আশায় মানবপাচারকারীদের হাতে নিজেকে তুলে দেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের বেশিরভাগকে দাসত্বের জীবন বেছে নিতে হচ্ছে৷ কাগজপত্র নেই, ভাষা জানা নেই, নিজের অধিকারে চেয়ে কোথায় অভিযোগ করবে সেটাও জানা নেই৷ ফলে বছরের পর বছর ধরে দাসত্বের জীবন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাদের৷ এক ইউরোপেই কৃষিক্ষেত্রে কত অবৈধ শ্রমিক আছে তার হিসাব কারো জানা নেই৷ নামমাত্র মজুরিতে তাঁরা উদয়-অস্ত পরিশ্রম করছেন৷
ছবি: Bharat Patel
অপহরণ, পাচার ও বিক্রি
জাতিসংঘের তথ্যানুসারে এখনও মানবপাচার বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং লাভজনক কারবারের একটি৷ পাচারের শিকার হওয়া পুরুষরা বেশিরভাগ সময় নির্মাণ শ্রমিক বা খনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়৷ নারীদের বেশিরভাগের জায়গা হয় পতিতালয়ে, কেউ কেউ হয় গৃহকর্মী৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Vatsyayana
শিশুরাও যখন দাসত্বের জালে
নিদারুণ অভাবে অনেক পরিবার তাদের শিশুদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়৷ ঘানার লেক ভল্টায় বিক্রি হয়ে যাওয়া এইসব শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে যেতে হয়৷ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাব অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে প্রায় এক কোটি শিশু এভাবে দাসের জীবন কাটাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Ridley
বালিকা বধূ
ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী বিশ্বে প্রতি পাঁচজনে একজন মেয়েশিশুর বয়স ১৮ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়৷ এ বয়সে বিয়ে করতে সবসময় বাধ্য করা হয়, বিষয়টা এমনও নয়৷ তবে অনেক ক্ষেত্রে লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে এসব মেয়েশিশুদের জোর করে বিয়ে দেয়া হয়৷ তারা অনেকে শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হন৷ সঙ্গে ঘরের কাজ তো করতেই হয়৷
ছবি: picture alliance/Tone Koene
বন্দি জীবন
বিশ্বজুড়ে মেয়েশিশুদের এখনো স্কুল ছেড়ে বাড়ির কাজ করতে হয়৷ কখনো পরিবারে বা কখনো অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে তাদের দিনে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করতে হয়৷ অনেকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়৷
ছবি: David Rose/Panos Pictures
ঋণের বোঝা
অতীতের মত দাস কেনা-বেচা এখন আর খুব একটা দেখা না গেলেও এশিয়া, গল্ফ আরব দেশ, আফ্রিকা ও লাতিন অ্যামেরিকার দেশগুলোতে ঋণের বোঝার নিচে চাপা পড়া মানুষরা দাস হতে বাধ্য হন৷ এমকি পরিবারের শিশুটিকেও দাস হিসেবে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়৷ বিশ্বে এমন দাসের সংখ্যা চার কোটির বেশি৷
ছবি: Anti-Slavery International
জন্মসূত্রে দাস
উত্তরপশ্চিম আফ্রিকার দেশ মৌরিতানিয়া ‘হারাতিন‘ সম্প্রদায়ে জন্মই যেন আজন্ম পাপ৷ পুরুষের পর পুরুষ ধরে এই সম্প্রদায়ের মানুষ দাস৷ যদিও সরকারিভাবে দেশটিতে দাস ব্যবসা নিষিদ্ধ৷ তারপরও সেখানে দাস কেনা-বেচা চলে৷ মৌরিতানিয়ায় ছয় লাখের বেশি পুরুষ, নারী ও শিশু দাস রয়েছে৷ যারা গৃহকর্ম এবং কৃষিকাজ করেন৷ যা দেশটির মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশ৷