1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রিংলার আকস্মিক সফর শুধুই ভ্যাকসিনের জন্য?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২০ আগস্ট ২০২০

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার হঠাৎ ঢাকা সফর অনেক কৌতুহল সৃষ্টি করলেও শেষ পর্যন্ত কী হলো তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে৷ 

ছবি: bdnews24.com

লাদাখ সীমান্তে ভারতের সাথে চীনের যুদ্ধ-পরিস্থিতি, ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ‘নেতিবাচক’ প্রচারণা, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ- এসব বিবেচনা করলে সফরটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল ভারতের জন্য৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ কী পেলো বা বাংলাদেশের জন্য ভারতের নতুন কোনো বার্তা আছে?
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে হর্ষবর্ধন শ্রিংলার বৃহস্পতিবারের বৈঠকটিই হলো সফরের উল্লেখযোগ্য বিষয়৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও তিনি দেখা করেছেন৷ সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সাথেও কথা বলেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব৷

এখানে যে বিষয়টি মূলত আলোচনায় উঠে আসছে তা হলো ভারত বাংলাদেশকে করোনার ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেবে৷ তবে এই ভ্যাকসিনটি ভারতের আবিস্কার নয়, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের কথাই তারা বলছে৷ ভারতে একটি প্রতিষ্ঠান এই ভ্যাকসিনের সঙ্গে যুক্ত৷ বাংলাদেশে এর ট্রায়ালের কথা হয়েছে৷ বাংলাদেশও সম্মতি দিয়েছে৷ যদিও চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল আটকে আছে৷

এর বাইরে এয়ার বাবল, সীমান্ত হত্যা, রোহিঙ্গা সমস্যা, করোনার সময় অর্থনেতিক ও চিকিৎসা সহযোগিতা, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা-এসব বিষয় নিয়েই দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে৷
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় ছিলেন না, ছিলেন তার গ্রামের বাড়ি সিলেটে৷ ফলে তার সাথে শ্রিংলার সাক্ষাৎ হয়নি৷ আর প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সাক্ষাতের ইস্যুগুলোও জানা যাচ্ছে না আপাতত৷

কোনো চুক্তি বা যৌথ বিবৃতি আমরা দেখিনি: সাবেক রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক

This browser does not support the audio element.

তবে বালাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলি দাশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রিংলার সাক্ষাতের পর এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এই বার্তা দিতেই শ্রিংলা ঢাকা সফর করছেন এবং উন্নয়নের পথে অংশীদার হতে ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিশেষ ও নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে৷ এজন্য এই মহামারি চলাকালীনও পররাষ্ট্রসচিব প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে এসেছেন৷’’

এদিকে বৃহস্পতিবার দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘‘করোনাকালের অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিষয়ে সম্পর্ক কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেটি নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছি৷ আমাদের সম্পর্কে যে অপ্রীতিকর বিষয়গুলো আছে, সেগুলো নিয়েও আলোচনা করেছি৷ সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা করেছি৷ আগামী মাসে আমরা চেষ্টা করবো বিজিবি ও বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক করার৷ এ বছর প্রথম সাত মাসে সীমান্ত হত্যার সংখ্যাটি বিভিন্ন সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে এবং এ বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি৷’’

তবে এই সফর আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করেছিলেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা৷ তারা মনে করেন, আসলে চীন ইস্যুতে ভারতে সঙ্গে একটি ‘আনইজি’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ সেটা দূর করতেই ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের হঠাৎ ঢাকায় আসা৷ বিশেষ করে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশের জন্য আরো কিছু চীনা সুবিধা ভারতকে ‘উদ্বিগ্ন’ করে তোলে৷ তবে এই সফরে সেই পরিস্থিতির অবসান হয়েছে কিনা তা বলা যাচ্ছে না৷ কিন্তু ভারত যে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে বলে মনে করেন কূটনীতিকরা৷ সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক মনে করেন, ‘‘ভারতের সাথে এখন প্রতিবেশীদের সম্পর্ক খারাপ৷ তারা নানা দিক দিয়ে চাপে আছে৷ তাই ভারত হয়তো সম্পর্কের উন্নয়ন চায়৷ কিন্তু এই সফরে কতটা অগ্রগতি হলো তা বোঝা যাচ্ছে না ৷ কারণ, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নরেন্দ্র মোদীর কী বার্তা তিনি নিয়ে এসেছেন তা তো এখনো স্পষ্ট নয়৷’’

এটার ভিতরে একটা রহস্য আছে: সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা থেকে শুরু করে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হওয়া- এসব মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে পরিষ্কার কোনো মেসেজ অন্তত আমরা পাইনি৷ দুই পররাষ্ট্র সচিব করোনা ভ্যাকসিনসহ আরো কিছু বিষয়ে যে কথা বলেছেন তা সৌজন্য কথাবার্তা বলেই আমার  মনে হয়েছে৷ কোনো চুক্তি বা যৌথ বিবৃতিও আমরা দেখিনি৷’’

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন মনে করেন, করোনা ভ্যাকসিন যদি ভারত আগে বাংলাদেশকে দেয় তাতে খারাপ কী? এটাতো একটা সাফল্য৷ করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশ যদি আগে পায় সেটা ভালো৷ তবে এটাকে এই ‘রুটিন আলোচনার’ সফর বলে তিনি মনে করেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করে একদিন আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢাকায় চলে আসা কোনো রুটিন আলোচনার জন্য বলে আমি মনে করি না৷ এটার ভিতরে একটা রহস্য আছে৷ হতে পারে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যে আনইজি পরিস্থিতি চলছে সেটা স্বাভাবিক করার বার্তা নিয়ে তিনি এনেছেন৷ তারপরও এটা আমার অনুমান, কারণ, প্রধানমন্ত্রীর সাথে তিনি কী বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, কোনো বার্তা নিয়ে এসেছেন কিনা তা তো আমরা জানি না৷ এটা প্রকাশ না করলে আমরা জানবোও না৷’’

তার মতে, ‘‘পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়েছে তা এখন বোঝা যাবে না৷ ভারত যা আশা করে তা পুরণ না-ও হতে পারে৷ আমার কাছে অনেক কিছুই স্বাভাবিক লাগেনি৷’’

গত অক্টোবরের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ