1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রীলঙ্কায় নিহতের সংখ্যা দু’শ ছাড়িয়েছে

২১ এপ্রিল ২০১৯

মোট আটটি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত দু’শ জন নিহত হবার কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো৷

Sri Lanka Colombo Explosion in St. Anthony's Kirche
ছবি: picture-alliance/AA/C. Karunarathne

আহত আরো অন্তত ৪০০ জন৷

সকালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো ও তার বাইরে প্রায় একইসময়ে তিনটি চার্চ ও তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে বোমা বিস্ফোরিত হয়৷ এর কয়েক ঘন্টা পর কলম্বোর আরো দু’টি জায়গায় দু’টি বোমা বিস্ফোরিত হয়৷ 

এতে অন্তত ২০৭ জন নিহতের খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতদের অন্তত ২৭ জন বিদেশি বলে নিশ্চিত করেছে প্রশাসন৷ 

ইস্টারের প্রার্থনার সময়

ইস্টারের সকালে যখন চার্চগুলোতে বিশেষ প্রার্থনা চলছিল তখন এ ঘটনাগুলো ঘটে৷ উত্তর কলম্বোর সেইন্ট অ্যান্থনি'স শ্রাইনে একটি বোমা বিস্ফোরিত হবার ত্রিশ মিনিটের মধ্যে পার্শ্ববর্তী শহর নেগোম্বোর সেইন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চে ও কলম্বোর পূর্ব দিকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে বাতিকালোয়া শহরের জিয়ন চার্চে বোমা বিস্ফোরিত হয়৷

এছাড়া কলম্বোর কেন্দ্রে অবস্থিত তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলেও বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে৷ এএফপি বলছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮:৩০ টায় হোটেল সিনামন গ্রান্ডে ও ৯:০৫ টায় হোটেল সাংগ্রিলায় শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়৷ আক্রান্ত অপর হোটেলটি হলো হোটেল কিংসবুরি৷

এখন পর্যন্ত হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি৷ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি৷ তবে হামলাগুলোর লক্ষ্য ধর্মীয় উপাসনালয় ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রগু বলে উল্লেখ করেছে স্থানীয় গনমাধ্যমগুলো৷ আপাত দৃষ্টিতে সবগুলো হামলাই সমন্বিত বলে ধারণা করছে পুলিশ৷

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা বলেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে৷ তারা এর পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করবে৷ তিনি সবাইকে শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন৷

এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো জরুরি বৈঠক করেছে৷ কলম্বোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হয়েছে৷

আহতদের হাসপাতালে নেয়া হচ্ছেছবি: Reuters/D. Liyanawatte

শ্রীলঙ্কার ক্যাথলিক চার্চ প্রধান কার্ডিনাল ম্যালকম রনজিতও ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন যে, এই সন্ত্রাসী হামলার পেছনে কোন স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক দল জড়িত তা এখনো পরিষ্কার নয়৷

বিশ্বনেতাদের নিন্দা

বিশ্বনেতারাও ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন৷ আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেছেন যে, ‘উপাসনালয়ে হামলা আতঙ্কের বিষয়' এবং তিনি শ্রীলঙ্কার এমন ‘অন্ধকার সময়ে' পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন৷

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মুখপাত্র টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ইস্টারের প্রার্থনার সময় শ্রীলঙ্কায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ওপর এই হামলার ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত৷ আমরা তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই এবং আহতদের ও আক্রান্তের পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রার্থনা করি৷ সন্ত্রাসবাদ, ধর্মীয় বিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতাকে জিততে দেয়া যাবে না৷''

বিস্ফোরণের পর সাংগ্রিলা হোটেলের একাংশছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু টুইটারে লিখেছেন যে, এই হামলা ‘কাপুরুষোচিত, বর্বর ও ঠান্ডা মাথায় করা', ঠিক যেমনটি নিউজিল্যান্ডে করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম নেই, জাতি নেই, কোনো ভৌগলিক পরিচয় নেই৷''

ইউরোপীয় কমিশন প্রধান জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার ঘটনায় ‘আতঙ্ক ও দুঃখ' প্রকাশ করেছেন৷ তিনি আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন৷

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইট বার্তায় ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে এমন বর্বরতার কোনো জায়গা নেই৷'' শ্রীলঙ্কার এমন দুঃসময়ে ভারত পাশে আছে বলে জানান তিনি৷

শ্রীলঙ্কার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী৷ বঙ্গভবনের এক শোকবার্তায় ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি৷ শ্রীলঙ্কা সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান৷ প্রধানমন্ত্রী আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন৷

মিশরের আল আজহারের বিবৃতি

সুন্নি মুসলিমদের প্রখ্যাত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মিশরের আল আজহার রোববার শ্রীলঙ্কায় হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে৷ এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে উল্লেখ করে সেখানকার গ্রান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তায়েব বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারি না কীভাবে একজন মানুষ অন্যদের শান্তিপূর্ণ উৎসব উদযাপনের সময় হামলা করতে পারে৷ ঐ সন্ত্রাসীদের বিকৃত চরিত্র সব ধর্মের শিক্ষার বাইরে৷’’

আল আজহারের টুইটার অ্যাকাউন্টে তাঁর এ বক্তব্য প্রকাশিত হয়৷ 

ইমাম আল-তায়েব আরো বলেন, ‘‘আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন নিহতদের পরিবারের সদস্যদের এ শোক সইবার ক্ষমতা দেন এবং আহতদের সারিয়ে দেন৷’’

শ্রীলঙ্কায় বেশ কিছুদিন ধরে চলা সিরিসেনার ব্যাপক মাদকবিরোধী অভিযানকে সমর্থন দিয়েছিল ক্যাথলিক চার্চ৷ শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রাতে কারফিউ জারি করেছে৷

জেডএ/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ