শ্রীলঙ্কায় সেনাকে বিশেষ ক্ষমতা, নৌঘাঁটির আশ্রয়ে মাহিন্দ্রা
১১ মে ২০২২
শ্রীলঙ্কায় প্রবল বিক্ষোভ ও সহিংসতা থামাতে সেনার হাতে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হলো। দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সপরিবারে নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার প্রবল বিক্ষোভ ও সহিংসতায় উত্তাল হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কার্ফিউ উপেক্ষা করে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। মন্ত্রী ও নেতাদের অন্তত ১২টি বাড়ি ও সম্পত্তিতে আগুন ধরানো হয়েছে। রাজাপাকসে পরিবারের পৈত্রিক বাড়িতেও আগুন ধরানো হয়েছে। সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজাপাকসের বাড়িতে জোর করে ঢুকতে চেয়েছে উত্তেজিত জনতা। প্রেসিডেন্টের অফিসের সামনেও নিরাপত্তা বাহিনী ও জনতার সংঘর্ষ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সেনা নামানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সোম ও মঙ্গলবার মিলিয়ে অন্ততপক্ষে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হওয়ায় সরকার সেনা ও পুলিশের হাতে বিশেষ জরুরি ক্ষমতা দিয়েছে। তারা ওয়ারেন্ট ছাড়াই যে কোনো মানুষকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। গোলমাল বা সহিংসতা দেখলেই গুলি চালাতে পারবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোথাও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা বা জীবনহানির চেষ্টা হলেই নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কলম্বো সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কলম্বোয় বিক্ষোভকারীরা পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্র রাজাপাকসের বাড়ি ঘিরে ধরে দুইটি গেট ভেঙে দেয়। তারপরই সেখানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনেই বাস পুড়িয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
ছবি: Ishara S. Kodikara/AFP
প্রেসিডেন্টের অফিসের সামনে আগুন
হামবানকোটায় রাজাপাকসেদের পৈত্রিক বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া তিনজন সাবেক মন্ত্রী ও দুই জন পার্লামেন্ট সদস্যর বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রেসিডেন্টের অফিসের সামনেও আগুন ধরানো হয়। উপরের ছবিটি প্রেসিডেন্টের অফিসের সামনে।
ছবি: Ishara S. Kodikara/AFP/Getty Images
প্রেসিডেন্ট অফিসের সামনে সংঘর্ষ
প্রেসিডেন্টের অফিসের সামনে তার সমর্থক ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উপরের ছবিতে রাজাপাকসে-পন্থিরা একজন বিরোধী বিক্ষোভকারীকে মারছে।
ছবি: Buddhika Weerasinghe/Getty Images
বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী
প্রেসিডেন্টের অফিস ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তাবাহিনী। সোমবার সেখানে প্রচুর সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে।
ছবি: Ishara S. Kodikara/AFP/Getty Images
নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও কাঁদানে গ্যাস
নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা বিক্ষোভ থামাতে গুলি চালান। তার আগে কাঁদানে গ্যাসও ব্যবহার করা হয়েছিল।
কলম্বোর অনেক রাস্তাই ছিল বিক্ষোভকারীদের দখলে। তারা বাস পুড়িয়েছে. পুলিশ ও দাঙ্গাবিরোধী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিক দেখলেই বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সংঘর্ষ ও পুলিশের হাতে একশ জন আহত হয়েছেন।
ছবি: Eranga Jayawardena/AP Photo/picture alliance
প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা
চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন মাহিন্দ্র রাজাপাকসে। তার ছবি নিয়ে সমর্থকরা রাস্তায় নেমেছেন।
ছবি: Ishara S. Kodikara/AFP/Getty Images
প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনে
মাহিন্দ্র রাজাপাকসের বাড়ির সামনেও তার সমর্থকরা এসেছেন। স্লোগান দিচ্ছেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও হয়েছে।
ছবি: Eranga Jayawardena/AP/picture alliance
পুলিশকেও আটকানো হচ্ছে
পুলিশের বাইকও যেতে দিতে রাজি নন বিক্ষোভকারীরা।
ছবি: AP/picture alliance
10 ছবি1 | 10
নৌঘাঁটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার সকালেই রাজাপাকসের বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল বিক্ষোভকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনে একটি বাসেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। সেনার এক উচ্চপদস্থ অফিসার সংবাদসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, রাজাপাকসের বাড়ি লক্ষ্য করে অন্তত ১০টি পেট্রোল বোমা ছোঁড়া হয়। বিক্ষোভকারীরা বাড়ির গেটও ভেঙে ফেলতে চেয়েছিল। সেনা তাদের উদ্ধার করে একটি নৌঘাঁটিতে নিয়ে গেছে।
এনডিটিভি-কে সূত্র জানিয়েছে, তাদের ত্রিঙ্কোমালির নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হেলিকপ্টারে করে তাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। কলম্বো থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরের ওই নৌঘাঁটির সামনেও বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। কলম্বো বিমানবন্দরে যাওয়ার প্রধান রাস্তাও তারা অবরোধ করে রেখেছে।
শ্রীলঙ্কায় সংকট অব্যাহত, প্রতিবাদে পথে নাগরিকেরা
02:41
প্রেসিডেন্টের ইস্তফা দাবি
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে আবার জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার পর মাহিন্দ্র রাজাপাকসে বলেছেন, তিনি জাতীয় সরকার গঠনের পথ প্রশস্থ করার জন্য পদ ছে়ড়েছেন। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল জানিয়ে দিয়েছে, তারা জাতীয় সরকারে যোগ দেবে না। তারা চায়, গোটাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করুন।
উইলসন সেন্টারের বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান সংবাদসংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, ''প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে ইস্তফা না দেয়া পর্যন্ত কেউই শান্ত হবে না। রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারী বা প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব- সকলেই তার ইস্তফা চায়।''