অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৮৭.৯ বিলিয়ন ডলার লাভ করেছে আরামকো৷ গতবছর একই সময়ে লাভের পরিমাণ ছিল ৪৭.২ বিলিয়ন ডলার৷
করোনা মহামারির পর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কার্যক্রমজোরদার হওয়ায় তেলের চাহিদা বৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়ে গিয়েছিল৷ জুন মাসে তেলের দাম সবচেয়ে বেশি ছিল৷ পরে তা ব্যারেলপ্রতি ৩০ ডলারের বেশি কমে এলেও এখনও তা ১০০ ডলারের আশেপাশে রয়েছে৷
সৌদি আরবের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস আরামকোচলতি বছরের শুরুতে কিছুদিনের জন্য অ্যাপলকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হয়েছিল৷ এখন সেই তালিকায় আরামকোর অবস্থান দুই নম্বরে৷
সৌদি কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আয়ের আরও উৎসের খোঁজ শুরু করলেও এখনও তেল ও গ্যাস বিক্রি থেকেই সবচেয়ে বেশি আয় করছে৷
আরামকো প্রেসিডেন্ট আমিন নাসের আশা করছেন চলতি দশকে তেলের চাহিদা আরও বাড়বে৷
সৌদি তেলের প্রধান ক্রেতা চীন (২০২০ সালে ২৪.৭ বিলিয়ন ডলার)৷ এরপরে আছে জাপান (১৫.১ বিলিয়ন), দক্ষিণ কোরিয়া (১২.৮ বিলিয়ন), ভারত (১১.৮ বিলিয়ন) ও যুক্তরাষ্ট্র (৬.৬ বিলিয়ন)৷
জেডএইচ/কেএম (এএফপি, এপি)
সৌদি আরামকো কতো বড়?
বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিগুলোর একটি সৌদি আরবের তেল কোম্পানি সৌদি আরমকো৷ জেনে নিন, এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে কিছু তথ্য৷
ছবি: AFP/Getty Images/F. Nureldine
অ্যারাবিয়ান-অ্যামেরিকান তেল কোম্পানি
আরামকোর যাত্রা শুরু ১৯৩৩ সালে৷ তখন নাম ছিলো অ্যারাবিয়ান অ্যামেরিকান অয়েল কোম্পানি৷ তখন তার সঙ্গে যুক্ত ছিল স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানি অব ক্যালিফোর্নিয়া যা বর্তমানে শেভরন৷
ছবি: Reuters/M. Shemetov
নাম পরিবর্তন
সত্তর ও আশির দশকে ধীরে ধীরে আরামকোর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে থাকে সৌদি সরকার৷ ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান নামকরণ করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/F. Nureldine
দিনে আয় ১০০ কোটি ডলার
সৌদি আরামকো বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি কোম্পানি৷ প্রতিদিন ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেলের তেল প্রক্রিয়াজাত করে প্রতিষ্ঠানটি, যেখান থেকে আয় হয় ১০০ কোটি ডলার৷
ছবি: Reuters/A. Jadallah
১০,০০০ কোটি ডলার কর
২০১৭ সালে আরামকোর করের হার কমিয়ে দেয় সৌদি আরব৷ সেটি আয়ের ৮৫ ভাগ থেকে নামিয়ে আনা হয় অন্তত ৫০ ভাগে৷ তারপরও প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে ১০ হাজার কোটি ডলার সরকারের কোষাগারে জমা দেয়ার তথ্য জানিয়েছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ৷
ছবি: Reuters/H. I Mohammed
তেলক্ষেত্রে হামলা
সৌদি আরামকোকে দেশটির জ্বালানি নির্ভর অর্থনীতির প্রতীক বলে ধরা হয়৷ যে কারণে অনেক সময় আরামকোর তেলক্ষেত্রকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে সৌদি আরবের শত্রুরা৷ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তেমনই দুটি স্থাপনায় ১৪ টি মিসাইল হামলার ঘটনা ঘটে৷
ছবি: Reuters
সরকার নিয়ন্ত্রিত
সৌদি সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণও করে দেশটির সরকারই৷ সরকারের নীতি অনুযায়ী তেল উৎপাদন বা সরবরাহ কখনও বাড়ায়, কখনও কমায় আরামকো৷
ছবি: AFP/STRINGER
সবচেয়ে বড় আইপিও
২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর বাজারে প্রথমবারের মতো শেয়ার ছাড়ে আরামকো৷ রিয়াদের স্টক এক্সচেঞ্জে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বিক্রি করে দুই হাজার ৫৬০ কোটি ডলার মূলধন সংগ্রহ করে তারা৷ যার মাধ্যমে চীনা ই-কমার্স কোম্পানি আলিবাবাকে পেছনে ফেলে রেকর্ড গড়ে প্রতিষ্ঠানটি৷
ছবি: Reuters/H. I Mohammed
বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি
প্রাথমিকভাবে আইপিও বিক্রির মাধ্যমে আরামকোকে দুই লাখ কোটি ডলারের কোম্পানিতে পরিণত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান৷ সেখানে মূলধন দাঁড়ায় এক লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারে৷ তারপরও বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হয় সেসময় সৌদি আরামকো৷
ছবি: Reuters/H. I Mohammed
অ্যাপলের সঙ্গে লড়াই
২০১৯ সালে খুব বেশি সময় আরামকো শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি৷ সেই জায়গা দখল করে অ্যাপল৷ ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেলের দাম বেড়ে চলায় ২০২২ সালের ১২ মে আরামকোর শেয়ারের মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় ২.৪৩ ট্রিলিয়ন ডলারে৷ এতে আবারও অ্যাপলকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে সৌদি কোম্পানিটি৷ তবে কিছুদিন পরই শীর্ষে চলে আসে অ্যাপল৷