1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংকটে হিমালয়ের হিমবাহ

২৯ জানুয়ারি ২০২০

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ের তাপমাত্রা বাড়ছে৷ ফলে জমাট বাধতে পারছে না পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের হিমবাহগুলো৷ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হিমালয় থেকে নেমে আসা নদীগুলো৷

Gletscher Himalaya Kathmandu
ছবি: Getty Images/Afp/P. Mathema

 নদীগুলোর ওপর নির্ভর করছে তিনশ' কোটি মানুষের পানির জোগান৷

মধ্য-নভেম্বরের এই সময়টায় হিমালয়ের পশ্চিমাংশের পর্বতগুলো বরফে ঢাকা থাকার কথা৷ অথচ দেখা গেছে, এখন এখানকার তাপমাত্রা অনেক বেশি, এগার ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

গেল ত্রিশ বছর ধরে হিন্দু যোগী স্বামী ধর্মানন্দ এখানে থাকেন৷ পরিবর্তনগুলো নিজের চোখে দেখেছেন তিনি৷ 

‘‘১৯৯০ সাল যখন আমি এখানে প্রথমবার আসি, তখন আরো একশ মিটার নীচে হিমবাহ ছিল৷ এর মুখটাই ছিল অনেক নীচে৷ পুরো নদী বরফের চাদরে ঢাকা থাকত৷ যে কোন সময় পার হওয়া যেত৷ কখনো গলত না৷ এখনো পুরোনো ব্রিটিশ মানচিত্রে বরফের তীর দেখা যায়৷ এখন আর এসব নেই৷ সব শেষ,'' বলেন তিনি৷

পিন্ডারি হিমবাহে বরফের আস্তরণ খুব বেশি চোখে পড়েনা৷ নদীর ওপর বরফের আবরণ নেই৷ এমনকি নদীর পানির উৎসই এখন হুমকির মুখে৷

ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির হিমবাহ বিশেষজ্ঞ ড. ডিপি ডোবহাল এ নিয়ে কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আজ এই হিমবাহটির দৈর্ঘ্য পাঁচ কিলোমিটার৷ পর্বতের খাড়া ঢালের পাথুরে গায়ের মাঝে এটি আটকে আছে৷ বেশি খাড়া হবার কারণে এই বরফ গলার হারও বেশি৷ হিমবাহ জড়ো হবার জায়গাও কমে গেছে৷ এখন শীতকালে খুব অল্পই বরফ জমে৷''

গলছে হিমালয়

04:17

This browser does not support the video element.

তিন হাজার আটশ' মিটার ওপরে বরফ নেই বললেই চলে৷ অন্য হিমবাহগুলোও সমান্তরাল ট্র্যাকে৷ গত একশ' বছরে গাঙ্গোত্রী, যেখান থেকে হিন্দুদের পবিত্র নদী গঙ্গার উৎপত্তি, তা অর্ধেক বরফ হারিয়েছে৷ 

ড. ডোবহালের ভাষায়, ‘‘আগে তুষারপাত শুরু হত সেপ্টেম্বরের শেষে অথবা অক্টোবরের শুরুতে৷ নিয়মিত বিরতিতে বেশ অনেকখানি তুষার পড়ত৷ তুষারগুলো জমে বরফ হতে যথেষ্ট সময়ও পেত৷ কিন্তু এখন অক্টোবর-নভেম্বরেই বরফ গলতে থাকে৷''

এখানে বৃষ্টিপাতের ধরনও বদলে গেছে৷ এতেও ক্ষতি হচ্ছে অনেক৷

ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটের গবেষকরা দূষণের মাত্রা বেড়ে যাবার বিষয়েও সতর্ক করছেন৷ কাছাকাছি অবকাঠামো নির্মাণাধীন এলাকা থেকে প্রচুর ধূলা এসে পড়ায়, বরফ আগের মতো ৯৭ থেকে ৯৮ ভাগ সূর্যকিরণ প্রতিফলিত করতে পারছে না৷

‘‘ধূলিকণাগুলো হিমবাহ পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে৷ ফলে এখন আর বরফরের স্তরগুলোকে আগের মতো সাদা মনে হয় না,'' বলেন ডোবহাল৷ ‘‘এই ধূলিকণা খুবই বিপদজনক৷ এরা তাপ শুষে নেয় এবং বরফ খুব দ্রুত গলতে বাধ্য করে৷ ধূলির স্তর এক থেকে দুই মিলিমিটারের বেশি হবে না৷ কিন্তু এটি বরফ গলার হার বাড়িয়ে দেয়৷''

এই পরিবর্তনগুলো পর্বতমালার ইকোসিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে৷

স্বামী ধর্মানন্দ জানান যে, এখানে নতুন নতুন প্রজাতির দেখা পাওয়া যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘গত বছর মশা দেখা গেছে৷ বিছানার পোকাও পেয়েছি আমি৷ নতুন নতুন জীব বেরিয়ে আসছে৷ ছয় কিলোমিটার নীচে জোঁকও পাওয়া যাচ্ছে৷ আর তের কিলোমিটার নীচে নদীতীরে সাপও পাওয়া গেছে৷ বিশ ত্রিশ বছর আগে এগুলোর কোনোটিই ছিল না এখানে৷''

বিজ্ঞানীরা বলেন, এই হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ২১০০ সাল নাগাদ হিমালয়ের সব হিমবাহ গলে যাবে৷ এতে এশিয়ার তিনটি প্রধান নদী ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ প্রায় তিনশ কোটি মানুষ পানির জন্য হিমবাহের ওপর নির্ভরশীল৷ তাই পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বতশৃঙ্গের হিমবাহ বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে৷ প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ৷

ওঙ্কার সিং জনোঠি/জেডএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ