‘নতুন রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ নেয়া উচিত’
২৫ এপ্রিল ২০১৩ বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন আবদুল হামিদ৷ বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথ পাঠ করান ভারপ্রাপ্ত স্পিকার শওকত আলী৷ শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন৷ ছিলেন জাতীয় পার্টিসহ রাজনৈতিক দলের নেতারা৷ তবে বিএনপির নেতারা শপথ অনুষ্ঠানে যাননি৷
আবদুল হামিদ দেশের এক সংকটময় মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিলেন৷ দেশে এখন নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার দাবিতে বিএনপি'র নেতৃত্বে ১৮ বিরোধী দল রাজপথে আন্দোলন করছে৷ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন করার জন্য অনড় অবস্থানে আছে৷ এ নিয়ে অব্যাহত আছে সংঘাত সহিংসতা৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, দেশে এই রাজনৈতিক সংকট নিরসনে নতুন রাষ্ট্রপতি বড় একটি ভূমিকা রাখতে পারেন৷ তিনি সরকারী দলের সঙ্গে কথা বলতে পারেন৷ কথা বলতে পারেন বিরোধী দলের সঙ্গে৷ দুই দলকেই তিনি একটি যৌক্তিক অবস্থানে নিয়ে আসতে পারেন৷ অধ্যাপক ইমতিয়াজ আরও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতির তেমন সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই সত্য৷ কিন্তু রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের গ্রহণযোগ্যতা আছে৷ আছে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা৷ আর তাঁর নৈতিক ক্ষমতা আছে৷ তিনি যদি সত্যিকার অর্থেই দেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান চান, তাহলে তাঁর পক্ষে উদ্যোগ নেয়া কঠিন কোন কাজ নয়৷ আর এই উদ্যোগে তিনি দেশের সাধারণ মানুষেরও সমর্থন পাবেন৷'' তাঁর মতে, এর আগে আওয়ামী লীগ শাসনামলে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ তার নৈতিকতার জোরে কাজ করেছিলেন৷ কথা বলেছিলেন বিরোধী দলের সঙ্গে৷
অধ্যাপক ইমতিয়াজ আরও বলেন, শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি এখন আর কোন দলের নন৷ তিনি সবার৷ তাই দেশের সবার কল্যাণে তিনি উদ্যোগ নেবেন, এটা দেশবাসী আশা করতেই পারে৷ আর তিনি এই সরকারের মেয়াদে নয়, আগামী ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন৷
এদিকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নতুন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নিরপেক্ষতা এবং গ্রহণযোগ্যতার সুনাম আছে৷ স্পিকার হিসেবে তিনি দলীয় বিবেচনায় কাজ করেননি৷ তাই রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি সুবিবেচক হবেন, এটা ধরেই নেয়া যায়৷ আর সে জন্য তাঁর কাছে প্রত্যাশাও বেশি৷ দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তিনি যদি কোন উদ্যোগ নেন, তাহলে সবার সমর্থন পাবেন৷'' হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আশা করেন, তিনি উদ্যোগ নেবেন৷ দেশের এই সংকটে নতুন রাষ্ট্রপতি বসে থাকবেন না বলেই মনে করেন তিনি৷