টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য কড়া লকডাউন জারি ছিল অস্ট্রিয়ায়। এবার তা-ও তুলে দেওয়া হলো।
বিজ্ঞাপন
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহ্যামার জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞরা তার মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন লকডাউন করে রেখে বিশেষ লাভ হবে না। সে কারণেই টিকা যারা নেননি তাদের জন্য ঘোষিত লকডাউনও এবার তুলে দেওয়া হলো। তবে টিকাহীন ব্যক্তিরা রেস্তোরাঁয় যেতে পারবেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান ছাড়া অন্য জায়গায় প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু তারা বাড়ি থেকে বেরতে পারবেন।
শীত শুরু হতেই ইউরোপে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে৷ অথচ সব দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে ঐকমত্য এখনো আসেনি৷ এখনো চলছে ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশ৷ তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর হচ্ছে কোনো কোনো দেশ৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Flavio Lo Scalzo/REUTERS
রাশিয়া : ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে রাশিয়ায়৷ সেখানে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যা এখন দুই লাখ ৬০ হাজার ৩৩৫৷ ওপরের ছবিতে রাশিয়ার এক শহরের হাসপাতালে কোভিড-১৯- এ সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার দৃশ্য৷
ছবি: Kirill Braga/REUTERS
জার্মানি : সংক্রমণ বাড়ছে, বাড়ছে কোন্দল
জার্মানিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক লাখ হতে চলেছে (৯৮, ৯০৮)৷ সংক্রমণও বাড়ছে৷ সপ্তাহে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ৩৩৬ ছাড়িয়েছে৷ কিছু হাসপাতালের আইসিইউ ভরে যাওয়ায় নতুন করে রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না৷ অথচ করোনা সংকটের শুরুর দিকে জার্মানির মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলো কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য সত্ত্বেও যেভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেই ‘ঐকমত্যে’ এখন ফাটল দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Lukas Barth/REUTERS
ইটালি : ভ্যাকসিনে বিল গেটস!
ইউরোপের আরেক দেশ ইটালিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ৯৬৫ জন৷ সংক্রমণ আবার বাড়ছে৷ অথচ ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশ এখনো চলছে৷ মিলানের এক সমাবেশের একটা প্ল্যাকার্ডে বিল গেটসকে বলা হচ্ছে ‘যিশুবিরোধী’৷
ছবি: Flavio Lo Scalzo/REUTERS
অস্ট্রিয়া : ভ্যাকসিনবিরোধীদের জন্য লকডাউন
অস্ট্রিয়াতেও কোভিড-১৯-এ সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত৷ গত সোমবার থেকে যারা এখনো ভ্যাকসিন নেননি তাদের লকডাউনের আওতায় নেয়া হয়েছে৷ ওপরের ছবিতে ভিয়েনা শহরের লকডাউন করা একটি অঞ্চলে পুলিশের টহল৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
গ্রিস : ক্লান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভ
করোনা সংকট শুরুর পর থেকে গ্রিসের স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন৷ কাজের চাপ এত বেশি যে নিরুপায় হয়ে বিক্ষোভেও নামতে শুরু করেছেন তারা৷ ওপরে এথেন্সের সেরকম এক বিক্ষোভ মিছিলের ছবি৷
ছবি: Louiza Vradi/REUTERS
ইটালি : ভ্যাকসিনবিরোধী বিক্ষোভে রবার্ট কেনেডি
মিলানের এক ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশে হাজির যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা রবার্ট এফ কেনেডি৷
ছবি: Flavio Lo Scalzo/REUTERS
6 ছবি1 | 6
চ্যান্সেলর জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত যখন নেওয়া হচ্ছে, দেশে করোনার সংক্রমণ তখন বাড়ছে। কিন্তু সংক্রমণ বাড়লেও তা ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে না। হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত শয্যা ফাঁকা আছে। আইসিইউ-তেও যথেষ্ট জায়গা আছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, নতুন ঢেউয়ে মানুষ সংক্রমিত হলেও খুব বেশি অসুস্থ হচ্ছেন না। সে কারণেই লকডাউন পুরোপুরি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত, সাম্প্রতিক ঢেউয়ে অস্ট্রিয়াই প্রথম কড়া লকডাউনের ঘোষণা করেছিল।
লকডাউন তুলে নিলেও অস্ট্রিয়াই প্রথম দেশ, যারা করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে আইন পাশ করেছে। সাবালক সকল ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলকভাবে করোনার টিকা নিতে হবে। এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ সপ্তাহান্তে এর বিরুদ্ধে সমাবেশ করছেন। কিন্তু চ্যান্সেলর জানিয়ে দিয়েছেন, তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরবেন না। টিকা নিতেই হবে। আগামী মাস থেকেই টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারের আশা, বিক্ষোভ-সমাবেশ হলেও শেষপর্যন্ত মানুষ টিকা নেবেন।
বেজিংয়ে করোনা বাড়ছে
এদিকে বেজিংয়েও নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। তারই মধ্যে সেখানে শুরু হতে চলেছে ২০২২ সালের উইন্টার অলিম্পিক। অলিম্পিকের ঠিক আগে যেভাবে সেখানে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে চিন্তায় কর্মকর্তারা। আদৌ শেষপর্যন্ত অলিম্পিকের আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়েও কোনো কোনো মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।