1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংগীত রোগ!

মারিটা ব্যার্গ/আরবি১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

বেহালা বাজানোর ফলে একজিমা, জয়েন্টে ব্যথা, পেশির খিঁচুনি কিংবা টিনিটাস – প্রায় ৭০ শতাংশ পেশাদার সংগীত শিল্পীকে এইসব অসুখ-বিসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে৷ ক্রীড়াবিদদের তুলনায় কোনো অংশে কম নয় এ চাপ৷

Musikerambulanz
ছবি: Musikerambulanz am UKD

‘‘আমার এক আঙুলের সঙ্গে আরেক আঙুলে ঠোকঠুকি লেগে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে আমাকে৷'' এইভাবেই একসময় তাঁর ব্যথা বেদনার বর্ণনা দিয়েছিলেন রবার্ট শুমান৷ আজ রোগটি সম্পর্কে জানে মানুষ৷ এটি হলো সংগীতকারের শিরটান৷ পিয়ানিস্ট মারি পেরায়ার বৃদ্ধাঙ্গুলির সংক্রমণের কথা অনেকেই জানে৷ শোনা গিয়েছে রোনাল্দো ভিয়াসন কিছুকাল তাঁর কন্ঠস্বর হারিয়ে ফেলেছিলেন৷

ক্রীড়াবিদদের চেয়ে কম নয়

পেশাদার সংগীতকারদের শারীরিক চাপ ক্রীড়াবিদদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়৷ কিন্তু স্পোর্টস মেডিসিন নিয়ে চিকিৎসা জগতে অনেক আগে থেকে মাথা ঘামানো হলেও সংগীতকারদের পেশাগত অসুস্থতাকে খুব একটা আমল দেওয়া হয়নি এতদিন৷ ইদানীং এদিকে কিছুটা নজর দেওয়া হচ্ছে৷ কোনো কোনো সংগীত বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়েছে৷

সংগীতশিল্পীদের জন্য বিশেষ প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর ৫০০-এর বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছেছবি: Musikerambulanz am UKD

বছর দুয়েক আগে সংগীত সাংবাদিক, অর্গানবাদক ও চিকিৎসক ভলফ্রাম গ্যর্টৎস-এর উদ্যোগে ‘মুসিকার আম্বুলানত্স' নামে এক চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে৷ এটি ড্যুসেলডর্ফ ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের সঙ্গে সংযুক্ত৷ নিওরোলজিস্ট, অর্থপেডিস্ট, হ্যান্ড সার্জন, মনস্তত্ত্ববিদ ও ফিজিও থেরাপিস্টদের একটি নেটওয়ার্ক কাজ করছে এই চিকিৎসা কেন্দ্রে৷

যন্ত্রণার দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া

জার্মানি, ইউরোপ ও অন্যন্য দেশ থেকেও সংগীতশিল্পীরা যন্ত্রণার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সাহায্যের আশায় এই চিকিৎসা কেন্দ্রে আসেন৷

ভলফ্রাম গ্যোর্টৎস বলেন, ‘‘সাধারণত ‘মুসিকার আম্বুলানত্স'-এ যে সব রোগী আসেন, তাঁরা আগে কমপক্ষে দুই কিংবা তিনজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়েছেন৷ কিন্তু সমস্যার কারণটা কেউ ধরতে পারেননি৷ কারণ ডাক্তাররা তাঁদের বাদ্যযন্ত্রসহ পরীক্ষা করে দেখেননি৷''

তাই সাহায্যপ্রার্থীদের ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকে তাদের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে আসতে হয়৷ সেখানে তাঁদের সেইসব চিকিৎসকরা পরীক্ষা করেন, যাঁদের নিজেদেরও সংগীত সম্পর্কে অভিজ্ঞতা আছে৷ বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সময় কীভাবে নড়াচড়া করতে হয়, তা জানেন তাঁরা৷

ভলফ্রাম গ্যোর্টৎস জানান, ‘‘বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সময় বাদকদের প্রায়ই একটানা অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে থাকতে হয়৷ দীর্ঘদিন এইরকমভাবে চললে ক্রনিক ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে৷''

বাদ্যযন্ত্র অসুস্থ করে

বেহালাবাদকদের কাঁধে ও চেলো বাদকদের বৃদ্ধাঙ্গুলের জয়েন্টে সমস্যা হয়৷ ব্লোয়ারদের ঠোঁটে ও মুখের পেশিতে অসুবিধা দেখা দেয়৷ তাঁরা প্রায়ই মাথা ঘোরার কথা বলেন৷

খোলোয়াড়দের মতো সংগীতকারদেরও হাত পা টেনে হালকা ব্যায়াম করা উচিত৷ তারপর তাঁরা বাদ্যযন্ত্রটি হাতে নিতে পারেন৷ নানারকম বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে অবশেষে ড্যুসেলডর্ফ ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের বিশেষ চিকিৎসা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হন অনেক রোগী৷

‘‘সেখানে রোগীদের দুর্ভোগ নিয়ে সবাই মিলে চিন্তাভাবনা করে অখণ্ড একটা পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করেন৷ আর এটাই হলো ভালো ‘সংগীত-মেডিসিনের' মূল বৈশিষ্ট্য'', বলেন ভলফ্রাম গ্যোর্টৎস৷ তবে জটিল সমস্যা হলে ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের কোনো সহকর্মীকে ফোন করে তাঁর পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে৷

বহু ‘শিল্পী-রোগী' চিকিৎসা নিয়েছেন

সংগীতশিল্পীদের জন্য বিশেষ প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর ৫০০-এর বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে৷ ইতিমধ্যে এই ইন্সটিটিউটের নাম বড়বড় অর্কেস্ট্রাতেও ছড়িয়ে পড়েছে৷

ডা. ভলফ্রাম গ্যোর্টৎস বলেন, ‘‘জার্মানির রেডিও সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার প্রায় অর্ধেকের মতো সদস্যই আমাদের রোগী৷ ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে ডুইসবুর্গ ফিলহারমোনিকের সঙ্গে এক সহযোগিতামূলক চুক্তি হয়েছে৷ বলা যায়, আমরা তাঁদের টিম ডাক্তার৷ চিকিৎসার পাশাপাশি আমরা প্রতিরোধকমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করে থাকি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ