1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংঘাতের নাম বিশ্বভারতী, অচলাবস্থা চলছেই

পায়েল সামন্ত
১৫ ডিসেম্বর ২০২২

শান্তিনিকেতনে অশান্তির বিরাম নেই। দিনের পর দিন ঘেরাও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি বেরোতে গেলে বাধছে ধুন্ধুমার। মধ্যরাতে পড়ুয়াদের ধরনা মঞ্চ ভাঙা নিয়ে চলছে বিতর্ক।

ছবি: Payel Samanta/DW

গোড়া থেকেই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সংঘাত লেগে আছে। নানা কারণে মতানৈক্য এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। উপাচার্যের বাড়ির সামনে প্রায় চার সপ্তাহ ধরে ধরনা মঞ্চ গড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আন্দোলনকারী ছাত্ররা। তাতে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন উপাচার্য।

দিনের পর দিন নিজের কার্যালয়ে যেতে পারেননি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি বৈঠকে তিনি যোগ দিতে পারছেন না। টানা ২১ দিন আটকে থাকার পর এই সপ্তাহে তিনি বেরোনোর চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বেধে যায় ধুন্ধুমার।

নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে বাইরে আসেন উপাচার্য। তার আগে রক্ষীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। এই সময় পড়ুয়াদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবারের এই ঘটনায় উত্তাপ বেড়েছে শান্তিনিকেতনে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পঠনপাঠন নিয়ে উদ্বিগ্ন পড়ুয়া, অভিভাবকরা। আন্তর্জাতিক স্তরে সুনাম আছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠানের। সেই সুনাম আজ চ্যালেঞ্জের মুখে বলে মনে করছেন অনেকে।

সকালে বাসভবনের সামনে উপাচার্যকে ঘিরে অশান্তির পর মঙ্গলবার রাতে পরিস্থিতি আরো ঘোরালো হয়। নিরাপত্তারক্ষীরা ধরনা মঞ্চ ভেঙে দেয়। অভিযোগ, সেই সময় তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এমনকী ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ খারিজ করে বলেছে, পড়ুয়ারা বাসভবন লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়েছিলেন। তাই মঞ্চ ভাঙা হয়েছে। ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ ভিত্তিহীন।

দ্রুত ফলপ্রকাশ, ছাত্রাবাসের শূন্য আসন পূরণ-সহ সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি তুলেছেন পড়ুয়ারা। আন্দোলনের নেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, "আন্দোলনকারীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। সিবিআই তদন্তের ভয় দেখানো হচ্ছে। উপাচার্য যদি আশ্রমের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারেন তা হলে তার পদে না থাকাই শ্রেয়।"

গত কয়েক মাসের পরিস্থিতি বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদেরও হতাশ করেছে। ১৯৮৭ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা মেরি খাতুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "ক্যাম্পাসের এই ছবিটা আমরা ভাবতেও পারতাম না। এখন এসব দেখলে কান্না পেয়ে যায়।"

বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের একাংশকে পাশে পেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ধরনা মঞ্চে এসেছেন। সেজন্য তাকে শোকজ করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছে বারবার। এই দাবি খারিজ করে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বক্তব্য, "৩০০ জন আবেদনকারীর মধ্যে আমি উপাচার্য পদে মনোনীত হয়েছি। রাষ্ট্রপতি আমার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। যারা পদত্যাগ করতে বলেছেন, তারা নিয়োগ করেননি।"

চলতি অচলাবস্থাকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন প্রাক্তন উপাচার্য রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "ছাত্রদের দাবি যদি আইনি পথে পূরণ করা সম্ভব না হয়, সেটা বোঝাতে হবে। কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের বোঝাতে পারছেন না। উপাচার্যকে নমনীয় হতে হবে, তিনি হুমকি দিলে সমস্যা মিটবে না।"

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ