1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিচার অফ দ্য উইক

আন্টিয়ে হলুন্ডার / এসি২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

মধ্যপ্রাচ্যে যাদের পক্ষে সুপ্রতিবেশী হওয়া সম্ভব নয়, জার্মানির ড্যুসেলডর্ফের একটি হোস্টেলে ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি ও জর্ডানি পড়ুয়ারা ঠিক তাই৷ ‘‘ইউরোপিয়ান স্টাডিজ’’ বিষয়টির ৩০ জন পড়ুয়া থাকে ঐ হোস্টেলে৷

--- 2013_02_21_palästina_israel_flaggen.psd
ছবি: A.Gharabli/AFP/GettyImages

ড্যুসেলডর্ফে ‘‘ইউরোপিয়ান স্টাডিজ'' পড়তে এসেছে এই ত্রিশজন৷ দোতলা হোস্টেল৷ প্রতি তলায় থাকে ১৫ জন৷ মেয়েদের এবং ছেলেদের বাস আলাদা, রক্ষণশীল মুসলিম প্রথার কথা ভেবেই৷ তবে সকলেই সকলের ঘরে যায়, কথাবার্তা বলে, গালগল্প করে৷ দুটি যৌথ রান্নাঘরেও সকলের দেখা হয়, একসঙ্গে রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া হয়৷ ইসরায়েলের মেয়ে শাভা নিহোভিচ ব্যাপারটা খুব উপভোগ করে, ‘‘আমি এখন আরব গান আর আরব খাবার চিনতে শিখেছি৷ এমনকি আরব খাবার রাঁধবারও সুযোগ পেয়েছি৷ সত্যিই খুব ভালো খেতে৷''

দুটি যৌথ রান্নাঘরেও সকলের দেখা হয়, একসঙ্গে রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া হয়ছবি: DW/A.Bendrif

দশজন করে ইসরায়েলি, ফিলিস্তিনি এবং জর্ডানি ছাত্রছাত্রী, সব মিলিয়ে ত্রিশজন৷ এরা হল ‘‘ইউরোপিয়ান স্টাডিজ'' পাঠক্রমের চতুর্থ ব্যাচ৷ পাঠক্রম এক ব্যাপার, কিন্তু সবাই মিলে এভাবে বাস করাটা যেন তার চেয়েও বেশি অভিনব৷ ২৩ বছর বয়সী মোহামেদ নিজেম এসেছে পূর্ব জেরুসালেম থেকে৷ সে  বলে, ‘‘ইসরায়েলিদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় চেকপয়েন্টে, কিংবা সেরকম কোনো পরিস্থিতিতে, যখন কথা বলা সম্ভব নয়, শুধু আইডি-কার্ড দেখাতে হয়, পরস্পরের সঙ্গে আলাপ-পরিচয়ের কোনো সুযোগ নেই৷ এখানে আমি শাভা'র কাছে গিয়ে ইসরায়েলিদের ব্যাপারে কথাবার্তা বলতে পারি, তারা ফিলিস্তিনি আর জর্ডানিদের সম্পর্কে কী ভাবে, এই সব নিয়ে৷ আমরা পরস্পরের সঙ্গে কথাবার্তা বলি!''

জর্ডানের মেয়ে রোজান্না আজান৷ নিজেমের মতো সে-ও ২৩ বছর বয়সী৷ সে ড্যুসেলডর্ফে এসেছেই এমন সব মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে, মধ্যপ্রাচ্যে যাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ঘটে না৷ রোজান্না বলে, ‘‘আমি ফিলিস্তিনি আর ইসরায়েলিদের সঙ্গে আলাপ করতে চেয়েছিলাম, কেননা আমাদের  মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই৷ জর্ডানি আর ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হয়তো তা'ও অতটা শক্ত নয়, কিন্তু ইসরায়েলিদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্কই নেই৷ শুধু টেলিভিশনের খবরে যতটুকু দেখতে পাওয়া যায়৷ কাজেই তাদের সঙ্গে  দেখা করার, আলাপ করার এটা একটা ভালো সুযোগ৷''

মধ্যপ্রাচ্যে যাদের পক্ষে সুপ্রতিবেশী হওয়া সম্ভব নয়, জার্মানির ড্যুসেলডর্ফের একটি হোস্টেলে ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি ও জর্ডানি পড়ুয়ারা ঠিক তাইছবি: picture-alliance/dpa

তাদের হোস্টেল জীবনকে শুধু শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বললে কম বলা হবে৷ প্রত্যেক দিন এরা বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় হোস্টেলে কি ক্লাসে একসঙ্গে কাটায়৷ ক্লাসে পড়ার সময় বিষয় যেহেতু ইউরোপ, সেহেতু পারস্পরিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষগুলো বিশেষ মাথা চাড়া দিতে পারে না৷ তবুও গত নভেম্বরে গাজা স্ট্রিপকে কেন্দ্র করে সংঘাত আবার চরমে ওঠার সময় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল৷ ড্যুসেলডর্ফের পড়ুয়াদের কয়েকজন ইন্টারনেটে এমন সব ব্লগ ছাপায়, যা অন্যান্য দেশের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ঊষ্মার সৃষ্টি করে৷ তবে আবার ড্যুসেলডর্ফে এ ধরনের বিরোধ আলোচনার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি করা সম্ভব, মধ্যপ্রাচ্যে যা এখনও সম্ভব নয়৷

চার মাস ধরে একসঙ্গে বাস করার পর ড্যুসেলডর্ফের ইউরোপিয়ান স্টাডিজ'এর পড়ুয়ারা মেনে নিয়েছে যে, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও, পরস্পরের মধ্যে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব৷ এবং সেই সম্পর্কে যে ছাত্রাবস্থা ও পাঠক্রমেই সীমাবদ্ধ থাকবে, এমন কোনো কথা নেই৷ ফিলিস্তিনের মোহামেদ নিজেম ও ইসরায়েলের শাভা নিহোভিচের ক্ষেত্রে এ কথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য৷ নিজেম বলে, ‘‘শাভা আর আমি একসঙ্গে সুইমিং পুলে যাই, এখানে-সেখানে বেড়াতে যাই, এক কথায় অনেক কিছু একসঙ্গে করি৷ আমরা আবার একই প্লেনে বার্লিনে এসেছি৷ শাভা বলছিল, ও জেরুসালেমে গিয়ে আমার সঙ্গে খেতে যাবে৷ আমি বললাম, নিশ্চয়ই৷ আমি জেরুসালেমে থাকি আর ওর বাবা ওখানেই কাজ করেন৷ ও ফিলিস্তিনিদের সম্পর্কে কী ভাবে কিংবা আমি ইসরায়েলিদের সম্পর্কে কী ভাবি, তা আর জিজ্ঞেস করার দরকার নেই৷ তা আমাদের জানা হয়ে গেছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ