সন্ত্রাসী সংগঠন ‘ইসলামিক স্টেট’-এর হত্যাকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া বা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করার অর্থ সন্ত্রাসবাদীদের প্রচারণায় সাহায্য করা৷ এমনটাই মনে করেন ডিয়ানা হোডালি৷
বিজ্ঞাপন
মাসের পর মাস ধরে আইএস নামক সন্ত্রাসী সংগঠনটি গোটা বিশ্বকে ত্রাসের মধ্যে রেখেছে৷ স্বঘোষিত ‘ইসলামিক স্টেট' ঢাক পিটিয়ে প্ররোচনার খেলা খেলে চলেছে৷ বন্দি বিনিময় নিয়ে তারা এমন সুরে আলোচনা করছে, যেন তারা স্বীকৃত বৈধ রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়ে গেছে৷ সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে পণবন্দিদের হত্যার নৃশংস দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও চালাচালি হচ্ছে৷ বার বার শোনা যাচ্ছে কাতর আবেদন – ‘‘এই সব ছবি দেখিয়ে নিজেদের সন্ত্রাসবাদীদের দোসর হয়ে উঠবেন না৷'' তবে অনেক ইউজার তার তোয়াক্কা করছেন না৷ আবার অনেকে সেই সব ভয়ংকর দৃশ্যের ছবি আরও ছড়িয়ে দিচ্ছেন, কারণ তাঁরা বাকিদের জানাতে চাইছেন আইএস আসলেই কতটা বর্বর৷ কিন্তু সন্ত্রাসী মিলিশিয়া বাহিনী হিসেবে আইএস যে দুঃস্বপ্নকে বাস্তব করে তুলছে, তা জানতে আর কি কিছু বাকি আছে? তার জন্য কি সত্যি এই সব ছবি ও ভিডিও দেখতে হয়? উত্তর হলো – না, একেবারেই না৷
সংবাদমাধ্যমও একই বিড়ম্বনায় পড়েছে৷ ইন্টারনেটে প্রকাশিত এই সব ভিডিও দেখে অনেক সাংবাদিক ভাবছেন, এগুলি কি বাকিদের দেখানো উচিত? এমন জঘণ্য অপরাধের তীব্রতাই তো তা নিয়ে রিপোর্ট করার কারণ৷ এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ভিডিও নিয়ে তাই দুই রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ একদিকে অ্যামেরিকার দক্ষিণপন্থি রক্ষণশীল টেলিভিশন কেন্দ্র ফক্স নিউজ জর্ডানের বন্দি পাইলটের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের গোটা ভিডিওটাই তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে৷ সিএনএন তার ঠিক বিপরীত সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ জার্মানির টেলিভিশন চ্যানেলগুলিও সেই ভিডিও একেবারেই দেখায় নি৷ ইউটিউব আপলোড করা সেই সব ভিডিও যত দ্রুত সম্ভব মুছে ফেলার চেষ্টা করছে৷ তবে তার কোনো ফল হচ্ছে না, কারণ আইএস অনুগামীরা মহা আনন্দে খোদ ফক্স নিউজের ওয়েবসাইট থেকেই ভিডিওর লিংক শেয়ার করে চলেছে৷ তাদের ঘৃণার পাত্র পশ্চিমা বিশ্বই সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে৷
মধ্যপন্থাও আইএস-কে সাহায্য করছে
সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশই মধ্যপন্থা অবলম্বন করে চলেছে এবং ভিডিও থেকে কিছু স্থিরচিত্র তুলে ধরছে৷ এমনকি জার্মানিতেও এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট'-এর কীর্তিকলাপ জনসমক্ষে তুলে ধরার একটা তাগিদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ যুক্তি হিসেবে বার বার বলা হচ্ছে, আইএস যে কতটা নৃশংস ও ভয়ংকর হতে পারে, সেটাই তুলে ধরা হচ্ছে৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এমন প্রচারণার মাধ্যমেই এই সন্ত্রাসী সংগঠন বিনা সমস্যায় তাদের বার্তা ও প্রতীক গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারছে৷ কালো পতাকার সামনে মুখোশ পরা জল্লাদ ও কমলা পোশাক পরা বন্দিদের ছবি কে না দেখেছে? প্রত্যেক টেলিভিশন কেন্দ্র, প্রত্যেক পত্র-পত্রিকা, প্রত্যেক অনলাইন পোর্টাল যখন আইএস-এর তৈরি ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করে, তখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও তারা সন্ত্রাসবাদীদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ হয়ে পড়ে৷
হত্যা, আতঙ্ক আর ঘৃণায় আইএস
শুধু ইরাক আর সিরিয়া নয়, আজকাল বিশ্বের অনেক দেশেই ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর তৎপরতার কথা শোনা যায়৷ খেলাফত কায়েমের কথা বলে মধ্যপ্রাচ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা জঙ্গি সংগঠনটিকে নিয়েই আমাদের আজকের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Jordan News Agency
তাদের কাছে নারী যেন বাজারের পণ্য
অনেক সময় আটক নারী ও শিশুদের আইএস জঙ্গিরা যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করে৷ সম্প্রতি আইএস-এর কবল থেকে পালিয়ে আসা ৪০ জনেরও বেশি ইয়াজিদি নারীর সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ নারী ও শিশুদের সঙ্গে আইএস-এর এমন আচরণে নিন্দা জানিয়েছেন সবাই৷
ছবি: DW/Andreas Stahl
সাংবাদিক, এনজিওকর্মী হত্যা করে হুমকি
তাদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা বন্ধ না করায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে নিরপরাধ মানুষ হত্যার বেশ কিছু নজীর গড়েছে আইএস৷ বিমান হামলার প্রতিশোধের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন সাংবাদিক, একজন এনজিও কর্মী এবং ব্রিটেনের দু’জন এনজিও কর্মীর শিরশ্ছেদ করেছে তারা৷ ওপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক জেমস ফলিকে৷ গত আগস্টে তাঁর শিরশ্ছেদ করে ভিডিওচিত্র প্রচার করে আইএস৷
ছবি: dapd
মুসলমান হলেও রক্ষা নেই....
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সিরীয় শরণার্থীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন পিটার কাসিগ৷ মুসলমান হিসেবে তাঁর নাম হয়েছিল আব্দুল রহমান কাসিগ৷ গত নভেম্বরে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় তাঁকেও হত্যা করে আইএস৷ হত্যার পর ভিডিও চিত্রও প্রকাশ করা হয়৷ নৃশংস এ ঘটনাকে ‘শয়তানের কাজ' হিসেবে বর্ণনা করেন বারাক ওবামা৷
ছবি: picture-alliance/AP/Kassig Family
জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি, তারপর...
জাপানের দুই নাগরিককে জিম্মি করে প্রথমে ২০০ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবি করে আইএস৷ মুক্তিপণ না পাওয়ায় হারুনা ইউকাওয়াকে হত্যা করলেও সাংবাদিক কেনজি গোতোকে আটকে রাখে৷ গোতো এবং জর্ডানের বৈমানিক আইমান মাজ-আল-কাসাবেহকে জিম্মি করে তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে জর্ডানে আটক আইএস-এর এক নারী যোদ্ধার মুক্তি দাবি করা হয়৷ তাঁকে মুক্তি না দেয়ায় কেনজি গোতো এবং আইমান মাজ-আল-কাসাবেহকে হত্যা করে আইএস৷
ছবি: Reuters/www.reportr.co via Reuters TV
ইরাকে শুরু....
গত বছরের জুন মাসে ঝটিকা আক্রমণের ইরাকের মোসুল দখল করে নেয় আইএস৷ সুন্দিদের এই জঙ্গি সংঠনটি তারপর ইরাকের বেশ বড় একটা অংশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে৷ সিরিয়াতেও দখল করে নেয় কিছু এলাকা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
বাংলাদেশেও তৎপর আইএস...
আইএস সরাসরি যুদ্ধ করছে ইরাক আর সিরিয়ায়৷ যোদ্ধা সংগ্রহ করা হচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব প্রান্ত থেকে৷ জার্মানি, বৃটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে জঙ্গি মনোভাবাপন্নরা গিয়েছে ইরাক, সিরিয়ায়৷ এশিয়ার দেশগুলোতেও তৎপর আইএস৷ বাংলাদেশেও আইএস সমর্থক সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকজনকে৷
ছবি: Reuters
জুতার নীচে আইএস!
আইএস-এর প্রতি ঘৃণাও বাড়ছে সারা বিশ্বে৷ ইরাকের স্থপতি আকীল খ্রীফ তো আইএস জঙ্গিদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে বেছে নিয়েছেন অভিনব এক উপায়৷ পুরোনো জুতা সংগ্রহ করে তার নীচে জুতার পরিত্যক্ত ফিতা, বোতাম ইত্যাদি দিয়ে ফুটিয়ে তুলছেন আইএস জঙ্গিদের চেহারার আদল৷ আকীল খ্রীফ মনে করেন, আইএস জঙ্গিদের স্থান জুতার নীচেই হওয়া উচিত৷
ছবি: Armend Nimani/AFP/Getty Images
বৈমানিককে পুড়িয়ে মারা এবং জর্ডানের ‘প্রতিশোধ’
আটক নারী যোদ্ধাকে মুক্তি না দেয়ায় জর্ডানের বৈমানিক আইমান মুয়াত আল-কাসেসবেহ-কে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে মারে আইএস৷ ক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা ব্যবস্থা নিতেও দেরি করেনি জর্ডান৷ আইমান মুয়াত আল-কাসেসবেহ-কে (ওপরের ছবি) হত্যা করে আইএস ভিডিও প্রকাশের পরই তাদের নারী যোদ্ধা সাজিদা আল-রিশোয়াই ও আরেক কর্মীকে ফাঁসিতে ঝোলায় জর্ডান সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Jordan News Agency
8 ছবি1 | 8
কারণ আইএস-এর তোলা ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করার মাধ্যমে সংবাদমাধ্যম এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে তার পছন্দমতো ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সাহায্য করছে৷ আইএস মোটেই জনসাধারণের হৃদয় জয় করতে চায় না৷ আইএস তার ক্ষমতা তুলে ধরতে চায়৷ আইএস ভয় দেখাতে চায় – বিশেষ করে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী বা অন্য যে কোনো শক্তিকে, যারা ‘ইসলামিক স্টেট'-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা ভাবছে৷ আইএস তার প্রতিপক্ষের মনোবল ভেঙে দিতে চায়৷ তাদের বার্তার সারমর্ম হলো ‘‘আমাদের কাছে আসার চেষ্টা করলে কী পরিণাম হয়, তা নিজেরাই দেখে নাও৷'' এতে কাজও হচ্ছে৷ গত বছর তিন হাজারেরও কম যোদ্ধা নিয়ে আইএস বিনা বাধায় ইরাকের মোসুল শহর দখল করতে সক্ষম হয়েছে৷ তাদের ভয়ে ইরাকি সেনাবাহিনীর তিনটি ডিভিশন তাদের অস্ত্রশস্ত্র, সাজসরঞ্জাম ফেলে রেখে পলায়ন করেছিল৷ জর্ডানের বন্দি পাইলটের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত আইএস-এর উপর বিমান হামলা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছিল৷
চাই সংবাদ পরিবেশনের নতুন নীতিমালা
আইএস-এর তৈরি ছবি ও ভিডিও প্রচারের পরিণতি হিসেবে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় সমাজের মূল স্রোত থেকে কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছে৷ তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট'-এর সঙ্গে ইসলাম ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই৷ তারা শুধু ধর্ম থেকে ফায়দা তুলছে, সেটিকে নোংরা, বিকৃত করে তুলছে৷ তা সত্ত্বেও নৃশংস দৃশ্যের ছবি ইসলাম-বিদ্বেষ আরও বাড়িয়ে তুলছে৷ সমাজে একঘরে হয়ে পড়লে কী ঘটতে পারে, তারও দৃষ্টান্ত স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷ যেমন জার্মানি থেকে অনেকে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর যোদ্ধা হিসেবে যোগ দিয়েছে৷ এমন প্রবণতা এখনো তীব্র আকার ধারণ না করলেও অবাস্তব নয়৷
সংবাদমাধ্যম ও জনসংযোগের নিখুঁত কৌশলের সাহায্যে আইএস লড়াই না করেই সংগ্রামে জিতে বসে আছে৷ বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে অনেকেই আইএস-এর পেশাদারি ‘পাবলিক রিলেশনস'-কে পাত্তা দেয়নি৷ সন্ত্রাসবাদীরা সব কিছু নিখুঁতভাবে গুছিয়ে নিয়েছে৷ তাদের কাছে লেখক, সম্পাদক, ক্যামেরাম্যান – সব আছে৷ মুক্ত সমাজে সংবাদ মাধ্যম কী ভাবে কাজ করে, আইএস তা ভালোভাবে রপ্ত করেছে৷ অর্থাৎ তারা জানে, সবাই প্রতিনিয়ত চাঞ্চল্যকর ‘স্টোরি'-র খোঁজে ছুটছে৷ আইএস ও তাদের জাতভাইরা সংবাদমাধ্যমের জগতকে এবার সংবাদ পরিবেশন সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা রচনা করতে বাধ্য করছে, যাতে কেউ আর তাদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ না করে৷ এখন তার সময় এসে গেছে৷
আইএস বিরোধী লড়াইয়ের আঁচ জার্মানিতে
গত জুন মাসে ইরাকের মোসুল দখল করে নেয় ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস)৷ চরমপন্থি ইসলামি সংগঠনটির লক্ষ্য, মধ্যপ্রাচ্যের একটা অংশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা৷ এদিকে আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আঁচ লেগেছে জার্মানিতেও৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
জার্মানিতে সংঘর্ষ
সুদূর ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের তৎপরতার আঁচ জার্মানিতেও দেখা যাচ্ছে৷ উত্তরের হামবুর্গ ও সেলে শহরে মঙ্গলবার (০৭.১০.১৪) কুর্দি ও ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে উগ্রপন্থি মুসলমানদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Markus Scholz
গনসচেতনতার উদ্যোগে বাধা
জার্মানিতে বসবাসরত কুর্দি ও ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষ সিরিয়া ও ইরাকে আইএস জঙ্গিদের তৎপরতা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়াতে গত কয়েক মাস ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করেছে৷ কখন উগ্রপন্থিরা তাদের বাধা দিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/Alexander Koerner
কোবানিতে তীব্র লড়াই
এদিকে সিরিয়ার কোবানি বা আইন আল-আরব শহরে আইএস জঙ্গিদের ব্যাপক হামলা চলছে৷ প্রাণ বাঁচাতে এক লাখেরও বেশি সিরীয় কুর্দি এলাকা ছেড়েছে৷ অধিকাংশই আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশ তুরস্কে৷ আইএস জঙ্গিদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কুর্দিদের আধা সামরিক বাহিনী ওয়াইপিজি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/EPA/SEDAT SUNA
আপাতত রক্ষা
কুর্দি এই নারী তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে আইন আল-আরব থেকে পালিয়ে এসেছেন৷ সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহরটিতে আইএস-এর হামলা তীব্র হওয়ার পরপরই তাঁরা তুরস্কে আশ্রয় নেন৷
ছবি: DW/Alice Martins
আতঙ্ক
তখনও আইন আল আরব সীমান্তে চলছে তীব্র লড়াই৷ এই কুর্দি পরিবার আইন আল-আরব থেকে এসে তুরস্কের সীমান্তে অপেক্ষা করছে৷ ইরাকে কুর্দি নারীদের আইএস যেভাবে তুলে নিয়ে বিক্রি করেছে, তাড়াতাড়ি পালাতে না পারলে তাঁদেরও একই পরিণতি হতে পারে এই আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁদের৷
ছবি: DW/Alice Martins
অসহায়ত্ব
তুরস্কেও ভালো নেই আইন আল-আরব ছেড়ে আসা কুর্দিরা৷ খাবারদাবার, এমনকি খাওয়ার পানিও ঠিকমতো জোটে না৷ একটি সংগঠন তাই চাঁদা তুলে পানির বোতল কিনে এনে বিতরণ করছে শরণার্থীদের মাঝে৷
ছবি: DW/Alice Martins
দীর্ঘ অপেক্ষা
প্লাস্টিকের ব্যাগে কিছু খাবার নিয়ে এসেছেন একজন৷ আইন আল-আরব ছেড়ে আসা সিরীয়দের সে খাবারগুলো দিতে চান৷ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে্ তুরস্কের সেনাবাহিনী৷ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে৷ ওদিকে খাবারের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে শরণার্থীরা৷
ছবি: DW/Alice Martins
যাত্রী চাই
সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে তুর্কি সরকার৷ এক মিনিবাস চালক তাই যাত্রীর অপেক্ষায়৷ শরণার্থীদের কেউ যদি তাঁর মিনিবাসে ওঠেন, তাতে নিজের তো সামান্য কিছু আয় হবেই, শরণার্থীদেরও উপকার হবে৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ সিরীয় তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে৷
ছবি: DW/Alice Martins
মধ্যপ্রাচ্যে কর্তৃত্ব চায় আইএস
আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে আইএস বা আইসিস-এর একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ ২০০৬ থেকে ২০০৭-এর দিকে ইরাকে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াই চলছে তখনই আইএস-এর জন্ম৷ সংগঠনটির লক্ষ্য সিরিয়া, ইরাক, লেবানন, ফিলিস্তিন এবং জর্ডান মিলিয়ে বেশ বড় একটা অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আইএস-এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ আর ইরাকে নুরি আল-মালিকির সাবেক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট বিদ্রোহীদেরই পাশে ছিল৷ সিরিয়ায় ন্যাশনাল কোয়ালিশনের মতো কিছু মধ্যপন্থি সংগঠনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে৷ তবে ওবামা সরকার এখন আইএস-এর বিরুদ্ধে৷ জঙ্গি সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার নিয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় চলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Matthew Bruch
এবার আইন আল-আরব?
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আইন আল-আরব সাধারণের কাছে ‘কোবানি’ নামেই পরিচিত৷ তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের এ শহরের একটা অংশ এখন আইএস-এর দখলে৷ এবার কি তবে আইন আল-আরবও দখল করে নেবে আইএস? তারপর?