সংলাপে নতুন নাটক
২৫ নভেম্বর ২০১৩ গত শনিবার রাতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজধানীর গুলশানের একটি বাড়িতে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে গোপনে বৈঠক করেন৷ এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয় রবিবার৷ আর রবিবারই তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এই বৈঠকের কথা স্বীকার করেন এবং বলেন, এ ধরণের বৈঠক আরো হবে৷ কিন্তু বৈঠকের কথা অস্বীকার করেন মির্জা ফখরুল৷ বিএনপি নেতা হান্নান শাহ প্রথমে বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও, পরে বিবৃতি দিয়ে তা অস্বীকার করেন৷ এ ব্যাপরে চানতে চাইলে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, পত্র-পত্রিকার খবর এবং কয়েকটি সূত্র থেকে তিনি বৈঠকের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছিলেন৷ তবে মির্জা ফখরুলকে তিনি ফোন করলে উনি ঐ বৈঠকের কথা অস্বীকার করেন৷ তাই তিনিও বিবৃতি দিয়ে বৈঠকের কথা প্রত্যাহার করেছেন৷ আসলেই বৈঠক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে দুই মহাসচবি যৌথ বক্তব্য দিলেই সব কিছু পরিষ্কার হবে৷ তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এখন পর্যন্ত ঐ বৈঠক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি৷
প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীর ফোনালাপের পর, নানা নাটকে দুই নেত্রীর সংলাপ ভেস্তে যায়৷ এরপর মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপের কথা ওঠে৷ বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে সংলাপের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন৷ সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন৷ আর তারপরই শনিবার রাতে দুই মহাসচিবের বৈঠকের কথা শোনা গেল৷
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, যেখানে পুরো জাতি উত্কণ্ঠার মধ্যে রয়েছে সেখানে এত গোপনীয়তা এবং রাখঢাকের কিছু নেই৷ বৈঠকের কথা স্বীকার করলেই দেশের মানুষ বৈঠকের বিষয় জেনে যাবে, এমন নয়৷ তিনি বলেন, সংলাপের সফলতার জন্য কিছু বিষয় আগে প্রকাশ নাও করা হতে পারে৷ তাই বলে বৈঠকের খবর অস্বীকার করার কিছু নেই৷
ড. ইফতেখার মনে করেন, দুই মহাসচিবের যে বৈঠক হয়েছে তা নিশ্চিত৷ তাই এখন দ্রুতই সংলাপ এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন৷ এতে জয় পরাজয়ের কোনো বিষয় নেই৷ দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নেয়াই বড় কথা৷
এই বৈঠক নিয়ে স্বীকার-অস্বীকার পর্ব চললেও বৈঠক যে হয়েছে তা দুই দিক থেকেই নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপির প্রস্তাব এবং তা নিয়ে সরকারের জবাব পর্যলোচনা করছে দুই দলই৷ আর নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান নিয়ে চলছে টানাহ্যাঁচড়া৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকলেও তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা এই সময়ে স্থগিত রাখা নিয়ে নতুন একটি ফরমুলাও এখন আলোচনা হচ্ছে৷
এদিকে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার জন্য প্রস্তুত থাকলেও তারা কিছুটা সময় নিচ্ছেন৷ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ রবিবার বলেছেন যে, তারাও চান নির্বাচন নিয়ে একটা রাজনৈতিক সমঝোতা হোক৷ তাদের হাতে সময় আছে৷ তাই তারাও একটু দেখে শুনে তফসিল ঘোষণা করতে চান৷