জার্মানির সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগে কোনো আসন না থাকলেও আলোচনা থেমে নেই ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি) বা মুক্ত গণতন্ত্রী দল নিয়ে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগে কোনো আসন না থাকলেও আলোচনা থেমে নেই ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি) বা মুক্ত গণতন্ত্রী দল নিয়ে৷
সম্প্রতি দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যের মোড়ঘোরানো নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে চলে এসে চমক দেখিয়েছে তারা৷ এবার দৃষ্টি দিয়েছে রাজধানী বার্লিনের দিকে৷
ছোট দল আর সীমিত জনসমর্থন নিয়েও একটি দল কীভাবে ক্ষমতার চাবি নিজেদের মতো করে ঘোরাতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এফডিপি৷
আগামী সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের পর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রক্ষণশীল দল নিজেদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দেশ চালাবে – এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে৷ তাই তারা যদি সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডির সাথে আরেকটি মহাজোট সরকার না করতে চায়, তাহলে হয়তো দৃষ্টি দিতে হবে ব্যবসা-বান্ধব মধ্যপন্থি এফডিপির দিকে৷
অতীতে উদার হিসাবে পরিচিত এই দলটির চ্যান্সেলর কনরাড আডেনাউয়ার থেকে হেলমুট কোল হয়ে ম্যার্কেল পর্যন্ত রক্ষণশীল নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে৷
জার্মানির যে সাত রাজনৈতিক দলের নামও শোনেননি আপনি
জার্মানরা শুধু সিডিইউ বা এসপিডি নয়, কিছু ছোট এবং বিরল দলকেও ভোট দিতে পারে৷ এই যেমন, প্রাণী সুরক্ষা পার্টি কিংবা মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি৷ ভাবছেন, এরা কারা? চলুন দেখে নিই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
প্রাণী সুরক্ষা দল
জার্মানিতে প্রাণী অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টরা সুযোগ পেলে পুরো হাইওয়ে বন্ধ করে দেন যাতে ব্যাঙেরা নিরাপদে রাস্তা পার হতে পারে৷ এমন দেশে তাই ‘অ্যানিমেল প্রোটেকশন পার্টি’ বা প্রাণী সুরক্ষা দল থাকবে না, তা কি হতে পারে? তবে গ্রিন পার্টির কারণে এ দলের পালে হাওয়া কম থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
দ্য রিপাবলিকানস
ব্যাপারটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর৷ জার্মানির রয়েছে নিজস্ব রিপাবলিকান পার্টি, নাম আরইপি৷ তবে এই দলের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো সম্পর্ক নেই৷ জার্মান রিপাবলিকনরা হচ্ছেন ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী, যারা নিজেদের ‘রক্ষণশীল দেশপ্রেমিক’ এবং দেশের ‘সংস্কৃতি এবং আত্মপরিচয়’ রক্ষায় লড়াইরত বলে মনে করেন৷
ছবি: DW
দ্য পার্টি
হ্যাঁ, এই দলের নাম ‘দ্য পার্টি’৷ জার্মানির স্যাটায়ার ম্যাগাজিন ‘টাইটানিক’ এর সম্পাদকরা ২০০৪ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ দলটির প্রধান হচ্ছেন মার্টিন স্যোনেবর্ন (ছবিতে)৷ ২০১৪ সালে তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে দলটির জন্য একটি আসন নিশ্চিত করেন৷ ভবিষ্যতে দলটির অবস্থা আরো ভালো হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/Sven Simon/M. Ossowski
গণভোট দল
জার্মানির রেফারেন্ডাম পার্টি বা গণভোট দলের কাছে সুইজারল্যান্ড এক বিশাল অনুপ্রেরণা৷ দলটি চায় দেশের সব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গনভোটের মাধ্যমে জনগণ নেবে৷ সুইজারল্যান্ডে ২০১৬ সালে তেরোটি গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি
জার্মানির এমএলপিডি একটি ছোট দল, যদিও দেশটির অর্ধেক মানুষ এক সময় কমিউনিস্ট ছিলেন৷ মানে ১৯৪৯ থেকে ১৯৮৯ সাল অবধি যখন জার্মানি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল৷ তৎকালীন পূর্ব জার্মানি তখন শাসন করেছিল সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি৷ বর্তমানে উগ্র বামপন্থি এমএলপিডি’র জার্মান রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Link
ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি
‘অ্যালায়েন্স সি - ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি’ একটি ক্রিশ্চিয়ান পার্টি, যেটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে৷ খ্রিষ্টান-মৌলবাদীদের একটি দল এবং শ্রমিক, পরিবেশ এবং পরিবারভিত্তিক একটি দল একত্র হয়ে এই দল গড়ে৷ বাইবেলের মান রক্ষা করে দেশ পরিচালনা করতে চায় এই দল৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. MacDougall
6 ছবি1 | 6
মধ্যপন্থি হওয়ার কারণে সামাজিক গণতন্ত্রীদের সঙ্গেও যায় মুক্ত গণতন্ত্রীরা৷ এফডিপি সামাজিক গণতন্ত্রীদের নির্বাচিত চ্যান্সেলর ভিলি ব্রান্ট এবং হেলমুট স্মিট-এর সময়ে জোট সরকারের অংশীদার ছিল৷ পূর্ব জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টির উত্তরাধিকারী বামদলের সঙ্গে এসডিপির জোট গঠনের বিরুদ্ধে বেশ বড় বিক্ষোভ হয়েছিলো৷ সুতরাং মার্টিন শুলৎসের নেতৃত্বাধীন এসপিডিরও জোট করার জন্য মুক্ত গণতন্ত্রী বা সবুজ দল ছাড়া অন্য উপায় নেই৷
বর্তমানে দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তরুণ চেয়ারম্যান ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার৷ এমনও হতে পারে, তাঁর পছন্দই আঙ্গেলা ম্যার্কেল বা মার্টিন শুলৎসের একজনকে চ্যান্সেলর বানিয়ে দিতে পারে৷
এফডিপি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ?
দলটি টানা ৬৪ বছর সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে৷ তবে ২০১৩ সালে ৫ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় তারা সংসদের প্রতিনিধিত্ব হারায়৷ এর কারণ হিসাবে অনেকাংশে নেতৃত্বকে দায়ী করা হয়৷ ব্যাপকভাবে এমন ধারণাও রয়েছে যে, দলটি কেবল ক্ষমতায় থাকতে চায়, আইন প্রণয়নে তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট নীতি নেই৷ ৩৮ বছর বয়স্ক লিন্ডনার এ সব বিষয় থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন৷ সম্ভাব্য জোট সহযোগী নির্ধারণ না করে তিনি রাজনৈতিক অবস্থানের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন৷
এফডিপি কী করতে চায়?
তাদের দুইটা প্রধান নীতি হলো, বেসরকারি খাতে কোনো ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ বা প্রণোদনা থাকবে না৷ বাজার হবে একেবারে উন্মুক্ত৷ ব্যক্তির জীবনে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে৷
গত ৩০ এপ্রিল পার্টি কনফারেন্সে প্ল্যাটফর্ম অনুমোদন হয়েছে৷ সেখানে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়, ডিজিটাইজেশন এবং শিক্ষা৷ তারা দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স নামে একটা মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করার অঙ্গীকার করছে৷ স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়৷
মুক্ত গণতন্ত্রীরা দ্বৈত নাগরিকত্বকে সমর্থন করে৷ সিডিইউ-সিএসইউ সেটা করে না৷ এফডিপি তৃতীয় প্রজন্মে এসে অভিবাসীদের এক নাগরিকত্ব রাখার পক্ষে৷ উদ্বাস্তু সংকট মোকাবিলায় ম্যার্কেল সরকারের পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেছেন লিন্ডনার৷ তিনি বলেছেন, ‘এই মানুষদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুবিধা দেয়া হয়নি'৷ আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হওয়ার সংশ্লিষ্টদের দ্রুত নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান৷
সকল দলের শীর্ষ প্রার্থীরা
জার্মানির সংসদীয় নির্বাচনের আর বেশি বাকি নেই৷ ফলে বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতারা এখন শুধু তাদের ভালো দিকটাই সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করছেন৷ তবে প্রার্থীদের কিছু অজানা দিকও রয়েছে৷
ছবি: DW
চ্যান্সেলর কে হবেন?
জার্মানির সবচেয়ে বড় দল দুটি হচ্ছে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী (সিডিইউ) এবং সামাজিক গণতন্ত্রী (এসপিডি)৷ স্বাভাবিকভাবেই সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে এই দু’টি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী থেকে কোনো একজন চ্যান্সেলর হবেন ধরে নেয়া যায়৷ তাসত্ত্বেও এই পদে অন্যান্য বড় দলগুলোরও প্রার্থী রয়েছে৷ চলুন চ্যান্সেলর প্রার্থীদের জানা-অজানা দিকগুলো জেনে নেয়া যাক৷
ছবি: DW
ক্ষমতার উচ্চশিখরে
৫৯ বছর বয়সি আঙ্গেলা ম্যার্কেল গত আট বছর ধরে জার্মানি শাসন করছেন৷ পূর্ব জার্মানির অন্যতম এক গণতান্ত্রিক দলে ১৯৮৯ সালে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়৷ এরপর তিনি রক্ষণশীল দল সিডিইউ-তে যোগ দেন৷ চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেল তরুণ জার্মানদের বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা বাতিল করেছেন এবং পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইতি টানার ব্যবস্থা করেছেন৷
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images
ভ্রমণ, রান্না, শাসন
ম্যার্কেলকে পৃথিবীর অন্যতম প্রধান ক্ষমতাধর নারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ এই নারী প্রকৃতি ভালোবাসেন৷ তাঁর প্রিয় দু’টি শখ হচ্ছে স্বামীর সঙ্গে গ্রামের পথ ধরে হাঁটা এবং রান্না করা৷ ম্যার্কেল বড় হয়েছেন সাবেক পূর্ব জার্মানিতে৷ পদার্থ বিদ্যায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সত্যিকার অর্থেই কঠিন প্রার্থী...
৬৬ বছর বয়সি পেয়ার স্টাইনব্রুক চলতি নির্বাচনে এসপিডি-র চ্যান্সেলর প্রার্থী৷ ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি ম্যার্কেলের অধীনে অর্থমন্ত্রী ছিলেন৷ স্টাইনব্রুক ভবিষ্যতে আর কখনো ম্যার্কেলের অধীনে কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছেন৷ এই অর্থনীতিবিদ নির্বাচনি প্রচারে জার্মানিতে একটি ন্যূনতম মজুরি কাঠামো এবং বাড়ি ভাড়া নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট নীতির কথা বলেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
...কৌশলের দিকে গুরুত্ব
মাত্র ছয় বছর বয়স থেকে দাবা খেলছেন পেয়ার স্টাইনব্রুক৷ কোনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও একটি দাবা কম্পিউটারকে হারানোর চেষ্টা করছেন তিনি৷ এই এসপিডি প্রার্থী একসময় বলেছিলেন, দাবা হচ্ছে এমন এক খেলা যেখানে একজন ব্যক্তি সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ভালো করার চেষ্টা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
একটি অসম যৌথ নেতৃত্ব
সবুজ দলের দুই প্রার্থী কার্যত সবাইকে প্রতিনিধিত্ব করছেন৷ ৪৭ বছর বয়সি কাটরিন গ্যোরিং-একার্ট মধ্যবিত্ত আর ৫৯ বছর বয়সি ইয়ুর্গেন ট্রিটিন দলের বামপন্থীদের প্রতিনিধি৷ কাটরিন এসেছেন পূর্ব জার্মানি থেকে ইয়ুর্গেন পশ্চিম জার্মানির৷ উভয়েই জার্মানির উচ্চবেতনধারীদের উপর উচ্চকর আরোপের পক্ষে এবং দু’জনই ‘জেনারেল মেম্বারশিপ’ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন – জার্মানিতে প্রথমবারের মতো এটা ঘটেছে৷
ছবি: Reuters
বাইরে সরব, বাড়িতে নিরব
সবুজ দলের শীর্ষ প্রার্থী ইয়ুর্গেন ট্রিটিন বেশ স্থির স্বভাবের মানুষ৷ এমনকি সম্প্রতি এক নৌকা দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় থাকলেও তিনি খুব একটা উদ্বিগ্ন হননি৷ সাবেক এই পরিবেশমন্ত্রী কোনো রকম বাড়তি নিরাপত্তা ছাড়াই মিছিলে সামিল হয়ে পরিবেশ বাঁচাতে এবং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পছন্দ করেন৷ এই সমাজবিজ্ঞানী বাড়িতে অবশ্য নিরব থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবুজ নর্তকী
অন্যদিকে কাটরিন গ্যোরিং-একার্ট নাচ শিখেছেন বাবার কাছ থেকে৷ বাবার নাচের স্কুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছেন৷ আর তখন থেকেই বড় আয়োজনে সাবলিলভাবেই অংশ নেন তিনি৷ ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তানের জননী ক্যাথরিন৷
ছবি: Getty Images
ব্যবসা, অর্থনীতি, ব্রুডারলে
মুক্তগণতন্ত্রী দলের (এফডিপি) শীর্ষপ্রার্থী রাইনার ব্রুডারলের বয়স এখন ৬৮৷ তিনি পুরোপুরি ব্যবসামনষ্ক রাজনীতিবিদ৷ অর্থমন্ত্রী হিসেবে কেরিয়ার শুরুর পর থেকে তাঁর কাজে অর্থনীতিই প্রাধান্য পাচ্ছে৷ রাজ্য নির্বাচনগুলাতে এফডিপির শোচনীয় হারের পর দলের সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন ব্রুডারলে৷ বর্তমানে তিনি জার্মান সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে দলের নেতা হিসেবে রয়েছেন৷
ছবি: Getty Images
ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা নয়...
জুন মাসের মাঝামাঝি সময় এক দুর্ঘটনায় ব্রুডারলের এক পা এবং এক হাত ভেঙে যায়৷ নির্বাচনের প্রাক্কালে এই দুর্ঘটনা তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল, দ্রুত সেরে উঠতে চেয়েছিলেন তিনি৷ সপ্তাহখানেক পুর্নবাসন কেন্দ্রে কাটিয়ে দ্রুত ফিরেছেনও ব্রুডারলে৷ এই তেজস্বী রাজনীতিবিদ তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ব্যক্তিগত রাখতেই পছন্দ করেন৷ যতটুকু সবাই জানে তাহচ্ছে তিনি বিবাহিত, ইভানগেলিকাল এবং মাইনৎসের বাসিন্দা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাম এবং আরো বামপন্থী
বাম দলের উপ-প্রধান সারা ভাগেনক্নেষ্ট (৪৪) এবং প্রধান গ্রেগর গিসি (৬৫) একে অপরকে বিশেষ পছন্দ করেন না৷ একসঙ্গে কাজ করাও কোনো আগ্রহ তাঁদের মধ্যে নেই৷ তাসত্ত্বেও দু’জনই দলের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন৷ এই দু’জনকে ঝগড়া থেকে দূরে রাখতে দলের অপর ছয় প্রার্থী চেষ্টা করছেন৷
ছবি: dapd
বামপন্থীর ব্যক্তিজীবন
সারা ভাগেনক্নেষ্টকে নিঃসঙ্গ মনে করা হয়, তবে তিনি তাঁর ব্যক্তিজীবনের নানা দিক বাম দলের সাবেক চেয়ারম্যান অস্কার লাফনটেনের সঙ্গে শেয়ার করেন৷ নিজের একাকী জীবন প্রসঙ্গে সারার বক্তব্য হচ্ছে, ‘‘পড়ার এবং ভাবার জন্য আমার সময় এবং স্বাধীনতা প্রয়োজন৷’’ পিএইচডিধারী এই রাজনীতিবিদ আসলে শিক্ষাজীবনে বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
একজন সুবক্তা
ছোটবেলায় সোভিয়েত চলচ্চিত্রের হাস্যরসাত্মক বিভিন্ন চরিত্রের প্রতি আসক্ত ছিলেন গ্রেগর গিসি৷ বর্তমানে তিনি থিয়েটার নিয়ে আলোচনা করতে, গদ্য পড়তে আর ক্ল্যাসিক মিউজিক শুনতে ভালোবাসেন৷ এই প্রশিক্ষিত আইনজীবী এখন খানিকটা সতর্ক জীবনযাপন করছেন৷ তাঁর হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
13 ছবি1 | 13
স্বচ্ছলদের দল এফডিপি কর ছাড়েও খুশি হয়৷
এফডিপির ইতিহাস ভাগ্য বদলের ইতিহাস৷ দশকের পর দশক তারা সরকারে অংশ নিয়েছে৷ ‘কিংমেকার' হিসাবে তারা তাদের প্রভাব দেখাতে চায়৷ ১৯৮২ সালে দলটির মন্ত্রী সামাজিক গণতন্ত্রীদের চ্যান্সেলর স্মিটকে ত্যাগ করে৷ রক্ষণশীলদের কোল-এর উত্থানে ভূমিকা রাখেন৷ হেলমুট কোল-এর সঙ্গে এফডিপি থেকে হওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স-ডিট্রিশ গেনশারকে দুই জার্মানির একত্রীকরণের অনুঘটক মনে করা হয়৷
১৯৯৮ সালে এসপিডির গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার সবুজ দলের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় গেলে ২৯ বছর পর সরকারের বাইরে চলে যায় এফডিপি৷ এ সময় দলটি পরের নির্বাচনে ১৮ শতাংশ ভোট পাওয়ার লক্ষ্যও নির্ধারণ করে৷
২০০৯ সালের নির্বাচনে দলটি ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পায় এবং ম্যার্কেলের সরকারে যোগ দেয়৷ তবে এ সময় সবকিছু ভালোভাবে কাটেনি৷
দলটি নেতা গিডো ভেস্টারভেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন৷ তবে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়৷ প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই বিবিসির এক সাংবাদিককে জার্মান ভাষায় কথা বলতে বলে তিনি সমালোচিত হন৷ একের পর এক স্থানীয় নির্বাচনে হারতে থাকে তারা৷ ২০১৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে এসে দলটি পায় ৪ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট৷ যাতে দলটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব হারায়৷ এরপরই লিন্ডনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷
এফডিপির সামনের সুযোগ
মুক্ত গণতন্ত্রীদের অনেক সদস্য রয়েছে৷ কিন্তু মানুষের জন্য তাদের বার্তা কী? বর্তমান নেতা লিন্ডনার গণমাধ্যম বান্ধব এবং তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে৷ কিন্তু জনগণকে একতাবদ্ধ করার মতো ইস্যুর খরায় রয়েছে দলটি৷
অবশ্য সম্প্রতি জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ার নির্বাচনে এফডিপি সফলতা পেয়েছে৷
রক্ষণশীলদের সাথে এফডিপির দ্বি-দলীয় জোট সম্ভব৷ সেটা হলে চার বছর পর ক্ষমতায় ফিরবে দলটি৷ সবুজ দলের সঙ্গে মিলে রক্ষণশীল বা সামাজিক গণতন্ত্রী যে কারো সঙ্গে তারা ক্ষমতায় ফিরতে পারে৷ অবশ্য সবুজ দলের সঙ্গে তাদের ঐতিহ্যগত প্রতিযোগিতা সেই সম্ভবনাকে কমিয়ে দেয়৷ একটা সময় তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি ছিল এফডিপি৷ সবুজ দল এই স্থানটি কেড়ে নিয়েছে৷ এটা তারা কোনোদিনই ভুলতে পারেনি৷
সবকিছুর মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে মুক্ত গণতন্ত্রী দল এফডিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷