অবশেষে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হলো মক্কার প্রধান মসজিদের দুয়ার। সেই সঙ্গে উমরাহ পালনকারীদের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
সাত মাস পরে সৌদি আরবের নাগরিক ও বাসিন্দাদের জন্য খুলে দেওয়া হল মসজিদুল হারাম৷ প্রশাসন জানিয়েছে, রোববার ফজরের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মসজিদটি সবার জন্য খুলে দেয়া হয়েছে৷
এর আগে গত মার্চে করোনা প্রকোপ শুরুর পর থেকে মসজিদুল হারামে জামাত আদায় বন্ধ করা হয়৷ সেই সঙ্গে সবার প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়৷
গত ৬ অক্টোবর সীমিত পরিসরে উমরাহ পালনের অনুমতি দেয়ার মাধ্যমে খুলে মসজিদটির দুরারও৷ নিয়ম করা হয়েছিল, এক দিনে ছয় হাজার মানুষ উমরাহ পালন করতে পারবেন। রোববার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ হাজার করা হয়েছে।পরিকল্পনা অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে এক নভেম্বর থেকে বিদেশিরাও উমরাহ পালনের সুযোগ পাবেন৷
করোনাকালে পবিত্র হজ, প্রস্তুত মক্কা
করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে৷ এর মাঝেই পালিত হবে পবিত্র হজ৷ ছবিঘরে দেখে নেয়া যাক কেমন হতে চলেছে এবারের হজ, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিই বা কেমন...
ছবি: AFP/Saudi Ministry of Hajj and Umra
থাকছে না বিশাল জমায়েত
এবার হজ হচ্ছে খুব সীমিত পরিসরে৷গত বছরও যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালন করেছিলেন, সেখানে এবার এ সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র ১০ হাজার জন৷ তাদের সবাই সৌদি আরবে অবস্থানরত৷ অর্থাৎ, এবার সৌদি আরবের বাইরে থেকে গিয়ে কাউকে হজ করতে দেয়া হচ্ছে না৷ তবে যারা সুযোগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসী৷ ওপরের ছবিটি করোনার আগমনের আগের জমজমাট হজ আয়োজনের৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Sahib
নিয়মের কড়াকড়ি
কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার৷হজের জন্য মনোনীতদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে৷ হজ শুরুর আগে দুই ধাপে কোয়ারান্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সবার জন্য৷ ওপরের ছবিতে এক কর্মীকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাসম্পন্ন গেট দিয়ে পবিত্র কাবা শরিফের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক
হজের সময় মাস্ক পরতে হবে সবাইকে৷ এ কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: Reuters/G. Essa
প্লাস্টিকের প্যাকেটে জমজমের পানি
সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য জমজমের পবিত্র পানি পানেও থাকছে নিয়মের কঠোরতা৷ এবার সবার জন্য জমজমের পবিত্র পানি সরবরাহ করা হবে প্লাস্টিকের প্যাকেটে৷ সেই পানিই পান করতে হবে সবাইকে৷
ছবি: Imago Images/photothek/T. Trutschel
জীবানুমুক্ত কংকর নিক্ষেপ করবেন সীমিত সংখ্যক
বিশেষ পরিস্থিতির কারণে শয়তানকে পাথর ছোঁড়ার আনুষ্ঠানিকতাতেও থাকছে নতুনত্ব৷ এবার সর্বোচ্চ ৫০ জন হাজি এক সঙ্গে পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন। তবে সে পাথর সাধারণ কোনো পাথর নয়৷ এবার জীবাণুমুক্ত পাথর সরবরাহ করা হবে হাজিদের৷
ছবি: AFP
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম অনুপস্থিত
পবিত্র হজের খবর প্রচারেও পড়েছে করোনার প্রভাব৷ এবার কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে হজ কাভার করার অনুমতি দেয়নি সৌদি সরকার৷
ছবি: Getty Images/AA/A. Jadallah
হাজিরা যাচ্ছেন
সৌদি কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (২৯ জুলাই) হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা৷ তাই হাজিরা হাজির হচ্ছেন মক্কায়৷ ছবিতে হজ করতে জেদ্দাহর কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে নামা কয়েকজন হাজি৷
ছবি: picture-alliance/AP/Saudi Ministry of Media
জীবাণুমুক্ত লাগেজ
মক্কার হোটেলে উঠতে শুরু করেছেন হাজিরা৷ সেখানেও থাকছে করোনা প্রতিরোধের বিশেষ ব্যবস্থা৷ ছবিতে এক হোটেলে হাজিদের লাগেজ জীবাণুমুক্ত করার দৃশ্য৷
ছবি: picture-alliance/AP/Saudi Ministry of Media
স্বাস্থ্য পরীক্ষা
এক হাজির তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন মাস্ক পরা এক সৌদি চিকিৎসক৷ এমন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে সব হাজিকে৷
ছবি: AFP/Saudi Ministry of Hajj and Umra
সারি সারি তাঁবু
পবিত্র আরাফাতের ময়দান ও মিনার মাঝে হাজিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে তাঁবু৷ তাঁবুর এই সারির ছবিটি গত ২৬ জুলাইয়ের৷
ছবি: AFP
10 ছবি1 | 10
উমরাহ পালনকারীরাসহ মসজিদুল হারামে বর্তমানে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায়ের অনুমতি পাবেন৷ এক নভেম্বর থেকে তা ৬০ হাজারে উন্নীত করা হবে৷
আরব প্রশাসন জানিয়েছে, যে সমস্ত দেশে করোনার প্রকোপ কমেছে, সেই সমস্ত দেশের নাগরিকরাই উমরাহ পালনে অগ্রাধিকার পাবেন। করোনার প্রকোপ কমার কারণেই নতুন এই নিয়মগুলি চালু হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
ইউরোপে অবশ্য করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চালু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন দেশে নতুন করে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। বহু জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের পরে কার্ফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে করোনার কড়াকড়ি একেবারেই শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। আরবেআপাতত করোনার প্রকোপ যথেষ্ট কম বলেই সে দেশের প্রশাসন দাবি করেছে। তারই জেরে মক্কা, মদিনা সকলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত সাত মাস ধরে বিভিন্ন ধর্মীয় আচারগুলো কড়াকড়ির সঙ্গে পালিত হয়েছে সৌদি আরবে। সীমিত সংখ্যক মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দেয়া হয়৷ সুযোগ ছিল না বিদেশ থেকে কারো অংশ নেয়ার।