বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কত বড় প্রযুক্তির ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ৷ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মনে করেন, সমাজের সকল স্তরে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হলে সেই ঝুঁকি কমবে৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে : ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রয়োজন হলো কেন?
জুনাইদ আহমেদ পলক : বাংলাদেশে আমরা যদি কর্মসংস্থান শিফট করতে চাই বা সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই, শহর-গ্রামের বৈষম্য দূর করতে চাই, তাহলে প্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই৷ যদি প্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চাই, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশের বিকল্প নেই৷
দুর্নীতি রোধে এটা কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে?
দুর্নীতি রোধে ডিজিটাল বাংলাদেশ (গড়ার প্রয়াস) অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে৷ ২০০৮ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের কাজ শুরু করেন, তখন আপনারা দেখেছেন, বাংলাদেশ পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে৷ এখন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আমাদের সময়, অর্থ-দুর্নীতি সবই কিন্তু কমে এসেছে৷ আগে কিছু করতে হলে মানুষকে শারীরিকভাবে সেখানে উপস্থিত হতে হতো৷ এখন অটোমেশনের ফলে শারীরিক উপস্থিতি যেমন কমছে, তেমনি দুর্নীতিও কমছে৷ গত ৯ বছরে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সারা বিশ্বে যদি আমরা লক্ষ্য করি, তাহলে দেখবো, দুর্নীতির সুচক অনেকটা সম্মানজনক জায়গায় এসেছে৷ ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন, তখন সেটা ছিল তার একার স্বপ্ন৷ এই ৯ বছর দেশের ১৬ কোটি মানুষ এটাকে আপন করে নিয়েছে৷ এখন এটা সবার স্বপ্ন৷ সবাই এখন এই ভিশনটাকে আপন করে নিয়েছে৷
‘সকল স্তরে প্রযুক্তি নিশ্চিত করলে দুর্নীতি কমবে'
ডিজিটালাইজ করে রাজনীতিকদের দুর্নীতি কি বন্ধ করা সম্ভব?
দুর্নীতি আসলে ব্যবসায়ী বলুন আর রাজনীতিবিদ বলুন, এটা সকলের জন্যই৷ যখন আমরা পুরো প্রক্রিয়াটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারব তখনই আমরা প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতিমুক্ত একটা সমাজ গড়ে তুলতে পারব৷ সমাজের সকল স্তুরে বা সব জায়গায় যত বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারব তত বেশি আমরা দুর্নীতিমুক্ত হতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি৷
আপনি বলছিলেন, ডিজিটালাইজেশনের ফলে দুর্নীতি কমেছে৷ আসলে কি কমেছে?
অবশ্যই৷ আপনি দেখেন, ২০০৮ সালের আগে পরপর ৫ বার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে৷ তখন বলতে গেলে কোনো কিছুতেই প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল না৷ তখন একটা জমির পরচা পেতে শত কিলোমিটার দূরে যেতে হতো এবং দালাল ধরে দুর্নীতির মাধ্যমে সেটা করতে হতো৷ আজকে ২০০ রকমের সেবা আমরা অনলাইনে আনতে পেরেছি৷ এখন এই পরচা, বা শিক্ষাক্ষেত্রে ধরুন বেতন দেয়া এগুলো শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে করতে হয় না৷ আন্তর্জাতিকভাবে দুর্নীতির সূচকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত তো নয়ই, বরং দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হচ্ছে৷
ব্যাংক বা বিভিন্ন অফিস আদালত তো অনেকটাই ডিজিটালাইজড হয়েছে৷ কিন্তু এসব জায়গায় দুর্নীতি তো সেভাবে কমার লক্ষণ দেখছি না৷
আগে তো এটিএম কার্ড ছিল না, মোবাইল ব্যাংকিং ছিল না৷ এখন তো ৫ কোটিরও বেশি মানুষ অনলাইন ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছেন৷ প্রধানমন্ত্রী এখানে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ স্থাপনের মাধ্যমে৷ ব্যাংকিং সেক্টরে এখন কিন্তু অর্ধেক লেনদেন অনলাইনে হচ্ছে৷ এখন হয়ত ব্যাংকিং খাতের কিছু কিছু অনিয়ম সামনে উঠে আসছে, যেটা আগে আসত না৷ এর মানে এই না যে, আগে এই অনিয়মগুলো হতো না৷ আগেও এগুলো হতো, হয়তো বেশি বেশি হতো৷ কিন্তু আমরা সেটা জানতেই পারতাম না৷ এখন ছোট ঘটনাই হোক বা বড় ঘটনাই হোক সরকার দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সেটা প্রতিহত করছে বা চিহ্নিত করছে বা বিচারের আওতায় আনছে৷ তাই জনগনের সামনে সেটা উঠে আসছে৷
ব্যবসা পেতে যেসব দেশ বেশি ঘুস দেয়
দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা টিআই প্রতিবছর দুর্নীতির সূচক প্রকাশ করে৷ মাঝেমধ্যে তারা ঘুস নিয়েও কাজ করে৷
ছবি: Imago/blickwinkel
চুক্তি পেতে
একটি দেশের বড় কোম্পানি অন্য দেশের রাস্তাঘাট, সেতুসহ সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের সুযোগ পেতে অনেকসময় ঘুসের সহায়তা নিয়ে থাকে৷ অর্থাৎ কাজের অর্ডার পেতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে ঘুস দিয়ে থাকে৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা টিআই এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছে৷
ছবি: Imago/Xinhua/Lyu Tianran
ঘুস দাতা সূচক
হ্যাঁ, ১৯৯৯ সালে টিআই প্রথমবারের মতো এই শীর্ষক একটি সূচক প্রকাশ করে৷ এরপর মোট পাঁচবার সূচক প্রকাশ করেছে সংস্থাটি৷ সবশেষটি করেছে ২০১১ সালে৷ সেই সময় ২৮টি দেশকে সূচকের আওতায় নিয়ে আসা হয়৷ এই দেশগুলো বিশ্বব্যাপী পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ লেনদেনের প্রায় ৮০ শতাংশের সঙ্গে জড়িত৷
ছবি: Imago/blickwinkel
রাশিয়া শীর্ষে
অর্থাৎ রুশ কোম্পানিগুলো অন্যদেশের কন্ট্রাক্ট পেতে সবচেয়ে বেশি ঘুসের আশ্রয় নিয়েছে৷ এরপর আছে চীন৷ ২০১০ সালে এই দু’টি দেশের কোম্পানিগুলো নিজ দেশের বাইরে ১২০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বিনিয়োগ করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Litvinenko
অন্যদিক দিয়ে শীর্ষে নেদারল্যান্ডস
ইউরোপের এই দেশের কোম্পানিগুলো অন্যদেশে কার্যাদেশ পেতে সবচেয়ে কম ঘুসের সহায়তা নিয়েছে৷ তারপর ক্রমান্বয়ে আছে সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম আর জার্মানি৷
ছবি: Colourbox/jonnysek
নয়-এ ভারত
সবচেয়ে বেশি ঘুস দেয়া দেশের তালিকায় ভারত আছে নয় নম্বরে৷ এছাড়া ইন্দোনেশিয়া আছে চার আর সৌদি আরব সাত-এ৷
ছবি: Getty Images
কোন খাতে বেশি ঘুস
ঘুস লেনদেন হয় এমন ১৯টি খাতেরও তালিকা করেছে টিআই৷ এতে দেখা যাচ্ছে, সরকারি কাজের চুক্তি পেতে সবচেয়ে বেশি ঘুস লেনদেন হয়৷ এরপরেই আছে নির্মাণকাজ, সেবা, রিয়েল স্টেট, তেল, গ্যাস, মাইনিং ইত্যাদি৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঘুসের নেতিবাচক দিক
টিআই বলছে, বিদেশি কোম্পানিগুলোর ঘুস দেয়ার বিষয়টি বিভিন্ন দেশের মানুষের ভালমন্দের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে৷ এতে করে কন্ট্রাক্ট দেয়ার বিষয়টি পক্ষপাতহীন হয় না, মৌলিক জনসেবার গুনগত মান কমে যায়, প্রতিযোগিতামূলক বেসরকারি খাত গড়ে ওঠার সুযোগ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়৷
ছবি: picture alliance/CTK
৩০ দেশের উপর গবেষণা
বিদেশ বিনিয়োগ বেশি হয় এবং আমদানি বেশি করে এমন বড় ৩০টি দেশের সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৩,০১৬ জন কর্মকর্তার উপর জরিপ করে সূচকটি তৈরি করেছে টিআই৷
ছবি: Imago/blickwinkel
8 ছবি1 | 8
ব্যাংকগুলো তো এখন ডিজিটালাইজড৷ আপনি এখানে দুর্নীতি কমার কথা বলছেন, অথচ আমরা দেখছি এখানে বড় বড় দুর্নীতি হচ্ছে৷
ব্যাংকগুলো এখনো পুরোপুরি ডিজিটালাইজড হয়নি৷ নো ইয়োর কাষ্টমার, এটাকে বলে ইকেওয়াইসি৷ অর্থাৎ ইলেকট্রোনিক নো-ইয়োর কাষ্টমার৷ এটা কিন্তু আমরা খুবই পুশ করছি আইসিটি ডিভিশন থেকে, বাংলাদেশ ব্যাংকে৷ এই ইকেওয়াইসি যেন তারা প্রবর্তন করে৷ এখনো কোনো ব্যাংকেই নো ইয়োর কাষ্টমার প্রবর্তন করা হয়নি৷ এছাড়া যেমন ধরেন ক্রেডিট রিপোর্ট৷ প্রতিটি ব্যাংকে প্রত্যেক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের একটি করে ক্রেডিট রিপোর্ট থাকতে হবে৷ এটা যদি অনলাইনে থাকে তাহলে কেউ লোন নিয়ে আর্থিক জালিয়াতি করতে পারবে না৷ বাংলাদেশে অর্থনীতি এখন সুসংহত, ডিজিটালাইজেশন যেহেতু দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, তাই আমরা নজর দিচ্ছি ইকেওয়াইসি'র দিকে৷ আমাদের উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেখানে তিনি বলেছেন ২০২১ সালে আমরা লেস ক্যাশ সোসাইটির দিকে যাবো৷ ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল, কেনা-কাটা বা ই-কমার্সে ডিজিটাল মানি প্রবর্তনের দিকে যেতে চাচ্ছি৷ এর বাইরে সাইবার সিকিউরিটির দিকে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি৷ আমরা আশা করছি, এই ধরনের অব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির মাধ্যমেই মোকাবেলা করা সম্ভব৷
বাংলাদেশ ব্যাংকে যে টাকা চুরি হলো সেটা তো ডিজিটাল প্রক্রিয়ায়ই হলো?
বিশ্বে এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই বা দেশ নেই যারা বলতে পারেন তারা সাইবার আক্রমনের শিকার হননি বা হচ্ছেন না বা হবেন না৷ কিছুদিন আগে আমরা দেখলাম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানকারী একটি দেশ, তারা হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন৷ আমাদের প্রতিনিয়তই সিকিউরিটির দিকে নজর দিতে হবে৷ এজন্য আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রনয়ণ করতে যাচ্ছি৷ প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটির দিকে আমরা আরো বেশি মনোযোগী হতে চাই৷
প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতি কমাতে হলে ডিজিটালাইজেশনে কি পদক্ষেপ নেয়া দরকার এখনই?
ডিজিটাল বাংলাদেশ ‘রূপকল্প ২০২১’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান সরকার ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করেছিল৷ ইতোমধ্যে জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে৷
ছবি: Munir Hasan
আওয়ামী লীগের ইশতেহার
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদ’-এর অংশ হিসেবে ‘২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর উদ্ভব৷ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এ ঘোষণা দেয়া হয়৷
ছবি: dapd
কম পরিশ্রমে, স্বল্প ব্যয়ে মানুষের দোরগোড়ায় সেবা
ডিজিটাল বাংলাদেশ হলো তথ্যপ্রযুক্তিসমৃদ্ধ বাংলাদেশ যেখানে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সকল সুবিধা ব্যবহার করে অল্প সময়ে, কম পরিশ্রমে, স্বল্প ব্যয়ে, মানুষের দোরগোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌঁছানোর নিশ্চয়তা দান৷
ছবি: D.net/Amirul Rajiv
কৃষিক্ষেত্রে সুবিধা
কৃষিক্ষেত্রেও লেগেছে তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া৷ সারাদেশে স্থাপিত প্রায় ২৪৫ কৃষি তথ্য যোগাযোগ কেন্দ্রে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কৃষি সেবা প্রদান করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
উন্নত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র
দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের কনীনিকার (আইরিশ) প্রতিচ্ছবি সংগ্রহ করে নিবন্ধিত নাগরিকদের ‘স্মার্ট’ জাতীয় পরিচয়পত্রের পরীক্ষামূলক বিতরণ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে৷ যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে বা যারা ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তারা এই ‘স্মার্ট’ এই পরিচয়পত্র পাবেন৷ (এখানে পুরানো পরিচয়পত্রের ছবি)
ছবি: DW/S. Kumar Day
মোবাইল ব্যাংকিং চালু
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সব ধরণের জরুরি সেবাই পাওয়া যায়৷ এ সবের মধ্যে রয়েছে – টাকা জমা, টাকা তোলা ও পাঠানো, বিভিন্ন ধরণের বিল প্রদান (বিদ্যুৎ বিল,গ্যাস বিল,পানি বিল ), কেনাকাটা করা, বেতন ভাতা প্রদান ও গ্রহণ, মোবাইল ফোন টপ আপ ইত্যাদি৷
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেবা
২০ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নির্মাণ ও ল্যাপটপসহ ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে৷ ডিজিটাল কন্টেন্ট শেয়ার করার জন্য ‘শিক্ষক বাতায়ন’ নামে একটি ওয়েবপোর্টাল চালু করেছে সরকার৷
ছবি: Munir Hasan
২২টি কর্মপন্থা
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ২২ কর্মপস্থা নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নে জোর দেয়া হচ্ছে৷ এগুলো হচ্ছে – সরকারি অফিস আদালতে ই-সেবা চালু করা, ই-গভর্নেন্স চালুর মাধ্যমে সরকারি কর্মকাণ্ডের গতি বাড়ানো, ভূমি রেকর্ড ডিজিটাইজেশন, সরকারি সেবাসমূহ ইউনিয়ন অফিস থেকেই প্রদানের ব্যবস্থা, তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি৷
ছবি: play.google.com
ঘরে বসে অর্থ উপার্জন
আইসিটি খাতে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গেই ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের ধারণা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে শুরু করেছে৷ বর্তমানে দেশে তরুণ ফ্রিল্যান্সার একটি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে৷ তথ্যমতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে৷ লাখো তরুণ বিভিন্ন পর্যায়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে নিজে সাবলম্বী হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.U. Zaman
ডট বাংলা ডোমেইন
ইন্টারনেট জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডোমেইন (ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম-আইডিএন) ডট বাংলা (.বাংলা) ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ ইন্টারনেটে একটি রাষ্ট্রের জাতীয় পরিচয়ের স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করে এই ডোমেইন৷
ছবি: Ministry of Women and Children Affairs
তথ্য আদান-প্রদান
দেশে বর্তমানে নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম রয়েছে৷ স্বল্প খরচে এ সব মাধ্যম ব্যবহার করে অনায়াসেই এক স্থান থেকে আরেক স্থানে তথ্য আদান প্রদান ও ভাবের বিনিময় হচ্ছে৷ ভিডিওতে কথা বলার জন্য রয়েছে একাধিক সফটওয়্যার৷ স্কাইপ, ইমো, ফেসবুক, গুগুল ছাড়াও যে কোনো মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থ্রি জি প্রযুক্তির সংযোজনের ফলে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সব ধরনের তথ্য ও ভাবের আদান প্রদান করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন, ড্রাইভিং লাইসেন্স
এখন আয়কর রিটার্ন ফরম অনলাইনে পূরণ করা যায়৷ অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রেলওয়ে ও বাস টিকেট
অনলাইনে অনেক সহজে টিকেট কাটা ও সিট বুকিং করা যায়৷ এসএমএস-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক যাত্রীদের জন্য তথ্যসেবা প্রদান করা হয়৷ এছাড়া বাসের টিকেট কাটা যায় অনলাইনেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
সব ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ
২০২০ সালের মধ্যে দেশের সকল ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করার প্রচেষ্টা আছে সরকারের৷ এছাড়া ২০১৮ সালের মধ্যে ব্রডব্যান্ডের সম্প্রসারণ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷
ছবি: DW/A. Islam
13 ছবি1 | 13
আমরা এখনই যেটা নিচ্ছি, সেটা হল ই-গভর্ন্যান্স৷ এই ই-গভর্ন্যান্স থেকে এন-গভর্ন্যান্সে আমরা শিফট করছি৷ আমরা আইসিটি মিনিষ্ট্রি এবং প্ল্যানিং কমিশন থেকে একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি যেটা বেসরকারি কর্পোরেট অফিসগুলো করে থাকে৷ যেমন ধরেন পেপারলেস অফিস৷ অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আমরা ইন্ট্রোডিউস করতে যাচ্ছি সরকারের ৮২টি মন্ত্রণালয়ে৷ আমরা আশা করছি, ২০২১ সালের মধ্যে আমরা লেস পেপার ই-গভর্ন্যান্স প্রোভাইড করতে পারব৷ লেস ক্যাশ সোসাইটি আমরা করতে পারব৷ আর সচেতনতা তৈরির কাজটাও চলতে থাকবে৷ আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের যে চারটি পিলার- হিউম্যান রিসোর্স, কানেক্টিভিটি, সবার জন্য আইসিটি ও ই-গভর্ন্যান্সকে সামনে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি৷ এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস তরুন প্রজন্ম ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবে৷