1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সকালে গ্রেপ্তার, বিকেলে ‘মুক্ত'

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৫ এপ্রিল ২০১৮

সকালে বেসিস-এর সাবেক সভাপতি ফাহিম মাসরুরকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার এক মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তবে সরকারের ‘শীর্ষ পর্যায়ের' নির্দেশে বিকেলেই তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়৷

Bangladeschs Fahim Mashroor, Chief Executive Officer (CEO) von Bangladeschs größter Jobseite bdjobs.com, festgenommen
ছবি: facebook/fahimmashoor

আটকের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর ফাহিম মাসরুরকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ৷ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে তাঁকে ছেড়ে দেয় কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট৷ মেট্রোপলিটন পুলিশের(ডিএমপি) উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাঁর ফেসবুক আইডি চেক করে সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখনো আপত্তিকর কোনা বক্তব্য বা পোস্ট পাওয়া যায়নি৷ এ কারণে তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ তবে মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে৷''

তবে এর আগে এই কর্মকর্তাই বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সাবেক সভাপতি ফাহিম মাসরুরকে ৫৭ ধারার মামলায় গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিলেন৷ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার দায়ের করা মামলায় ফাহিমকে আটকের পর বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়৷ অনেকেই বলছেন, মামলার অভিযোগ যথার্থ নয় এবং শত্রুতামূলকভাবে মামলাটি করা হয়ে থাকতে পারে৷ জানা গেছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ফাহিমকে ছেড়ে দিতে বলার পর পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়৷

‘৫৭ ধারা যে হয়রারনিমূলক একটি আইন তার সর্বশেষ প্রমাণ হলো ফাহিম মাসরুরের গ্রেপ্তার হওয়া'

This browser does not support the audio element.

এর আগে বুধবার সকালে কাওরানবাজারের বিডিবিএল ভবনের অফিস থেকে ফাহিম মাসরুরকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে ফাহিমকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানোর কথাও জানিয়েছিলেন৷ তবে তিনি আরো জানিয়েছিলেন, রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি৷

তখন গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘কাফরুল থানায় আল-সাদিক নামে এক জনের দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বাদী তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে সরকারবিরোধী প্রচারণার অভিযোগ করেছেন৷''

সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘‘সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারের অভিযোগ৷'' ডিএমপি-র কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সদস্যরা ফাহিমকে গ্রেপ্তার করেছিলেন৷ ২২ এপ্রিল কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ মামলার বাদী আল-সাদিক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক৷

এজাহারে দাবি করা হয়, ‘‘ফাহিম মাসরুর তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবির ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন আপলোড ও শেয়ারসহ উসকানিমূলকভবে মিথ্যা ও অপমানমূলক স্ট্যাটাস ও তথ্য আপলোড করে অপপ্রচারের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করেছেন এবং একই ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন৷''

মাসুদুর রহমান

This browser does not support the audio element.

এজাহারে আরও বলা হয়, ‘‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এরূপ মিথ্যা মানহানিকর আইন-শৃঙ্খলার অবনতি সৃষ্টিকারী রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ এবং এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করে, যা সংগঠন, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে৷'' বাদী ফাহিম মাসরুরের ফেসবুকের কিছু স্ক্রিনশটও উপস্থাপন করেছেন৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ফাহিম মাসরুর বাংলাদেশের চাকরি বিষয়ক ওয়েবসাইট বিডিজবস ডটকম ও ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস ‘আজকের ডিল'-এর প্রধান নির্বাহী৷ বর্ষসেরা উদ্যোক্তা (মাঝারি প্রতিষ্ঠান, সার্ভিস ক্যাটাগরি) হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি৷ গত ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেন৷ এছাড়া বেসিস-এর সদ্যনির্বাচিত কমিটির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি৷

ফাহিমকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের যে ৫৭ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা বাংলাদেশে একটি বিতর্কিত আইন৷ সরকার এরই মধ্যে এই ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ৫৭ ধারার পরিবর্তে জিডিটাল আইন পাশের জন্য সংসদ তুলেছে সরকার৷

ফাহিম মাসরুরকে ৫৭ ধারায় গ্রেপ্তারের পর এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘‘৫৭ ধারা যে হয়রারনিমূলক একটি আইন তার সর্বশেষ প্রমাণ হলো ফাহিম মাসরুরের গ্রেপ্তার হওয়া৷ ফাহিম মাসরুর একজন তরুণ উদ্যোক্তা৷ তাঁর রাজনৈতিক মতামত ভিন্ন হতে পারে৷ কিন্তু তাঁর কথা বলার স্বাধীনতা আছে৷ তাঁর বাক-স্বাধীনতা আছে৷ সেটা রুদ্ধ করা যায় না৷ তাঁকে গ্রেপ্তার কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ