1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌সচেতনতারও সীমা বাঁধা হবে এরপর?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৫ এপ্রিল ২০২১

বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে গান বেঁধেছিলেন শিল্পী, অভিনেতারা। বিজেপি নেতার ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, রাজনীতি করতে এলে রগড়ে দেবো!‌ এ কীসের ইঙ্গিত, উঠছে প্রশ্ন।

Indien - Debasree Chaudhuri und Dilip Ghosh
ছবি: Imago Images/Pacific Press Agency/S. Paul

‌দুর্মুখ এবং বিতর্কিত হওয়ার দুর্নাম আছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের। গরুর দুধে সোনা থাকার দাবিই হোক, বা বিরোধী নেতাকে মেরে হাসপাতালে পাঠানোর হুমকি, তিনি সবসময়ই শিরোনামে। মমতা ব্যানার্জি কেন শাড়ি তুলে পায়ের প্লাস্টার দেখাচ্ছেন, তার থেকে তিনি বরং বারমুডা বা এক ধরনের হাফপ্যান্ট পরলে পারেন— এমন মন্তব্য সদ্য বিতর্কের ঝড় তুলেছে। সম্প্রতি এক টিভি চ্যানেলের বিতর্কে সেই মন্তব্যের শালীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এক অভিনেত্রীকে ন্যাকামি না করার পরামর্শ দেন দিলীপ ঘোষ। এই তালিকায় শেষ সংযোজন, সম্প্রতি বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা বাংলার এক ঝাঁক শিল্পী, অভিনেতার গানের ভিডিও নিয়ে তার মন্তব্য।

অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের লেখা একটি গান গেয়েছিলেন অনুপম রায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, রূপঙ্কর বাগচির মতো চলতি সময়ের জনপ্রিয় গায়কেরা। কৌশিক সেন, সুমন মুখোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখার্জির মতো পরিচিত নাট্যকর্মী, সব্যসাচী চক্রবর্তী, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো প্রতিষ্ঠিত অভিনেতার সঙ্গে সেই গানের মিউজিক ভিডিওতে আছেন ঋদ্ধি সেন, সুরঙ্গমা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো নবীন শিল্পীরাও। বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে সেই গান এবং মিউজিক ভিডিও নিয়ে প্রশ্ন করায়, তিনি বলেছেন, ওরা নাচ, গান করুন। সেটাই ওদের মানায়। রাজনীতি করতে এলে রগড়ে দেব!‌

রুদ্রনীল ঘোষ

This browser does not support the audio element.

মন্তব্যটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ছড়িয়েছে এবং প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে রাজনীতির বাইরে যে সমাজ, তার স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার, তার সচেতনতার বোধকে কি এভাবেই এর পর বেঁধে দেওয়া হবে?‌ রগড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে খর্ব করা হবে?‌ শিল্পীদের অধিকাংশ যদিও এই ধরনের হুমকিকে আদৌ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সবার বক্তব্য, একজন রাজনৈতিক নেতা এমন কোনও কথা বললে, সেটা নিয়ে আলোচনা করা মানেও সময় নষ্ট। কিন্তু বিজেপি তো পশ্চিমবঙ্গে এক ঝাঁক চলচ্চিত্র তারকাকে তাদের নিজেদের দলেরই প্রার্থী করেছে!‌ তারা কী ভাবছেন দল সভাপতির এই মন্তব্য নিয়ে?‌

অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ, যিনি এক সময়ে বামপন্থি ছিলেন বলে শোনা যায়, পরে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ হয়ে যান, একাধিক সরকারি পদেও ছিলেন, তিনি যদিও সমর্থন করছেন দিলীপ ঘোষের বক্তব্যকে। এবং এক্ষেত্রে রুদ্রনীলের যুক্তি হলো, ওই অভিনেতা, শিল্পীরা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার ভান করছেন শুধু, কিন্তু আসলে, পরোক্ষে রাজনীতিই করছেন। যেমন তারা গানে বলেছেন— আমি অন্য কোথাও যাবো না, আমি এই দেশেতেই থাকবো। রুদ্রনীলের প্রশ্ন, ‘‌‘কে বলেছে, বা কাকে, যে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে?‌ আমরা কাদের এটা বলতে পারি?‌ যারা বহিরাগত, যাদের বৈধতা নেই আমাদের দেশে থাকার, অথচ আমাদের দেশের সুযোগ-সুবিধে যারা ভোগ করছে, আমাদের কম পড়ছে, তাদেরকে বলা যায় যে তোমরা বেরিয়ে যাও। কিন্তু তারা তো আমাদের দেশের নাগরিক!‌ আমি বুঝতে পারছি না, কেই বা বলল ওদের যেতে, ওরা গান তৈরি করলেনই বা কেন!‌'‌'‌

স্বপরিচয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে অনিচ্ছুক এক নাট্যকর্মী এই মন্তব্যের পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন— তা হলে যতক্ষণ না নিজের গায়ে লাগছে, নিজের ক্ষতি হচ্ছে, ততক্ষণ অন্যের স্বার্থ নিয়ে কথা বলা যাবে না, বললে নিজেরই বরং ক্ষতি হবে— এমন অঙ্কই কি তারা শেখাতে চাইছেন?‌ বুঝিয়ে দিচ্ছেন, প্রতিবাদের অধিকারও আগামী দিনে কীভাবে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে?‌   

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ