‘সত্য মানেই সত্য নয়'
২০ আগস্ট ২০১৮মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের তদন্ত করছেন এফবিআই-এর প্রাক্তন প্রধান রবার্ট মালার৷ তদন্তে অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের টিমের একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ আনা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন৷ রবিবার তিনি আবার জানিয়ে দেন যে, তাঁর কিছুই গোপন করার নেই৷ তবে তাঁর প্রাক্তন আইনজীবীসহ ক্ষমতার বলয়ের একাধিক ব্যক্তি তদন্তকারী দলের সঙ্গে সহযোগিতার পথ বেছে নেওয়ার ফলে যে ট্রাম্প আরও অস্বস্তিতে পড়েছেন, তার অনেক ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ ট্রাম্প মালারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে এক টুইট বার্তায় লেখেন, ১৯৫০-এর দশকে সেনেটর জোসেফ ম্যাককার্থি কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে যে ‘ধর্মযুদ্ধ' শুরু করেছিলেন, তার থেকেও বেশি মাত্রায় একই কাজ করছেন মালার ও তাঁর সহকর্মীরা৷
নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রে শনিবার একটি প্রতিবেদন পড়ে ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ হয়েছেন৷ হোয়াইট হাউসের কাউন্সেল ডন ম্যাকগান মালারের তদন্ত টিমের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন বলে তাতে দাবি করা হয়েছে৷ শনিবার সন্ধ্যায় ম্যাকগানের আইনজীবী তদন্তে জেরার বিষয়টি স্বীকার করেন৷ ম্যাকগানের বক্তব্য শুনে তদন্তকারী টিম অনেক নতুন বিষয় সম্পর্কেও নাকি জানতে পেরেছে৷
ট্রাম্প আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছিলেন কিনা, সেই তদন্তে এমন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বয়ান প্রেসিডেন্টের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ ট্রাম্প একাধিক টুইট বার্তায় বিষয়টি খোলাসা করার চেষ্টা করেছেন৷ তাঁর মতে, তিনি নিজেই ডন ম্যাকগান ও অন্যান্যদের সাক্ষী হিসেবে সহযোগিতার অনুমতি দিয়েছিলেন, যদিও এর জন্য তাঁর উপর কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না৷ ট্রাম্প লেখেন, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন পড়লে মনে হতে পারে যে, ম্যাকগান প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করে এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন৷ অথচ বাস্তবে তার বিপরীতটাই ঘটেছে৷
এদিকে ‘সত্য মানেই সত্য নয়' – নিজের মক্কেলকে বাঁচাতে এমনই মন্তব্য করেছেন আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি৷ ট্রাম্প সরাসরি বিশেষ তদন্তকারী রবার্ট মালারের জেরার মুখে পড়লে ফেঁসে যেতে পারেন, এমন আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে জুলিয়ানি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন৷ তাঁর মতে, জেরার মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট শপথভঙ্গের ফাঁদে পা দিতে পারেন৷ এফবিআই-এর প্রাক্তন প্রধান দাবি করেছেন যে, ট্রাম্প তাঁর উপর তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন৷ ট্রাম্প এমন দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন৷ অতএব জুলিয়ানির মতে, এ ক্ষেত্রে সত্য কী তা জানা সম্ভব নয়৷ তাই ‘সত্য মানেই সত্য নয়'৷ উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের আরেক কর্মকর্তা ‘বিকল্প সত্য' সংজ্ঞাটি তুলে ধরে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)