বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় জার্মানির রাজধানী বার্লিনের মসজিদসহ বেশ কয়েকটি ভবনে অভিযান চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী৷ তাদের সন্দেহ, সিরিয়ায় ইসলামি যোদ্ধাদের অর্থ সহায়তা করছে বার্লিনের এক মসজিদের ইমাম৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার ভোরে বার্লিনের একটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি ভবনে অভিযান চালায় পুলিশ৷ তাদের ধারণা, এসব ভবনে সন্ত্রাসবাদে মদদ দাতারা আত্মগোপন করে আছেন৷
ঐ মসজিদের ইমাম আহমেদ এ কে প্রধান সন্দেহভাজন মদদদাতা বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ মসজিদে ইমামতি করার সময় তিনি ‘আবুল বারা' নামটি ব্যবহার করেন৷ আইনজীবীরা জানান, ৪৫ বছর বয়সি এই ইমাম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সিরিয়ার ইসলামি যোদ্ধাদের কাছে অর্থ সাহায্য পাঠান৷ সেসব অর্থ দিয়ে সামরিক অস্ত্র-শস্ত্র কেনা হয়৷
তবে বার্লিন কর্তৃপক্ষ এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে নারাজ৷ আস-সাহাবা মসজিদটিতে বহুদিন থেকেই নজর রাখছিল জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা৷ তাঁরা বলছেন, জার্মানির কট্টরপন্থি সালাফিস্ট সদস্যদের জমায়েত হওয়ার জায়গা এই মসজিদ৷
জার্মানির কেমনিৎসে ডানপন্থিদের বিক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া
এক জার্মান-কিউবান নাগরিকের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে জার্মানির কেমনিৎস শহরে বিদেশিদের উপর হামলা হয়েছে৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট ও চ্যান্সেলরসহ অনেক নেতা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন৷
ছবি: Getty Images/O. Andersen
জার্মান-কিউবানের মৃত্যু
রবিবার ভোরে জার্মানির কেমনিৎস শহরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ডানিয়েল এইচ. নামে ৩৫ বছর বয়সি এক জার্মান-কিউবান নাগরিক ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান৷ পুলিশ বলছে, বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০ জন মানুষ এই বিবাদে জড়িত ছিলেন৷ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ২২ বছর বয়সি এক ইরাকি ও ২৩ বছর বয়সি এক সিরীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে৷ ‘যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ ছাড়াই’ তারা ডানিয়েলকে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করেন বলে অভিযোগ৷
ছবি: DW/B. Knight
বিক্ষোভ ও বিদেশিদের উপর হামলা
ডানিয়েল এইচ. স্থানীয় কয়েকটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷ ফলে তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে রবিবার বিকালে প্রায় ৮০০ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন৷ এদের মধ্যে চরম ডানপন্থিরাও ছিলেন৷ বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল ছোড়েন এবং তাঁরা পুলিশের কাজে সহযোগিতা করেননি বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ ডেকে আনা হয়৷ এই সময় বিক্ষোভকারীরা পথেঘাটে বিদেশিদের উপর নির্বিচারে হামলাও চালায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas
সোমবারও বিক্ষোভ এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
সোমবারও কেমনিৎস শহর উত্তপ্ত ছিল৷ সন্ধ্যার সময় প্রায় ২,০০০ চরম দক্ষিণপন্থি বিক্ষোভে নামেন৷ আর তাঁদের বিক্ষোভের প্রতিবাদে মাঠে নামেন প্রায় ১,০০০ মানুষ (ছবিতে তাঁদের একাংশকে দেখা যাচ্ছে), যাদের মধ্যে বামপন্থিরাও ছিলেন৷ চরম দক্ষিণপন্থি ও বামপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬ জন আহত হন৷ দুই পক্ষ একে অপরের উপর আতসবাজিসহ নানা বস্তু নিক্ষেপ করে৷ ৪ জন চরম দক্ষিণপন্থি বিক্ষোভকারীর উপর হামলার ঘটনাও ঘটে৷
ছবি: Getty Images/AFP/O. Andersen
সরকারের প্রতিক্রিয়া
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ অনেকে রবি ও সোমবারের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷ ম্যার্কেল বলেন, দেশে আইন-শৃঙ্খলার ভিত্তিতে যে শাসনব্যবস্থা রয়েছে, তার সঙ্গে এমন আচরণ খাপ খায় না৷ প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেন, ছুরিকাঘাতের ঘটনার ফায়দা তুলে বিদেশিবিদ্বেষ ও হিংসা ছড়ানো হয়েছে৷ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, জনতা ভিন্ন চেহারার মানুষকে বাছাই করে হামলা চালাবে, এমন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
তাণ্ডবের পেছনে ‘ভুয়া খবর’
‘ভুয়া খবর ছড়িয়ে কেমনিৎসে দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে স্যাক্সোনি রাজ্য প্রশাসন৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, শুধু স্থানীয় চরম দক্ষিণপন্থিরা নয়, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়িয়ে অনেক রাজ্য থেকে সমমনস্ক মানুষকে কেমনিৎসে আকর্ষণ করা হয়েছে৷ নিহত ডানিয়েল এইচ. নাকি এক নারীর সম্মানরক্ষার জন্য হস্তক্ষেপ করেছিলেন বলে ভুয়া খবর ছড়ানো হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas
5 ছবি1 | 5
২০১০ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন মিশরীয় বংশোদ্ভূত এক জার্মান৷ বালিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ পরে তিনি জার্মানি ছেড়ে সিরিয়ায় চলে যান৷ সেখানে গিয়ে তথাকথিতইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের শিক্ষা মন্ত্রী হন৷