1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্ত্রাসীরা খেলছে রাগবি

রবিন হার্টমান/এসিবি৭ আগস্ট ২০১৪

এক সময় তাঁরা খুন, রাহাজানি, অপহরণ কিংবা ধর্ষন করতেন৷ এখন রাগবি খেলোয়াড়৷ সন্ত্রাসীদের রাগবি খেলায় নামিয়ে ভেনেজুয়েলায় রীতিমতো সাড়া জাগিয়েছেন আলবার্তো ফলমার৷

Rugby in Venezuela
ছবি: DW/R. Hartmann

দশ বছরে অনেক বদলে গেছে ভেনেজুয়েলার আরাগুয়া রাজ্যের ছোট্ট শহর এল কনসেহো৷ তখন প্রতিবছর যেখানে এক লক্ষে অন্তত ১১৫ জন মানুষ সন্ত্রাসের শিকার হতো, এখন সংখ্যাটা কমে হয়েছে ২৫৷ বড় বড় সন্ত্রাসীরা রাগবি খেলছেন, সেই সুবাদে সন্ত্রাসও কমেছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়ে মৃত্যুর হার তো কমবেই!

এল কনসেহোয় এমন অসাধ্য সাধনের প্রায় সমস্ত কৃতিত্বই আলবার্তো ফলমারের৷ তাঁর পূর্বপুরুষ একসময় জার্মানিতে ছিলেন৷ তাই হয়ত ‘জার্মান দৃঢ়তা' ফলমারের মধ্যেও সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি৷ নইলে নিজের খামারে ডাকাতি করতে এসে ধরা পড়া লোককে পুলিশের হাতেপায়ে ধরে কেউ ছাড়িয়ে আনে? এনে রাগবি খেলতে বলে?

সুকর্মের ফল অনেকে নগদে না পেলেও আলবার্তো ফলমার পেয়েছেন৷ তাঁর সান্তা তেরেসা খামারেই এক রাতে ডাকাতি করতে এসেছিলেন হোসে গ্রেগরিয়ো আরিয়েতা৷ পুলিশ ধরে ফেলে তাঁকে৷ আইন অনুযায়ী, দশ বছরের জেল তো হতোই৷ কিন্তু ফলমার দেননি৷ পুলিশকে খুব অনুনয়-বিনয় করে বললেন, আরিয়েতাকে ছেড়ে দিতে৷ বহুবার বলার পর কাজ হলো৷ আরিয়েতা এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের সত্যি সত্যিই ছেড়ে দিলো পুলিশ৷

২০০০ সদস্যের এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সারা ভেনেজুয়েলার মানুষ চেনে ফলমারকেছবি: DW/R. Hartmann

নিশ্চিত কারাভোগের যন্ত্রণা থেকে বাঁচিয়েই কিন্তু আরিয়েতাকে ছেড়ে দেননি ফলমার৷ প্রথমে বললেন, তাঁর খামারে কাজ করতে৷ আরিয়েতা রাজি৷ কিছুদিন পর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীকেই বোঝাতে লাগলেন, ‘‘এসব ছেড়ে রাগবি খেলা শুরু করো৷ তোমাকে দেখে অনেকে খারাপ কাজ ছাড়বে৷ এলাকায় ধীরে ধীরে শান্তি ফিরবে৷ তোমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও উপকার হবে তাতে৷''

লোকে বলে, ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি'৷ ফলমার দেখলেন, কথাটা ভুল৷ অপরাধীর ওপর আস্থা রাখলে সে যত বড়, যত ভয়ঙ্কর অপরাধীই হোক, একদিন সে-ও অপরাধকর্ম ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরে৷ আরিয়েতাও ফিরেছেন৷ ২০০৩ সালে তাঁকে সামনে রেখেই ‘আলকাতরাজ রাগবি ক্লাব' গড়েছিলেন ফলমার৷ সেই ক্লাবের এখন রমরমা অবস্থা৷ ২০০০ সদস্যের এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সারা ভেনেজুয়েলার মানুষ চেনে ফলমারকে৷

আরিয়েতাকেও চেনে সবাই৷ শ্রদ্ধাও করে৷ এখন তো আর সেই আরিয়েতা নেই! এখন তিনি আইটি স্পেশালিস্ট এবং রাগবি খেলোয়াড়৷ বিয়ে করেছেন৷ তিন সন্তানের জনক হয়েছেন৷ বড় দুই ছেলেও রাগবি খেলে ‘আলকাতরাজ রাগবি ক্লাব'-এ৷ আরিয়েতার জীবনে লেগেছে নতুন রং৷ একসময় তাঁকে দেখে সবাই ভয়ে পালাতো, এখন ভক্তরা হাসিমুখে এসে পাশে দাঁড়ায়, সানন্দে ছবি তোলে৷

আরিয়েতার কাছে অতীতটা এখন দুঃস্বপ্নের মতো৷ জীবনের এই মোড় বদল নিয়ে ভাবলে কেমন অবাক লাগে৷ এর অনেকটা কৃতিত্ব যে ফলমারের তা অকপটে স্বীকার করেন৷ ফলমার সেদিন না বাঁচালে কী হতো – জানতে চাইলে আরিয়েতা বলেন, ‘‘রাগবি খেলা শুরু না করলে আমি এখনো হয়ত জেলে থাকতাম, কিংবা এতদিনে হয়ত মরেই যেতাম৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ