ইস্তানবুলে বোমা হামলায় হতাহতদের বেশিরভাগ জার্মান হলেও, বিষয়টিকে শুধু জার্মানির জন্য আঘাত হিসেবে দেখছেন না জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাসীরা মানবতার শত্রু, সকল মুক্ত মানুষের শত্রু৷’’
বিজ্ঞাপন
এই ঘটনার পর অবশ্য সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানই নিয়েছে জার্মানি৷ তাছাড়া ইতিমধ্যে তুরস্ক সফররত সকল জার্মান নাগরিককে ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে জার্মান সরকার৷ পাশাপাশি পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত স্থানগুলোও এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে৷
পর্যটকদের কোনো দেশের প্রধান আকর্ষণগুলো এড়িয়ে চলার মতো পরামর্শ দেয়া হচ্ছে মঙ্গলবারের এক ভয়াবহ বোমা হামলার কারণে৷ তুরস্কের ইস্তানবুল শহরের এক পর্যটন কেন্দ্রে চালানো সেই হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত এবং ১৫ জনের মতো আহত হয়৷ হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন জার্মান পর্যটক৷ জানা গেছে, আহত ১৫ জনের মধ্যেও ছয় জনই জার্মান এবং বাকিদের মধ্যে একজন নরওয়ের, একজন দক্ষিণ কোরিয়ার এবং একজন পেরুর নাগরিক৷ হামলাটি তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএস চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তুরস্ক সরকারও আইএস-কেই দায়ী মনে করছে৷
হামলাটি হয়েছে ইস্তানবুলে পর্যটকদের জন্য অন্যতম প্রধান আকর্ষণীয় এলাকা সুলতানআহমেত স্কয়ারে৷ স্কয়ারটি হাজিয়া সোফিয়া জাদুঘর এবং নীল মসজিদের মাঝখানে অবস্থিত৷ মূলত হাজিয়া সোফিয়া জাদুঘর এবং নীল মসজিদ দেখার জন্যই পর্যটকরা সুলতানআহমেত স্কয়ার এলাকাতে যান৷
এদিকে মঙ্গলবারের হামলায় জড়িত সন্দেহে রাশিয়ার তিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে তুর্কি পুলিশ৷ পুলিশ মনে করছে, গ্রেপ্তারকৃত তিনজন আইএস-এর সঙ্গে জড়িত৷
ইস্তানবুলের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘‘এবারের হামলাটি ইস্তানবুলে হলেও এর আগে কখনো প্যারিস, কখনো কোপেনহেগেন, কখনো টিউনিস বা অন্য অনেক জায়গায়ই এমন হামলা হয়েছে৷ তাই হামলা সিরিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স বা জার্মানি যেখানেই হোক না কেন, সন্ত্রাসীরা মানবতার শত্রু, সকল মুক্ত মানুষের শত্রু৷''
বুধবার জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন৷ মঙ্গলবারের হামলা সম্পর্কে ধারণা নিতে ইস্তানবুলে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এফকান আলা-র সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি৷
বন্ধুরা, আপনার কী মনে হয়? ইস্তানবুলে এই হামলার পেছনে কার হাত রয়েছে?
‘আমিই প্যারিস’
কোটি কোটি মানুষ সহমর্মিতা প্রকাশ করছে প্যারিসের প্রতি৷ শিল্পীরা আঁকছেন ছবি৷ যে শহরে প্রতি বছর কোটি মানুষ যায় মুগ্ধ হতে, সেই শহরের বুকে ১২৯টি নিরীহ প্রাণ কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীরা৷ দেখুন প্যারিসের দুঃখে কাতর শিল্পীদের ছবি৷
ছবি: Twitter/@Zeli50/Chaunu
প্যারিসের জন্য শান্তি কামনা
বৃত্তের মধ্যে আইফেল টাওয়ারের এই ছবিটি এঁকেছেন শিল্পী জঁ জুলিয়েন৷ ছবির শিরোনাম, ‘পিস ফর প্যারিস’৷ প্যারিসের আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পরই আঁকা এই ছবিটি #PeaceForParis নামে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে৷ অনেকেই উল্কি এঁকে শরীরে রাখছেন #PeaceForParis, কেউ কেউ আবার পড়ছেন #PeaceForParis সম্বলিত টি-শার্ট৷
ফ্রান্সের কেরিক্যাচার শিল্পী #Baudry-ও তাঁর প্রিয় শহরে শত মানুষের আর্তনাদ দেখে ব্যথিত৷ তাঁর তুলিতে প্যারিস তাই রক্তে আবৃত৷ রক্তাক্ত প্যারিসের মাঝখান দিয়ে ক্ষীণ রেখা হয়ে বয়ে চলেছে সেন নদী৷ এ নদী অনমনীয়তার প্রতীক৷ শিল্পী যেন বোঝাতে চেয়েছেন সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত হামলায় যত রক্তই ঝরাক প্যারিসের জীবন নদীর মতো বয়ে যাবেই৷
ছবি: Twitter/@cyrilrtour/@hervebaudry
রক্তাক্ত পতাকা
#JeSuisParis নাম দিয়ে রক্তাক্ত পতাকার এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন আরেক ক্যারিকেচার শিল্পী কার্লোস লাটুফ৷ এটিও ভীষণ সাড়া জাগিয়েছে৷
ছবি: Twitter/@ClaudeGaignard/@LatuffCartoons
দৈত্যের কবলে...
আলাদীনের চেরাগের সেই দৈত্যও উঠে এসেছে শিল্পীর আঁকা ছবিতে৷ প্যারিসের আর কিছু না হোক আইফেল টাওয়ারটা তো সবাই চেনে৷ প্যারিসের প্রতীকই আইফেল টাওয়ার৷ গল্পের দৈত্যকে প্রদীপ ঘষে ডেকে আনলে সে তার মনিবের আদেশ পালন করতো৷ ছবিতে শিল্পী #MarianKamensky অশুভ শক্তি হিসেবে আইএস-কেই বানিয়েছেন দৈত্য৷ সেই দৈত্য গলা টিপে ধরেছে আইফেল টাওয়ারের৷
ছবি: Twitter/@DonzelliX/@MarianKamensky1
শোকে নুয়ে পড়া আইফেল টাওয়ার
শিল্পী চাউনু-র আঁকা এই ছবিতে সকল প্যারিসবাসীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে আইফেল টাওয়ারও নুয়ে পড়েছে শোকে৷ নুয়ে এক প্যারিসবাসীকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানাচ্ছে৷ নারীর মাথায় জ্যাকোবিন টুপি৷ ফরাসি বিপ্লবের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে ফরাসিদের উদ্বুদ্ধ করে এই টুপি৷