কিংবদন্তির রাজা আর্থারের জাদুকর মার্লিন নাকি তাঁর মামা, এমন দাবি করতেও শোনা গেছে ৬২ বছর বয়সের বুর্গহার্ড বি.-কে৷ পুলিশকর্মীদের উপর আক্রমণের পরিকল্পনার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে৷
বিজ্ঞাপন
বুর্গহার্ডের লম্বা দাড়ি, আলখাল্লা, হাতের লাঠি আর সাজগোজ সত্যিই জাদুকর মার্লিনের কথা মনে পড়িয়ে দেয়৷ বুর্গহার্ড নিজেকে বলেন ‘ড্রুইড', অর্থাৎ প্রাচীন গল, আইরিশ ও কেল্ট-দের সেই সব পুরোহিত, যাদের নানা ধরনের যাদুকরি ক্ষমতা ছিল, বলে লোকে ধরে নিতো৷
জার্মানিতে প্রাক-খ্রিষ্টীয় প্রথা-প্রকরণ, আচার-আচরণ সম্পর্কে আগ্রহ, এমনকি উৎসাহ নতুন কিছু নয়৷ কাজেই নব্য ড্রুইডিজমে আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷ নতুন হলো এই ‘পাগান' বা অখ্রিষ্টীয়, আধিভৌতিক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে নব্য নাৎসিবাদের যোগ৷
তাঁর নিজের ড্রুইড নাম হলো বুর্গোস ফন বুকোনিয়া, বলেন বুর্গহার্ড৷ গত বুধবার পুলিশ জার্মানি জুড়ে মোট ১২টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে যে সাতজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে, তাদের মধ্যে এই বুর্গোস ফন বুকোনিয়াও ছিলেন৷ ধৃত ব্যক্তিরা পুলিশ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এবং ইহুদিদের উপর আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করছিল, বলে দৃশ্যত পুলিশের কাছে খবর ছিল৷ তল্লাসিতে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিবারুদ পাওয়া গিয়েছে, বলে বিভিন্ন মিডিয়া জানিয়েছে৷
হলোকস্টের চিত্রকলা
নাৎসি বন্দিশিবিরে মৃত্যুর দিন গোণার অবসরেও ছবি এঁকে গেছেন শিল্পীরা৷ ইসরায়েলের ইয়াদ ভাশেম সংগ্রহশালা থেকে আনা কিছু ছবি এখন প্রদর্শিত হচ্ছে বার্লিনে৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
রঙিন ‘ঘেটো’
‘ঘেটো’ বলতে বোঝায় শহরের সেই সংকীর্ণ অংশ, ইহুদিদের যেখানে থাকতে বাধ্য করা হতো৷ পোল্যান্ডের লুড্জ শহরের ঘেটোর এই ছবিটি এঁকেছিলেন ইয়োসেফ কোভনার, যিনি হলোকস্ট থেকে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলেন৷ ‘হলোকস্টের চিত্রকলা: ইয়াদ ভাশেম সংগ্রহশালা থেকে ১০০টি চিত্র’, এই নাম দিয়ে বার্লিনে জার্মান ঐতিহাসিক সংগ্রহশালায় কোভনার ও অন্যান্য হলোকস্ট শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
উদ্বাস্তু
প্রদর্শনীতে যে ৫০ জন শিল্পীর ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন নাৎসিদের হাতে৷ নিহতদের মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ফেলিক্স নুসবাউম, যিনি ১৯৪৪ সালে আউশভিৎসে প্রাণ হারান৷ তাঁর ‘উদ্বাস্তু’ ছবিটি আঁকা হয় ব্রাসেলসে, ১৯৩৯ সালে৷ নুসবাউম ছবিটিতে নির্বাসনের অবর্ণনীয় যন্ত্রণা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
আত্মপ্রতিকৃতি
শার্লট সালোমন-এর ছবি এর আগেও জার্মানিতে প্রদর্শিত হয়েছে৷ তাঁর সাতশ’র বেশি ছবির একটি সংগ্রহে দেখা যায়, ইহুদি হিসেবে শার্লট বার্লিনে কী ধরনের জীবন কাটিয়েছিলেন৷ পরে তিনি দক্ষিণ ফ্রান্সে আশ্রয় নেন, কিন্তু ১৯৪৩ সালে তাঁকে সেখান থেকে ধরে আউশভিৎসে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং বন্দিশিবিরে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হত্যা করা হয়৷ শার্লট তখন সন্তানসম্ভবা৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
লুকনো মেয়েটির আঁকা ছবি
নেলি টল ও তাঁর মা ইহুদি হওয়া সত্ত্বেও পোল্যান্ডের লুভভ শহরে প্রাণে বাঁচেন কেননা তাঁদের খ্রিষ্টান বন্ধুরা তাঁদের লুকিয়ে রেখেছিলেন৷ একা ঘরে আটক নেলি জলরং দিয়ে ছবি এঁকে সময় কাটাতেন, যেমন ‘মাঠের মধ্যে মেয়েরা’ নাম দেওয়া এই ছবিটি৷ ৮১ বছর বয়সি নেলি টল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বার্লিনে এসেছেন প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
‘ব্যারাকের মাঝখানে রাস্তা’
লিও ব্রয়ার বন শহরের অধিবাসী ছিলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান কাইজারের হয়ে যুদ্ধও করেছেন৷ হিটলার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৩৪ সালে তিনি প্রথমে দ্য হেগ ও পরে ব্রাসেলসে বসবাস করেন, শিল্পী হিসেবেই, তাঁর ছবিও তখন প্রদর্শিত হয়েছে৷ ১৯৪০ সালের পর ফ্রান্সের একাধিক শিবিরে অন্তরীণ হয়ে থাকেন লিও৷ সেখানকার অভিজ্ঞতা তুলিবদ্ধ করে রেখেছেন বিভিন্ন ছবিতে৷ লিও ব্রয়ার পরলোকগমন করেন ১৯৭৫ সালে, ঐ বন শহরেই৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
দুই শিল্পী
ফরাসি বন্দিশিবিরে লিও ব্রয়ার যে আলোকচিত্রশিল্পীর সঙ্গে নানাভাবে সহযোগিতা করেছিলেন – যেমন মঞ্চসজ্জায় – তাঁর নাম ছিল কার্ল রবার্ট বোডেক৷ দু’জনে গ্রিটিংস কার্ড ইত্যাদিও সৃষ্টি করেছেন৷ বোডেক-কে ১৯৪১ সালে অপরাপর শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শেষমেষ আউশভিৎসে পাঠানো হয়৷ সেখানেই তিনি নিহত হন ১৯৪২ সালে৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
শিল্পীর গুপ্তজীবন
বেড্রিশ ফ্রিটা থেরেজিয়েনস্টাট বন্দিশিবিরে সরকারি প্রচারপত্র ইত্যাদি তৈরির কার্যালয়ের প্রধান ছিলেন৷ অপরদিকে তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা গোপনে নাৎসি ঘেটোগুলির বিভীষিকাকে ছবিতে ধরে রেখেছেন৷ ১৯৪৪ সালে তা ফাঁস হয়ে যাবার পর ফ্রিটাকে আউশভিৎসে জীবন দিতে হয়৷ থেরেজিয়েনস্টাট বন্দিশিবির মুক্ত হবার পর সেখানকার দেয়াল ও মাটির তলা থেকে ফ্রিটার আঁকা ২০০টি ছবি পাওয়া যায়৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
মৃত্যুর পরেও বন্ধুত্ব
লিও হাস তাঁর বন্ধু ফ্রিটাকে বন্দিশিবিরের জীবন নিয়ে ছবি আঁকতে নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন৷ সাক্সেনহাউজেন বন্দিশিবিরে লিও হাস-এর ওপর নির্দেশ হয়, মিত্রশক্তিদের পাউন্ড ও ডলার নকল করার৷ যুদ্ধের পর হাস ফ্রিটার পুত্র টোমাসকে দত্তক নেন৷ এছাড়া হাস থেরেজিয়েনস্টাট বন্দিশিবিরে বেড্রিশ ফ্রিটার আরো চারশ’টি লুকনো ছবি আবিষ্কার করেছেন৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
ডাক্তারের ছদ্মবেশে শিল্পী
পাভেল ফান্টল থেরেজিয়েনস্টাটের শিল্পীমহলের সদস্য ছিলেন৷ ডাক্তার হিসেবে তিনি শিবিরের মধ্যে টাইফুস রোগীদের জন্য একটি ক্লিনিক চালাতেন৷ ফ্রিটার মতো তিনিও ধরা পড়েন, তাঁর উপর শারীরিক নিপীড়ন চালানো হয়; পরে তাঁকে আউশভিৎস বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়৷ ১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ তাঁর প্রায় ৮০টি ছবি থেরেজিয়েনস্টাট থেকে বার করে আনা সম্ভব হয়েছিল৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
কলা শিক্ষক
ইয়াকব লিপশিৎস যুদ্ধের আগে ভিলনিয়ুস-এর একটি কলা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করতেন৷ ১৯৪১ সালে তিনি কাউনুস শহরের ঘেটোয় গিয়ে বাস করতে বাধ্য হন; সেখানে তিনি অপরাপর শিল্পীদের সঙ্গে গোপনে ঘেটো জীবনের ছবি আঁকতেন৷ ১৯৪৫ সালের মার্চ মাসে কাউফেরিং বন্দিশিবিরে তাঁর মৃত্যু ঘটে৷ যুদ্ধের পরে তাঁর স্ত্রী ও কন্যা কাউনুস ঘেটোয় ফিরে গিয়ে একটি কবরখানায় লুকনো ছবিগুলো উদ্ধার করেন৷ লিপশিৎস নিজেই সেগুলোকে লুকিয়ে রেখেছিলেন৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
চরম দুর্দশার মধ্যেও আত্মমর্যাদা
বার্লিনের জার্মান হিস্টোরিক্যাল মিউজিয়ামের এই প্রদর্শনী চলবে ৩রা এপ্রিল অবধি৷ ছবিগুলিতে একদিকে যেমন দেখতে পাওয়া যাবে নাৎসি বন্দিশিবিরের বিভীষিকা, অপরদিকে এই অমর শিল্পীরা যেন সেই বিভীষিকার মধ্যেই জীবনের জয়গান গেয়ে গেছেন৷ মরিৎস ম্যুলার-এর ‘শীতকালে বাড়ির ছাদে’ সেরকম একটি ছবি৷
ছবি: Collection of the Yad Vashem Art Museum, Jerusalem
11 ছবি1 | 11
ড্রুইডের ফেসবুক পেজ
নব্য ড্রুইডবাদ একটি অখ্রিষ্টীয় আধ্যাত্মিক গোষ্ঠী যারা প্রকৃতির উপাসনা করে ও যাবতীয় প্রাণীকে শ্রদ্ধা করে, বলে শোনা যায়৷ বুর্গহার্ডের ফেসবুক পেজ দেখলে কিন্তু তা মনে হবে না৷ তিনি যে ইহুদি, মুসলিম, উদ্বাস্তু ও ‘‘নোংরা বামপন্থি, যাদের মগজ কাজ করে না'', এমন সব মানুষদের পছন্দ করেন না, তার স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়৷
‘‘কবে সব নাগরিকরা বুঝতে পারবেন, যে ইইউ-এর পতাকায় ইসরায়েলের ১২টি তারার অর্থ তাদের (ইইউ নাগরিকদের) ধ্বংস?'' বুর্গহার্ড এই পোস্টটি করেছেন ২০১৫ সালের ১০ই আগস্ট তারিখে৷ এক বছর পরের একটি পোস্টে বলা হয়েছে: ‘‘ইহুদি-বিদ্বেষী হলো সে, যে তার চিন্তাকে নিষিদ্ধ হতে দিতে চায় না''৷
শুধু ফেসবুক নয়, রুশ সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ভিকে-তে বুর্গহার্ডের বিভিন্ন ঘোষণা থেকে বোঝা যায় যে, তিনি তথাকথিত ‘‘রাইখসবুর্গার'' বা হিটলারের তৃতীয় রাইখ বা সাম্রাজ্যের ‘নাগরিকদের' মতোই বর্তমান জার্মান রাষ্ট্রের কর্তৃত্বে বিশ্বাস করেন না৷
জাদুকর থেকে নাৎসি ড্রুইড
গোড়া থেকেই চরম দক্ষিণপন্থি মতাদর্শের অনুগামী ছিলেন না বু্র্গহার্ড৷ ২০০৮ সালে বাভেরিয়ার সরকারি টেলিভিশনে তাঁকে বলতে শোনা গেছে যে, তাঁর জন্ম ২,৫০০ বছর আগের এক ‘‘অতীব ঠান্ডা শীতের রাত্রে''৷ তাঁর মা নাকি বুর্গহার্ডকে জন্ম দেবার সময়েই প্রাণত্যাগ করেন, তাই বুর্গহার্ডের মামা মার্লিন – অর্থাৎ রাজা আর্থারের জাদুকর মার্লিন বুর্গহার্ডকে মানুষ করেছেন৷
জীবন, ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠানে শুভ-অশুভ শক্তি
‘গুড অ্যান্ড ইভিল পাওয়ার’, শুভ এবং অশুভ শক্তি – তা সে আপনি মানুন আর না মানুন – একে অগ্রাহ্য করার কিন্তু উপায় নেই৷ বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রিষ্টান, এমনকি ইসলাম ধর্মেও আমরা অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তির জয়ের কথা পাই৷
ছবি: Reuters/S. Pring
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাঝে
শুভ শক্তি থাকুক আর না থাকুক, শুভ বোধ, আদর্শ মানবজীবনকে অবশ্যই সত্য ও সুন্দরের পথ দেখায়৷ আর তাই, এর বিপরীতের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সৃষ্টির সেই আদি কাল থেকে৷ ভূত-প্রেত, আত্মা বা জিন নিয়ে তাই রয়েছে অসংখ্য গল্প, কল্প-কাহিনি আর তার সঙ্গে সঙ্গে অজস্র আচার-অনুষ্ঠান, অন্ধ বিশ্বাস৷
ছবি: Reuters/S. Pring
আদ্যাশক্তি দেবী দুর্গা
অসুরের অত্যাচার, পাপীদের অনাচার আর অশুভ শক্তির উত্থানে মানবতা যখন ভূলুণ্ঠিত, নিষ্পেষিত, তখন সমস্ত দেবতারা, অর্থাৎ সমস্ত শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা, সব নিপীড়িত-নির্যাতিতরা সংঘবদ্ধ হন৷ তাঁদের আকুল আবেদনেই আবির্ভূতা হন আদ্যাশক্তি দেবী দুর্গা৷ হিন্দুধর্ম অনুসারে, মহিষাসুর বধের মাধ্যমে শুভ শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি...
বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী, চিন্তা জগতে অশুভ ভাবনার নাম হলো ‘মার’৷ অবশ্য শব্দটি রবীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্গদা এবং মাইকেল মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্যেও চোখে পড়ে৷ মহাযান বৌদ্ধধর্ম বলে, অশুভ শক্তি ধ্বংস হলে পৃথিবী স্বর্গীয় হয়৷ বুদ্ধদেবের কথায়, ‘‘কাম, ক্ষুধা, পিপাসা থেকে বিরত থাকে ‘মার’-কে দূরে রাখতে পারলে প্রত্যেক জীব ‘বুদ্ধ’ হয়ে উঠতে হতে পারে৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/E. Jones
রূপকথা আর ইতিহাসের পাতায়
এশিয়া বা আফ্রিকার মতো ইউরোপেও অশুভ ও শুভ শক্তি নিয়ে নানা লৌকিক আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে৷ একটা সময় ইউরোপে ‘ডাইনি’-দের পুড়িয়ে মারার চল ছিল৷ আবার রূপকথাগুলিতেও ছিল আশ্চর্য সব জাদুর গন্ধ৷ গ্রিম ভ্রাতৃদ্বয়ের ‘স্নো হোয়াইট’ বা ‘স্লিপিং বিউটি’-তেও আমরা ডাইনি, এঞ্জেল এবং শুভ-অশুভ শক্তির সংঘাতের নজির পাই৷
ছবি: picture-alliance / akg-images
জিন-পরীর অস্তিত্ব
বৌদ্ধ, হিন্দু আর খ্রিষ্টধর্মের পাশাপাশি ইসলামেও রয়েছে জিন-পরীর উল্লেখ, আছে ‘ইবলিশ’ বা শয়তানের কথা৷ এই ‘ইবলিশ’, ‘সিলা’ বা ‘ইফরিত’-রা নাকি সব দুষ্টপ্রকৃতির জিন বা আত্মা, যারা কবরস্থানে থাকে আর যে কোনো আকার ধারণ করতে পারে৷ অবশ্য শুধু অশুভ জিন নয়, আলাদিনের মতো শুভ জিন বা ফেরেশতার কথাও রয়েছে ‘সহস্র এক আরব্য রজনি’ -তে৷
ছবি: Fotolia/ThorstenSchmitt
‘প্রিং কা-এক’ উৎসব
আধুনিক সমাজেও কিন্তু এমন হাজারো আচার-অনুষ্ঠান চোখে পড়ে৷ কম্বোডিয়ার মানুষদের যেমন আজও বিশ্বাস, অশুভ শক্তি অসুখ-বিসুখ নিয়ে আসে, মানুষের ক্ষতি করে৷ তাই ‘প্রিং কা-এক’ উৎসবে সারা গায়ে কালি মেখে, অশুভ আত্মাকে দূর করার কাজে নেমে পড়ে সহজ-সরল গ্রামবাসী৷ উৎসবের শেষ হয় ভূরিভোজ দিয়ে৷
ছবি: Reuters/S. Pring
6 ছবি1 | 6
২০১২ সালে বুর্গহার্ডকে একটি ‘‘প্রস্তরবৃত্ত সমিতি'' থেকে বহিষ্কার করা হয়: জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের ব্র্যুল শহরের এই সংঘটির সভাপতি চিলেন বুর্গহার্ড৷ কিন্তু তিনি একটি মসজিদ পোড়ানোর ঘটনায় উল্লাস প্রকাশ করায়, এবং ইউরোপে যে ‘‘তিনটি প্রধান ধর্মমতের'' স্থান আছে, তা অস্বীকার করার দরুণ বুর্গহার্ডকে সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ একটি প্রেস রিলিজে প্রদত্ত উদ্ধৃতি অনুযায়ী বুর্গহার্ড সে-সময় বলেছিলেন যে, ‘‘মরুভূমির ধর্মমতগুলির মরুভূমিতেই থাকা উচিত''৷ ২০১৩ সালে বুর্গহার্ড ফ্রাংকফুর্টে ‘‘ব্লকুপাই'' আন্দোলনকারীদের ছবি তুলে পরে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন৷ ২০১৫ সালে তিনি ফ্রাংকফুর্টে পেগিডা আন্দোলনের একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করেন৷
বুর্গহার্ড বি.-র দৃষ্টান্ত আরো একটি প্রমাণ যে, জার্মানিতে সহিংসতাপ্রবণ চরম দক্ষিণপন্থি বলতেই যে শুধু কিছু স্কিনহেড আর নিও-নাৎসিকে বোঝাবে, তার কোনো মানে নেই৷ জার্মানিতে চরম দক্ষিণপন্থি মনোভাব আরো অনেক বিস্তৃত এবং বহু মানুষের মনে গভীরভাবে গাঁথা – যেমন আমাদেউ আন্তোনিও ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মারিয়ুস হেলভিগ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন৷ নব্য নাৎসিদের বহিরাগত বিদ্বেষের শিকার এক আফ্রিকান তরুণের নামে সৃষ্ট এই নিধি জার্মানিতে চরম দক্ষিণপন্থি কার্যকলাপের উপর নজর রাখে৷
বেন নাইট/এসি
জার্মানির ‘নাৎসি ওঝা'-র এ গল্প আপনাদের কেমন লাগলো? লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷