সপ্তম বিশ্বকাপ শেষেও বাংলাদেশের সঙ্গী হতাশা
১৭ নভেম্বর ২০২৩১৯৯৯ থেকে ২০২৩- এই সাত ওয়ানডে বিশ্বকাপের মধ্যে এবারের দলটিই ছিল বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ইতিহাস বিবেচনায় সবচেয়ে সেরা। পরিসংখ্যান বলছে, বাকি দলগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের সেরা একাদশে খেলা ক্রিকেটারদের ম্যাচ অভিজ্ঞতা আগের অন্য যে কোনো দলের চেয়ে বেশি। তামিম ইকবাল শেষ মুহূর্তে দল থেকে সরে দাঁড়ানোয় পরিসংখ্যানে একটু হেরফের হয়েছে হয়ত, কিন্তু কাগজের অভিজ্ঞতার পার্থক্য তো খুব একটা কমেনি…..কিন্তু কাগজের অভিজ্ঞতা আর মাঠের কার্যকারিতায় যে আকাশ-পাতাল তফাত তার প্রমাণ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মাত্র দুই জয়ে। ২৪ বছর আগে ১৯৯৯-এ নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের অর্জন ছিল দুই জয়।
সেবারের দুই জয়ের অর্জন বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ দেয়ার মতোই ছিল। কিন্তু এবার ঠিক সেই মাত্রার বিষাদ উপহার পেয়েছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বিশ্বকাপের আগে দলটি দারুণ উজ্জীবিত ছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের জয়ে শুরুটা ভালো করার আনন্দও মেলে। পরের চার ম্যাচে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টানা হারেও বড় কোনো আশাভঙ্গ হয়নি। ষষ্ঠ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারটাই সব আশা গুঁড়িয়ে দেয়। সেমিফাইনালে খেলার উচ্চাশাও থামিয়ে দেয়। পরের তিন ম্যাচে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হারের মাঝে শ্রীলঙ্কাকে হারানো মান সামান্য বাঁচালেও দেশের ক্রিকেটের দুরবস্থা একটুও ঢাকতে পারেনি। সেই দুরবস্থা যেন চিরায়ত, একটি নয় একাধিক।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উপযোগী ক্রিকেটারের অভাব
এই বিশ্বকাপে তিন ওপেনার নিয়েই যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ মুহুর্তে তামিম ইকবাল সরে দাঁড়ানোয় বা সরে দাঁড়াতে বাধ্য হওয়ায় গোলযোগ বাঁধে। এ অবস্থায় চট করে একজন বিশ্বকাপ খেলার মতো তৈরি ওপেনার খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিশ্বকাপের জন্যই নাঈম শেখকে তৈরি করা হলেও একের পর এক ব্যর্থতায় একেবারে বাদই পড়ে যান এই ওপেনার। তামিম না থাকা সত্ত্বেও রান খরায় ভুগতে থাকা এই ওপেনারকে আবার দলে নেয়ার সাহস দেখাননি নির্বাচকরা।
বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সদ্য পা রাখা তানজিদ তামিমের ওপর ভরসা রাখতে হয় বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে ৯ ম্যাচের জন্য। ঠিক ৯ ম্যাচই খেলেছেন তানজিদ তামিম এবং অনেকটা ‘প্রত্যাশিতভাবেই' চাপে ভেঙে পড়েছেন প্রবলভাবে। ৯ ম্যাচে মাত্র একটি ফিফটি আর সব মিলিয়ে করেছেন মাত্র ১৪৫ রান।
ওপেনিংয়ের মতো দ্রুত রান তোলার গুরুত্বপূর্ণ পজিশন সাত নম্বরের ব্যাটারকে নিয়েও অনেক ধাঁধা ছিল। সেখানে শামিম হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেনদের দেখা হলেও সবাই ছিলেন ব্যর্থ। এ জায়গাতেও বাধ্য হয়ে ফিটনেস ও ফিল্ডিংয়ের কারণে দল থেকে কার্যত ছুঁড়ে ফেলা মাহমুদউল্লাহকেই নিতে হয় নির্বাচকদের। বিশ্বকাপ শেষে সাত নম্বরে শুরু করা সেই মাহমুদউল্লাহই ৮ ম্যাচে ৩২৮ রান নিয়ে দলের সফলতম ব্যাটার!
শুধু এ দুই জায়গাতেই নয়, অন্যান্য পজিশনেও ব্যাটাররা যে প্রত্যাশা মিটিয়েছেন বা বছর জুড়ে সেরা পারফর্ম করা পেসাররা এগিয়ে এসেছেন, তা-ও হয়নি। তাই প্রশ্ন উঠছে সেরা দলই তো বড় মঞ্চে পারফর্ম করতে পারছে না, পাইপলাইনের ক্রিকেটাররা তৈরি হবেন কবে?
এর উত্তরে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-র ক্রিকেট উপদেষ্টা ও কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বললেন, সমস্যাটা পুরো সিস্টেমেই, ‘‘এমন কথা তো এখন আসা উচিত নয়। এবার তো আমাদের সেরা দল ছিল। এতদিন তো সেটাই আলাপ হচ্ছিল। কিন্তু এই বিশ্বকাপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে আমাদের সমস্যা কোথায়। এক কথায় বলতে গেলে আমাদের ক্রিকেটার তৈরির স্কুলিংয়ের মান অনেকটা কমে গেছে। আগে যে
মানের ক্রিকেটাররা আমাদের দলে উঠে আসতো, সেই পর্যায়ে এখন আমরা খুব দুর্বল। তাছাড়া বর্তমানের কথা বলতে হলে অন্যান্য দলে যে মানের ক্রিকেটার আছে, সেখান থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে।''
ভালো মানের যথেষ্ট ক্রিকেটার উঠে আসার বাধা হিসেবে ফাহিম দায় দেখছেন পুরো সিস্টেমের। আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সিস্টেম যে বিসিবির হাতে, তা সবারই জানা, ‘‘ বাংলাদেশের ক্রিকেটের সমস্যাটা সব দিক থেকে। ক্রিকেটার উঠে আসার মূল প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি শুধু নয়, এখন অ্যাকাডেমি, কোচিং স্কুলগুলো, ঘরোয়া ক্রিকেটের বিভিন্ন ক্যাটাগরি বা জেলা পর্যায়- সব জায়গাতেই সমস্যা আছে। দিন শেষে কথাটা হলো, পড়াশোনা যদি ভালো হয়, তাহলে ভালো ছাত্র বের হবে, তখন পরীক্ষা ভালো হবে এবং পরীক্ষার ফলও ভালো হবে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যাটা সিস্টেমে, পরিকল্পনায়। আমাদের পড়াশোনা ভালো না, আমরা যে পরীক্ষা দেই তাতেও অনেক গলদ আছে। তাই ভালো ছাত্র বের হয়ে আসছে না। এটা ঠিক, আমাদের ক্রিকেটারদের প্রতিভা আছে, কিন্তু সিস্টেমটাই এমন যে, সেটা থেকে খুব ভালো ক্রিকেটার বের হয়ে আসা কঠিন, সমস্যাটা সেখানে।''
বিসিবির সঙ্গে যুক্ত একজন সাবেক ক্রিকেটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, তিনি মনে করেন খুব ভালো ক্রিকেটার উঠে না আসার দায়টা ক্রিকেটারদেরও। জানালেন, ঘরোয়া ক্রিকেটের বড় পর্যায় জাতীয় লিগে খেলতে অনাগ্রহী জাতীয় দলে খেলা বা বাইরে থাকা বেশিরভাগ ক্রিকেটার, ‘‘কিছু ক্রিকেটার আছেন তাদের প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু ব্যাপার হলো, তারা পরীক্ষামূলক খেলা, যেমন জাতীয় লিগ, বিসিএল, ‘এ' দলের চারদিনের বা ওয়ানডে খেলা থাকে, তখন নানা কারণে খেলতে অপারগ থাকেন, অথচ বিপিএল বা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সময় তারা ঠিকই দলের হয়ে মাঠে নামেন এবং জাতীয় দলে ডাক পেলে তো খেলেনই। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অনীহাও কিন্তু ক্রিকেটারদের পিছিয়ে পড়ার একটা কারণ।''
জাতীয় লিগ না খেললেও জাতীয় দলে বিদেশি কোচ ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুবিধা পেলেও জাতীয় দলে ব্যাটাররা কেন ব্যর্থ- এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই এই সাবেক ক্রিকেটারের, ‘‘ব্যাপারটা আসলে আমরা যখন খেলতাম তখন বিসিবিতে সর্বসাকুল্যে একটা মাত্র বোলিং মেশিন ছিল, আর ইনডোর ছিল মিরপুরের একটা। আমাদের ফেসিলিটি ছিল খুব কম, কিন্তু এখন বিসিবিতে ক্রিকেটীয় ফ্যাসিলিটি যে কেউ বলবে- ভালো। সারা বছর জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা তা ব্যাবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু আগে বাংলাদেশ দলে যারা খেলেছেন, তারা অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকগ্রা, শেন ওয়ার্ন, ব্রেট লি বা শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন, চামিন্দা ভাসদের সামলেছেন, আবার রানও করেছেন। এখন গতিময় বোলার থাকলেও ওই মাপের বোলার কিন্তু নেই। তবুও জাতীয় দলে গিয়ে ব্যাটাররা কেন ভালো করতে পারছে না- এর সত্যিই কোনো উত্তর নেই।''
ভালো ক্রিকেটার তুলে আনার চেষ্টায় ঘরোয়া কোচদের মান বাড়ানো দাবি জানালেন দেশ-সেরা কোচের তকমা পাওয়া মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। ঘরোয়া ক্রিকেটে বিদেশি কোচদের তো কোনো কাজ নেই বা তাদের ব্যস্ত করা যাবে না, তাই সালাউদ্দিন মনে করেন, ঘরোয়া কোচদের কোচিং শিক্ষার উন্নতিতে কাজ করতে পারে বিসিবি, ‘‘আমাদের ঘরোয়া পর্যায়ের কোচ এডুকেশন সেক্টরের উন্নতিটা ভালোভাবে এগোচ্ছে না। যেহেতু তারাই স্থানীয় পর্যায়ের ক্রিকেটারদের কোচিং করায়, উনারা যদি কোচেস ট্রেনিংটা ভালোভাবে করেন, তাহলে দেশের ক্রিকেটের উন্নতি হবে এবং ক্রিকেটারদেরও উন্নতি হবে। কোচদের যে জায়গায় সমস্যা, সেখানে তাদের শেখার ব্যাবস্থা করা হোক। দেশে যদি ২০-২৫ জন ভালো মানের লোকাল কোচ থাকে, তবে ক্রিকেট বা ক্রিকেটাররা এমনিতেই ভালো হয়ে উঠবেন। এখন যে অবস্থা তারা একই স্ট্যান্ডার্ডে কাজ করছেন ১০ বছর ধরে। তাহলে ক্রিকেটাররাও তো ওই একই পর্যায়ে থেকে যাচ্ছে।''
‘ভালো' উইকেটে খেলার অনভ্যস্ততা
‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের ঘর' বলা হয় মিরপুর স্টেডিয়ামকে। আর এই ঘরেই যত ‘দুর্নাম'। সাকিব তো একবার বলেই বসেছেন, ‘‘এমন (মিরপুরের) উইকেটে খেললে যে কোনো ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।'' মিরপুর স্টেডিয়ামের ঘূর্ণি পিচে খেলিয়ে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওই বিশ্বকাপে চরম ভরাডুবি হয় মাহমুদউল্লাহর দলের। ধীর ও নীচু উইকেটে খেলার খেসারত দেয় বাংলাদেশ ভালো স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে গিয়ে।
এবারও ঠিক তা-ই হয়েছে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে আসা নিউজিল্যান্ডকে আবারও মিরপুরের স্পিনিং উইকেটে ধরাশায়ী করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এবার ইশ সোধির লেগ স্পিনে উল্টো কুপোকাত হয় বাংলাদেশ। এর আগে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের সঙ্গে চট্টগ্রামের ব্যাটিং উইকেটে সিরিজ হারের হতাশাও যোগ হয়েছিল।
বাংলাদেশের সাবেক কোচ সারোয়ার ইমরানও মনে করেন, এবার বিসিবির ভালো উইকেট বানানোর বিষয়ে সিরিয়াস হওয়া উচিত, ‘‘আমরা যখন লিগ খেলি, তখন রান হয়। কিন্তু যখনই আন্তর্জাতিক খেলা হয়, তখনই কোচ ও অন্যান্য সবাই মিলে নিজেদের উইকেটটা একদম অদ্ভুত বানিয়ে ফেলে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটা টেস্ট জিতেছি (২০১৭), সেটা কিন্তু অপ্রস্তুত উইকেটে খেলে জিতেছি। সেটা তো স্পিন উইকেটও বলা যাবে না। নিজের মাঠে এনে এভাবে বিপক্ষকে ফাঁদে ফেলে জিতলে দিনকে-দিন আমাদের উপরের দিকে না, নীচের দিকেই যেতে হবে। তা-ই হয়েছে এই বিশ্বকাপে।''
বিসিবির প্রতি আফগানিস্তানকে দেখে কিছু শেখার পরামর্শ দিলেন সারোয়ার ইমরান। পাশাপাশি নিয়মিত কিছু বিষয়েও যে বিসিবিকে নজর দিতে হবে তা-ও মনে করালেন, ‘‘এই বিশ্বকাপ থেকেই আমরা আফগানিস্তানকে দেখি, ওদের থেকে কিছু শিখুক বিসিবি। ওদের তো নিজেদের মাঠও নেই। ওরা তো সেই হোম সুবিধা নেয় না। তবুও ওরা তো বিশ্বকাপে চারটা ম্যাচ জিতে গেল। আসলে শুধু উইকেট না, আমাদের লিগগুলোর মান বাড়ানো দরকার। ডাবল লিগ পদ্ধতির জাতীয় লিগ হোক, বিপিএল আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় করা হোক। লিগে আম্পারিংয়ের মানও বাড়ানো দরকার। তো উন্নতির তো জায়গা অনেক আছে। ক্রিকেটের স্বার্থে সদিচ্ছার সঙ্গে সেটা করা উচিত বিসিবির।''
বিসিবি এখন কী করবে?
বিশ্বকাপ থেকে জাতীয় দল ফিরে এলেও বিসিবি এখনো চুপ। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার সুরতহাল বিশ্লেষণে এখনও বসেননি বোর্ড কর্তারা। কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে এবং দল পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের বিশ্বকাপ শেষের রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা বোর্ডে। সেই রিপোর্ট কবে জমা দেয়া হবে তা দৃশ্যত এখনো কেউ জানেন না। মূলত যে কোনো বোর্ড মিটিংয়েই যে কোনো বিষয়ে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত হয় বা প্রস্তাব তোলা হয়। জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বোর্ড মিটিং হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বিসিবির সঙ্গে যুক্ত ওই সাবেক ক্রিকেটার অবশ্য আশ্বাস দিলেন বোর্ড মিটিংয়ে অবশ্যই বিশ্বকাপ ব্যর্থতার কারণ খুঁজে ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করা হবে, ‘‘এখন বিশ্বকাপে আমাদের যে ব্যর্থতা হয়েছে, সেটা অবশ্যই মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। এখন অবশ্যই সামনের সিরিজগুলোতে নতুন কিছু ভাবতে হবে। আমাদের এখন পর্যন্ত যে চিন্তা ছিল সেটার একটা ফল আমরা ২০২৩-এ পেয়েছি এবং এখন প্লাস-মাইনাস হিসাব করে সামনে তাকাতে হবে। বিসিবির সামনের বোর্ড মিটিংয়ে এ ব্যাপারটা অবশ্যই উঠে আসবে এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য যেটা ভালো সে পথেই বিসিবি হাঁটবে।''
ক্রিকেটার তৈরির ব্যাপারে সামনে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলাদের প্রাধান্য দেয়ার পরিকল্পনার কথাও জানালেন তিনি। তাছাড়া যুব দল, হাই পারফরম্যান্সের ক্রিকেটারদেরও ক্রিকেটীয় উন্নয়নে গত জানুয়ারি থেকে নিয়োগ পাওয়া অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার অব এক্সেলেন্স (ক্রিকেট)-এর সাবেক হেড কোচ ডেভিড মুর কাজ করছেন বলে জানান। এছাড়া তিনি কোচদের নিয়েও বিভিন্ন কর্মশালা করার ক্ষেত্রে সমন্বয় করবেন। ভালো উইকেটে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করার সুবিধার্থে মিরপুর অ্যাকাডেমির পাশেই গ্রিন হাউজ তৈরি করে ২০টি পিচ বানাচ্ছে বিসিবি। সেখানে বিভিন্ন ধরনের টার্ফ পিচ এবং কংক্রিটে অনুশীলন করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। এ বছর আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো উইকেটে খেলার অভ্যাস ধরে রাখার পক্ষে বিসিবি- এমনটাও জানিয়েছেন ওই সাবেক ক্রিকেটার।
পরিকল্পনায় কোনো অভাব থাকে না বিসিবির। বরাবরই বড় বড় পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত থাকলেও ফলের চিন্তায় শেষে পুরোনো পথেই হাঁটতে হয় বা প্রয়োগের অভাবে ভেস্তে যায়। ২০২৩ বিশ্বকাপের বড় ব্যর্থতাকেও যদি শিক্ষা হিসেবে না নেয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের হতাশার গল্প কখনও কি শেষ হবে?