‘সফল অপারেশন’
১২ আগস্ট ২০১৭শনিবার সকাল ৮টার দিকে মুক্তামনিকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়৷ অস্ত্রোপচার করে তার হাত থেকে তিন কেজি মাংসপিণ্ড ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ মাংসপিণ্ড পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে৷
অপারেশনের পর ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘‘অপারেশন সফল হয়েছে৷ মুক্তামনি ভালো আছে৷ তার হাতের রোগাক্রান্ত অংশ কেটে ফেলতে আমরা সক্ষম হয়েছি৷ তবে এক অপারেশনেই এটা শেষ হবে না৷ আরও অন্তত ৪/৫টি অপারেশন করা লাগবে৷ তার জ্ঞান ফিরেছে, কথা বলেছে৷''
ঝুঁকি ও রক্তক্ষরণের আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ঝুঁকিমুক্ত কখনোই বলা যাবে না৷ তবে ডেফিনেটলি ঝুঁকি কমে এসেছে৷''
রোগীকে নিয়ে কোন ভয় রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম বলেন, ‘‘ডেফিনেটলি আছে৷ আমরা তার হাতের বেশিরভাগ অংশটুকু ফেলে দিয়েছি৷ আপনারাও জানেন ওর শরীরের বেশ কিছু অংশে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে৷ সেগুলো আমরা রিমুভ করবো৷''
‘‘আমরা এটুকু বলতে পারি, হাতের রোগাক্রান্ত যেটুকু অংশ ফেলে দিয়েছি সেখানে আর এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা নেই,' যোগ করেন তিনি৷
এদিকে, মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অপারেশনের পর আমরা মেয়ের পাশেই আছি৷ সে কথা বলছে৷ আমরা খুবই খুশি৷''
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরায় দেড় বছর বয়স থেকে মুক্তামনির ডান হাতে সমস্যার শুরু হয়৷ প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়৷ ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি৷ কিন্তু পরে তার ডান হাতটি ফুলে অনেকটা কোলবালিশের মতো হয়ে যায়৷ সে বিছানাবন্দি হয়ে পড়ে৷ মুক্তামনির রোগ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়৷ এরপর গত ১১ জুলাই মুক্তামনিকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে৷
উল্লেখ্য, এতোদিন মুক্তামনির রোগটিকে বিরল রোগ বলা হলেও গত শনিবার তার বায়োপসি করার পর জানা গেছে মুক্তামনির রক্তনালীতে টিউমার হয়েছে যেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে হেমানজিওমা বলা হয়ে থাকে৷