জার্মানির বাভেরিয়া রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এডমুন্ড স্টয়বার বলেছেন, তাঁর দলের সফলতাই রাজ্যে দলের বর্তমান খারাপ পরিণতির জন্য দায়ী৷ মিডিয়া গ্রুপ ‘রিডাকসিয়ুনসনেটৎসভ্যার্ক ডয়েচলান্ড'কে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
রবিবার বাভেরিয়া রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ঐ রাজ্যে ‘ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন' বা সিএসইউ এককভাবে সরকার পরিচালনা করে আসছে৷ কারণ, এতদিন নির্বাচনে ঐ দল প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে এসেছে৷ কিন্তু এবারের নির্বাচনের আগে পরিচালিত সবশেষ জরিপ বলছে, সিএসইউ দল মাত্র ৩৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে সিএসইউকে এবার প্রথমবারের মতো কারো সঙ্গে জোট গড়তে হতে পারে৷
সিএসইউর এই রেকর্ড পরিমাণ খারাপ অবস্থার জন্য দলের অনেকেই জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতিকে দায়ী মনে করেন৷ কারণ, ম্যার্কেলের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় জোট সরকারের একটি অংশ হচ্ছে সিএসইউ৷
তবে সিএসইউ'র হয়ে বাভেরিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এডমুন্ড স্টয়বার জার্মানির বাইরে থেকে আসা শরণার্থীদের দায়ী করছেন না৷ তিনি সিএসইউর সম্ভাব্য পরিণতির জন্য জার্মানির অন্য রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিদেরই মূলত দায়ী মনে করছেন৷
ভোটের জন্য কী না করেন জার্মান প্রার্থীরা!
দরজায় কড়া নাড়ছে জার্মানির ফেডারেল নির্বাচন৷ ভোটের জন্য এখন যে কোনো কিছুই করতে রাজী প্রার্থীরা৷ প্রার্থী ও দলগুলোর এমন কিছু অদ্ভুত কর্মকাণ্ড নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: DW/R. Oberhammer
একেবারে সবুজ
গ্রিন পার্টি বা সবুজ দল জার্মানির পরিবেশবাদী দল হিসেবে পরিচিত৷ সুতরাং পরিবেশভিত্তিক কাজ করবেন এই দলের প্রার্থীরা, এটাই স্বাভাবিক৷ কিন্তু তাই বলে নির্বাচনের প্রার্থীরা সাইকেলে চড়ে প্রচারণা চালাবেন! এমন ঘটনাই ঘটেছে ওস্টেরড শহরে৷ ২৪ হাজার বাসিন্দার এ শহরটিতে দলের প্রার্থী ফিওলা ফন ক্রামন একটি পরিবেশবান্ধব ই-বাইকে চড়ে চেষ্টা করছেন ভোটারদের আকৃষ্ট করার৷
ছবি: DW/R. Oberhammer
ফ্রি খাবার
অনেক দেশে ভোটারদের ফ্রি খাবার দিয়ে আকৃষ্ট করায় বিধিনিষেধ থাকলেও জার্মানিতে এমন নিষেধাজ্ঞা নেই৷ অবশ্যই খাবারের বিনিময় হিসেবে ভোট চাওয়া যাবে না৷ কোলনের কোরভাইলার এলাকার ৭৫ শতাংশ ভোটারই অভিবাসী পরিবারের৷ সেখানে বাম দল আয়োজন করেছে ক্যাম্পেইন পিকনিকের৷ বারবিকিউ, নানা রকমের পানীয়, টেবিল সকার এবং শিশুদের জন্য বেলুনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে৷ উদ্দেশ্য একটাই– কেউ এসে বসলে তার সাথে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা৷
ছবি: DW/P. Böll
বিয়ার নয়, ক্লাবহাউজ
জার্মানরা বিয়ার বিশেষভাবে পছন্দ করে৷ তাই বিয়ারগার্ডেনেই সাধারণত আয়োজন হয় নানা অনুষ্ঠানের৷ কিন্তু বাভেরিয়ার কুল্মবাখ শহরে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইয়ের সহযোগী দল খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন -সিএসইউ বেছে নিয়েছে নতুন আইডিয়া৷ দলের প্রার্থী এমি সয়েলনার এবং সিডিইউয়ের বক্তা ভ্যোলফগাং বসবাখ আলোচনার আয়োজন করেছেন এক সকার ক্লাব হাউসে৷
ছবি: DW/P. Böll
ঘণ্টা আর বাঁশি
সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডির তরুণরা বাঁশি ও ঘণ্টা নিয়ে নেমেছেন মাঠে৷ হইহুল্লোড়ে দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী মার্টিন শুলৎসকে স্বাগত জানানোই লক্ষ্য৷ একই সাথে দলের উপস্থিতি যতটা সশব্দে জানান দেয়া যায়৷ ও হ্যাঁ, সবার হাতে হাতে সাবানের বুদবুদও ছিল৷
ছবি: DW/R. Oberhammer
শিশা বারে নির্বাচনি প্রচারণা
এত কিছু থাকতে শিশা বার! এমন অদ্ভুত ভেন্যু বেছে নিয়েছে বিদ্রুপাত্মক দল ‘দি পার্টি’৷ ফ্রাংকফুর্টের এক শিশা বা হুক্কা বারে রীতিমতো আনুষ্ঠানিক পোশাকে দলের ব্যানার হাতে ভোটারদের স্বাগত জানান নেতারা৷ দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা সত্যিকারের নির্বাচন প্রচারণা না৷
ছবি: DW/R. Oberhammer
সবার জন্য সর্বনিম্ন বুদ্ধি
অনেক দলই মাথা ঘামাচ্ছে সর্বনিম্ন মজুরি নিয়ে৷ তবে দি পার্টির মূল চিন্তা মানুষের সর্বনিম্ন বুদ্ধি নিয়ে৷ মানুষ হওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বুদ্ধি অবশ্যই থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন দলের নেতারা৷ কিছু দল পরিচয় দিচ্ছে কট্টর বাম, কেউ আবার চরম ডান, কিন্তু দি পার্টি নিজের পরিচয় দেয় কট্টর মধ্যপন্থি হিসেবে৷ প্রহসন, মজা আর কৌতুকই আসল, নিজেদের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক অংশের সাথে যুক্ত করতে চান না তাঁরা৷
ছবি: DW/R. Oberhammer
6 ছবি1 | 6
স্টয়বার বলেন, বাভেরিয়ার অর্থনৈতিক সাফল্যের কারণে গত ১০ বছরে অন্যান্য রাজ্য থেকে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাভেরিয়ায় এসেছেন৷ ‘‘জার্মানির মধ্যে বাভেরিয়া সেরা৷ তবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন কখনো অন্যরকম প্রতিক্রিয়াও ডেকে আনতে পারে,'' সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি৷
সম্ভাব্য জোট
রবিবারের নির্বাচনে যদি সবশেষ জরিপের ফলাফলের প্রতিফলন দেখা যায়, তাহলে সিএসইউকে জোট গড়তে হবে৷ সেক্ষেত্রে দলটি যদি জোটসঙ্গী হিসেবে একটি দলকে নিতে চায়, তাহলে পরিবেশবাদী সবুজ দল কিংবা অভিবাসনবিরোধী এএফডিকে বেছে নিতে হবে৷
কিন্তু সিএসইউর নেতারা এএফডির সঙ্গে জোটে যেতে চান না৷ সেক্ষেত্রে সবুজ দলকে সঙ্গী করতে হবে৷
কিন্তু নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতি বিষয়ে সবুজ দলের সঙ্গে সিএসইউর যে মতপার্থক্য রয়েছে, সেটি বিবেচনায় নিলে দুই দলের মধ্যে কীভাবে জোট হবে তা বুঝতে পারছেন না সাবেক মুখ্যমন্ত্রী স্টয়বার৷