1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা রাজনীতি

প্রভাষ আমিন
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

সামরিক-বেসামরিক আমলাদের চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর নির্বাচনে অংশ নিতে তিনবছর অপেক্ষা করতে হয়৷ এই সিদ্ধান্তটা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়৷

একসময় জমিদারের সন্তানেরা রাজনীতি করে নিঃস্ব হয়ে যেতেন৷ আর এখন নিঃস্ব লোকজন রাজনীতি করে জমিদার বনে যাচ্ছেন - লিখেছেন প্রভাষ আমিনছবি: Rashed Mortuza/DW

কারণ আমলাদের মধ্যে যাদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা থাকে, তারা চাকরিতে থাকার সময়ই ক্ষমতার ব্যবহার বা অপব্যবহার করে এলাকায় অনেক কাজ করেন, যা সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে তাদের এগিয়ে রাখে৷ মানে হলো, তিনি খেলাটা শুরুই করেন একটু এগিয়ে থেকে৷

অবশ্য নির্বাচনে মাঠ সমতল রাখার স্বার্থেই আমলাদের চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর তিনবছর অপেক্ষা করার বিধান, যাতে মানুষ তাদের কাজ ভুলে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পান৷ আমলাদের ক্ষেত্রে এত কড়াকড়ি বিধান থাকলেও খেলোয়াড়দের জন্য সবকিছু উন্মুক্ত৷ মাশরাফি অবসর নেয়ার আগেই এমপি বনে গেছেন৷ সাকিব আল হাসান এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেরই অধিনায়ক৷ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন মাঠের খেলায় ব্যস্ত, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তখন ব্যস্ত নির্বাচনের মাঠে৷ মাগুরা-১ আসনে ঝানু পলিটিশিয়ান সাইফুজ্জামান শিখরকে হটিয়ে সাকিবকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ৷ আমলারা যাতে তাদের ক্ষমতাকালীন সুবিধা নির্বাচনের মাঠে টেনে আনতে না পারেন, সে জন্য তিনবছরের সময় বাধা থাকলেও খেলোয়াড়রা খেলার মাঠের জনপ্রিয়তা নিয়েই নেমে পড়তে পারেন নির্বাচনের মাঠে৷ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান৷

শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বেরই সেরা অলরাউন্ডার সাকিব৷ আরেকটু মনোযোগ দিয়ে, আরো বেশি ম্যাচ খেললে সাকিবের সামনে সুযোগ ছিল সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হওয়ারও৷ কিন্তু খেলার চেয়ে তার মনোযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য, মডেলিং, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার দিকেই বেশি৷ মাঠের সেরা পারফরমার সাকিবের মাঠের বাইরের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ, নৈতিকতা নিয়েও কথা হয়৷ জুয়ারীদের সাথে যোগাযোগের অপরাধে একবছর নিষিদ্ধও ছিলেন৷ দর্শক পেটানো, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা, কারণে-অকারণে ছুটি নেয়া তো আছেই, সাকিবের নাম এসেছে শেয়ার কেলেঙ্কারিতেও৷ সাকিব আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর আমি ফেসবুকে লিখেছিলাম, ‘সাকিব এখন কোনটা মনোযোগ দিয়ে করবে- খেলা, রাজনীতি না ব্যবসা?' সেখানে একজন মন্তব্য করেছিলেন, ‘সাকিব খেলা ও রাজনীতিকে ব্যবহার করে ব্যবসা করবে৷‘ আরেকজন লিখেছেন, সাকিব মূলত ব্যবসায়ী৷ এতদিন টাকার জন্য বিভিন্ন ক্রিকেট লীগে খেলেছে৷ এখন বুঝেছেন, সবচেয়ে লাভজনক লীগ হলো আওয়ামী লীগ, তাই এই লীগেই যোগ দিয়েছেন৷

আসলেই রাজনীতি হলো এখন সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা৷ একসময় জমিদারের সন্তানেরা রাজনীতি করে নিঃস্ব হয়ে যেতেন৷ আর এখন নিঃস্ব লোকজন রাজনীতি করে জমিদার বনে যাচ্ছেন৷ রাজনীতি সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা, এটা কিন্তু কথার কথা নয়৷ এটার কিন্তু দালিলিক প্রমাণ আছে৷ প্রতিবছর নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের হলফনামা দিতে হয়৷ তাতে প্রার্থীদের আয়-ব্যয় ও সম্পদের হিসাব থাকে৷ আমি গভীর আগ্রহ নিয়ে পত্রিকায় এই হলফনামার খবর পড়ি, আর বিস্মিত হই৷ এবারেরটা ধরলে এখন পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে প্রার্থীরা হলফনামা দিয়েছেন৷ হলফনামাগুলো বিশ্লেষণ করলে যে কেউ আমার সাথে একমত হবেন, রাজনীতির চেয়ে লাভজনক কোনো ব্যবসা নেই৷ এত প্রবৃদ্ধি আর কোনো ব্যবসায় সম্ভব নয়৷

রেজাউল করিম বাবলু ছিলেন বগুড়ার স্থানীয় এক পত্রিকার সাংবাদিক৷ নির্বাচন করারও রোগ ছিল তার৷ একবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ১৭ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছিলেন৷ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ১৭ ভোট পাওয়া সেই বাবলুই এখন জাতীয় সংসদ সদস্য৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন তিনি৷ গাবতলী-শাহজাহানপুর নিয়ে গঠিত বগুড়া-৭ আসনটি বিএনপির ঘাঁটি৷ কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে শেষ মুহুর্তে বগুড়া-৭ আসনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেলে বিপাকে পড়ে যায় বিএনপি৷ আর কোনো উপায় না পেয়ে নিজেদের আসনটি ধরে রাখতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলুকে সমর্থন দেয় তারা৷ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ১৭ ভোট পাওয়া বাবলু ১ লাখ ৯০ হাজার ২৯৯ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ লটারি জিতে না হয় এমপি হয়ে গেলেন৷ কিন্তু এরপর কোন আলাদীনের চেরাগ পেয়ে গেলেন তিনি, সেটা বিস্ময়কর৷ হলফনামায়ি দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তার মাসিক আয় ছিল ৪১৭ টাকা৷ ঠিক পড়েছেন, মাত্র ৪১৭ টাকা৷ আর গত পাঁচ বছরে তিনি নিজে কোটিপতি হয়েছেন, স্ত্রীকে কোটিপতি বানিয়েছেন৷ ৪১৭ টাকার মাসিক আয় বেড়ে এখন হয়েছে ৩ লাখ ২২৮ টাকা৷ কোটি টাকা দামের গাড়ি, বিলাসবহুল ফ্ল্যাট৷ আঙ্গুল ফুলে বটগাছ বনে যাওয়ার উদাহরণ হতে পারেন এই রেজাউল করিম বাবলু৷

শুধু বাবলু একা নন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন; তাতে সব এমপি আঙ্গুল ফুলে বটগাছ না হলেও কলাগাছ হয়েছেন প্রায় সবাই৷ আমি বুঝি না, জাতীয় সংসদ সদস্যরা তো জনগণের প্রতিনিধি৷ তাদের মূল কাজ হলো জনগণের জন্য আইন প্রণয়ন করা৷ কিন্তু তারা কীভাবে মাত্র পাঁচবছরে একেকজন কোটি কোটি টাকা কামাই করেন৷ তাও প্রদর্শিত অর্থ যাদের এত, না জানি তাদের অপ্রদর্শিত অর্থ কত৷ বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শাম্মী আহমেদ৷ এই আসনে আওয়ামী লগের বর্তমান সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ৷ মনোনয়ন বঞ্চিত পঙ্কজ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন৷ তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন, শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ায় অঢেল সম্পদের মালিক৷ কয়েকদিন আগে পত্রিকায় খবর এসেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সোবহান গোলাপের আমেরিকায় প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে৷ রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেরই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডায় সম্পত্তির খবর শুনি৷ ক্যানাডায় তো বেগম পাড়া আছে; যেখানে বাংলাদেশের মন্ত্রী, এমপি, ব্যবসায়ী, আমলাদের বেগমদের নামে বাড়ি আছে৷ আমি নিশ্চিত কোনো প্রার্থীই তাদের হলফনামায় দেশের বাইরের সম্পত্তির হিসাব দেননি৷ তার মানে তারা সবাই হলফ করে মিথ্যা কথা বলেছেন৷ শুধু নির্বাচনের আগের হলফনামা নয়, নির্বাচনের পরে নির্বাচনের ব্যয় নিয়েও নির্বাচিত এমপিরা যে হলফনামা দেন; তাও একশোভাগ মিথ্যা৷ তার মানে মিথ্যার ওপর ভর করেই শুরু হয় আইন প্রণেতাদের দায়িত্ব৷

প্রতিবছর আয়কর রিটার্ন জমা দিতে গেলে ভয়ে ভয়ে থাকি৷ পাই পাই হিসাব দিতে হয়৷ আয়কর কর্মকর্তার নানা প্রশ্নের জবাব দিতে হয়৷ আগের বছরের সম্পদের সাথে পরের বছরের সম্পদের ধারাবাহিকতা থাকতে হয়৷ কিন্তু ৪১৭ টাকা মাসিক আয়ের একজন ব্যক্তি মাত্র পাঁচবছরে কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান৷ আয়কর কর্মকর্তারা কি সংসদ সদস্যদের সম্পদের অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেন না!

এমনিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে একজন ব্যক্তি একবার একটি শুল্কমুক্ত গাড়ি পান৷ এমপি হোস্টেলে একটি বাসা পান৷ প্রতি মাসে ভালো অঙ্কের সম্মানী পান৷ আবেদন করলে রাজউকের কোনো আবাসিক এলাকায় একটি প্লট পান৷ তার মানে একজন সংসদ সদস্য চাইলে সৎভাবেও স্বচ্ছল জীবনযাপন করতে পারেন৷ কিন্তু আমাদের এমপিরা অল্পে সন্তুষ্ট নন৷ দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা বা পেশা ছাড়াই তারা পাঁচবছরে সম্পদের পাহাড় গড়েন৷ তাদের কোনো চক্ষুলজ্জাও নেই৷ সবাই যে তাদের এই প্রবৃদ্ধির ফাঁকিটা ধরতে পারেন, সেটাও তারা ধরতে পারেন না৷

মন্ত্রী-এমপিরা কীভাবে অঢেল অর্থ উপার্জন করেন, তার একটা ছোট উদাহরন গত সপ্তাহেই দেখেছে বাংলাদেশ৷ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য ৪৮ জনের কাছ থেকে মোট ৯৪ লাখ টাকা নিয়েছেন প্রতিমন্ত্রীর লোকজন৷ কিন্তু ৪৮ জনের কেউ চাকরি পাননি৷ টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি৷ এই অবস্থায় ভূক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ করেন৷ জাকির হোসেনের ধারণা, এই অভিযোগের কারণেই তিনি এবার মনোনয়ন পাননি৷ এরপর তিন চাকরি প্রার্থীকে প্রতিমন্ত্রীর মিন্টো রোডের বাসায় ডেকে পাঠানো হয় টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে৷ কিন্তু ডেকে নিয়ে তাদের একটি রুমে আটকে বেধড়ক পেটানো হয়৷ পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তো বটেই, এমনকি প্রতিমন্ত্রী নিজেও রড দিয়ে তাদের পিটিয়েছেন৷ মন্ত্রীর বাসায় মারধরের ঘটনায় পত্রিকায় খব্র প্রকাশিত হলে, প্রতিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করা হয়৷ কিন্তু পুরো ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়, প্রতিমন্ত্রীর বাসায় পিটুনী থেকে বাঁচতে পালাতে গিয়ে একজন দেয়াল টপকে পাশের বাসায় চলে যান৷ পড়বি তো মালির ঘাড়ে৷ পাশের ভবনটি হলো গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়৷ দেয়াল টপকে প্রবেশের অপরাধে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ৷ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উদঘাটিত হয় সত্য৷ গোয়েন্দা পুলিশের মধ্যস্থতায় প্রতিমন্ত্রীর লোকজন ঘুষের সাড়ে নয় লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন৷ একদফা চাকরির তদ্বির থেকে যদি প্রায় কোটি টাকা ঘুষ পাওয়া যায়, তাহলে সম্পদ তো লাফিয়ে লাফিয়েই বাড়ার কথা৷

এখন ব্যবসায়ীরাও চালাক হয়ে গেছেন৷ আগে ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদদের চাঁদা দিতেন৷ এখন ব্যবসায়ীদের অনেকে নিজেরাই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন৷ তাতে এখন আর চাঁদা দিতে হয় না৷ আর রাজনীতিতে এলে ব্যবসাও চাঙা হয়৷ যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, সেসব মন্ত্রী-এমপির আয় ও সম্পদের যৌক্তিক প্রবৃদ্ধি না হয় মানা গেল৷ কিন্তু মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে যাদের কোনো দৃশ্যমান ব্যবসা বা পেশা নেই, তাদের অর্থ আসে কোত্থেকে? ৫ বছরে তা ১০০ গুন, ২০০ গুন বাড়ে কীভাবে? দুর্নীতি দমন কমিশন সত্যিকারের স্বাধীন হলে, এই হলফনামা বিশ্লেষণ করেই এমপি প্রার্থীদের মধ্যে অনেককে আটকাতে পারতো৷ কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের সংঘাত বলে নৈতিকতার একটা ধারণা আছে৷ বাংলাদেশে এই ধারণাটা নেই বললেই চলে৷ মন্ত্রী-এমপিরা যে কোনো অর্থ উপার্জন করেন, নীতি নৈতিকতার ধার ধারেন না৷

রাজনীতি হলো নীতির রাজা৷ কিন্তু আমরা সেটিকে বানিয়েছি রাজা হওয়ার নীতি৷ রাজনীতিবিদরা মুখে জনগণের ভাগ্য পারিবর্তনের কথা বলেন বটে৷ কিন্তু আসলে জনগণের ভাগ্য বদলায় না৷ বদলায় শুধু নিজেদের ভাগ্য৷ সে জন্যই রাজনীতিবিদরা তো বটেই; খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী, শিল্পী, নায়ক, গায়ক, আমলা, পেশাজীবী সবাই এমপি হতে চান৷ একবার এমপি হওয়া মানেই যেন আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের দৈত্যকে বশ করে ফেলা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ