বাংলাদেশে আবার রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা নিয়ে একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন, ‘‘আর কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া যাবে না, সীমান্তে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হোক৷’’ ফেসবুক পাতায় এরকম আরো প্রতিক্রিয়া এসেছে৷
বিজ্ঞাপন
‘‘রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার আর কোনো সুযোগ দেওয়া মোটেও উচিত হবে না, সেনাবাহিনীর উচিত দৃঢ় ভূমিকা নেওয়া,’’ মনে করেন ডয়চে ভেলের পাঠক আসিফ আমিন৷ প্রায় একই মত পোষণ করেন বশিরুল ইসলাম৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ আনসার বাহিনীকে ভারি অস্ত্র দিয়ে দ্রুত সীমান্তে পাঠানো হোক, রোহিঙ্গাদের জন্য আনসারই যথেষ্ট৷’’
আর ‘‘মানবতাবিরোধী এতবড় গণহত্যা করেও মিয়ানমারের বিচার হয়নি৷ তাই আবারও তারা গণহত্যার নেশায় মেতেছে’’ এই মন্তব্য আসাদুজ্জামান রিপনের৷
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যাকে দেশের দূর্বল কূটনীতির ফসল বলে আখ্যায়িত করেছেন পাঠক মুহাম্মদ নূর আলম৷ মুহাম্মদ আলমাস খান মনে করেন, ‘‘উপযুক্ত জবাব না দেয়া পর্যন্ত এমনটাই হবে আর বাংলাদেশ আজ না বুঝলেও তা পরে বুঝবে৷’’
‘‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাঝে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখা দরকার, যাতে বাংলাদেশ সব সময় সময় গরু, পেঁয়াজ, মাছ ইত্যাদি আমদানি করতে পারে’’ এই মন্তব্য পাঠক কাজি সিরাজ উদ্দিন আহমেদের৷
‘‘আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া যাবে না৷ বাংলাদেশের সীমান্তে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হউক’’ দাবি আনোয়ার ইসলামের৷
‘‘আমাদের অনেক মানবতা আর এই মানবতাই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে,’’ এই মন্তব্য পাঠক উত্তম কুমারের৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...
রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংসতার চিত্র
মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে গেছে৷ রয়টার্সের আলোকচিত্রীর ছবিতে সেইসব নৃশংসতার ছবি ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Reuters/J. Silva
একবছরের শিশু
মনকে নাড়া দেয়া ব্যান্ডেজে মোড়ানো তুলতুলে ছোট্ট এই দু’টি পা শহিদের৷ বয়স মাত্র এক বছর৷ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে দাদি তাহেরা যখন পালাচ্ছিলেন, তখন তাঁর কোল থেকে পড়ে যায় ছোট্ট শহিদ৷ ছবিটি কক্সবাজারে রেডক্রসের এক হাসপাতালে ২৮ অক্টোবর তোলা৷
ছবি: Reuters/H. McKay
কালাবারো, ৫০
রাখাইনের মংদুতে তাঁদের গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয় সেনা সদস্যরা৷ এতে স্বামী, মেয়ে ও এক ছেলেকে হারান কালাবারো৷ তাঁর ডান পায়ে আঘাত করা হয়৷ যেখানে পড়ে গিয়েছিলেন সেখানেই কয়েক ঘণ্টা মারা যাওয়ার ভান করে ছিলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/J. Silva
সেতারা বেগম, ১২
নয় ভাই-বোনের মধ্যে একজন সে৷ সেনারা যখন তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, তখন বাকি আটজন বের হয়ে যেতে পারলেও সে আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে গিয়েছিল৷ পরে তাকে উদ্ধার করা হয়৷ তবে পা পুড়ে যায়৷ এই অবস্থায় বাংলাদেশে পৌঁছেছে সে৷ বাংলাদেশেই তার চিকিৎসা করা হয়৷ এখন তার দুই পা থাকলেও নেই কোনো আঙুল৷
ছবি: Reuters/J. Silva
নূর কামাল, ১৭
নিজের ঘরে লুকিয়ে ছিল সে৷ সেখান থেকে সৈন্যরা তাকে খুঁজে বের করে প্রথমে রাইফেলের বাট, পরে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করে৷ ছবিতে সেটিই দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/J. Silva
আনোয়ারা বেগম, ৩৬
ঘরে আগুনের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে পালাতে গিয়েছিলেন তিনি৷ তবে এর মধ্যেই পুড়ে যাওয়া ছাদ তাঁর মাথায় ভেঙে পড়ে৷ ফলে শরীরে থাকা নাইলনের কাপড় গলে হাত পুড়িয়ে দেয়৷ ‘‘আমি মনে করেছিলাম, মরে যাব৷ তবে আমার সন্তানদের জন্য বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি,’’ রয়টার্সকে বলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/J. Silva
মমতাজ বেগম, ৩০
সেনারা তাঁর বাড়িতে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র দিতে বলেছিল৷ তখন মমতাজ তাঁদের দারিদ্র্যের কথা জানালে সৈন্যরা বলেছিল, ‘‘যদি তোমার কোনো অর্থ না থাকে, তাহলে আমরা তোমাকে হত্যা করব৷’’ এই বলে, সৈন্যরা তাঁকে ঘরে বন্দি করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল৷ কোনোরকমে সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে বের হয়ে দেখেন তাঁর তিন ছেলে মৃত, আর মেয়েকে প্রহার করা হয়েছে, তার রক্ত ঝরছে৷
ছবি: Reuters/J. Silva
ইমাম হোসেন, ৪২
মাদ্রাসায় পড়িয়ে ফেরার পথে তিন ব্যক্তি ছুরি নিয়ে তাঁর উপর হামলা করেছিল৷ পরের দিনই তিনি তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গ্রামের অন্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন৷ এরপর তিনিও কক্সবাজারে পৌঁছান৷
ছবি: Reuters/J. Silva
মোহাম্মদ জাবাইর, ২১
গ্রামের বাড়িতে এক বিস্ফোরণে তার শরীরের এই অবস্থা৷ ‘‘আমি কয়েক সপ্তাহ অন্ধ ছিলাম৷ কক্সবাজারের এক সরকারি হাসপাতালে ২৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলাম,’’ বলেছে সে৷