1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সবুজ পৃথিবীতে সোনা

নাদিয়া পন্টেস/এসি৬ আগস্ট ২০১৫

অ্যামাজন রেন ফরেস্ট, সবুজ পৃথিবীর সবুজতম ফুসফুস৷ সেখানে সবুজের বদলে সোনার খোঁজ চলেছে, বেআইনিভাবে, গভীর জঙ্গলের মধ্যে, ইন্ডিও উপজাতির মানুষদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায়৷

Gold Australien Goldschürfen Goldfieber Goldgräber Nugget
ছবি: picture-alliance/dpa

পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগের হেলিকপ্টারে করে এজেন্টদের অ্যামাজন নদীর উপত্যকায় গহীন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যের মাঝখানে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ কায়াপো ইন্ডিয়ানদের জন্য সংরক্ষিত এলাকাটিকে বেআইনি সোনার খনির হাত থেকে বাঁচানো প্রয়োজন৷ হেলিকপ্টার থেকে স্পষ্ট দেখা যায়, কোথায় কোথায় মাটি খুঁড়ে সোনার খোঁজ করা হয়েছে৷

অভিযান শুরু হল৷ এ ধরনের অপারেশন চালাতে বেশ কয়েক মাস ধরে প্ল্যানিং করতে হয়৷ এজেন্টরাও কোনোরকম খোঁজখবর না দিয়েই হানা দেন৷ সোনার খোঁজে যারা জঙ্গলের মাঝখানে খোঁড়াখুঁড়ি করে, তাদের একজনকে ধরা হল৷ তার বক্তব্য, সে জানে, এটা একটি রিজার্ভ, ইন্ডিয়ানদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা৷ সে এসেছে তার গোটা পরিবারকে নিয়ে৷ এবার কিন্তু দিন পাঁচেকের মধ্যেই তাকে এই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে হবে৷ এবার সবই ঘটেছে কোনোরকম গোলাগুলি ছাড়া৷ সবসময় কিন্তু পরিস্থিতি এতোটা শান্তিপূর্ণ থাকে না৷

খানিক বাদেই এজেন্টরা একটি ট্রাকের খোঁজ পান৷ চালক জঙ্গলের মধ্যে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ এজেন্টরা ধাওয়া করলেন৷ ড্রাইভারকে গ্রেপ্তার করা হল৷ তার ট্রাকে রয়েছে ৮০০ লিটার পেট্রোল; যে সব সাজসরঞ্জাম লুকিয়ে রিজার্ভে নিয়ে আসা হয়েছে, এই পেট্রোল সেই সব যন্ত্রপাতির জন্য৷ যন্ত্রপাতিগুলো এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার কোনো পন্থা না থাকলে এজেন্টরা অকুস্থলেই তা পুড়িয়ে দিতে পারেন৷

ট্রাকের ড্রাইভারকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল৷ এই সময় দু'জন ইন্ডিও এসে হাজির৷ এরা রিজার্ভের সেই সব বাসিন্দাদের মধ্যে পড়ে, যারা বেআইনি সোনা-সন্ধানীদের সঙ্গে সহযোগিতা করে থাকে৷ সেই কারণে সোনা-সন্ধানীরা এদের তাড়ায়নি৷ এজেন্টরা অরণ্যবাসীদের বললেন, কবে তারা এসে তাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলবেন৷

পরের দিনও অভিযান চলেছে

হেলিকপ্টার থেকে এজেন্টরা দেখছেন, পরিবেশ সংরক্ষণ এলাকার ঠিক মাঝখানে একটি বিমান অবতরণের উপযোগী ল্যান্ডিং স্ট্রিপ৷ নীচে কী ঘটছে, দেখতে চান এজেন্টরা৷ দুর্গম এলাকা৷ এজেন্টরা জঙ্গলের মাঝখানে দেড় লাখ ইউরো মূল্যের একটি আর্থমুভার খুঁজে পেয়েছেন – এবং সেটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন৷

পরবর্তী লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য এজেন্টদের পায়ে হাঁটা ছাড়া উপায় নেই৷ সোনা সন্ধানীদের একটি শিবির আবিষ্কার করলেন তারা৷ সঙ্গে সঙ্গে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল৷ আরো খোঁজ চলল৷ হঠাৎ গুলির আওয়াজ! এজেন্টরা লুকোলেন! গভীর জঙ্গলের মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করা অসম্ভব৷ কাজেই এজেন্টরা প্রথমে দেখার চেষ্টা করলেন, গুলি কোথা থেকে আসছে৷ উত্তেজনা বাড়তে লাগল৷ কিন্তু চোরাই সোনা সন্ধানীরা উধাও৷

হেলিকপ্টার থেকে খোঁজ চলল৷ কিন্তু নীচে কিছুই দেখা যাচ্ছে না৷ অভিযান শেষ হতে চলেছে৷ হেলিকপ্টারের পাইলট এখনও যেন চমকের মধ্যে৷ বলছেন: বিপদ সম্পর্কে তিনি সচেতন৷ বন্দুকের গুলি যেখানে যানটির গায়ে লেগেছে, সেগুলো দেখালেন৷ বললেন, ‘‘ঝুঁকি খুব৷... এলাকাটা বিপজ্জনক এলাকা বলা চলে৷'' হেলিকপ্টারের পাইলটের সিটের হেডরেস্টে, সিলভিও-র মাথা থেকে দশ সেন্টিমিটার দূরে গুলিটা লেগেছে৷ তবে আজ কেউ আহত হননি৷ অভিযানের পরিচালক গুলি লাগার কয়েক মিনিট আগেও ঠিক ঐ জায়গাতেই বসে ছিলেন – তবে গুলি আসার আগেই তিনি হেলিকপ্টার থেকে নেমে গিয়েছিলেন৷

আবার অভিযান শুরু

এজেন্টদের দলপ্রধান উইলসন রচা অতো সহজে ভয় পান না: ‘‘বেআইনি খননের মতো এখানে অন্যান্য নানা ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ চলে, যেমন পারদ ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষণ... এ সবেরই শিকার হন এখানকার স্থানীয় ইন্ডিও-রা৷'' যেখানে সোনার খোঁজ করা হয়েছে, এজেন্টরা সেই জায়গাটা খুঁজে পেলেন৷ কুইকসিলভার আর অন্যান্য রাসায়নিকের ফলে এখানকার মাটি দূষিত৷ এখানে মানুষ থাকলে, তাদের ক্যানসারের মতো অসুখ হতে পারে৷

ইন্ডিও-দের এলাকায় বেআইনি খনন বন্ধ করার জন্য সরকার যথাসাধ্য করছে৷ একমাত্র এভাবেই প্রকৃতি আবার দম নেবার, সুস্থ হওয়ার সময় পাবে৷ ব্রাজিলের পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগ ইবামা-র এজেন্টদের সাফল্য উৎসাহজনক, কেননা শুধু ইন্ডিও-রাই নন, আমাদের গ্রহের ফুসফুসই হল অ্যামাজন নদীর অববাহিকায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ