1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সব দলের অংশগ্রহণে ‘নিয়ন্ত্রিত' নির্বাচন?

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং সব রাজনৈতিক দল এতে অংশ গ্রহন করবে বলে তিনি আশা করেন৷ বিশ্লেষকরাও মনে করেন এবারের নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে৷

Bangladesch Wahlen 2013
ছবি: picture-alliance/A.A./N. Kumar

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা, বাসস-এর খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রী জেরেমি হান্ট-এর সঙ্গে সোমবার সকালে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী  বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন৷  জাতিসংঘ সদর দপ্তরের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জেরেমি হান্ট -এর সাক্ষাত হয়৷ পরে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক সাংবাদিকদের বৈঠক সম্পর্কে জানান৷

জেরেমি হান্ট প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে যুক্তরাজ্য৷''

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরাও চাই আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং সব রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নেবে৷''

বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিয়েএখন আর সংশয় নেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যেও৷ তাঁরা এ-ও মনে করেন যে, এবার ৫ জানুয়ারির মতো পরিস্থিতিও হবে৷ কিন্তু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কোন মাত্রায় হবে তা নিয়ে নানা আশঙ্কা আছে৷

‘যদি সমসুযোগ না থাকে, সমতল ক্ষেত্র যদি না থাকে, তাহলে অসম প্রতিযোগিতা হবে’

This browser does not support the audio element.

রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটা বিষয় নিশ্চিত যে, এবার সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে৷ আর সরকারি দল নির্বাচনের যে কঠামো তৈরি করেছে, সেই কাঠামোর মধ্যেই নির্বাচন হবে৷ সেটার খুব একটা পরিবর্তন হবে না৷ এই দুটো জিনিস মোটামুটি স্পষ্ট৷ এখন নমিনেশনের বিষয়টি বড় হয়ে আসবে৷ কারণ, বড় দু'টি দল বা জোটে প্রত্যেক আসনেই একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছে৷ সরকারি দলেও আছে৷ এখন যাঁরা দল বা জোট থেকে মনোনয়ন পাবেন না, তাঁদেরও বড় একটি অংশ প্রার্থী হবেন৷ নজর এখন সেদিকেই যাবে৷ এটা নিয়ে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা নিয়ে আশঙ্কা আছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী দল বা বিরোধী জোট নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে নানা ধরনের দাবি করতেই পারে৷ আর এটা দাবি করাই স্বাভাবিক৷ এটার একটা কারণ থাকে দলের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করা৷ অন্যদিকে আমরা দেখি, বড় ধরনের কোনো আন্দোলন ছাড়া নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসে না৷ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস আছে৷ তাই বড় কোনো আন্দোলনের সুযোগ নেই৷ দাবি থাকবে আর সরকার যে খুব একটা মেনে নেবে তা-ও নয়৷ এর মধ্য দিয়েই আমি মনে করি সব দল নির্বাচনে যাবে এবং তারা জনগণের ওপর ছেড়ে দেবে যে, তারা নির্বাচনের দিন কী করে৷ সব দল যখন নির্বাচনে নামে, তখন মোটামুটি একটা ব্যালেন্স তৈরি হয়৷ সেই ব্যালেন্সের দিকে সবার নজর থাকবে, সেটা হয় কিনা৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘এবার ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না৷ কারণ, বিরোধী দল বুঝতে পেরেছে যে, সেই ধরনের যদি কর্মকাণ্ড হয়, তাহলে সরকারি দলেরই সুবিধা হয়৷ তারা ধরপাকড় করতে পারে৷ তাদের অবস্থা আন্তর্জাকিভাবে খারাপ হয়ে যায়৷ কারণ, জঙ্গিবাদের সঙ্গে এর একটা সম্পর্ক করা হয়৷ আমার মনে হয়, বিরোধী দলও তাদের অভিজ্ঞতায় এটা বুঝতে পেরেছে যে, এই ধরনের সহিংসতা জনগণও পছন্দ করে না এবং অনেক ধরনের ফোর্স সুবিধা নেয়৷ সেই ফোর্সগুলো দলের বাইরেও আছে৷ সে কারণে ৫ জানুয়ারির পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না৷ তবে হয়ত দলের মধ্যেই সংঘর্ষ হবে৷ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে৷ আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখছি৷ দলের মধ্যেই এবার হট্টগোল হওয়ার আশঙ্কা আছে৷ তবে বিরোধী দল নির্বাচনে যাবে৷ তারা এরই মধ্যে জাতিসংঘে যাওয়া-আসা করছে৷ জোট গঠন করছে৷

‘একটা বিষয় নিশ্চিত যে, এবার সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে’

This browser does not support the audio element.

সুশাসনের জন্য নাগরিক ‘সুজন'-এর প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচনে সব দল অংশ নিতে পারে, কিন্তু যদি সমসুযোগ না থাকে, সমতল ক্ষেত্র যদি না থাকে, তাহলে তো অসম প্রতিযোগিতা হবে৷ তাহলে তো এই নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিপেক্ষ হবে না৷ অসম হওয়ার কারণ, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করনের কারণে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে গেছে৷ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন এমনকি কিছু আইনকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করে দিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ দলীয় সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি, হবেও না৷ ডিজিটাল আইনকে পুলিশের হাতে অস্ত্র হিসেবে তুলে দেয়া হয়েছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি৷ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা দেখেছি, নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার, মামলা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন৷ এখন তো আবার শুরু হয়ে গেছে৷ মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা, অনুপস্থিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা তো শুরু হয়ে গেছে৷''

এদিবে বাসস আরো জানায়, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, এই সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে৷ তবে, তারা চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে না৷প্রধা্নমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি আমরা উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারি এবং তাদের দেশে ফেরার জন্য নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরবে৷ তবে তেমনটি ঘটছে না৷'' প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নামে একটি দ্বীপে স্থানান্তরে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ