যুগান্তকারী রায় দিল ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট। সমকামীরাও এবার সারোগেসির মাধ্যমে বাচ্চা নিতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন
ছয়মাস আগেই এ বিষয়ে রায় দিয়েছিল ইসরায়েলের আদালত। তবে রায় কার্যকর করতে ছয়মাস সময় চাওয়া হয়েছিল। বুধবার থেকে তা কার্যকর হলো।
আগে শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রীর যৌথ ইচ্ছায় সারোগেসি করা যেত ইসরায়েলে। একক মায়েরাও সারোগেসি করতে পারতেন। কিন্তু সমকামী, ট্রান্সজেন্ডাররা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। নতুন রায়ে সকলেই চাইলে সারোগেসির মাধ্যমে বাচ্চা নিতে পারবেন।
নকল পেটের রমরমা
সারোগেসি বা গর্ভভাড়ার বিষয় আজ আর নতুন নয়৷ কিন্তু লোকলজ্জা ঢাকতে মাতৃত্বের জন্য মহিলাদের বেছে নিতে হচ্ছে নকল পেট৷ সারোগেসি ও সিলিকন বেলি একই সঙ্গে দিয়েছে মাতৃত্বের স্বাদ এবং সমাজের সংস্কারজাত কটাক্ষ থেকে মুক্তি৷
ছবি: DW/P. Samanta
মা হওয়া মুখের কথা?
মাতৃত্বের সংজ্ঞা পালটেছে৷ ১০ মাস ১০ দিনের গর্ভধারণ নয়, বরং সারোগেসি বা গর্ভভাড়ার দ্বারা সহজেই মাতৃত্বের আস্বাদ নেওয়া যায় আজকাল৷ তবে রক্ষণশীল সমাজ ও পরিবারের কাছে সেই মাতৃত্বের স্বীকৃতি জোটাতে ভরসা এখন সিলিকন বেলি বা নকল পেট৷
ছবি: DW/P. Samanta
পেট বাণিজ্যে লক্ষ্মী
লিলুয়ার প্রস্থেটিস্ট সুমিত্রা আগরওয়াল দীর্ঘদিন নকল পেট নিয়ে কাজ করছেন৷ পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকেও তাঁর কাছে মানুষ আসেন সিলিকন বেলির সন্ধানে৷ এগুলি শরীরে লাগানোর পর নকল পেট বলে বোঝা মুশকিল হয়৷
ছবি: DW/P. Samanta
নকল পেট সঙ্গী যখন
পরিবারের কাছে সারোগেসি গোপন করতে সঙ্গী হয় নকল পেট৷ আবার মহিলারা সারোগেট মায়েদের সঙ্গে একই হাসপাতালে পাশাপাশি ভর্তি হন৷ গর্ভধারণের ভান করতে অনেকে নিজের পেট কাটিয়ে সেলাই করিয়ে নেন৷
ছবি: DW/P. Samanta
কোমরের মাপে
মহিলাদের কোমরের সাইজ অনুযায়ী নকল পেট তৈরি করেন সুমিত্রা৷ অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে পেটের সঙ্গে কোমরও চওড়া দেখায়৷ সেভাবেই তৈরি করা হয় সিলিকন বেলি৷
ছবি: DW/P. Samanta
নকল পেটে মাতৃত্বের অনুভূতি
তিন মাসের গর্ভাবস্থার একটা নকল পেটের দাম কমবেশি ১২ হাজার টাকা৷ গর্ভাবস্থার মেয়াদ বাড়লে সিলিকন বেলির ওজন এবং দামও বেশি৷ সমাজের কটাক্ষ থেকে বাঁচতে মানুষ দাম নিয়ে ভাবেন না৷
ছবি: DW/P. Samanta
ছদ্মবেশে পেট
এতদিন সিনেমার পর্দাতেই সিলিকন বেলির ব্যবহার সীমাবদ্ধ ছিল৷ কিন্তু এখন তা মধ্যবিত্তদেরও ঘরে এসে পড়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই পুরো বিষয়টাই গোপন রাখা হয়৷ ছবির মতোই একজন মহিলা নিজেকে নকল পেটে ঢেকে নিতে পারেন৷
ছবি: DW/P. Samanta
স্বীকৃতির শর্টকাট
মা হওয়ার জন্য মহিলাদের বহিরঙ্গে যে পরিবর্তন ঘটে, সেটাকেই সমাজ মান্যতা দেয়৷ ফলে সারোগেসিতে স্বীকৃতি না পাওয়ার ভয়ে সবাই নকল পেট ব্যবহার করতে চায়৷ পোশাকের উপর নকল পেট লাগিয়ে এক মহিলা৷
ছবি: DW/P. Samanta
পোশাকের নীচে
বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারবেন না যে, পোশাকের নীচে কী আছে৷ অর্থাৎ সমাজ জানবে, এই মহিলাই গর্ভধারিণী৷
ছবি: DW/P. Samanta
নকল পেটেও স্বাচ্ছন্দ্য
অনেক কর্মরতা মহিলা প্রেগন্যান্সির জন্য কাজ ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকতে রাজি নন৷ তাঁদের পক্ষে সারোগেসি ও সিলিকন বেলি খুবই লাভজনক৷ সিলিকন বেলি ব্যবহার করে বাসে-ট্রেনে স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করা যায়৷ যেটা সত্যিকার গর্ভাবস্থায় মারাত্মক হতে পারে!
ছবি: DW/P. Samanta
বৈধ না অবৈধ?
সারোগেসি বা গর্ভভাড়ার বিষয়টি সমাজে এখনও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি৷ তাই নকল পেটের সাহায্যে সারোগেসি গোপনও রাখা হয়, আবার সমাজে মাতৃত্বের স্বীকৃতিও জোটে৷ তাই যতদিন সমাজ সারোগেসিকে বৈধতা না দেবে, ততদিন রমরমিয়ে চলবে সিলিকন পেট বাণিজ্য৷
ছবি: DW/P. Samanta
মা হওয়ার তিনটি ধাপ
গর্ভবতী মহিলাদের উদরস্ফীতিকে মাথায় রেখে তিন রকমের নকল পেট বানানো হয়েছে৷ এই ৩-৬-৯ মাসের নকল পেট লাগিয়ে মহিলারা পরিবার ও সমাজের কাছে গর্ভাবস্থার পরিবর্তন দেখান৷ সুমিত্রা জানান, পেট পরিবর্তনের জন্য অনেকেই কিছুদিনের জন্য অন্য কোথাও চলে যান৷ যাতে এই হঠাৎ পরিবর্তন সহজে ধরা না পড়ে৷
ছবি: DW/P. Samanta
নকল পেটের সন্ধানে
আধুনিক সমাজের সর্বস্তরের মহিলার ক্ষেত্রে সিলিকন পেট ভীষণই জরুরি হয়ে পড়েছে৷ তাই নকল পেটের সন্ধানে বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের অপেক্ষা করতে দেখা যায় ডাক্তার সুমিত্রার ক্লিনিকে৷ এ সব ক্ষেত্রে মহিলাদের পাশে থাকেন তাঁদের স্বামীরা৷
ছবি: DW/P. Samanta
12 ছবি1 | 12
দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলে এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি শক্তিশালী। বহু গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন করেছে তারা। মধ্য প্রাচ্যে এলজিবিটিকিউ অধিকারের দিক থেকে ইসরায়েল সবচেয়ে এগিয়ে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়ে খুশি দেশের এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি। তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে এই অধিকারের জন্য তারা লড়াই করছিলেন। শেষপর্যন্ত তা আইনসিদ্ধ হলো।
এর আগে ফ্রান্সেও সমকামী এবং একক নারীদের জন্য সন্তান নেওয়ার অধিকার বৈধ করা হয়েছিল। তবে সারোগেসির কথা সেখানে উল্লেখ করা ছিল না। ইসরায়েলে সরাসরি সারোগেসির কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
সারোগেসির অর্থ, অন্য নারীর শরীর সন্তান ধারণের জন্য ব্যবহার করা। আইভিএফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ কাজ করা হয়ে থাকে। বিশ্বের বহু দেশেই সারোগেসি নিষিদ্ধ। তবে পশ্চিমা দেশগুলিতে দীর্ঘদিন ধরেই সারোগেসির চল আছে।