1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমাজমাধ্যমে কটূক্তি: বাজে কথা থামবে কেমনে?

তায়েব মিল্লাত হোসেন ঢাকা
২৮ আগস্ট ২০২০

সামাজিক দূরত্ব নেই অনলাইনভিত্তিক সমাজমাধ্যমে৷ অন্তর্জালে কাছে আসছে মানুষ৷ কথা বলছে, তর্ক করছে৷ চলছে কুতর্ক আর কটূক্তিও৷ কখনো প্রতিবাদ হচ্ছে৷ কখনো হচ্ছে না৷ কিন্তু কেন?

প্রতীকী ছবিছবি: Facebook/Boys of Bangladesh (BoB)

করোনাকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের নানান ঘাটতি সামনে চলে এসেছে৷ যা নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে৷ এমনি এক সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রয়াত হলে তাকে নিয়েও কিছু কথা হয়৷ কেউ কেউ করে বসেন কটূক্তি৷ এমন লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামতে হয় প্রশাসনকেও৷ সেই সময়ে কটূক্তির প্রতিবাদে আমজনতার ঝড় সেভাবে দেখা যায়নি অন্তর্জালে৷ যেটা পরে দেখা গেছে জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সন্তানের বেলায়৷ সেখানে সাকিব-কন্যাকে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেটে পড়েছে লাখো মানুষ৷

সব দূষিত কথার সমান প্রতিবাদ হয় না কেন? এই প্রবণতার পেছনে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে বলে মনে করেন বাংলায় ব্লগ ও সোশ্যাল মিডিয়ার শুরুর দিকের ব্যবহারকারী মাহবুব মোর্শেদ৷ এই কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে বলেন, ‘‘প্রতিক্রিয়া সবসময় পলিটিক্যাল৷ মানে মানুষ নিজে পক্ষ অবলম্বন করে৷ যে নিজে যাকে ঠিক মনে করে সেটার পক্ষে সে দাঁড়ায়৷ যেটাকে সে ঠিক মনে করে না তার বিপক্ষে সে দাঁড়ায়৷’’

প্রতিক্রিয়া সবসময় পলিটিক্যাল: মাহবুব মোর্শেদ

This browser does not support the audio element.

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাজে মন্তব্য বা কটূক্তি আগের চেয়ে কমেছে বলে দাবি করেন ব্লগার ও একটিভিস্ট মাহবুব মোর্শেদ৷ ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে তার ভাষ্য হচ্ছে- ‘‘আমরা যখন সোশ্যাল মিডিয়া বা ব্লগের ব্যবহার শুরু করি তখন বাজে মন্তব্য, গালাগালি, কটূক্তি- এই প্রবণতাগুলো অনেক বেশি ছিলো৷ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মন্তব্যগুলো বন্ধ করার উপায় ইউজারের হাতে আছে৷ তিনি চাইলে যে কাউকে ব্লক করতে পারেন৷ যে কারো কমেন্ট মুছে দিতে পারেন৷’’

মন্তব্য বন্ধ করা বা ব্লক করার কারণে মতপ্রকাশের জায়গা সীমিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয় কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘যিনি কটূক্তি করছেন, বাজে মন্তব্য করছেন৷ তিনি তো আসলে আপনার যে সামাজিক উপস্থিতি সেই উপস্থিতিটাকেই ক্ষুন্ন করতে চাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্থ করতে চাচ্ছেন৷ ফলে তাকে আপনি যদি ব্লক না করেন, তার মন্তব্যটা মুছে না দেন৷ তাহলে এই বিষয়টা আপনাকে, আপনার উপস্থিতিকে, আপনার পোস্টকে নানাভাবে ক্ষতির মুখে ফেলতে থাকবে৷’’

সমাজমাধ্যমে প্রতিক্রিয়ার পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকে৷ আবার নারী-প্রগতির বিরুদ্ধতাও বড় একটি বিষয়৷ সম্প্রতি যশোরের একজন নারী নিজের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মোটরসাইকেল চালিয়ে যোগ দেন৷ এই ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ এটা নারী অগ্রগতির অংশ হিসেবে একটি মহলের প্রশংসা পেয়েছে৷ কিন্তু নিন্দায় মেতে উঠেছে তারও বেশি মানুষ৷ এই অংশই আবার ভিন্ন একটি ঘটনার প্রশংসা করেছে৷ অভিমানী একজন রিকশাচালক নিজেই যাত্রীর আসনে বসে আছেন৷ একজন নারী সেই রিকশাচালক স্বামীর পা ধরে মান ভাঙাতে চাইছেন৷ ঘটনা রাস্তার হলেও এই ছবিখানি সমাজমাধ্যমে দেয়ায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সীমানা অতিক্রম করছে কিনা- সেই প্রশ্নও থেকে যায়৷

প্রস্তুত হওয়ার আগেই সোশ্যাল মিডিয়া চলে এসেছে: সাদাত হোসাইন

This browser does not support the audio element.

ভার্চুয়াল পাটাতনে জনপ্রিয় হতেও যা ইচ্ছে বলা বা ছবি দেয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে৷ এমনটা হতে পারে বলে মনে করেন এই সময়ে বাংলাদেশে ফেসবুকের জনপ্রিয় মুখ সাদাত হোসাইন৷ ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের মাধ্যমে এই লেখক ও নির্মাতার সতর্কবাণী হচ্ছে- ‘‘যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে ইয়ুথ আইকন বা যাদেরকে মানুষ ফলো করে তাদের আরও বেশি সংযত হওয়া উচিত৷ তাদের কোনো মন্তব্য মাস পিপলকে আহত করতে পারে৷ আমার কাছে মনে হয় দুটির তরফ থেকেই রেসপন্সসেবল হওয়া উচিত৷ সেটি হচ্ছে যে, আমরা যাদের আইকন বলছি, তাদের যেমন সেন্সসেবল আচরণ করাটা জরুরি৷ একই সাথে যারা তাদের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল হচ্ছে তাদেরও অনেক বেশি সেন্সেবল আচরণ করা জরুরি৷’’

অনলাইনভিত্তিক সমাজমাধ্যমে বাজে মন্তব্য শুধু শিক্ষাবঞ্চিত শ্রেণি করছে এমন নয়, শিক্ষিত শ্রেণিও করছে৷ তাই বাজে কথা বলা কিংবা কটূক্তি করার জন্য এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপ্রস্তুত পরিস্থিতির দায় আছে বলে মনে করেন সমকালে বাংলাদেশের অন্যতম বেস্টসেলার লেখক সাদাত হোসাইন৷ ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে তিনি বলেন, ‘‘প্রস্তুত হওয়ার আগেই সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের হাতের মধ্যে চলে এসেছে৷ প্রস্তুতি বলতে আমি বলছি- আমরা কোথায়-কখন-কোন কথাটা বলব, কীভাবে বলব- সে বিষয়টায় আমাদের কিন্তু একটা প্রাথমিক সেন্সিবিলিটি থাকা দরকার৷ ধরেন আপনার কোনো একটা ছবি আমার পছন্দ হচ্ছে না৷ আমি ধরে নিলাম সেই ছবিটা আমার পছন্দ হচ্ছে না৷ সেইটা বলার অধিকার আমার আছে৷ কিন্তু সেই যে আমার অপছন্দ হচ্ছে, সেই অপছন্দের একটা ধরণ থাকা উচিত৷ যে ধরণটা হচ্ছে অন্যকে আহত করবে না৷ কিন্তু তাদের মধ্যে এই পরিমিতবোধ বা পরমতসহিষ্ণুতার জায়গা একদমই নেই৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ