শেখ হাসিনার ‘দ্য গার্ডিয়ান' পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকার
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দ্য গার্ডিয়ান' পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা৷সমালোচকরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেগুলিতেই বেশি সরব৷ শেখ হাসিনার পুরস্কার সেখানে ঢেকে যাচ্ছে তিরস্কারে৷
বিজ্ঞাপন
ব্রিটেনের ‘দ্য গার্ডিয়ান' সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার মূল্যায়নধর্মী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ তাই প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্যদের বক্তব্যও স্থান পেয়েছে৷
সাক্ষাৎকারে বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ এবং ব্যাপক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও নাকচ করে দাবি করেন, ‘‘জনগণ চায়, তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হোক৷ আমি তাদের সেই চাহিদা পূরণেই কাজ করছি৷ খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও চাকরির ব্যবস্থা করছি৷''
পোশাক শ্রমিকদের নির্বাচনি ভাবনা
আগামী পাঁচ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ কিন্তু সাধারণ মানুষ নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছেন? এই ছবিঘরে পোশাক শ্রমিকদের নির্বাচনি ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিরোধী দলের উপর ‘ক্ষিপ্ত’ আকলিমা
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার পোশাক শ্রমিক আকলিমা বেগম৷ কাজ করেন ঢাকার রামপুরার একটি পোশাক কারখানায়৷ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে অবরোধ দেয়ায় বিরোধী জোটের ওপর ক্ষিপ্ত এই পোশাক শ্রমিক৷ এমনিতেই সামান্য কিছু টাকা বেতন পান৷ তার উপর টানা অবরোধের কারণে নিত্যপণ্যের দাম গেছে বেড়ে৷ ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন আকলিমা৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দিতে পারবেন না লাকী আক্তার
ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন লাকী আক্তার৷ বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে হলেও ভোটার হয়েছেন ঢাকায়৷ তাঁর এলাকার সাংসদ ইতোমধ্যেই একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন৷ তাই ভোট নিয়ে তাঁর কোনো পরিকল্পনা নেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
রুবেলের ভাষায় ‘প্রতিযোগিতাহীন নির্বাচন’
পোশাক শ্রমিক রুবেলের বয়স মাত্র ২৩ বছর৷ কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় তাঁর বাড়ি৷ কাজ করেন ঢাকায়৷ রুবেলের প্রশ্ন, ‘‘প্রতিযোগিতাহীন এই নির্বাচনে ভোট দেয়ার কী আছে?’’ জীবনের প্রথম ভোটটি নষ্ট করতে রাজি নন তিনি৷ একইসঙ্গে আসন্ন নির্বাচনে ভোট দেয়াটাও অর্থহীন মনে করেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
এখনো সিদ্ধান্ত নেননি শেফালি
শেফালির বাড়ি ঢাকার পাশে আশুলিয়ায়৷ কাজ করেন, ঢাকার রামপুরার একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ দশম জাতীয় সংসদ নিয়ে তাঁর অভিমত হচ্ছে, দুই পক্ষই যদি ভোটে আসত তাহলে ভালো হতো৷ ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন কিনা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
হোসনে আরার স্বপ্ন ছেলেকে মানুষ করা
গুলশানের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন ফরিদপুরের হোসনে আরা৷ দুপুরের খাবারের বিরতির সময় ছেলেকে নিয়ে বসেছেন পাশের একটি চায়ের দোকানে৷ ভোট নিয়ে তাঁর কোনো চিন্তাভাবনা নেই৷ খেটেখুটে একমাত্র ছেলেকে মানুষ করাই তাঁর স্বপ্ন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দেবেন না সাদ্দাম হোসেন
সাদ্দাম হোসেনের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে৷ কাজ করেন ঢাকার রামপুরার একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ রাজনীতিবিদদের উপর তাঁর অনেক রাগ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘ভোট দিয়া হইবটা কী? যারা দল করেন তারা কোনো না কোনো ভাবেই লাভবান হন, মরি আমরা শ্রমিকরা৷ ভোট দিব না ভাই৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দিতে গ্রামে যাবেন মিতু
জামালপুরের বকশীগঞ্জের মিতু কাজ করেন ঢাকার গুলশানের একটি তৈরি পোশাক কারাখানায়৷ কাজের ফাঁকে স্বামীর মোবাইল ফ্লেক্সি লোডের দোকানেও বসেন৷ জীবনের প্রথম ভোট দিতে গ্রামে যাবেন মিতু৷ তবে নিরুত্তাপ নির্বাচন তাঁর ভালো লাগছে না৷
ছবি: DW/M. Mamun
ছুটি পেলে ভোট দিতে যাবেন মিজান
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর মিজানুর রহমান কাজ করেন গুলশানের একটি তৈরি পোশাক কারাখানায়৷ ছোট সময় তিনি নির্বাচন দেখেছেন অনেক উৎসবমুখর৷ কিন্তু এবার নিজে ভোটার হয়ে ভোটের উৎসব দেখতে পাচ্ছেন না৷ তারপরেও ছুটি পেলে পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিতে গ্রামে যাবেন মিজান৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট নিয়ে ভাবার সময় নেই সাথীর
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার পোশাক শ্রমিক সাথী৷ কাজ করেন রামপুরার একটি পোশাক কারখানায়৷ নির্বাচন কিংবা ভোট নিয়ে ভাবার সময় নেই তাঁর৷ সাথীর একমাত্র চিন্তা কাজ নিয়ে৷ তিনি মনে করেন, ভালোভাবে কাজ করতে পারলেই সন্তানদের মুখে দুই বেলা খাবার তুলে দিতে পারবেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দেওয়া অনর্থক মনে করেন আব্দুল আলীম
পটুয়াখালী জেলার খেপুপাড়ায় বাড়ি আব্দুল আলীমের৷ কাজ করেন রামপুরার একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ ছুটি নিয়ে এই ধরনের নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়া তার কাছে অনর্থক মনে হয়৷ তাছাড়া তার ধারণা সে ভোট না দিলেও যে প্রার্থী জয়লাভ করার তার জয় হবেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
হাসনা হেনার কাছে ‘নিরুত্তাপ নির্বাচন’
ঢাকার মালিবাগের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন হাসনা হেনা বেগম৷ বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে৷ দেশে যে সবচেয়ে বড় ভোট উৎসব চলছে সেটা তাঁর মনেই হচ্ছে না৷ নিরুত্তাপ নির্বাচনে ভোট দিতে চান না হাসনা হেনা৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দেয়ার ইচ্ছা ছিল লাইলীর
লাইলী বেগমের বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগরে৷ ভোটার হয়েছেন ঢাকার তেজগাঁও এলাকায়৷ ভোট দেয়ার ইচ্ছাও ছিল তাঁর৷ কিন্তু শুনতে পাচ্ছেন তাঁর এলাকায় নাকি ভোট হবে না৷ একক প্রার্থী হিসেবে একজন ইতিমধ্যেই জিতে গেছেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
পদত্যাগে ভয় কিসের? প্রশ্ন সোহাগের
সোহাগ মিয়া কাজ করেন ঢাকার মালিবাগের একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে৷ তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে বিরোধী দলকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘ভালো কাজ করলে পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রীর এতো ভয় কিসের? ভোটতো আমরাই দিব৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
13 ছবি1 | 13
তবে শেখ হাসিনা সম্পর্কে নিজেদের বিশ্লেষণে ভিন্ন কথা বলেছেন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তা৷ মাহফুজ আনাম দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা সচল রাখার জন্য শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন৷ সাম্প্রতিক জরিপে যে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে তা-ও অস্বীকার করেননি৷ তবে শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা রকে মাহফুজ আনাম বলেছেন, ‘‘গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না৷ সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে এখন গণমাধ্যমের সমালোচনাও বন্ধ করতে চাইছে৷''
আতাউর রহমান গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশে কর্তৃত্বমূলক শাসন এখন এক ব্যক্তির শাসনের দিকে যাচ্ছে৷ এর ফল হিসেবে গণতন্ত্র এখন খাদের কিনারায়৷''
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানও বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘এভাবে চলতে থাকলে দেশে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে৷''
তবে ঢাকায় কর্মরত জাতিসংঘের কর্মকর্তা রবার্ট ওয়াটকিনস সে আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘যতদিন অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে, জনগণ কাজ পাবে, সরকার অন্ন দিতে পারবে – ততদিন জনগণ হয়ত গণতন্ত্র নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন হবে না৷''
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
আগামী বছরের সূচনায় জাতীয় নির্বাচন, কিন্তু দুই মুখ্য রাজনৈতিক জোটের টানাপোড়েন অব্যাহত৷ অথচ দেশে-বিদেশে অনেকেই চান সংকট নিরসনে দুই বৈরী জোটের মধ্যে আলোচনা৷ কিন্তু সেটা কি আদৌ সম্ভব হবে?
ছবি: AP
দু’দলের দ্বন্দ্ব
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নির্দিষ্ট হয়েছে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে৷ তবে মুখ্য বিরোধী দল বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি নয়৷ তারা চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, শাসক আওয়ামী লীগের কাছে যা সংবিধান লঙ্ঘনের সমান৷
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
জাতিসংঘ চায় সংলাপ
জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই দুই বিবাদী জোটের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে৷ মহাসচিব বান কি-মুন গত ২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তা বলেছেন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব উভয় নেতার প্রতি চলতি রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ অবসানের জন্য আলাপ-আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন৷
ছবি: Reuters
হাসিনা চান সংসদে আলোচনা
জাতিসংঘ বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মহাসচিবের ফোনালাপের কোনো খুঁটিনাটি প্রকাশ করেনি৷ তবে বাংলাদেশের একাধিক দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী হাসিনা ‘‘জাতিসংঘের প্রধানকে জানিয়েছেন যে, তিনি সংবিধান অনুযায়ী সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করছেন৷’’ বিরোধীপক্ষ যদি গোটা প্রসঙ্গটি সংসদে আলোচনা করার কোনো প্রস্তাব দেয়, তবে তিনি তাকে স্বাগত জানাবেন, এমন আভাসও দিয়েছেন হাসিনা৷
ছবি: dapd
সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনে বিএনপির ‘না’
বান কি-মুনের সঙ্গে ফোনালাপে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াও সংকট সমাধানে সংলাপের সপক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন, কিন্তু এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ‘‘বিরোধীপক্ষ আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না৷’’
ছবি: Reuters
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি ও কেন?
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কাজ হলো মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা৷ ১৯৯১ সালে এই পদ্ধতি চালু করা হয় কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সেই পদ্ধতি বাতিল করে৷ বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছে৷
ছবি: AP
জার্মানি সংলাপ সমর্থন করে
সংলাপকে বাংলাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক জোটের মধ্যে অচলাবস্থা নিরসনের একমাত্র পন্থা বলে মনে করে জার্মানি৷ ‘ঢাকা কুরিয়ার’ নামক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. আলব্রেশট কনৎসে বলেছেন, ‘‘দু’টি মুখ্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ হলো বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা সমাধানের একমাত্র পথ৷’’
ছবি: DW/R. Manzoor
ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ডাক দিলেন
বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস একটি ‘‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ (নির্বাচনকালীন) সরকার’’ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য সমর্থন ব্যক্ত করেছেন৷ গত ২২ আগস্ট ইউনূস একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘নির্বাচন অতি অবশ্য হওয়া উচিত এবং তা একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হওয়া উচিত৷’’
ছবি: Getty Images
আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)
হাসিনা সরকারের সৃষ্ট আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা আইসিটি-র উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার৷ কিন্তু তা শাসকদল এবং বিরোধীপক্ষের মধ্যে একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আইসিটি এখন পর্যন্ত ছ’জন অভিযুক্তকে শাস্তি দিয়েছে৷ বিরোধীপক্ষ এই বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়েছে৷ তাদের মতে এই প্রক্রিয়ার বাস্তবিক উদ্দেশ্য ন্যায়বিচার নয়, পুরাতন শত্রুতার প্রতিশোধ৷
ছবি: AP
আন্তর্জাতিক সমালোচনা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচও আইসিটি-র সমালোচনা করেছে৷ এইচআরডাব্লিউ বিবৃতিতে বলেছে, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক প্রধান গোলাম আযমের বিচার প্রক্রিয়া ‘‘গভীরভাবে ত্রুটিপূর্ণ’’ ছিল৷ প্রতিক্রিয়া হিসেব সরকারি কৌঁসুলির তরফ থেকে এইচআরডাব্লিউ-এর বিরুদ্ধে আদালতের অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এইচআরডাব্লিউ-এর ‘‘একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’’ রয়েছে৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
ট্র্যাক রেকর্ড
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে৷ বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা কৃষি খাতে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান যাই হোক না কেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর হাসিনা সরকারের অন্য সব সাফল্য ঐ একটি কেলেঙ্কারির আড়ালে ধামাচাপা পড়ে গেছে৷ আগামী নির্বাচনেও পদ্মা সেতু প্রকল্প প্রসঙ্গটি প্রভাব ফেলতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় গার্ডিয়ানকে দেয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য চাওয়া হয়েছিল৷ সেখানে অধিকাংশ পাঠক নেতিবাচক মন্তব্যই করেছেন৷ আমিনুল হক সম্প্রতি টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেই হয়তে জানতে চেয়েছেন, ‘‘রাস্তায় গুলি করে সাধারণ মানুষকে মারছেন, সেটাও কি সেবার মধ্যে পড়ে?''
মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রধানমন্ত্রীকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন এবং দেশ পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন৷ আনিক হাসান মনে করেন, শেখ হাসিনাকে জনগণ, ‘‘সেবিকা হিসাবে চায় না, তবু তিনি সেবার নামে জনগণকে কষ্ট দিচ্ছেন৷''
অমিত কুমার সম্ভবত সব রাজনীতিবিদের প্রতিই আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন৷ তাই তাঁর মতে, ‘‘বাংলাদেশেরর কোনো রাজনৈতিক দলই মানুষের কথা ভাবেনা; নিজের দলের এবং নিজেদের স্বার্থের জন্যে করে৷ আম জনতার কথা কেউ ভাবে না৷''
আগামী ২৫ শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ঈদ উল-আজহা৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দেশের বাইরেই থাকছেন এই ঈদে৷ খালেদা জিয়া এখন লন্ডনে৷ জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ২৩শে সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা৷ ১লা অক্টোবর পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে থাকবেন তিনি৷ ৮ দিনের এ সফর চলার সময় পরিবেশ নিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অফ দি আর্থ' এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) পদক গ্রহণ করবেন তিনি৷ অথচ এ সব খবর সেভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসছে না৷
সমালোচনা এবং তিরস্কারের নীচে পড়ে আছে শেখ হাসিনার দু-দুটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির খবর৷