বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সমুদ্রসীমার রায় নিয়ে বাংলাদেশে চলছে রাজনৈতিক বিতর্ক৷ সরকার এই রায়কে উভয় দেশের জয় বললেও বিএনপি বলছে ভিন্ন কথা৷ তাদের দাবি, সরকারের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ৬ হাজার কিলোমিটার এলাকা হারিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২৫,৬০২ বর্গ কিলোমিটারের বিরোধপূর্ণ এলাকা নিয়ে আন্তর্জাতিক সালিসী আদালত রায় দেয় গত মঙ্গলবার৷ আদালতের রায়ে ১৯,৪৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশ পেয়েছে৷ আর ভারত পেয়েছে ৬,১৩৫ বর্গ কিলোমিটারের অধিকার৷ রায় প্রকাশের দিনই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘রায় পর্যালোচনায় উভয়ের জন্য বিজয় নিশ্চিত হয়েছে৷ এ বিজয় বন্ধুত্বের বিজয়, বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারণ মানুষের বিজয়৷''
কিন্তু বিএনপি একে মানতে পারছেনা৷ বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বিএনপি-র পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার এলাকার পুরোটাই বাংলাদেশের ছিল৷ রায়ের মাধ্যমে এখান থেকে ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার ভারতকে দিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের ক্ষতি হয়েছে৷''
প্লাস্টিকের পানির বোতলের জীবন
সারা বিশ্বে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ বোতল পানি বিক্রি হয়৷ কিন্তু পানি পান করার পর প্লাস্টিকের ঐ বোতলগুলোর কী হয় তা কি জানেন? ছবিঘরে থাকছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত৷
ছবি: Fotolia/zhekos
প্লাস্টিকের দামই বেশি
এক বোতল পানি কেনার জন্য আপনি যে দাম দেন তার বেশিরভাগই কিন্তু চলে যায় প্লাস্টিকের জন্য৷ এছাড়া রয়েছে বোতলের গায়ে লেবেল লাগানো, পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বোতল নষ্ট করে ফেলার খরচ৷
ছবি: Fotolia/fottoo
তেলের ব্যবহার
অশোধিত তেল দিয়ে তৈরি হয় পলিইথিলিন টেরেফথালেট (পিইটি) প্লাস্টিক৷ এরপর সেটা দিয়েই তৈরি হয় প্লাস্টিকের বোতল৷ এই তেল উৎপাদনের সময় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়৷ এছাড়া প্লাস্টিক তৈরির সময় বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ ছবিতে জার্মানির সবচেয়ে বড় তেলশোধন প্ল্যান্ট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বড়ি থেকে বোতল
পরিশোধিত তেল থেকে প্রথমে প্লাস্টিকের এমন ছোট ছোট বড়ি তৈরি করা হয়৷ এরপর সেগুলোকে গলিয়ে বোতল তৈরি করা হয়৷
ছবি: Fotolia/digitalstock
চারে এক
আর্থ পলিসি ইনস্টিটিউটের হিসেবে সারা বিশ্বে উৎপাদিত চারটি পানির বোতলের অন্তত একটি ক্রেতার খোঁজে কমপক্ষে একটি আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে৷ অর্থাৎ, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়৷ এভাবে পানি পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত যানবাহন থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পানি সংকট
প্যাসিফিক ইনস্টিটিউটের হিসেবে এক বোতল পানির জন্য তিনগুণ বেশি পানি খরচ হয়৷ ফলে যে অঞ্চলে পানির ফ্যাক্টরি অবস্থিত সেখানকার ভূগর্ভে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাত্র অর্ধেক
এক হিসেবে জানা গেছে, ইউরোপে গত বছর প্রায় ৬০ মিলিয়ন প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করা হয়৷ পরিমাণটা, যত বোতল ব্যবহৃত হয়েছে তার অর্ধেকের কিছু বেশি৷ বাকি বোতলগুলো বিভিন্ন জায়গায় জমে গিয়ে বিশেষ করে জলাধার ও সাগরে পড়ে গিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে৷
ছবি: JOSEPH EID/AFP/Getty Images
রিসাইক্লিং
ব্যবহার হওয়ার পর পানির বোতলগুলো রিসাইকেল করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হয়৷ যেমন এক ধরণের পশম, যেটা শীতবস্ত্র জাতীয় পোশাক তৈরিতে কাজে লাগে৷
ছবি: Fotolia/zhekos
7 ছবি1 | 7
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে মামলা করা সময়োপযোগী হয়নি৷ এটি আরও পরে করার দরকার ছিল৷
তাঁর কথা, দক্ষিণ তালপট্টি বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ এটি হাতছাড়া হতে দেওয়া উচিত হয়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি এবং বাংলাদেশের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব রয়ে গেছে৷ এ জন্য এ ধরনের একটি রায় পেয়েছে বাংলাদেশ৷'' বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মামলাটি ভালোভাবে পরিচালনা করা হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর৷
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে কখনো উভয় পক্ষের বিজয় হয় না৷ অথচ সরকার প্রথমে বলেছে বাংলাদেশের বিজয় হয়েছে আর এখন শুনতে পাচ্ছি ভারতেরও বিজয় হয়েছে৷ তাই তিনি সরকারের কাছে রায়ের ব্যাখ্যা প্রকাশের দাবি করেছেন৷
আর বিএনপি-র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘‘যে দলটি গত ২৫ বছর কখন বলেনি যে তালপট্টি দ্বীপ ছিল না, এখন কেন বলছে তালপট্টি দ্বীপ নেই৷ আসলে শেখ হাসিনাকে দিয়ে সব কিছু সম্ভব, কিছু দিন পর হয়ত তিনি বলবেন বাংলাদেশ নামে কোনো রাষ্ট্রই ছিল না৷''
পানির দেশে ‘‘জলক্রীড়া’’
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ৷ শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৮০০ নদনদীর অবস্থান এদেশে৷ নদী তাই এখানকার মানুষের জীবনের অংশ৷ আর বিভিন্ন ধরনের ‘‘জলক্রীড়া’’ নিত্যদিনের ব্যাপার৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Farjana KHAN GODHULY/AFP/Getty Images
নৌকাবাইচ
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশে পানিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে নৌকাবাইচ৷ নদীতে নৌকা চালানোর প্রতিযোগিতা প্রায় সব অঞ্চলেই দেখা যায়৷ বাংলার লোকসংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ নৌকাবাইচ৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
বাইচের বিশেষ নৌকা
নৌকাবাইচের জন্য তৈরি নৌকাগুলো হয় সরু এবং লম্বাটে৷ আর মাঝিরা বৈঠা হাতে সারিবদ্ধভাবে বসেন তাতে৷ গঠনের কারণে পানিতে দ্রুত গতিতে চলতে পারে এগুলো৷ প্রতিযোগিতার সময় নৌকাগুলোকে বিশেষভাবে সাজানো হয় আর মাঝিরা সার গানের তালে তালে দাঁড় টানেন৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
সাঁতার
বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়৷ তবে আঞ্চলিক পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতা তেমন একটা জনপ্রিয় নয়৷ অলিম্পিকেও বাংলাদেশ কোনো সাফল্য পায়নি৷ এই ছবিটি ২০০৪ সালে ইসলামাবাদে তোলা৷ সেবার সাফ গেমসে অংশ নিয়ে রৌপ্য জয় করেন সাঁতারু কারার সামেদুল ইসলাম৷
ছবি: ROB ELLIOTT/AFP/Getty Images
সাঁতার শেখা জরুরি
ক্রীড়া হিসেবে সাঁতার বিশেষ জনপ্রিয় না হলেও গ্রামাঞ্চলে অধিকাংশ মানুষকে নিত্যদিনের প্রয়োজনেই সাঁতার শিখতে হয়৷ এখনো বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে চলাচলের অন্যতম বাহন নৌকা৷ আর পুকুরে গোসল খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার৷ শিশুরা তাই ছোটবেলাতেই শিখে নেয় সাঁতার৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
পানি দাপিয়ে বড় হওয়া
গ্রামাঞ্চলের শিশু-কিশোররা সাধারণত পানিতে সময় কাটায় বেশি৷ কখনো পুকুরে ডুব দিয়ে শাপলা তোলা, কখনো সেতুর উপর দিয়ে খালে ঝাপ দেয়া – তাদের কাছে এসবই খেলা৷ তারা কলাগাছ দিয়ে ভেলা তৈরি করে ভাসাতে ভালোবাসে, সুযোগ পেলে বিলে গিয়ে ধরে ছোট মাছ৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
নতুন ধারা সার্ফিং
উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতে বহু আগে থেকেই সার্ফিং চালু থাকলেও বাংলাদেশে এই ‘‘জলক্রীড়া’’ এখনো নতুনই বলা যায়৷ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সার্ফিং ক্রমশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে৷ উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘‘বিশ্বের দীর্ঘতম অভঙ্গুর প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার শহর থেকে বদরমোকাম পর্যন্ত একটানা ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত৷’’ দীর্ঘ এই সৈকতে সার্ফিং-এর উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন অনেকে৷
ছবি: Farjana KHAN GODHULY/AFP/Getty Images
পাটের নৌকায় ‘‘সেইলিং’’
পানির দেশে বাংলাদেশের নদীতে পালতোলা নৌকা হরহামেশাই দেখা যায়৷ এরকম এক পাটের তৈরি ছোট পালতোলা নৌকা নিয়ে বাংলাদেশের কুয়াকাটা থেকে ফ্রান্সের লা সিওতা অবধি পাড়ি দেওয়ার রেকর্ডও রয়েছে৷ ২০১০ সালে কোরঁত্যাঁ দ্য শাতেলপেরঁ নামক এক ফরাসি যুবক এই অসাধ্য সাধন করেন৷
ছবি: Muntasir Mamun Imran
7 ছবি1 | 7
আর এর জবাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘সমুদ্র জয়ের পর তারা তালপট্টি নিয়ে তাল-বেতাল হয়ে গেছেন৷ তালপট্টির তাল যদি বেতাল হয়ে যায় তবে পট্টি আর কতটুকু ভালো থাকবে৷ সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তি হওয়ায় এখন তালও নেই বেতালও নেই৷ ফলে তাদের ভারত বিদ্বেষী রাজনীতিতেও একটি উইকেট পড়ে গেছে৷''
সুরঞ্জিত বলেন, ‘‘এখন বিশ্বায়নের যুগ৷ সবাই সব জানে ও দেখে৷ এখন অন্ধকার ও মিথ্যাচারের রাজনীতির কোনো স্থান নেই৷ এই মামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালাতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিচার হোক৷ আমাদের দাবি যদি ন্যায্য হয় তবে পাবো, না হলে পাবো না৷ এখানে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷''
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বলা হয়েছে এখন আর তালপট্টি দ্বীপের অবস্থান নেই৷ যদিও ঐ এলাকাটি ভারত পেয়েছে৷