1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আইএস ও তুরস্ক

লোয়াই মুডহুন/এসবি২৮ জুলাই ২০১৫

সিরিয়া ও ইরাকের উত্তরে তুরস্কের সামরিক অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো সিরিয়া সীমান্তে কুর্দিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিহত করা৷ ডয়চে ভেলের লোয়াই মুডহুন মনে করেন, যে কোনো মূল্যে তুরস্ক এটি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর৷

Türkei Proteste wegen Luftangriffe auf Kurden in Syrien
ছবি: Getty Images/AFP/O. Kose

তুরস্কের বিমানবাহিনী সিরিয়ায় আইএস ও ইরাকের উত্তরে কুর্দি গোষ্ঠী পিকেকে-র ঘাঁটিতে যে হামলা চালিয়েছে, তাতে বিস্ময়ের কোনো কারণ নেই৷ তবে এই ঘটনাকে ইসলামিক স্টেট সম্পর্কে সে দেশের এতকালের অবস্থানের কোনো মৌলিক পরিবর্তন হিসেবে দেখলে চলবে না৷

কারণ জিহাদি খিলাফতের সন্ত্রাসবাদীদের দমন করা এই বিমান হামলার মূল লক্ষ্য ছিল না৷ তুরস্কের সরকার বরং সিরিয়া সীমান্তে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দূর করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ সে দেশের শীর্ষ নেতারা গত কয়েক দিনেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, সীমান্ত জুড়ে আইএস-এর উপস্থিতি যেমন মেনে নেওয়া হবে না, তেমন কুর্দিদের নিয়ন্ত্রণও তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷

তুরস্কের সিরিয়া নীতিতে সংশোধন

তুরস্ক তার বিফল সিরিয়া সংক্রান্ত নীতির নেতিবাচক পরিণতি সংশোধন করতেই বর্তমান পরিস্থিতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে৷ আইএস সন্ত্রাসবাদীদের বিপজ্জনক তৎপরতা তাদের এই সুযোগ করে দিয়েছে৷ তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভোতলু যে ‘জিরো প্রবলেম পলিসি' তুলে ধরেছেন, সিরিয়া তার কেন্দ্রস্থল জুড়ে রয়েছে৷ তিনি তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতিকে আরও উন্মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন৷ এই বহুমুখী নীতির আওতায় তিনি সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যতটা সম্ভব সহযোগিতার পথে এগোতে চেয়েছিলেন৷ সিরিয়ার শাসক বাশার আল-আসাদের মতো আরব স্বৈরাচারী নেতার প্রতিও হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷

ডয়চে ভেলের লোয়াই মুডহুন

২০১১ সালের মার্চ মাসে সংখ্যাগুরু সুন্নিদের বিদ্রোহের ফলে আসাদ প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হলো৷ এর আগে অবশ্য তুরস্ক আসাদকে হিংসার পথ ছেড়ে গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথে আনার চেষ্টা করেছিল৷ কিন্তু আসাদ তৎকালীন শান্তিকামী বিরোধী গোষ্ঠীর উপর হিংসাত্মক হামলা চালাতে থাকায় তুরস্কের আক পার্টি নিয়ন্ত্রিত সরকার সিরিয়ার বিরোধীদের মদত দিতে শুরু করে৷ তবে আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো পথ না পেয়ে তুরস্ক হতাশ হয়ে পড়ে৷ এই অবস্থায় তারা আইএস-এর তৎপরতা কার্যত মেনে নিয়েছিল৷ তাই তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত পেরিয়ে অনেক আইএস যোদ্ধা অবাধে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পেরেছে৷ এটা সক্রিয় সমর্থন – নাকি দেখেও না দেখার নীতি ছিল, তা বলা কঠিন৷

প্রয়োজন বাস্তববাদী পথে উত্তেজনা প্রশমন

এবার তুরস্কই আইএস-এর খামখেয়ালি সন্ত্রাসের শিকার হয়ে পড়েছে৷ অন্তত এবার তুরস্কের নীতি-নির্ধারকদের এই প্রবণতার দায়িত্বের ভাগ স্বীকার করা উচিত৷ অবশ্য সিরিয়ার ট্র্যাজিডির দায় তুরস্কের একার নয়৷ আরব ও পশ্চিমা দেশগুলি, বিশেষ করে অ্যামেরিকার নিজেদের কৃতকার্য সম্পর্কে ভেবে দেখা উচিত৷ তাদের নিষ্ক্রিয়তার ফলেই আসাদ প্রশাসন নিজের দেশের জনগণের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর এক যুদ্ধ চালাতে পেরেছে৷

বর্তমানে সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, তুরস্কের সরকার অ্যামেরিকার সঙ্গে এক বোঝাপড়ায় এসেছে৷ আইএস-এর বিরুদ্ধে তুরস্কের আরও সক্রিয় ভূমিকার মূল্য হিসেবে ওয়াশিংটন আশ্বাস দিচ্ছে যে, রাষ্ট্র হিসেবে সিরিয়ার ভাঙনের প্রেক্ষাপটে কোনো অবস্থায় এক স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র মেনে নেওয়া হবে না৷ এছাড়া দুই দেশই নাকি সিরিয়ার উত্তরে এক নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করার পরিকল্পনা নিচ্ছে, যেখানে প্রায় ২০ লক্ষ সিরীয় শরণার্থী আশ্রয় নিতে পারবে৷

এমন এক ‘বাফার জোন' সৃষ্টির ক্ষেত্রে তুরস্ককে আর্থিক ও কাঠামোগত সহায়তা দিলে ইউরোপের আখেরে লাভ হবে৷ তাছাড়া উত্তেজনা কমাতে তুরস্কের স্বার্থের বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে৷ অন্যদিকে তুরস্কের সমাজে গভীর বিভাজন দূর করতে অভ্যন্তরীণ শান্তি প্রক্রিয়ায় পথে ফেরার উদ্যোগের প্রতি আরও সমর্থন দেখাতে হবে৷ ইউরোপের জন্য অপরিহার্য এই সহযোগী দেশ যাতে তিনটি ক্ষেত্রে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে, সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ