আরব বসন্তের সময় সৌদি আরবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এখন বিচারের কাঠগড়ায় দেশটির একজন খ্যাতিমান নারী মানবাধিকারকর্মী৷
বিজ্ঞাপন
ইসরা আল-গোমাম নামের ২৯ বছরের এই নারীকেমৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার গ্রুপগুলো৷ সৌদি আরবে সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পূর্বাঞ্চলীয় শহর কার্তিফ থেকে স্বামীসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর থেকে কারাগারে আছেন আল-গোমাম৷
গত ৬ আগস্ট দেশটির টেররিজম ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচার শুরু হয়, আগামী ২৮ অক্টোবর রায় ঘোষণা হতে পারে৷ মামলায় আল-গোমামসহ পাঁচ অধিকার কর্মীর মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন সৌদি আইনজীবীরা৷ আল-গোমামের মৃত্যুদণ্ড হলে দেশটিতে প্রতিবাদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তিপ্রাপ্ত প্রথম নারী হবেন তিনি৷
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক সারাহ লি উইটসেন বলেন, ‘‘যে কারো মৃত্যুদণ্ডই দুঃখজনক৷ কিন্তু ইসরা আল-গোমামের মতো অধিকারকর্মীর (যাঁর বিরুদ্ধ সহিংসতার অভিযোগও নেই) মৃত্যুদণ্ড চাওয়া ভয়াবহ ব্যাপার৷''
শিরশ্ছেদের পর মৃতদেহ দেখানো একটি ভিডিও গত কয়েক দিন ধরে অনলাইনে ঘুরছে, যা আল-গোমামের বলে দাবি করা হয়৷ তবে ওই ফুটেজটি তিন বছর আগের বলে জানা গেছে৷ এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাতে ইউরোপিয়ান-সৌদি অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটসের (ইএসওএইচআর) পরিচালক আদুবিসি মঙ্গলবার এক টুইটে লিখেছেন, ‘‘তিনি এখন নিরাপদে আছেন৷''
আল-গোমামের অবস্থানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং তাঁর জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার দাবিতে বিশ্বজুড়ে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আদুবিসি৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কারাগারে তিনি কেমন আছেন সে বিষয়ে তেমন কিছু জানা যায় না৷'' দুই বছর আগে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে স্বজনদের উদ্বেগ জানানোর কথা তুলে ধরেন তিনি৷
সৌদি আরবে রাজনৈতিক বন্দিদের সঙ্গে মাসে একবার কিছুক্ষণের জন্য স্বজনদের দেখা করতে দেওয়া হয়৷ দেশটির একটি কারাগারে এক মাস কাটিয়ে আসা আদুবিসি কারাবন্দিদের শোচনীয় অবস্থার কথা জানান৷ বলেন, ‘‘সেখানে বন্দিদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়৷''
আরব বসন্তের পাঁচ বছর পর কোন দেশের কী অবস্থা
টিউনিশিয়ায় শুরু৷ এরপর সেটা ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য দেশে৷ কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল সেই লক্ষ্য কি পূরণ হয়েছে?
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Khalil Hamra
নিজ গায়ে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ
২০১০ সালের ১৭ই জানুয়ারি টিউনিশিয়ার সিদি বুজিদ শহরে মোহামেদ বুয়াজিজি নামের এক ফেরিওয়ালা নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন৷ ঐ ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হলে ২০১১ সালের ১৪ই জানুয়ারি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বেন আলিকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল৷ আরব বসন্তের শুরু তখন থেকেই৷
ছবি: AP
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে টিউনিশিয়ার অনেক সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে নিরাপত্তা সমস্যা৷ ২০১৫ সালের জুলাই মাসে সেখানকার একটি পর্যটন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা হলে ৩৮ জন নিহত হন৷ এর বেশিরভাগই ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Bounhar
মিশর
টিউনিশিয়ার ঢেউয়ের প্রথম আঁচড় লাগে মিশরে৷ সেখানে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় ২০১১ সালের ২৫শে জানুয়ারি৷ এর কদিন পর ১১ই ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা হোসনি মুবারক৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Abed
বর্তমান পরিস্থিতি
মিশরে হোসনি মুবারককে বিদায় করে বিশেষ লাভ হয়নি৷ আরেক সামরিক প্রধান আবদেল ফাতাহ আল-সিসি দেশের প্রথম বেসামরিক এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুর্সিকে কারাবন্দি করে মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকদের বিরুদ্ধে কড়া হাতে দমন অভিযান চালাচ্ছেন৷
ছবি: Reuters
লিবিয়া
১৯৬৯ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত লিবিয়া শাসন করেন মুয়ম্মর গাদ্দাফি৷ এরপর আরব বসন্তের ছোঁয়া লিবিয়া স্পর্শ করলে এক পর্যায়ে লিবিয়া জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়৷ যোগ দেয় আন্তর্জাতিক বাহিনী৷ ২০১১ সালের জুন মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধে গাদ্দাফিকে অভিযুক্ত করা হয়৷ এর কয়েক মাস পর অক্টোবরের ২০ তারিখ তাঁকে হত্যা করা হয়৷
ছবি: Christophe Simon/AFP/Getty Images
বর্তমান পরিস্থিতি
লিবিয়ার উপর এখন সে দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই৷ ২০১২ সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সরকার ক্ষমতায় গেলেও শান্তি ফিরে আসেনি৷ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মরক্কো
দেশটিকে রাজতন্ত্র বিদ্যমান৷ ১৯৯৯ সাল থেকে দেশ পরিচালনায় আছেন রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ (ছবি)৷ তবে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খুলে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়৷ বিক্ষোভে হতাহতের ঘটনাও ঘটে৷ এরপর মার্চের ১০ তারিখে সংস্কারের ঘোষণা দেয় রাজতন্ত্র৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Jocard
বর্তমান অবস্থা
গণভোটের মাধ্যমে রাজার কিছু ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও সংসদকে দেয়া হয়৷ রাজা আর এখন আগের মতো যাঁকে খুশি তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে পারেন না৷ এ জন্য তাঁকে সংসদে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল থেকে একজনকে বেছে নিতে হয়৷
ছবি: DW/D. Guha
8 ছবি1 | 8
শিয়াদের জন্য বার্তা?
২০১১ সালে আরব বিশ্বে প্রতিবাদের ঢেউ উঠলে সৌদি আরবের শিয়া মতাবলম্বীরাও সমান সুযোগ-সুবিধার দাবিতে রাজতান্ত্রিক দেশটির সুন্নি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকরেন৷ সৌদি আরবের তেল সমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের কাতিফ শহরে বিক্ষোভাকারী শিয়াদের মধ্যে ছিলেন আল-গোমাম৷
সৌদি সরকারি আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, কাতিফে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ‘সরকারবিরোধী স্লোগান এবং বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার' সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
আল-গোমামের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ আনার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের পাশাপাশি তিনি ‘দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সন্ত্রাসী দলে যোগ দিয়েছিলেন'৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে সৌদি আরবে শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে শিয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি কর্তৃপক্ষের বৈষম্যমূলক আচরণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়৷
আল-গোমামের বন্দিত্ব ও সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ডকে শিয়াদের প্রতি সরকারের কঠোর বার্তা হিসেবে দেখছেন জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ গুইডো স্টাইনব্যার্গ৷
তাঁর মতে, কোনো ধরনের বিক্ষোভ ‘সহ্য করা হবে না'-এ বার্তাই শিয়াদের দিতে চায় সরকার৷
‘‘২০১১ ও ২০১২ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে লক্ষ্যে সম্ভাব্য বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ভয় ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই সৌদি সরকারের কৌশল দেখে মনে হচ্ছে,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন তিনি৷
২০১৬ সালে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি সরকার৷ এর জের ধরে ওই অঞ্চলে রিয়াদের প্রধান প্রতিপক্ষ ইরান তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে৷ তবে আল-গোমামের বেলায় সেটি ঘটবে না বলে মনে করছেন স্টাইনব্যর্গ৷ তিনি বলেন, ‘‘ইরানের পক্ষ থেকে এ রকম বড় কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে মনে করি না৷''
সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড
আল-গোমামকে শিরশ্ছেদ করা হতে পারে বলে যে খবর বেরিয়েছে তাতে সংশয় রয়েছে স্টাইনব্যার্গের৷
‘‘সৌদি আরব একজন সৌদি নারীকে, সৌদি নাগরিককে এভাবে হত্যা করবে তা ভাবতে আমরা সমস্যা হচ্ছে৷''
সৌদি আরবের শরিয়া আইনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আরো দু'টি পদ্ধতি আছে-ফায়ারিং স্কোয়াড ও পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা৷
দেশটির বিচার ব্যবস্থায় ধর্মীয় নেতাদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে৷ আর সে কারণেই মৃত্যুদণ্ড ও শিরশ্ছেদ বিলুপ্ত হবে না বলে মনে করেন স্টাইনব্যার্গ৷
‘‘সৌদি আরব যুক্তি দেখিয়ে বলবে, এটা ইসলামের বিধান এবং ধর্মীয় দায়িত্ব৷''
আল-গোমামই সৌদি আরবে গ্রেপ্তার একমাত্র নারী অধিকারকর্মী নন৷ জুলাইয়ে সামার বাদাবি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি ১৫ বছর ধরে শারীরিক নিপীড়নকারী বাবার কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিলেন৷
সৌদি আরবে প্রত্যেক নারীরই একজন পুরুষ অভিভাবক থাকতে হবে৷ সামার বাদাবির ভাই রাফি বাদাবিও ২০১২ সাল থেকে কারাবন্দি, তাকে শাস্তি দেওয়া হয় ‘ইলেকট্রনিক চ্যানেলের মাধ্যমে' ইসলাম অবমাননার অভিযোগে৷
মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবের যুবরাজ হওয়ার পর নারীদের গাড়ি চালনা, সিনেমা নির্মাণ এবং রাস্তায় গান বাজানোর মতো অনেক উদারপন্থি উদ্যোগ নিলেও তিনি দেশটির রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠান ও রীতি-নীতিকেও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে চলেছেন৷
এ বিষয়ে স্টাইনব্যর্গ বলেন, ‘‘সালমানের ওপর দেশটির রক্ষণশীল অংশের চাপ বাড়ছে, যারা তাঁর সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এ কারণে তিনি উদারপন্থি ও সংস্কারবাদী কণ্ঠস্বরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান৷ তিনি রক্ষণশীলদের দেখাতে চান ওয়াহাবি মতবাদের সঙ্গে রাজতন্ত্রের সম্পর্ক এবং দেশের ধর্মীয় আবহ এখানই শেষ হয়ে যাচ্ছে না৷''
তবে আল-গোমামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে তা যুবরাজ বিন সালমানের ‘কলঙ্ক' হয়েই থাকবে৷
যে ১০টি অধিকার পেয়েছেন সৌদি আরবে নারীরা
ছবিঘরে দেখে নিন কবে আর কী কী অধিকার পেয়েছেন সৌদি নারীরা, সে দেশের নারী জাগরণে যা মাইলফলক হয়ে থাকবে৷
ছবি: Getty Images/AFP
১৯৫৫: মেয়েদের জন্য প্রথম স্কুল, ১৯৭০: মেয়েদের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এখন বিপুল সংখ্যক ছাত্রীকে স্কুলে যেতে দেখা যায়৷ কিন্তু আজ থেকে ৬২ বছর আগে চিত্রটা এমন ছিল না৷ সৌদি আরবে মেয়েদের প্রথম স্কুল দার আল হানান৷ আর রিয়াদ কলেজ অফ এডুকেশন সৌদি নারীদের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি চালু হয় ১৯৭০ সালে৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Nureldine
২০০১: নারীদের জন্য পরিচয়পত্র
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এসে পরিচয়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়৷ সৌদি আরবে নারীদের পরিচয়পত্র নিতে হলে পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন হতো৷ ২০০১ সালে সৌদি নারীরা পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই পরিচয়পত্র নেয়ার সুযোগ পান৷
ছবি: Getty Images/J. Pix
২০০৫: জোরপূর্বক বিয়ে নিষিদ্ধ
২০০৫ সালে সৌদি আরবে নারীদের জোরপূর্বক বিয়ে নিষিদ্ধ হয়৷
ছবি: Getty Images/A.Hilabi
২০০৯: প্রথম নারী মন্ত্রী
২০০৯ সালে বাদশাহ আব্দুল্লাহ সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় সরকারে প্রথম নারী মন্ত্রী নিয়োগ করেন৷ নূরা আল কায়েজ নারী বিষয়ক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সে বছর সরকারে যোগ দেন৷
ছবি: Foreign and Commonwealth Office
২০১২: অলিম্পিকে প্রথম নারী অ্যাথলিট
২০১২ সালে প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে অংশ নেন সৌদি নারীরা৷ তাঁদের মধ্যে সারাহ আত্তার নারীদের ৮০০ মিটার দৌড়ে লন্ডন অলিম্পিকের ট্র্যাকে নেমেছিলেন হিজাব পড়ে৷ আসর শুরুর আগে নারীদের অংশগ্রহণ করতে না দিলে সৌদি আরবকে অলিম্পিক থেকে বাদ দেয়ার কথা জানিয়েছিল আইওসি৷
ছবি: picture alliance/dpa/J.-G.Mabanglo
২০১৩: সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি
ঐ বছর সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি পান সৌদি নারীরা৷ তবে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় এবং ইসলামি রীতিতে পুরো শরীর ঢেকে এবং কোনো পুরুষ আত্মীয়ের উপস্থিতিতে তা চালানোর অনুমতি দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP
২০১৩: শুরায় প্রথম নারী
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাদশাহ আব্দুল্লাহ সৌদি আরবের রক্ষণশীল কাউন্সিল ‘শুরা’য় প্রথমবারের মতো ৩০ জন নারীকে শপথ বাক্য পাঠ করান৷
ছবি: REUTERS/Saudi TV/Handout
২০১৫: ভোট দেয়া এবং নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার
২০১৫ সালে সৌদি আরবের পৌরসভা নির্বাচনে নারীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার এবং নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পান৷ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নিউজিল্যান্ড নির্বাচনে নারীদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করেছিল ১৮৯৩ সালে, জার্মানিতে তা চালু হয় ১৯১৯ সালে৷ ২০১৫ সালে সৌদি আরবের ঐ নির্বাচনে ২০ জন নারী নির্বাচিত হয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Batrawy
২০১৭: সৌদি স্টক এক্সচেঞ্জে প্রথম নারী
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরব দেশটির স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারপার্সন হিসেবে সারাহ আল সুহাইমির নাম ঘোষণা করে আরেক ইতিহাস রচনা করে৷
ছবি: pictur- alliance/abaca/Balkis Press
২০১৮: গাড়ি চালানোর অনুমতি
গত ২৬শে সেপ্টেম্বর সৌদি আরব নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করে৷ ২০১৮ সালের জুন মাসে এই আদেশ কার্যকর হয়েছে৷ এর ফলে নারীদের আর কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে না এবং স্বতন্ত্র লাইসেন্স পাচ্ছেন তারা৷