সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কনটেন্ট মনিটরিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আমরাই বাংলাদেশ‘র সহপ্রতিষ্ঠাতা আরিফ আর হোসেন বলছেন, সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্টগুলো মনিটর করতে হবে৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক অনেক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের উৎসে পরিণত হচ্ছে৷ উস্কানি এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মাধ্যম হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করছেন৷ আপনি কিভাবে দেখছেন বিষয়টি?
আরিফ আর হোসেন: আমি বিষয়টিকে এভাবে দেখি, একটা ছুরিকে আপনি ছিনতাইয়ের কাজেও ব্যবহার করতে পারেন, আবার একজন রোগীকে আপেল কেটেও খাওয়াতে পারেন৷ বিষয়টা হল আপনি এটাকে কিভাবে ব্যবহার করবেন৷ ফেসবুকের জন্মই হয়েছিল কিন্তু এটা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম হিসেবে৷ অনেকে এটাকে চমৎকারভাবে ব্যবহার করছেন৷ রক্ত চাওয়া, অভাবী মানুষের জন্য টাকা উঠানো, একটি স্কুল করে দেওয়ার জন্য প্রচুর ভালো কাজে ব্যবহার হচ্ছে৷ ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেকে এটাকে খারাপ কাজে ব্যবহার করছেন৷ এজন্য ফেসবুকের কোনো দোষ নেই, এটা আমাদের ম্যাচুউরিটির দোষ৷ ম্যাচুউরিটির দোষ বলছি এই কারণে যে, আমি যদি তার দেওয়া পোষ্টে, লাইক না দিতাম বা শেয়ার না করতাম তাহলে কিন্তু এটা ছড়াতো না৷ আমরা যদি তাদের কাজে সাড়া না দেই তাহলে দেখবেন একসময় তারা থেমে যাবেন৷
‘‘এটাকে আমি পজিটিভলি দেখি না’’
বাংলাদেশে কি এই প্রবণতা বেশি?
আসলে বিষয়টা সময়ের৷ আমেরিকা বা ইউকে-ও এমন সময় পার করেছে৷ ভারতও দুই বছর আগে এমন সময় পার করেছে৷ এখন আমরা সেই সময় পার করছি৷ আবার বাংলাদেশের চেয়ে আন্ডার ডেভেলপ কান্ট্রি যেগুলো আছে তারা হয়ত আরো দুই বছর পর এমন সমস্যায় পড়বে৷ সময়টা পার হলেই আমরা উতরে যাব৷
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কিভাবে আরো দায়িত্বশীল করা যায়?
এটাই একমাত্র সমাধান৷ যারা ব্যবহার করেন তাদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে৷ অনেকে বলেন ফ্রিডম অব স্পিচ নেই৷ আসলে ফ্রিডম অব স্পিচের নামে আমরা হেট স্পিচকে প্রমোট করছি৷ এটার পার্থক্য আমাদের বুঝতে হবে এবং আমাদেরই দায়িত্বশীল হতে হবে, মানুষকে শেখাতে হবে৷
উষ্কানি প্রতিরোধে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর করণীয় কী?
তাদের অনেক কিছুই করার আছে৷ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আছে, সেটার ব্যবহার করতে হবে৷ অনেকেই ৫৭ ধারাকে খারাপ বলছেন, আমি মনে করি এটা খারাপ না৷ আপনি যদি আক্রান্ত হন বা গুজব ছড়ানো হয় তাহলে কিন্তু আপনিও বিচার চাইতে পারবেন৷ আইনের বাস্তবায়নটাও চোখে পড়তে হবে৷
প্রতিকারের জন্য বিশেষ কোনো পরিকল্পনা প্রস্তাব আছে আপনার?
দেখেন আল্লাহও কিন্তু মানুষকে লাইনে রাখার জন্য দুটো জিনিস করেছে৷ একটা বেহেস্ত, আরেকটা দোজখ৷ বিষয়টা হলো হয় ভয় দেখাও, না হয় আদর কর৷ সরকার ভয় দেখিয়ে চেষ্টা করেছে৷ পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় ওয়ার্কশপ করুক, মানুষকে বোঝাক যে এটা ভালো, আর এটা খারাপ৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি ভয় না দেখিয়ে মানুষকে বোঝায়, ভালোবাসা দিয়ে কথা বলে তাহলে এটার সমাধান হতে পারে৷
বাংলাদেশে ফেসবুক: ব্যবহারের ভাল-মন্দ
সব বয়সী মানুষের কাছেই জনপ্রিয় এক সামাজিক মাধ্যম এখন ফেসবুক৷ যা ব্যবহার ছাড়া অনেকে একটি মুহূর্ত ভাবতে পারেন না৷ মাধ্যমটি অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে মানুষের জীবন যাত্রার সাথে৷ যা ভালোর পাশাপাশি অনেক মন্দ প্রবণতারও জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/D. Ruvic
‘দ্য ফেসবুক’ থেকে শুধু ‘ফেসবুক’
২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দ্য ফেসবুক নামের একটি ওয়েবসাইট খোলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মার্ক জাকারবার্গ ও তার বন্ধুরা৷ শুরুতে এটি ছিল শুধু হাভার্ডের ব্যবহারকারীদের জন্য৷ ২০০৫ সালে নামের শুরুতে থাকা ‘দ্য’ ফেলে দেয় ফেসবুক৷ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৬ থেকে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ১৩ বছরে উপরের সব বয়সীদের জন্য৷
ছবি: REUTERS
১০০০ ডলার থেকে বিলিয়ন ডলার
২০০৪ সালে যাত্রা শুরুর সময় দ্য ফেসবুকে জাকারবার্গদের বিনিয়োগ ছিল মাত্র এক হাজার ডলার৷ বর্তমানে সেই কোম্পানির বার্ষিক আয় দাড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৫৮৩ কোটি ডলারে৷ ২০১৮ সালে তাদের নিট মুনাফা হয়েছে দুই হাজার ২১১ কোটি ডলার৷ ফোর্বসের তালিকায় সবচেয়ে দামী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ফেসবুক আছে শীর্ষ পাঁচে৷
ছবি: AP
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা
বর্তমানে বিশ্বে ফেসবুক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২৫ কোটির বেশি৷ সাম্প্রতিক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে৷ চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২২০ কোটি অ্যাকাউন্ট এ কারণে বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক৷
ছবি: Reuters/D. Ruvic
বাংলাদেশে তিন কোটি
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ফেসবুক ব্যবহারকারী কত তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী দেশে তিন কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. A. Thu
যোগাযোগের নতুন মাধ্যম
ফেসবুক এখন সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে বড় এক মাধ্যম৷ যেখানে খুজে পাওয়া যায় পরিচিত মানুষ৷ রাখা যায় তাদের খোঁজ, খবর৷ যোগাযোগের এই গণ্ডি পেরিয়ে যেতে পারে এমনকি দেশের সীমানা৷ আর এভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন বন্ধুত্ব৷ বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে চেনা অচেনা মানুষ সাহায্যও করছে একে অপরকে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Alfiky
তাৎক্ষণিক যোগাযোগ, ফোন কল
ফেসবুক অনেকের কাছে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের এক মাধ্যমও৷ মোবাইল নেটওয়ার্কে বার্তা পাঠানোর বদলে ফেসবুকের মাধ্যমেই যোগাযোগ চলে৷ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে এমনকি ফোনে কথা বলার কাজও সারে৷
ছবি: Imago/ZUMA Press
অনলাইন মার্কেটিং, এফ কমার্স
ফেসবুকের মাধ্যমে এখন অনেকে আয় রোজগার করছেন৷ বিভিন্ন ব্যবসায়িক পেইজ খুলে তারা নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, সরাসরি যোগাযোগ করছেন ক্রেতাদের সাথে৷ এই ধরণের ব্যবসা পরিচিত এফ কমার্স নামে৷ ই কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের হিসাবে, দেশে এখন এমন প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেইজ আছে৷ যার মধ্যে ১২ হাজার চালাচ্ছেন নারীরা৷
ছবি: Colourbox/T. Vitsenko
শিক্ষামূলক পেইজ
ফেসবুকে আছে বিভিন্ন শিক্ষামূলক সাইট ও গ্রুপ৷ তেমনই একটি সার্চ ইংলিশ৷ বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই ফেসবুক গ্রুপটিকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেছে ফেসবুক বিজনেস৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
তথ্যের উৎস
ফেসবুক এখন অনেকের কাছে হয়ে উঠেছে তথ্য ও সংবাদের উৎস৷ ব্যবহারকারীরা নিজেরাই প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে অনেক সময় বিভিন্ন খবর বা তথ্য জানাচ্ছেন৷ আবার বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোর পেইজ থেকেও সবশেষ খবর পাওয়া যায় ফেসবুকে৷
ছবি: picture-alliance/maxppp/P. Proust
রক্তদান
কারো জরুরি রক্তের প্রয়োজনে ফেসবুকের সহযোগিতা নিতে পারেন৷ বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে ২০১৮ সালে ‘ব্লাড ডোনেশনস হাব' তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি৷ এতে আগ্রহী রক্তদাতারা সাইন আপ করতে পারেন৷ আর যাঁদের রক্তের প্রয়োজন, তাঁর আশপাশে রক্তদাতা কে আছেন সেই তথ্য জানাতে পারেন৷
ছবি: Fotolia
প্রতিবাদের মাধ্যম
ফেসবুক অনেকের কাছে মত প্রকাশ আর প্রতিবাদের মাধ্যমও৷ দেশের বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ এতে অনেক সময় তৎপর হয় সরকার বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামলকান্তির অবমাননা,
সিলেটে শিশু রাজন হত্যাসহ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে ওঠায়ও ভূমিকা ছিল ফেসবুকের৷
ছবি: Facebook/Mushfiqur Rahim
ব্যক্তিগত সম্প্রচার মাধ্যম
অনেকের কাছে ফেসবুক হয়ে উঠেছে ব্যক্তিগত সম্প্রচার মাধ্যম৷ নিজেদের সৃজনশীল কাজ, লেখালেখি, বক্তৃতা করে কেউ কেউ এমনকি সেলিব্রেটিও বনে গেছে৷ ফেসবুকে তাঁদের লাখো ফলোয়ার বা অনুসারীও আছে৷
ছবি: Facebook/A. Sadiq
নারী অবমাননা
ফেসবুকে অনেক সময় প্রতারণা আর নিপীড়নের শিকার হন নারীরা৷ আইডি হ্যাক করে, অপ্রিতীকর ছবি ছড়িয়ে দিয়ে এমনকি পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করে অনেক অপরাধী৷
ছবি: DW
অপরাধ প্রবণতা
ফেসবুক অপরাধ প্রবণতা তৈরি করছে অনেক কিশোর ও তরুণদের মধ্যে৷ ঢাকার উত্তরা এলাকায় এক কিশোর হত্যার ঘটনায় তরুণদের ফেসবুক ব্যবহারের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে৷ তারা ফেসবুক পেজ খুলে গড়ে তোলো নানা সন্ত্রাসী গ্রুপ৷আবার ধানমন্ডিতে এক কিশোরকে আরেক কিশোর গ্রুপ মারধর করে তার ভিডিও আপলোড করে দেয় ফেসবুকে৷ তরুণদের একাংশ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, ব্ল্যাকমেল করতে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করছে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Bangla Tribune/Humayun Masud
ভুয়া খবর ও গুজব
চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসের দিকে ‘পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’ বলে ফেসবুকের মাধ্যমে সারাদেশে গুজব ছড়ানো হয়৷ এরপর ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ গত বছর কিশোরদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও শিক্ষার্থী ধর্ষণের গুজবে সংঘর্ষ বাড়ে৷ ফেসবুকে হরহামেশাই এমন গুজব আর ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Singh
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
কারো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সেখান থেকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট৷ যাকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা৷ কক্সবাজারের রামুতে হামলা থেকে শুরু করে গত কয়েক বছরে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে৷ যার সবশেষটি হয়েছে ভোলাতে৷
ছবি: AFP/Getty Images
রাষ্ট্রীয় দমন, সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন
ফেসবুকে মত প্রকাশ করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় বা সন্ত্রাসীদের নিপীড়নের মধ্যেও পড়তে হয়েছে অনেককে৷ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে এজন্য অনেককে জেলেও যেতে হয়েছে৷ আবার ফেসবুক স্ট্যাটাসের ভিন্ন মত সহ্য করতে না পেরে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে বুয়েটে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
17 ছবি1 | 17
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কনটেন্ট মনিটরিংয়ে সরকার নানা প্রকল্প নিচ্ছে, সেটি কিভাবে পরিস্থিতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে?
এটা করাই উচিৎ৷ কারণ রাষ্ট্রবিরোধী যদি কোনো তৎপরতা চলে তাহলে কেন মনিটরিং হবে না? কিন্তু এখানে রাষ্ট্রের বিপক্ষে এলে সেটা মনিটরিং করবে না আর সরকারের বিপক্ষে এলে মনিটরিং করবে সেটা দেখতে হবে৷ আপনি তো সরকারের সমালোচনা করতেই পারেন৷ সেটা তো আর রাষ্ট্রবিরোধী কাজ না৷ কিন্তু কেউ যদি রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করেন তাহলে তো দেখবেই৷
আগেও তো গুজব ছড়ানো হতো, এখনকার গুজব, আর আগের গুজবের মধ্যে পার্থক্য কি?
আমার চোখে পার্থক্যের যে জায়গাটা ধরা পড়ে সেটা হলো, আজকে যিনি গুজব ছড়াচ্ছেন তিনি কিন্তু ধর্মকে ট্যাগ করে দিচ্ছেন৷ রামুর ঘটনা দেখেন, ভোলার ঘটনা দেখেন সবই কিন্তু ধর্মকে সামনে আনা হয়েছে৷ আমরা আসলে ধর্মের ব্যাপারে খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি, এই দিকটা খুবই উদ্বেগজনক৷
গুজব সৃষ্টিকারীদের বিচার না হওয়াতে কি এই প্রবণতা বাড়ছে? আপনি কি মনে করেন?
এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়৷ আমরা যদি দেখতে পারতাম রামুর ঘটনায় গুজব সৃষ্টির অভিযোগ কারো জেল হয়েছে, তাহলে কেউ গুজব ছড়ানোর আগে একবার হলেও ভাবত এটা করলে কিন্তু তারও জেল হতে পারে৷ আসলে আমাদের প্রচুর আইন আছে কিন্তু এসব আইনের প্রয়োগ নেই৷
অনেকেই এ কারণে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণের কথা বলছেন, এটা কি ঠিক?
এটাকে আমি পজিটিভলি দেখি না৷ এই মিডিয়াটা ক্লিক করল কেন? টিভি বা পত্রিকায় একজন মত প্রকাশ করছেন, আরেকজন কিন্তু জবাব দিতে পারছেন না৷ এটা ওয়ানওয়ে মিডিয়া৷ এখানে কেউ কিছু বললে আরেকজনের জবাব দেওয়ার সুযোগ আছে৷ যুক্তি খণ্ডনের সুযোগ আছে৷ এটা বন্ধ করলে দেশের জন্য খারাপ হবে৷ যত কথা হবে, যুক্তি হবে ততই ক্রিয়েটিভ বিষয়গুলো উঠে আসবে৷ আমাদের বুঝতে হবে ফ্রিডম অব স্পিচের নামে আমরা যেন হেট স্পিচকে প্রমোট না করি৷
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷