1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সরকারি ব্যাংকগুলো ধুঁকছে‌

রাজীব চক্রবর্তী
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

‌ভারতে ব্যাংক ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন৷ মাসে গ্রাহকের জমা দেওয়া আমানতের নিরিখে সরকারি ব্যাংককে পিছনে ফেলে দিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক৷ প্রশ্ন উঠেছে, এর পিছনে কি সরকারি নীতি এবং বেসরকারি ব্যাংকের তুলনামূলক ভালো পরিষেবা?‌

Indische Währung Rupien
ছবি: DW/P. Mani Tewari

বিগত ৩ বছর ধরে দেশে বেসরকারি ব্যাংকগুলির লক্ষ্যণীয় উত্থান চোখে পড়েছে৷ তাতে কারো আপত্তি নেই৷ থাকার কথাও নয়৷ কিন্তু, দুশ্চিন্তার কারণ অন্য জায়গায়৷ তা হল, একদিকে যখন বেসরকারি ব্যাংকগুলিতে তরতরিয়ে গ্রাহকের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে, তখনই আমানত জমা কমে গিয়ে কার্যত ধুঁকছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলি৷ সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলিতে গত বছর জমা পড়া আমানতের হিসেব৷ হিসেবে চোখ বুলিয়ে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ বিশেষজ্ঞদের৷ অনেকের আশঙ্কা, এইভাবে সরকারি ব্যাংকে আমানত জমা পড়ার হার কমতে থাকলে অচিরেই অঘটন ঘটতে পারে৷ এমনকি, বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে৷

২০১৯ সালের জুলাই-‌ডিসেম্বর, এই ছয় ‌মাসে তিনটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে জমা পড়া মোট আমানতের পরিমাণ মোট আমানতের প্রায় ৭০ শতাংশ৷  আটটি সরকারি ব্যাঙ্কের মোট আমানতের ৮৪ শতাংশ৷ বেসরকারি এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে আমানত জমা পড়েছে ১.‌১২ লক্ষ কোটি৷ আইসিআইসিআই ব্যাংকে ৫৫,‌৬১৩ কোটি৷ অ্যাক্সিস ব্যাংকে ৫০,৯৯৮ কোটি টাকা৷ সব মিলিয়ে দেশের আটটি বড় মাপের বেসরকারি ব্যাঙ্কের আমানত হু হু করে বেড়েছে৷ যার পরিমাণ ২.‌৬৮ লক্ষ কোটি৷ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা পড়া আমানতের চেয়ে অনেক গুণ বেশি৷

অভিরূপ সরকার

This browser does not support the audio element.

এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‌‘সরকারি ও ‌বেসরকারি ব্যাংকগুলির মূল তফাৎ হল, বেসরকারি ব্যাংক শুধুমাত্র তাদের লাভের অঙ্ক কষেই ব্যবসা করে৷ সাধারণত দেশের জনগণের প্রতি তাদের তেমন কোনও সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে না৷

ভারতের মতো দেশে এমন ব্যাঙ্কিং নীতি ফলপ্রসূ হতে পারে না৷'‌'‌তাঁর মতে, ‘‌‘‌রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির সামাজিক দায়িত্ব অনেক৷ দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে ব্যাংক পরিষেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর তারা৷ এই কাজে অনেক বেশি ব্যয় করতে হয় ব্যঙ্কগুলিকে৷ সেই তুলনায় গ্রামাঞ্চল থেকে নগদ আমানত জমা হওয়ার হার অত্যন্ত কম হয়৷ আর দেরি না করে এখনই সমগ্র ব্যাংকিং পরিষেবার বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের৷'‌'‌‌যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, সরকারি ব্যাঙ্কের তুলনায় বেসরকারি ব্যাংকগুলির উন্নত ও ভালো পরিষেবার কারণেই সাধারণ মানুষ তাদের উপর বেশি ভরসা করতে শুরু করেছে৷ সেই সঙ্গে ভারতের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার বিভিন্ন সময়ে ‘‌রেপো রেট'‌সম্পর্কিত নির্দেশিকা সম্পূর্ণ ভাবে না মেনে পরিষেবা প্রদান করে৷ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তুলনায় বেশি সুদ দেয় গ্রাহকদের৷

অথচ, গতবছরের প্রথমার্ধে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির বর্ধিত আমানত অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এবং পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক-‌সহ মোট ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আমানত ছিল ৫.‌২৫ লক্ষ কোটি৷ যা বেসরকারি ব্যঙ্কের(‌২.‌৫৩ লক্ষ কোটি)‌থেকে বেশি৷ কিন্তু, তারপর ছবিটা পাল্টেছে৷ বছরের শেষার্ধে আবারও অধোগতি৷ এক্ষেত্রে পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়৷‌

সুখেন্দু শেখর

This browser does not support the audio element.

ডয়চে ভেলেকে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, ‘‌‘‌নরেন্দ্র মোদী সরকার জল-‌স্থল-‌অন্তরীক্ষ বিক্রি করতে উছেপড়ে লেগেছে৷ সরকারের ভ্রান্ত ব্যাঙ্কিং নীতির ফলেই এমনটা হয়েছে৷ সরকার যে ভাবে সব ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের পথে হাটছে, এটি তারই ফল৷ শুধু ব্যাংক নয়,  রেল, বিমান, জল পরিবহন, এমনকী কয়লা খনি পর্যন্ত বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে৷ বাদ দেয়া হয়নি মৃত্যুর পর পরিজনের জন্য সুরক্ষিত আমানতও৷ জীবনবিমা নিগম বিক্রি করার পদক্ষেপ তারই ইঙ্গিত৷'‌'‌যদিও ‌রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তুলনায় বেসরকারি ব্যাঙ্কের আমানত দ্বিগুনের বেশি হওয়ার অর্থ হল, ভারতে ৭০ শতাংশ গরিব মানুষের হাতে টাকা নেই৷ তাদের হাত আজও ফাঁকা রয়ে গিয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ