বাতিল বিষাক্ত স্যালাইনে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করলো সিআইডি। তারা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যান। কলকাতায় ভর্তি অন্য তিন প্রসূতির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিজ্ঞাপন
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মামনি রুইদাসের মৃত্যুতে সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সোমবার সিআইডির হাতে তদন্তভার তুলে দেয় তারা।
মেডিক্যালেসিআইডি
পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি রিঙ্গার ল্যাক্টেড (আরএল) স্যালাইনের উৎপাদন ও সরবরাহ আগেই নিষিদ্ধ করেছে রাজ্য। তবু মেদিনীপুর মেডিকেলে অস্ত্রোপচারের সময় গত আট ও নয় জানুয়ারি এই স্যালাইন ব্যবহার করা হয়। এরপর সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয় মামনির। সেই দিনে অস্ত্রোপচার হওয়া আরও তিন প্রসূতির চিকিৎসা চলছে কলকাতার শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল এসএসকেএমে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে গাফিলতি হয়েছিল তা ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছে রাজ্য। বিভাগীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসার পর স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেছেন।
এক প্রসূতি মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও চারজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাতিল স্যালাইনের ব্যবহারের পাশাপাশি চিকিৎসকদের ভূমিকা, সবটাই তদন্ত করে দেখবে সিআইডি। মঙ্গলবার সকালে সিআইডির প্রতিনিধিরা হাসপাতালে পৌঁছন। এখনো তারা কোনো এফআইআর দায়ের করেনি। পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ প্রসূতি মৃত্যুর পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছিল।
কিন্তু বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসছে নিম্নমানের স্যালাইন ব্যবহারের প্রসঙ্গ। শুধু স্যালাইন নয়, অক্সিটোসিন ইনজেকশনের গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মেদিনীপুরে সরকারি হাসপাতালে স্যালাইনকাণ্ড, এক প্রসূতির মৃত্যু, সংকটজনক তিনজন
পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি হাসপাতালে একজন প্রসূতির মৃত্যু, তিনজনের অবস্থা গুরুতর। অভিযোগ, বিষাক্ত স্যালাইন দেয়ায় এই কাণ্ড হয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রসূতি-মৃত্যুর কারণ বিষাক্ত স্যালাইন?
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে বিষাক্ত স্যালাইনের কারণে প্রসূতি-মৃত্যুর অভিযোগ। একই দিনে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। সন্তান জন্মের পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পাঁচ প্রসূতি। শুক্রবার তাঁদের এক জনের মৃত্যু হয়। মৃত মামণির পরিবারের অভিযোগ, বিষাক্ত স্যালাইন দেয়াতেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই স্যালাইনগুলির ঠিক থাকার তারিখও পেরিয়ে গেছিল বলে অভিযোগ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
এবারই প্রথম নয়
গত নভেম্বরে পরপর প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার পর কর্নাটক সরকার ব্ল্যাকলিস্ট করে আরএল স্যালাইনের প্রস্তুতকারক পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসকে। গত ১০ ডিসেম্বর গুণমানের প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের স্যালাইন উৎপাদনকে নিষিদ্ধ করে রাজ্য। সেই স্যালাইনই দেয়ার অভিযোগ পাঁচ প্রসূতিকে। এই ঘটনার পর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের যুব সংগঠনের সদস্যরাও।
ছবি: Subrata Goswami/DW
স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ
অভিযোগ, প্রায় আট মাস আগে স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে সরিয়ে রাখা স্যালাইন (রিঙ্গার্স ল্যাকটেট) ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই স্যালাইন যে ওই হাসপাতালে মজুত ছিল, তেমনটাও নয়। বরং তা নিয়ে আসা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিজ়ার্ভ স্টোর (ডিআরএস) থেকে। এক প্রসূতির মৃত্যু এবং আরও তিনজনের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ার পর ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে স্বাস্থ্য ভবনের হাতে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
পুলিশ মোতায়েন
সূত্রের খবর, গত বছরের এপ্রিল থেকেই রাজ্যের কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রসূতি-মৃত্যু ও তাদের অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ার খবর আসতে থাকে। ঘটনায় ওই বিশেষ স্যালাইন ব্যবহারকেই দায়ী করতে থাকেন চিকিৎসকেরা। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হওয়ায় গত বছরের জুন নাগাদ স্বাস্থ্য দপ্তর বিষয়টি বিশদে খতিয়ে দেখতে শুরু করে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার পর সেখানে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নির্দেশ মানা হয়নি
বুধবার অস্ত্রোপচারের পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ প্রসূতিকে যে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল রিপোর্ট না-আসা সেই ‘২৩৯৬’ ব্যাচ নম্বরের স্যালাইন। যা সরিয়ে রাখার নির্দেশ ছিল। ওই স্যালাইন দেয়ার পরে পাঁচ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শুক্রবার সকালে মামণি রুইদাসের মৃত্যু হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী জানান তদন্ত চলছে। ঘটনার কারণ নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে পারবেন না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কলকাতায় আনা হলো
যে তিনজনের শারীরিক পরিস্থিতি সংকটজনক, তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। রোববার গ্রিন করিডোর তৈরি করে তিনটি আলাদা অ্যাম্বুলেন্স করে তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঘটনাস্থলে তদন্তকারীরা
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যদপ্তরের ১৩ তদন্তকারী কর্মকর্তা। কলেজের সুপার ও অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের দীর্ঘ বৈঠক হয়। তার ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে রিপোর্ট। রোববারের মধ্যে তা নবান্নে জমা দেয়া হতে পারে। তারপর তা খতিয়ে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্যাসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে মুখ্যসচিব। স্বাস্থ্যভবনের তরফে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজকে পাঠানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, যে সংস্থার তৈরি স্যালাইন নিয়ে এত বিতর্ক, তাদের তৈরি অন্যান্য স্যালাইনও আপাতত নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। সেগুলির নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পাঠানো হবে। পরীক্ষার ফলাফল হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মৃতের পরিজনের প্রশ্ন
মৃত মামনি রুইদাসের পরিবার প্রশ্ন তুলছে, এখন এত সচেতনতা দেখিয়ে কী লাভ? একটা প্রাণ চলে গেলো! কিন্তু ঘটনা হলো, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে এমন নিষিদ্ধ ওষুধ ব্যবহার সম্পূর্ণ রুখতে আগেই কয়েকটি সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের তৈরি ওষুধ বা অন্য কোনওরকম মেডিক্যাল সরঞ্জাম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
দুর্নীতি দেখছেন অনিকেত
আরজি কর আন্দোলনের নেতা অনিকেত মাহাতো ডিডাব্লিউকে বলেন, ''ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার পরেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে। এর থেকেই স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। আমাদের আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি। মানুষের মৃত্যুর পরেও সরকারের টনক নড়েনি, এটা গাফিলতি নয়, খুঁজে দেখলে দুর্নীতিও পাওয়া যাবে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এইসব সমূলে বিনাশ করা যায়, কিন্তু সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
জাল ওষুধ নিয়ে প্রশ্ন
শনিবার সকাল থেকেই কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠন এবং কংগ্রেস। উল্লেখ্য, বছরের শুরুতেই কলকাতায় জাল জীবনদায়ী ওষুধের চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছিল। উদ্ধার হয় প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার জাল ওষুধ। যে গোডাউনে হানা গিয়ে জাল ওষুধগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তার কয়েকশো মিটারের মধ্যেই রয়েছে একাধিক ওষুধের দোকান। তারা জানান, এমন কারবারের কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তারা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বিজেপি নেতার বক্তব্য
জাল ওষুধ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভেজাল স্যালাইন, ভেজাল ইঞ্জেকশান, এমনকি সিরিঞ্জ ধুয়ে ব্যবহারের খবরও এসেছে। এই সব এই রাজ্যে নিয়মিত চলছে। নতুন কিছু নয়। ধরা পড়লে জানতে পারি।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
হাইকোর্টে মামলা
কলকাতা হাইকোর্টে বিষাক্ত স্যালাইনকাণ্ড নিয়ে দুইটি মামলা করতে চান আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এবং কৌস্তুভ বাগচী। প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ দুইটি মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হতে পারে।
ছবি: Sudipta Bhowmick/PantherMedia
13 ছবি1 | 13
একগুচ্ছপ্রশ্ন
রাজ্য সরকার আগেই যে স্যালাইনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল, সেটা কীভাবে একটি মেডিক্যাল কলেজে ব্যবহার করা হল, সেটা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
মুখ্যসচিব এর জবাবে বলেছেন, উৎপাদক সংস্থাকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এই সংক্রান্ত দ্বিতীয় নির্দেশিকাটি জারি হয় ৭ জানুয়ারি। তার পরেও কী কারণে হাসপাতাল থেকে আরএল স্যালাইন সরিয়ে ফেলা হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, শুধু মেডিক্যাল কলেজ নয়, বিভিন্ন হাসপাতালে মজুত স্যালাইন ও ওষুধ বাতিলের ক্ষেত্রে কেন গড়িমসি করা হল।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজকে গত মাসে অনলাইন বৈঠকে এ ব্যাপারে জরুরি নির্দেশ দেয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তা সত্ত্বেও কার অঙ্গুলিহেলনে বাতিল স্যালাইন হাসপাতালে রয়ে গেল, তা তদন্ত করে দেখবে সিআইডি।
অভিযোগ উঠেছে, বাতিল স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে সজাগ ছিল হাসপাতাল। কারো অজ্ঞাতে এই স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছে, এমনটা নয়। ব্যাচ নম্বর উল্লেখ করে আরএল স্যালাইন ব্যবহারের অনুমোদন হিসেবে প্রসূতিদের পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।
অন্যান্য জায়গার মতো মেদিনীপুর মেডিক্যালে এই স্যালাইনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট আসার আগে কেন স্যালাইন ব্যবহার করা হল, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্যালাইনের পাশাপাশি অক্সিটোসিন ইনজেকশন নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ ঠেকাতে অক্সিটোসিন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়। মামনি ও অন্যান্য প্রসূতিদের ক্ষেত্রে সেটা সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল কি না, সেটাও সন্দেহের আবর্তে রয়েছে।
মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, প্রসূতির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ থেকে মুচলেকা দেয়ার অভিযোগ, সব কিছুই খতিয়ে দেখবে সিআইডি।
প্রসূতিরাসংকটজনক
কলকাতার শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি তিন প্রসূতির অবস্থা ভালো নয়। তাদের দেহে সংক্রমণ রয়েছে। কিডনি ও ফুসফুস ঠিক ভাবে কাজ করছে না।
এ জন্য স্বাস্থ্য প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলছেন চিকিৎসকরা। সাবেক সাংসদ ও চিকিৎসক-নেতা তরুণ মণ্ডল বলেন, "যে সামগ্রী নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা হাসপাতালে থাকাই উচিত নয়, সেটা কার নির্দেশে থেকে গেল স্টকে, এর উত্তর খুঁজতে হবে। স্বাস্থ্য ভবন যেটিকে বাতিল করে নির্দেশ পাঠিয়েছে, সেটা চিকিৎসায় ব্যবহার শুধু অজ্ঞানতাবশত হয়েছে, এটা ভাবার কারণ নেই। কিন্তু রাজ্য সরকারের অধীন সিআইডি প্রশাসনিক স্তরের গাফিলতি কতটা প্রকাশ্যে আনবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।"
সিআইডি প্রশাসনিক স্তরের গাফিলতি কতটা প্রকাশ্যে আনবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে: ডা. তরুণ মণ্ডল
কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, কোনো সিনিয়র চিকিৎসক কি প্রসূতির অপারেশনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন? এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার ও এমএসভিপির সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের চিকিৎসক পড়ুয়ারা অপারেশন থিয়েটারে আলাদা আলাদা ভূমিকা পালন করেন। তৃতীয় বর্ষের পিজিটিরা অস্ত্রোপচার করতে পারেন সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতিতে। সিনিয়র কেউ না থাকলে অস্ত্রোপচার করার কথা নয়।
মুখ্যসচিব বলেছেন, "সে সময় যারা কর্তব্যরত ছিলেন, তারা অস্ত্রোপচার করেন। এদের সকলে পিজিটি। তাই এটা বিধি অনুযায়ী হয়েছে বলা যাবে না। সিনিয়র চিকিৎসকদের অধীনে পিজিটিদের কাজ করতে হয়।"
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস ডিডাব্লিউকে বলেন, "সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতিতে অপারেশন হয়েছে বলে শুনেছি। তারা স্যালাইনের মেয়াদ দেখে নিয়েছিলেন। প্রতিক্রিয়া প্রয়োগের পরে হয়েছে। এমনিতে আমাদের সরকারি হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সেটাও মাথায় রাখতে হবে। এর দায় চিকিৎসকদের নয়।"
বাতিল স্যালাইন ব্যবহারের সঙ্গে অনেকে দুর্নীতির যোগ খুঁজছেন। আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক পড়ুয়ার হত্যার পর এ নিয়ে বিস্তার হইচই হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে।
চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কোনো দুর্নীতির চক্র স্যালাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছিল কি না, সেটাও নিরপেক্ষ ভাবে দেখতে হবে। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চিকিৎসকরা আগেও আন্দোলন করেছেন। আরজি করের দুর্নীতি কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়, সেটা আর একবার দেখা যাচ্ছে।"