কলকাতা-সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গেই বাস ও ট্যাক্সি সংগঠনগুলির সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত ক্রমশ তীব্র হচ্ছে৷ যে কোনও দিন ভেঙে পড়তে পারে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা!
ছবি: picture-alliance/Annie Owen/Robert Harding World Imagery
বিজ্ঞাপন
বাসভাড়া বাড়াতে চাইছে না সরকার৷ তাই ২০ আগস্ট থেকে টানা তিন দিনের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বাসমালিকদের সংগঠন৷ শেষবার বাসভাড়া বেড়েছিল ২০১২ সালে৷ তখন ডিজেলের দাম ছিল ৫১ টাকার কাছাকাছি৷ এখন ডিজেলের দাম ৬৩ টাকার সামান্য বেশি৷ কাজেই ভাড়া বাড়ানোর দাবি যে একেবারেই অযৌক্তিক, এ কথা কেউ ভাবছেন না, একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকার ছাড়া৷ এমনকি যাঁরা নিত্যযাত্রী, রাস্তায় বেরোলে বেসরকারি বাস ছাড়া যাঁদের গতি নেই এবং যথেষ্ট সংখ্যক বাস চলছে না বলে প্রতিদিনের ভোগান্তি যাঁদের সহ্য করতে হয়, তাঁরাও কিন্তু চাইছেন বাসভাড়া বাড়ুক!
কলকাতার হাতে টানা রিকশার একাল
কলকাতার কোনো কোনো জায়গায় এখনো হাতে টানা রিকশার চল রয়েছে৷ যদিও সংখ্যাটা দিনদিন কমছে৷ আর কতদিন থাকবে? চলুন জানার চেষ্টা করি এই ছবিঘরে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
যবে থেকে শুরু
হাতে টানা রিকশার উদ্ভাবন ১৬ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে, জাপানে৷ ১৯ শতকে যানটি গোটা এশিয়ায় বহুল ব্যবহৃত এক গণ-বাহন হয়ে দাঁড়ায়৷ ১৮৮০ সালে ভারতে প্রথম রিকশা চালু হয় হিমাচল প্রদেশের সিমলায়৷ সেখান থেকে হাতে টানা রিকশা চলে আসে কলকাতায়৷ ১৯১৪ সাল নাগাদ কলকাতায় ভাড়াটে রিকশার চলন হয়৷ এরপর এত বছর পরেও কলকাতার কোনো কোনো অঞ্চলে টিকে আছে এই হাতে টানা রিকশা৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
প্রধান সড়ক থেকে গলিতে
কলকাতার প্রধান সড়কপথগুলোতে এখন অবশ্য আর রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয় না পুলিশ৷ তার প্রথম কারণ রিকশার মতো ধীরগতির যানের কারণে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়৷ তবে অন্য আর একটি কারণ হলো, আজকের দিনে রিকশার সওয়ারি হওয়া নিরাপদও নয়৷ ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েই রিকশারা আশ্রয় নিয়েছে পুরনো কলকাতার গলি-ঘুঁজিতে, যেখানে ব্যস্ত ট্রাফিকের তাড়াহুড়ো নেই৷ রিকশায় চড়ে দুলকি চালে সফর করাও উত্তর কলকাতার অনেক বাসিন্দারই এখনও পছন্দসই৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
এখনো ব্যবহারের কারণ
আধুনিক কোনো যন্ত্রচালিত যানের সঙ্গে গতি বা স্বাচ্ছন্দ্যে পাল্লা দিতে পারে না আদ্যিকালের রিকশা৷ তা-ও এটি কী করে কলকাতায় থেকে গেল, তার কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে৷ এখনও অনেক বয়স্ক মানুষ রিকশা চড়তে পছন্দ করেন কারণ, এই যানটি তাঁদের জন্য যাকে বলে একেবারে হ্যাসল-ফ্রি৷ ঠিক একই কারণে অনেক বাড়ির বাচ্চারাও স্কুলে যাওয়ার সময় রিকশায় চড়ে যায়৷ তবে কলকাতা শহরে রিকশার সবথেকে বড় উপযোগিতা বোঝা যায় বর্ষায়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
রিকশার ওয়ার্কশপ
যেহেতু শহরের রাস্তায় এখনও রিকশা চলে, মেরামতির জন্য রিকশার নিজস্ব হাসপাতালও নেই নেই করে এখনও দু-একটি টিকে আছে৷ এগুলো বিশেষভাবে হাতে টানা রিকশার মেরামতির জন্যই৷ অন্য কোনও কাজ এখানে হয় না৷ তবে আজকাল অসুবিধে হয়, কারণ রোজগার প্রতিদিনই কমছে৷ কাজ জানা লোকেরও অভাব৷ যদিও বা লোক পাওয়া গেল, তাদের দেওয়ার মতো যথেষ্ট কাজ পাওয়া যায় না৷ দোকানের মালিক শুয়ে বসেই দিন গুজরান করেন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
কাঠ দিয়ে তৈরি চাকা
রিকশা তৈরি বা মেরামতিতে কিন্তু এখনও সেই পুরনো পদ্ধতিই বহাল৷ রিকশার চাকা যেমন এখনও কাঠ দিয়েই তৈরি হয়৷ মাঝখানের অংশটা যথারীতি লোহার, কিন্তু বাকি চাকার জন্য কারিগরদেরই জোগাড় করে আনতে হয় উঁচু মানের কাঠ যা শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা শহরের খানা-খন্দে ভরা এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে রিকশাকে গড়গড়িয়ে নিয়ে যাবে৷ সওয়ারিকে নিয়ে রিকশা যাতে ভেঙে না পড়ে, তার জন্য ভালো কাঠ বা লোহা যেমন দরকার, তেমনই দরকার ওস্তাদ কারিগর৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
খড় দিয়ে তৈরি বসার গদি
সওয়ারিদের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্যও রিকশাওয়ালারা সমান যত্নবান৷ যাত্রীদের বসার গদিটি যাতে ঠিকঠাক থাকে, এর জন্য নিয়মিত তার পরিচর্যা হয়৷ কাপড় আর রঙিন প্লাস্টিকের তৈরি এই গদির খোলে কী থাকে জানেন তো? না, তুলো বা ফোম নয়, নির্ভেজাল খড়৷ প্রকৃতি-বান্ধব উপাদান ব্যবহার করার এমন নমুনা কি আর কোনো শহুরে যানের ক্ষেত্রে দেখেছেন? রিকশা দূষণ ছড়ায় না, এটাও একটা খেয়াল রাখার মতো বিষয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
অমানবিক
তবু হাতে টানা রিকশা উঠে যাচ্ছে কলকাতা থেকে৷ কারণ, একজন মানুষ আর একজন মানুষকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, এটা অনেকের কাছেই খুব অমানবিক মনে হয়৷ সাইকেল রিকশাতে যদিও একই ঘটনা ঘটে, কিন্তু সেক্ষেত্রে চালক প্যাডেলের মাধ্যমে কিছুটা যান্ত্রিক সুবিধা পান৷ যদিও এই রিকশা নিয়ে রোমান্টিকতার কোনো শেষ নেই৷ পরিচালক বিমল রায়ের ‘দো বিঘা জমিন’ ছবির গোটা ক্লাইম্যাক্স সিনটিই গড়ে উঠেছে দুটি হাতে টানা রিকশার রেষারেষির মধ্য দিয়ে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
সময় কি বিদায় নেয়ার?
তাই দিনের শেষে পড়ন্ত সূর্যের আলোয় যখন ছায়া দীর্ঘতর হয়, আর রাস্তার একধারে স্থবির হয়ে অপেক্ষায় থাকে সওয়ারি না পাওয়া একটি রিকশা, ব্যস্ত শহর তার পাশ দিয়ে ছুটে যেতে যেতে তার কর্কশ কলরবে যেন বারবার মনে পড়িয়ে যায়, এবার সময় হয়েছে বিদায় নেওয়ার৷ আধুনিক সময়ের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না রিকশা৷ সে কারণেই রাজপথ থেকে সরে গিয়ে তাকে মুখ লুকোতে হয়েছে গলিতে৷ খুব শিগগিরই বোধহয় সেই আড়ালটুকুও যাবে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhayay
8 ছবি1 | 8
ইদানীং বেসরকারি বাসের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকার দুটো কারণ আছে৷ এক, যেহেতু সরকার বাসভাড়া গত দুবছর ধরে বাড়াতে দিচ্ছে না, অনেক বাসমালিকই রুট থেকে বাস তুলে নিয়ে বসিয়ে রাখছেন৷ আর দ্বিতীয় কারণ হলো, দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিধি মেনে, যেসব বাস ১৫ বছর বা তার বেশি পুরনো, সেগুলো আর চালানো যাচ্ছে না৷ কিন্তু তার জায়গায় নতুন বাস আর রাস্তায় নামাতে আগ্রহী নন মালিকরা৷ ফলে কলকাতা শহরেই গত ছমাসে প্রায় হাজারখানেক বাস কমে গিয়েছে৷
কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে একটা অনীহা রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ এর আগে তিনি যখন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন, বা ওই মন্ত্রকটি তাঁর দলের হাতে ছিল, তখনও যাত্রীভাড়া বাড়াতে নারাজ ছিলেন তিনি৷ যদিও দেখা গিয়েছে যে এর দরুণ বছর বছর রেল দপ্তরের বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তবু ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেননি মমতা৷ রাজ্যে বাসভাড়া বাড়ানোর প্রশ্নেও তিনি একই মানসিকতায় অনড় রয়েছেন৷
তবে এর পিছনে একটি রাজনৈতিক কারণও রয়েছে৷ বাসভাড়া বাড়ানোর জন্য মালিকরা সরকারকে যে চাপ দিচ্ছেন, তার পিছনে সক্রিয় সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু ও এআইটিইউসি-র মতো বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনগুলি৷ চাপের মুখে সরকার বাসভাড়া বাড়াতে রাজি হলে, সেটা কার্যত যে ওই সংগঠনগুলিরই জয় হবে এবং বামপন্থিদের চুপসে যাওয়া পালে নতুন করে হাওয়া জোগাবে, সেটা কিছুতেই হতে দিতে পারেন না তৃণমূলনেত্রী৷ বিশেষ করে আর দু বছর পরেই রাজ্যে যখন বিধানসভা ভোট৷ ফলে টানা ৭২ ঘণ্টার বাস-ধর্মঘটের হুমকির সামনে অনমনীয় মনোভাবই বজায় রেখেছে সরকার৷
কিন্তু এতে পরিস্থিতি ক্রমশ তীব্রতর সংঘাতের দিকেই এগোচ্ছে, যার পরিণতিতে স্রেফ অচল হয়ে পড়তে পারে রাজ্যের বেসরকারি গণ পরিবহণ ব্যবস্থা৷ কিছুদিন আগের আচমকা ট্যাক্সি ধর্মঘটেই সেই আসন্ন দুর্ভোগের একটা আন্দাজ পাওয়া গেল৷ ধর্মঘটের কোনও আগাম ঘোষণা ছাড়াই এক কাজের দিন সকালে কলকাতা শহরের ট্যাক্সিচালকরা আচমকা সিদ্ধান্ত নিলেন রাস্তায় ট্যাক্সি না নামানোর৷ তার বদলে তাঁরা সদলে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখালেন শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায় এবং অচল করলেন পথঘাট৷ তাঁদের প্রধান দাবি ছিল, যাত্রী প্রত্যাখান করার অপরাধে পুলিশ যে তিন হাজার টাকার স্পট ফাইন চালু করেছে, তা বাতিল করতে হবে৷
পশ্চিমবঙ্গের গরুর দৌড়
প্রতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গরুর দৌড় হয়৷ সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গরুর দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু লোকজন যেভাবে গরুর দৌড় নিয়ে উৎসাহিত তাতে কি এটা আদৌ বন্ধ করা যাবে?
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
বর্ষার আগমনি উদযাপন
প্রতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গরুর দৌড় হয়৷ বর্ষার আগমন উদযাপন করতে চালু হয়েছিল এই প্রথা, যেহেতু বর্ষা কৃষিকাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
ইতিহাস
যদিও গ্রামের বয়স্করা বলেন, প্রখর গ্রীষ্মে শুকিয়ে যাওয়া জমির উপরিভাগ একটু ভেঙে নিলে বৃষ্টির জল ভিতরে ঢুকতে পারবে এবং পরে লাঙল দিতে সুবিধে হবে - সেই তাগিদ থেকেই শুরু হয়েছিল গরুর দৌড়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
এখন শুধুই বিনোদন
কিন্তু এখন চাষের কাজে যন্ত্রচালিত লাঙলই ব্যবহার হয়৷ গরুর দৌড় তাই থেকে গিয়েছে একটা ক্রীড়া এবং বিনোদন হিসেবে৷ আর গবাদি পশুর মালিকদের কাছে এটা এখন একটা সম্মানের লড়াই৷ অন্যদিকে দৌড়বাজ গরুর উপর বাজি ধরেন সাধারণ দর্শক৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
মনোযোগি দর্শক
কাজেই কিছু দর্শকের নিবিষ্ট চাহনি দেখেই বোঝা যায়, দৌড়ের কোনও অংশ তাদের নজর এড়িয়ে যায় না৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
সবার প্রিয়
গ্রামের কিশোর, তরুণরাও সকাল থেকে ভিড় জমায় রেসের মাঠে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
নিরাপদ দূরত্ব
গ্রামের কিশোরী, তরুণী এবং মহিলারা আর প্রবীণরা একটু নিরাপদ দূরত্বে থেকেই মজা দেখেন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
মাদকের প্রভাব
এই নিরাপদ দূরত্ব রাখাটা জরুরি, কারণ গরুগুলো দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছোটে৷ সম্ভবত ওরা কোনও মাদকের প্রভাবে উত্তেজিত থাকে৷ মাদকের মধ্যে সবথেকে সহজলভ্য কোল্ড ড্রিঙ্ক আর ব্যথা কমানোর ওষুধের মিশ্রন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
গরুকে ঠান্ডা করা
যে কারণে একেকটা দৌড় যেই শেষ হয়, রাখালেরা গিয়ে একেকজন একেকটা গরুকে সামলাবার দায়িত্ব নিয়ে নেয়৷ জোর করে ওদের নিয়ে যায় সামান্য গভীর জলে, যাতে গরুগুলো একটু ঠান্ডা হয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
নিষিদ্ধের রায়
তবে পশু অধিকার সুরক্ষা সংগঠনগুলোর অভিযোগ পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গরুর দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কারণ গরু দৌড়োবার উপযুক্ত প্রাণি নয় এবং তাদের নিয়ে প্রতিযোগিতার কারণে নানাভাবে তাদের কষ্ট দেওয়া হয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
বন্ধ হবে কি?
কিন্তু লোকে যেভাবে গরুর দৌড় নিয়ে উৎসাহিত, অদূর ভবিষ্যতে এই দৌড় বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, সে আদালত বা পশুপ্রেমীরা যা-ই বলুন না কেন!
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
10 ছবি1 | 10
যদিও কলকাতা শহরে ট্যাক্সিচালকদের বেপরোয়া চাল-চলন, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং সওয়ারিদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে অস্বীকার করাটা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যে তাদের শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করাটা একান্তই জরুরি৷ কিন্তু এক্ষেত্রে ট্যাক্সিচালকদের নালিশ, পুলিশ নাকি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মিথ্যে অভিযোগে জরিমানা করছে, নিজেদের দপ্তরের তহবিল ভরাতে৷ কলকাতা পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করছে এই যুক্তিতে যে যাত্রী প্রত্যাখানের অভিযোগে ট্যাক্সির জরিমানা করাটা আদালতের সিদ্ধান্ত৷ এই অর্থ আদালতে জমা দিতে হয়৷ কাজেই পুলিশ নিজের তহবিল ভরছে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন!
কিন্তু ট্যাক্সিচালকদের সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনে সরকার যে বেকায়দায় পড়েছিল, সেটা ঘটনা৷ যে কারণে প্রথমে কিছুটা নরম মনোভাব নিয়েছিল সরকার এবং গ্রেপ্তার হওয়া ২১জন ট্যাক্সিচালক আদালতে জামিন চাইলে সরকারপক্ষের আইনজীবী বিরোধিতা করেনি৷ কিন্তু তার পর আবার কঠোর মনোভাব নিতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য পরিবহণ মন্ত্রক কারণ ট্যাক্সিচালকদের এই আন্দোলনের পিছনেও রয়েছে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলি৷ অর্থাৎ আবারও সেই রাজনৈতিক বাধ্যতা!
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ট্যাক্সি ইউনিয়নের আন্দোলনের সাফল্যে এখন রীতিমত উৎসাহিত বাসমালিকদের সংগঠনগুলিও৷ ধর্মঘটের ঘোষিত কর্মসূচি না থেকেও কীভাবে নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত করে দেওয়া যায়, তার শিক্ষা তাঁরা ট্যাক্সিচালকদের দেখে পেয়ে গেছেন৷ এবার রাজ্য সরকার যদি এতটাই অনমনীয় মনোভাব নিয়ে বসে থাকে এবং প্রশাসনিক দায়িত্বের বদলে রাজনৈতিক দায় সামলাতেই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তা হলে অচিরেই এক পরিবহণ বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ৷