সরে গেলেন বরিস জনসন। ঋষি সুনাকই এখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে।
বিজ্ঞাপন
আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি দাবি করেছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতি তার থেকে ভালো কেউ সামলাতে পারবেন না। কনসারভেটিভ পার্টি ঠিক করেছে, প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে থাকতে গেলে অন্ততপক্ষে একশজন এমপি-র সমর্থন থাকতে হবে।
জনসনের দাবি, তাকে ১০২জন এমপি সমর্থন করেছেন। যদিও প্রকাশ্যে ৫৭ জন এমপি-ই তাকে সমর্থন জানিয়েছেন। জনসনের বক্তব্য, তিনি উপলব্ধি করেছেন, পার্লামেন্টে যদি সবাইকে পাশে না পান, তাহলে শাসন করাটা অসুবিধাজনক।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে। তাকে ১৪২ জন এমপি সমর্থন জানিয়েছেন।
ঋষি ছাড়াও পেনি মরডান্ট প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। ফলে তিনি এখনো পর্যন্ত লড়াইয়ে আছেন। তবে সোমবারের মধ্যে তাকে একশ জন এমপি-র সমর্থন জোগাড় করতে হবে। সেই সমর্থন তিনি জোগাড় করতে না পারলে ঋষিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীহিসাবে ঘোষণা করা হবে। আর তিনি যদি একশজন এমপি-র সমর্থন জোগাড় করতে পারেন, তাহলে দুইজনের মধ্যে ভোটাভুটি হবে।
লিজ ট্রাস : ছয় বছরে ব্রিটেনের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী
ছয় বছরে মেয়াদ শেষ হবার আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন তিনজন ৷ ব্রিটেনের ৫৬তম প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস কি পারবেন মেয়াদ শেষ করতে? যেভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তাতে এ আশা করা যেতেই পারে৷ ছবিঘরে লিজ ট্রাসের বিস্ময়কর উত্থানের গল্প...
ছবি: Dylan Martinez/REUTERS
প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে যেখানে আলাদা
বেলফাস্টের দেয়ালে ব্রিটেনের ইতিহাসের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাকের ম্যুরাল৷ শিল্পী চিয়ারান গ্যালাঘারের আঁকা ছবিতে দুজনকে দেখা যাচ্ছে বক্সারের রূপে৷ঋষি কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করলেও ট্রাস এক সময় ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলে৷ ২০১০ সালে কনজারভেটিভদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ট্রাস ১২ বছরের মধ্যেই হয়ে গেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী৷
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
মিডিয়ার মুখোমুখি
নির্বাচনি প্রচারের বিভিন্ন পর্যায়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন দুজনই৷ ওপরের ছবিতে বিবিসির মুখোমুখি লিজ ট্রাস৷ ছবিটি গত ৪ সেপ্টেম্বরের৷
ছবি: Jeff Overs/BBC/REUTERS
গাড়ি কারখানায় প্রচার
কনজারভেটিভ দলের প্রায় দুই লাখ সদস্যের কাছে ভোট চাইতে বিভিন্ন অফিস-আদালতেও ঢুঁ মেরেছেন লিজ ট্রাস এবং ঋষি সুনাক৷ ছবিতে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার কারখানায় ভোটের প্রচারে ৪৭ বছর বয়সি ট্রাস৷
ছবি: Jacob King/REUTERS
পুল খেলোয়াড় ট্রাস
গত ৮ আগস্ট ভোটের প্রচারে লন্ডনের অনসাইড ফিউচার ইয়োথ জোনে গিয়েছিলেন ট্রাস৷ পুল টেবিলটা দেখে একটু খেলে নেয়ার লোভ সামলাতে পারেননি৷
ছবি: Dylan Martinez/REUTERS
বিজয়ী ট্রাস
ডেভিড ক্যামেরনকে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়তে হয় ২০১৬ সালে৷ তারপর টেরেসা মে, বরিস জনসনকেও সরতে হয় মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক আগে৷ ৫ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে প্রায় ২০ হাজার ভোটে হারিয়ে মার্গারেট থ্যাচার এবং টেরেসা মে -র পর তৃতীয় নারী হিসেবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস৷ ছবিতে ভোটের ফল ঘোষণার পর মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ট্রাস আর হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ঋষি সুনাক৷
ছবি: Stefan Rousseau/REUTERS
বরিসের বিদায়
নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের জন্য ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়ে যাচ্ছেন বরিস জনসন৷ উপস্থিত সবাই হাসিমুখে, হাত তালি দিয়ে বিদায় জানাচ্ছেন তাকে৷ জনসনের স্ত্রী ক্যারিও আছেন তাদের কাতারে৷
ছবি: Kevin Coombs/REUTERS
রানির অভ্যর্থনা
নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরের দিন, অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর রানি এলিজাবেথের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন বরিস জনসন৷ তারপর রানির কাছে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করার প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সারেন ট্রাস৷
ছবি: Jane Barlow/REUTERS
স্বামীর সঙ্গে...
গত ৫ সেপ্টেম্বরের ছবি৷ কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার মাধ্যমে লিজ ট্রাসকে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে একটু আগে৷ জানা হয়ে গেছে ট্রাসই হচ্ছেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী৷ সেই আনন্দে স্ত্রীর পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন হিউ ও’লেয়ারি৷
ছবি: Stefan Rousseau/REUTERS
8 ছবি1 | 8
সুনাক বলেছেন, ''বরিস জনসন ব্রেক্সিটকে কার্যকর করেছিলেন। তিনি দেশের মানুষকে টিকা দেয়ার কাজও সাফল্যের সঙ্গে করেছিলেন। তিনি সংকটের সময় দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইউক্রেন ও রাশিয়ার লড়াইয়ে তিনি পুটিনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।''
সুনাক বলেছেন, জনসন প্রধানমন্ত্রীর লড়াইয়ে থাকবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। তবে তিনি এখনো জনজীবনে থাকবেন বলে তিনি আশা করেন। কারণ, তার এখনো অনেক কিছু দেয়ার আছে।
একশ এমপি-র সমর্থন
দল এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে থাকার জন্য এই মাণদণ্ড তৈরি করেছে। এর ফলে দলে বিভাজন কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে দুইজন প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছাড়তে হওয়ার পর এই মাণদণ্ড তৈরি করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে মোট ৩৫৭ জন কনসারভেটিভ এমপি আছেন। তাদের মধ্যে ১৪২ জন ইতিমধ্যেই সুনাককে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। রোববার রাত পর্যন্ত ২৪ জন পেনিকে সমর্থন করার কথা বলেছেন। ফলে পেনিকে এখনো ৭৬ জন এমপি-র সমর্থন জোগাড় করতে হবে।
যদি একাধিক প্রার্থী থাকেন, তাহলে অনলাইনে ভোটাভুটি হবে। একজন থাকলে ভোটাভুটিরও আর দরকার পড়বে না।