শান্তিপূর্ণ ও অনিয়মের অভিযোগহীন নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে যা বিপত্তি ছিলো ইভিএম নিয়ে৷ এছাড়া তরুণ ভোটারদের স্মার্ট কার্ড না থাকায় তারাও সমস্যায় পড়েন৷ বাকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্বস্তি দেখা গেছে ভোটারদের মধ্যে৷
ছবি: bdnews24.com
বিজ্ঞাপন
রোববার সকাল ৮ টায় ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পরেই নারায়ণগঞ্জের ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার৷ মেয়র পদে তিনি এবং আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সেলিনা হায়াত আইভীই ছিলেন মূল প্রতিদ্বদ্বী৷ ভোট দেয়ার পর তৈমুর জানান, ‘‘এখন পর্যন্ত যা দেখছি তাতে মোটামুটি সব কিছু ঠিকঠাকই আছে৷'' ওই কেন্দ্রে ভোট শুরু হওয়ার আগে থেকেই ভোটারদের লাইন ছিলো৷ ভোটাররাও নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন৷ জানান, স্বাধীনভাবে তারা ভোট দিতে পারছেন৷ কোনো চাপ বা প্রভাবিত করার কোনো প্রচেষ্টা নেই৷
‘ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না’
This browser does not support the audio element.
সেলিনা হায়াৎ আইভী ভোট দেন সকাল ১১ টার দিকে শিশুবাগ স্কুলে৷ সেখানে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো৷ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্কুল মাঠ ছিলো লোকে লোকারণ্য৷ ভোটারদের লাইন সামলাতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হিমশিম খাচ্ছিলেন৷ এই কেন্দ্রে ৯০ বছর বয়সি জাহেদা বেগম ভোট দিতে এসে সবার দৃষ্টি কাড়েন৷ তাকে নিয়ে এসেছিলেন তার মেয়ে এবং ছেলের বউ৷ ভোট দেয়ার পর জাহেদা বেগম জানান, ‘‘আর বাঁচব কী না জানি না৷ তাই সর্বশেষ ভোট দিতে এসেছি৷ আমি যাকে ভোট দিয়েছি তিনি জয়ী হলে সবার জন্য কাজ করবেন আশা করি৷'' তিনি গত সিটি নির্বাচনেও ভোট দিয়েছেন৷ তার পুত্রবধূ জানান, ইভিএম-এ তার একার পক্ষে ভোট দেয়া সম্ভব না৷ তাই প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে তার পছন্দের প্রতীকে তিনি ভোট দানে সহায়তা করেছেন৷ এই কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে আইভী নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন৷
দুপুরে আদর্শ স্কুলে নারী ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বেশ কয়েকজন বয়স্ক নারী ভোটার ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারছেন না৷ জানা গেল তাদের হাতের ছাপ ইভিএম মেশিন গ্রহণ না করায় তারা ভোট দিতে পারছেন না৷ বারবার চেষ্টার কারণে লাইনে দাঁড়ানো অন্য নারী ভোটাররাও অপেক্ষায় ছিলেন৷ হাতি প্রতীকের এজেন্ট মাহমুদা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘‘অনেক নারী ভোটার বিশেষ করে যারা বয়স্ক তাদের বড় একটি অংশের হাতের ছাপ মিলছে না৷ অনেকে তাই বিরক্ত হয়ে ভোট না দিয়েই চলে গেছেন৷''
কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেন, অনেক চেষ্টা করেও তারা ভোট দিতে পারছেন না৷ হাতের আঙ্গুলে ভ্যাসলিন মাখা হয়েছে, লেবু মাখা হয়েছে তারপরও কাজ হচ্ছে না৷ এই কেন্দ্রের নৌকা প্রতীকের এজেন্ট লাকী আক্তারও একই অভিযোগ করেন৷
কেন্দ্রের পোলিং অফিসার মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘‘তারা চেষ্টা করছেন৷ সব কিছু ঠিক থাকলে তারা ভোট দিতে পারবেন৷ কারণ মোট ভোটের শতকরা ১০ ভাগ ভোট এই ধরনের জটিলতার জন্য প্রিজাইডিং অফিসার ভোটারদের চাহিদামত জায়গায় দিতে পারেন৷'' তবে আরেকটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জানান তার শতকরা ১০ ভাগের ক্ষমতা প্রায় শেষ৷ এখন কিছু করার নেই৷
এই কেন্দ্রের ভোটাররা ভবিষ্যত মেয়রের কাছে গ্যাস, পানি, চিকিৎসা এবং শিক্ষা সমস্যার সমাধান চেয়েছেন৷
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মোট ২৭টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র ১৯২টি৷ ভোট বুথ এক হাজার ৩৩৩টি৷ যদি কোনো সংকট হয় তা বিবেচনায় নিয়ে প্রায় দেড়গুণ বেশি ইভিএম মেশিন নেয়া হয়৷
সাত জন মেয়র প্রার্থী, ২৭টি ওয়ার্ড এবং ৯টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ছিলেন ১৪৫ জন৷ বিকেলের দিকে ভোট শেষ হওয়ার ৪৫ মিনিট আগে সবচেয়ে বড় ভোট কেন্দ্র নারায়ণগগঞ্জ ক্লাবের পাশে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বেজায় ভীড়৷ এখানে নয় হাজার ভোটার৷ এখানেও ইভিএম জটিলতা৷ একজনকে পাওয়া যায় তিনি দুপুর ১২টার সময় গিয়ে তখনো ভোট দিতে পারেননি৷ অনেক ভোটার তখন ভোট দেয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছেন৷ তবে পোলিং অফিসার নিয়ামুল হোসাইন দাবী করেন, ‘‘তারা ভুল তথ্য নিয়ে ভোট দিতে আসায় এই জটিলতা৷ অনেকের ভোটার নাম্বার ঠিক নাই৷ ভোটার আইডি কার্ড আনেননি৷’’
‘ভোট দিতে পারব বলে মনে হয় না’
This browser does not support the audio element.
নারায়ণগঞ্জে এবার ৪০ হাজারের মতো নতুন তরুণ ভোটার ছিলেন৷ তোলারাম কলেজ কেন্দ্রে এরকম কয়েকজন তরুণ ভোটার জানান, এখনো স্মার্ট কার্ড না হওয়ায় তারা ভোট দিতে পারেননি৷
বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান বিকেলের দিকে আদর্শ কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন৷ তিনি ভোট দেবেন কী না তা নিয়ে সারা দিনই নানা জল্পনা চলছিলো৷
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরে বিকেলে ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছেন , ‘‘কুমিল্লা এবং নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সর্বোত্তম নির্বাচন৷” তবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরও একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন৷
এদিকে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে সেলিনা হায়াৎ আইভী এগিয়ে আছেন৷
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ বর্তমানে কাজী হাবিবুল আউয়াল৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের নির্বাচন কমিশনগুলো সম্পর্কে জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Asif Mahmud Ove
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি ৷ ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে এই কমিশন৷ সে সময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। নির্বাচনে ২৯৩ আসন জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। জাসদ ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাঁচটি আসন পায়।
ছবি: AP
নুরুল ইসলাম কমিশন
বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পালন করা সিইসি৷ ১৯৭৭ সালের ৮ জুলাই যখন দায়িত্ব নেন, তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান৷ প্রায় আট বছর দায়িত্ব পালনের পর অব্যাহতি নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি৷ ৷ ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন হয় তার তত্ত্বাবধানে। বিএনপি পায় ২০৭ আসন, আবদুল মালেক উকিলের আওয়ামী লীগ ৩৯ আসন৷
ছবি: imago stock&people
তিন রাষ্ট্রপতির কমিশন
পরপর দুই সামরিক শাসকের অধীনে সিইসির দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল ইসলাম৷ ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জিয়াউর রহমান নিহত হলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ‘সামরিক অভ্যুত্থানে’ ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরবর্তীতে এরশাদের সরকারে আইনমন্ত্রী ও পরে উপ রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন নুরুল ইসলাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Rahman
মসউদ কমিশন
বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মসউদ দায়িত্ব নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি৷ তিনি পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করেন ১৯৯০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি৷ এরশাদের আমলে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুটো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই কমিশনের অধীনে৷ তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোট গেলেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সাত দলীয় জোট তা বর্জন করে। চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন দুই জোটই বর্জন করে৷
ছবি: DW
সুলতান কমিশন
বিচারপতি সুলতান হোসেন খান ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ তবে মাত্র ১০ মাস দায়িত্বে থেকে কোনো জাতীয় নির্বাচন না করেই ২৪ ডিসেম্বর সরে যেতে বাধ্য হন এরশাদের নিয়োগ পাওয়া এই সিইসি৷ গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হলে প্রধান দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক মতৈক্যে অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ৷ এরপর তিনি ইসি পুনর্গঠন করেন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
রউফ কমিশন
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথম তিন সদস্যের ইসি পায় বাংলাদেশ। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ সিইসি হিসেবে নিযু্ক্ত হন৷ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে তার কমিশন৷ তিনি ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন৷ রউফ কমিশন নির্বাচনি আইনে ব্যাপক সংস্কার আনে, জারি করা হয় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ। ১৯৯৪ সালে মাগুরা উপ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত হন সিইসি রউফ।
ছবি: AP
সাদেক কমিশন
বিচারপতি একেএম সাদেক সিইসি পদে নিযুক্ত হন ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল৷ ১৯৯৬ সালে এই কমিশনের অধীনেই হয় বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করে। বিএনপি পায় ২৭৮ আসন৷ দেড় মাস মেয়াদী সংসদের একমাত্র অধিবেশনে ত্রয়োদশ সংশোধনে সংবিধানে যুক্ত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ এই ইসিই নির্বাচনি আচরণবিধি চালু করে৷
ছবি: AP
হেনা কমিশন
১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে অস্থিরতার মধ্যে সাবেক আমলা মোহাম্মদ আবু হেনা ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ এই প্রথম কোনো আমলা এই পদে নিয়োগ পান৷ তার অধীনে ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইল (সখিপুর-বাসাইল) উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির জন্য সমালোচিত হয় তার কমিশন৷ নির্বাচনের গেজেট না করেই ২০০০ সালের ৮ মে দায়িত্ব ছাড়েন আবু হেনা৷
ছবি: Mustafiz Mamun
সাঈদ কমিশন
রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়াদপূর্তির পর আওয়ামী লীগ সরকার ওই দায়িত্বে আনে একানব্বইয়ের নির্বচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে থাকা শাহাবুদ্দিন আহমেদকে। আবু হেনা সরে যাওয়ার পর সিইসি হন সাবেক আমলা এম এ সাঈদ৷ বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সাঈদ কমিশনের অধীনেই ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন হয়।
ছবি: Mustafiz Mamun
আজিজ কমিশন
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত কমিশনগুলোর একটি আজিজ কমিশন৷ বিচারপতি এমএ আজিজ ২০০৫ সালের ২২ মে সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ ব্যাপক রাজনৈতিক টানাপড়েনের সময় ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন৷ পরে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ তফসিল বাতিল করেন৷ ২১ জানুয়ারি কোনো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন না করেই পদত্যাগ করেন এম এ আজিজ৷
ছবি: DW
শামসুল হুদা কমিশন
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমএ আজিজের উত্তরসূরী হন এটিএম শামসুল হুদা৷ তার কমিশন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে৷ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন হয় ওই কমিশনের সময়েই। সংলাপ করে নির্বাচনি আইন সংস্কার করা হয়। চালু হয় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম ও ইভিএম। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ৩০ ও জাতীয় পার্টি ২৭ আসন পায়।
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
রকিবুদ্দিন কমিশন
ইসি পুনর্গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পর সার্চ কমিটি গঠন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ২০১২ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন সাবেক আমলা কাজী রকিবুদ্দিন আহমদ৷ সংসদে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ ক্ষমতাসীন দলের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়৷ বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের বর্জন করা নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন৷
ছবি: DW
নুরুল হুদা কমিশন
এবারও সংলাপ আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবুল হামিদ৷ সিইসি করা হয় সাবেক আমলা কে এম নুরুল হুদাকে৷ দ্বাদশ ইসির যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের নতুন কার্যালয় নির্বাচন ভবনে। তার অধীনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ পাওয়ায় যায়৷ বর্তমান কমিশনের মেয়াদ রয়েছে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।