কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছতে ট্রেনের যা খরচ, সময়ে সময়ে বিমানের খরচ তার চেয়ে কম৷ সস্তার বিমান ভারতে যাতায়াত ব্যবস্থাই বদলে দিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
‘উড়ে দেশ কা আম নাগরিক' সংক্ষেপে উড়ান৷ ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল এমনই এক নতুন প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সেখানে বলা হয়েছিল, সাধারণ মানুষ হাওয়াই চটি পরেও যাতে বিমানে চড়তে পারেন, তার জন্য ব্যবস্থা নেবে সরকার৷ ইতিমধ্যেই প্রকল্পটি চালু হয়েছে৷ সেখানে এক ঘণ্টার কম দূরত্বের পথে বেশ কিছু টিকিট ২৫০০ টাকার নীচে রাখতে হবে, সাধারণ মানুষ যাতে সে টিকিট কাটতে পারেন এবং বিমানে চড়তে পারেন৷
প্রকল্পটি ঘোষণা হওয়ার পর অনেকেই রসিকতা করেছিলেন৷ ভারত সরকার জানেই না, সে দেশের গরিব মানুষের অবস্থা ঠিক কিরকম? এ কথা সত্য যে, গত দু'দশকে দেশে দরিদ্রের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো কমেছে৷ তা সত্ত্বেও এখনো দেশের ২১ শতাংশ মানুষ মাসে ১০০০ টাকারও কম রোজগার করেন৷ ফলে তাঁদের জন্য ২৫০০ টাকার টিকিট চাঁদ ধরার মতোই৷
কম খরচের সবচেয়ে নিরাপদ ৯ এয়ারলাইন্স
বিমানের নিরাপত্তা ও পণ্যসেবা নিয়ে রেটিং তৈরি করা সংস্থা এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম সম্প্রতি সবচেয়ে নিরাপদ দশটি কম খরচের বিমান সংস্থার নাম প্রকাশ করেছে৷
ছবি: Karen Bleier/AFP/Getty Images
এয়ার লিঙ্গুস
আয়ারল্যান্ডের পতাকাবাহী এই বিমানটি আইরিশ সরকার প্রতিষ্ঠা করলেও এটি এখন বেসরকারি খাতে পরিচালিত হচ্ছে৷ আলোচ্য তালিকায় থাকা বিমান সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন অপারেশনাল সেফটি অডিট’ বা আইওএসএ-র পরীক্ষা পাস করেছে৷
ছবি: Karen Bleier/AFP/Getty Images
ফ্লাইবি
ব্রিটিশ এই বিমানসংস্থা ব্রিটেন ও ইউরোপের বিভিন্ন শহরের মধ্যে যাত্রী পরিবহণ করে৷ আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সংস্থা ‘আয়াটা’র সদস্য হতে হলে কোনো বিমান সংস্থাকে আইওএসএ পরীক্ষায় পাস করতে হয়৷ দুই বছর পরপর নিরাপত্তা পুনর্মূল্যায়ন করা হয়৷
ছবি: picture alliance/Wolfgang Mendorf
ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্স
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে এটি৷ খুবই কমখরচের এয়ারলাইন্স বলে পরিচিত এটি৷ তবে এখনও পর্যন্ত নিরাপত্তা রেকর্ড বেশ ভালো বলে জানাচ্ছে এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম৷
ছবি: picture-alliance/AP/David Zalubowski
জেটব্লু
এটিও যুক্তরাষ্ট্রের একটি এয়ারলাইন৷ অভ্যন্তরীণ রুট ছাড়াও মেক্সিকো, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, মধ্য ও দক্ষিণ অ্যামেরিকায় ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে তারা৷
ছবি: Reuters/J. Skipper
জেটস্টার অস্ট্রেলিয়া/জেটস্টার এশিয়া
অস্ট্রেলিয়ার পতাকাবাহী কোয়ান্টাস এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন জেটস্টার অস্ট্রেলিয়া কম খরচের ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে৷ জেটস্টার এশিয়াও জেটস্টার অস্ট্রেলিয়ার মতো কোয়ান্টাসের মালিকানাধীন জেটস্টার গ্রুপের একটি অংশ৷ এশিয়ায় তারা ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে৷
ছবি: AFP/Getty Images/R. Rahman
থমাস কুক এয়ারলাইন্স
ব্রিটেনভিত্তিক এই বিমানসংস্থা দুনিয়াব্যাপী পর্যটকদের প্রিয় স্থানগুলোতে যাতায়াত করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Huguen
ভার্জিন অ্যামেরিকা
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা এয়ারলাইন্স ভার্জিন অ্যামেরিকাকে কিনে নিয়েছে৷ ফলে কিছুদিনের মধ্যে এই ব্র্যান্ডটি হারিয়ে যাবে৷ যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করে এই বিমান৷
ছবি: picture alliance/AP Images/M. Faulkner
ভুয়েলিং
স্পেনের এই লো-কস্ট এয়ারলাইন ইউরোপ ছাড়াও আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে৷
ছবি: Picture-alliance/dpa
ওয়েস্টজেট
এটি ক্যানাডার কম খরচের বিমান সংস্থা৷ ক্যানাডার অভ্যন্তরীণ রুটসহ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান ও মধ্য অ্যামেরিকায় চলাচল করে এটি৷
ছবি: Imago/ZUMA Press
9 ছবি1 | 9
‘উড়ান' প্রকল্প চালু হোক বা না হোক, ভারতীয় বিমানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে৷ একসময় কেবলমাত্র ধনী ব্যক্তিরাই বিমানে যাতায়াত করতে পারতেন৷ বিমানে চড়া তখন একটা স্টেটাস সিম্বল ছিল৷ গত দু' দশকে সেই ধারণাটাই বদলে গিয়েছে৷ সাধারণ মানুষও এখন বিমানে যাতায়াত করার কথা ভাবতে পারেন৷ এবং তার এক এবং একমাত্র কারণ হলো বিমান পরিষেবার বেসরকারিকরণ৷ গত দু' দশকে বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা বাজারে এসেছে৷ ইন্ডিগো, স্পাইস জেট, গো এয়ার, জেট কানেক্টের মতো সংস্থাগুলি কম পয়সার বিমান বা চিপ এয়ার বলে পরিচিত হয়েছে৷ এদের ব্যবসার মূল স্লোগানই হলো ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল'৷ এই সমস্ত সংস্থার বিমানে উঠলে বিনামূল্যের খাবার পাওয়া যায় না৷ সামনের আসন পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়৷ জানলার ধারে বসার জন্যও অতিরিক্ত খরচ করতে হয়৷ কিন্তু অত্যন্ত কম খরচেও টিকিট পাওয়া যায়৷ নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের সাধ্যের মধ্যে৷ একটা উদাহরণ দেওয়া যাক৷ কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার জন্য রাজধানী এক্সপ্রেসের সবচেয়ে কম ভাড়া হলো ২৮০৭ টাকা৷অথচ মাস দুয়েক আগে টিকিট কাটলে সস্তার বিমানের টিকিট পাওয়া যায় ২৫০০ টাকার মধ্যে৷ তবে বিমানের ভাড়া নির্দিষ্ট নয়৷ চাহিদা অনুযায়ী তা বাড়ে এবং কমে৷ খোলা বাজারের নিয়মে ওঠা-নামা করে টিকিটের মূল্য৷ বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলি একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে৷ ফলে সকলেরই লক্ষ্য থাকে সবচেয়ে কম টাকায় টিকিট দেওয়ার৷ ফলে অধিকাংশ সময়েই আজকাল দেখা যায়, ট্রেনের এসি থ্রি টিয়ারে রিজার্ভেশনের চেয়ে কম অর্থে বিমানের টিকিট পাওয়া যায়৷
বেসরকারি কমমূল্যের সংস্থাগুলির এই তীব্র প্রতিযোগিতায় খানিকটা বেগ পেতে হয়েছে পুরনো সংস্থাগুলি এবং সরকারি বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকেও৷ জেট এয়ারলাইন্সের মতো পুরনো বিমান সংস্থাটি বাজার ধরার জন্য জেট কানেক্ট তৈরি করেছিল৷ এখন জেট এয়ারলাইন্সেও কখনো কখনো সস্তা টিকিট পাওয়া যায়৷ এয়ার ইন্ডিয়াও প্রতিযোগিতায় নেমেছে এবং বিপুল সস্তায় তাদের টিকিট পাওয়া যায় সময় সময়৷ বস্তুত, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে যাওয়ার জন্য সময় সময় ১২০০ টাকাতেও টিকিট পাওয়া যায়৷ এবং কখনোই টিকিটের দাম ২৫০০ টাকার বেশি ওঠে না৷ বস্তুত, উত্তর-পূর্বে যাতায়াত করা বরাবরই একটা বড় সমস্যা৷ সর্বত্র রেল যোগাযোগ নেই৷ যেখানে আছে, সেখানে পৌঁছতেও বহু সময় লেগে যায়৷ সর্বত্র রাস্তাঘাট খুব উন্নত নয়৷ ফলে উত্তর পূর্বের মানুষ বিমান পথকেই বেছে নিয়েছেন যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে৷ এ কারণে সরকারি বিমান সংস্থাও খুব কম টাকায় সেখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে৷
২০১৮ সালে বিশ্বের সেরা ১০ এয়ারলাইন্স
কয়েকটি সংস্থা তাদের নিজস্ব বিচার অনুযায়ী সেরা এয়ারলাইন্স নির্বাচন করে থাকে৷ ছবিঘরে থাকছে রেটিং সংস্থা ‘এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম’এর তালিকা৷
ছবি: M. Melville/AFP/Getty Images
১. এয়ার নিউজিল্যান্ড
পরপর পাঁচবার সেরা হয়েছে নিউজিল্যান্ডের পতাকাবাহী এই এয়ারলাইন্স৷ এ প্রসঙ্গে এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম বলছে, ‘‘পরপর পাঁচবার সেরা হওয়ার কারণ তাদের দারুণ আর্থিক পারফরমেন্স, ইন-ফ্লাইট ইনোভেশনস, পরিবেশ রক্ষায় তাদের নেতৃত্ব, কমবয়সি বিমান আর তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের প্রতি সন্তুষ্টি৷’’
ছবি: M. Melville/AFP/Getty Images
২. কোয়ান্টাস
অস্ট্রেলিয়ার পতাকাবাহী এই বিমানসংস্থা আছে দ্বিতীয় স্থানে৷ তবে ফ্লাইটে সরবরাহ করা খাবারের স্বাদ আর মানে কোয়ান্টাসই সেরা৷ এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটে কোয়ান্টাস যেসব ফ্লাইট পরিচালনা করে সেগুলোর আসনব্যবস্থা আর সেবার মান আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ‘সমতুল্য বা তার চেয়ে বেশি’ বলে জানিয়েছে এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম৷
ছবি: dapd
৩. সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স
মূল তালিকায় তিন নম্বরে থাকলেও ফ্লাইটে প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার দিক দিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স আছে এক নম্বরে৷ এছাড়া তাদের কেবিন ক্রুদের সেবাও সবার চেয়ে সেরা ছিল বলে জানা গেছে৷ আলোচ্য তালিকাটি ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে৷
ছবি: AP
৪. ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন্স এটি৷ ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্র্যানসন এই বিমানসংস্থার অন্যতম উদ্যোক্তা৷ সেরা বিজনেস ক্লাসের তালিকায় এই এয়ারলাইন্সের নাম আছে সবার ওপরে৷
ছবি: picture alliance/P. Mayall
৫. ভার্জিন আটলান্টিক
ভার্জিন ব্র্যান্ডের এই বিমান সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ব্রিটেনে৷ রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্রুপ বর্তমানে এই বিমান সংস্থার ৫১ শতাংশের মালিক৷ অবশ্য কিছুদিনের মধ্যে এয়ার ফ্রান্স-কেএলএম এর কাছে ভার্জিন গ্রুপের কিছু শেয়ার বিক্রির কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে৷ ইউরোপ ও অ্যামেরিকার মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে ভার্জিন আটলান্টিক৷
ছবি: picture alliance/Wolfgang Mendorf
৬. ইতিহাদ এয়ারওয়েজ
এয়ারলাইনরেটিংস ডটকমের তালিকায় আবুধাবিভিত্তিক এই এয়ারলাইন্সটি আছে ছয় নম্বরে৷ আর দুবাইভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইন্স আলোচ্য তালিকার শীর্ষ দশে না থাকলেও ফ্লাইটের মধ্যে তাদের বিনোদনের ব্যবস্থা সবার চেয়ে সেরা বলে বিবেচিত হয়েছে৷
ছবি: Reuters/J. Naegelen
৭. অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ
জাপানের সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন এটি৷ এক ডজন বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রেটিং তৈরি করেছে এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম৷ এর মধ্যে আছে বিমানের বয়স, নিরাপত্তাব্যবস্থা, যাত্রীদের দেয়া রেটিং, দূরপাল্লার যাত্রায় ইকোনমি ক্লাসের সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি৷
ছবি: Airbus
৮. কোরিয়ান এয়ার
দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকাবাহী এই এয়ারলাইনের ইকোনমি ক্লাস সবার চেয়ে সেরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Nogi
৯. ক্যাথে প্যাসিফিক
এটি হংকংয়ের পতাকাবাহী এয়ারলাইন৷ এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম বিভিন্ন অঞ্চলের সেরা কম খরচের (লো-কস্ট এয়ারলাইন) বিমান সংস্থারও তালিকা প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা কম বাজেটের এয়ারলাইন হচ্ছে ‘স্কুট’৷ সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন এই বিমান প্রধানত ভারত ও চীনে চলাচল করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Favre
১০. জাপান এয়ারলাইন্স
জাপানের পতাকাবাহী বিমান এটি৷ এয়ারলাইনরেটিংস ডটকম ছাড়াও যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘স্কাইট্র্যাক্স’ প্রতিবছর সেরা এয়ারলাইন্সের তালিকা প্রকাশ করে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
প্রশ্ন হলো, সস্তায় বিমানের টিকিট বেচতে গিয়ে সংস্থাগুলি মানের সঙ্গে আপোস করছে না তো! জরুরি প্রশ্ন৷ প্রশ্নটি আবার উঠেছে সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংস্থার বিমান নেপালে দুর্ঘটনার কবলে পড়ায়৷ এ ক্ষেত্রে একটি জরুরি কথা বলা দরকার৷ ভারতের এভিয়েশন বিভাগ নির্দিষ্ট নিয়মাবলি তৈরি করেছে বিমান সংস্থাগুলির জন্য৷ কোন কোন বিমান ব্যবহার করা যাবে, উড়ানের মানদণ্ড ইত্যাদি সবই সেখানে নির্দিষ্ট করা আছে৷ সেই নিয়মের সামান্য গাফিলতি হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় বিমান সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে৷ অন্যদিকে অনেকগুলি বেসরকারি বিমান প্রতিযোগিতায় থাকার কারণে কেউই মানের সঙ্গে বিশেষ আপোস করে না৷ করলে দ্রুত বাজার হারানোর ভয় থাকে৷ দ্রুত মুনাফা নয়, বিমান সংস্থাগুলির লক্ষ্য থাকে লম্বা ব্যবসার৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেবল ইন্ডিগোই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে দিনে ১৬০টি বিমান চালায়৷ এ ছাড়াও তাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আছে৷ সংস্থাগুলির লক্ষ্য হলো কম মুনাফায় বেশি সংখ্যক বিমান চালিয়ে রোজগার৷ এবং গত দু'দশকে এই ব্যবসার মডেল অনুসরণ করে প্রচুর উপার্জনও করেছে সংস্থাগুলি৷ এখনো করছে৷ বস্তুত দিল্লিতে একটি আস্ত টার্মিনালই কেবল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ইন্ডিগো এবং স্পাইস জেটকে৷ দিল্লির তিনটি টার্মিনালের ওই টার্মিনালটিতেই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় প্রতিদিন৷ বহু নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন ওই ধরনের বিমানে৷
সমস্যাও আছে৷ কিছুদিন আগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ দেখা গিয়েছিল এক প্রবীণ ভদ্রলোকের সঙ্গে অন্যায়ভাবে কথা বলছেন দু'জন গ্রাউন্ড ক্রু৷ এরপর তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়৷ মুহূর্তের মধ্যে ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে সরব হন সাধারণ মানুষ এবং সংবাদসংস্থাগুলি৷ ইন্ডিগোও দ্রুত ক্ষমা চেয়ে নিয়ে এবং ওই কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যার সমাধান করে৷ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য পরিষেবার উন্নয়ন খুবই জরুরি৷ প্রতিটি সংস্থাই তা বোঝে৷ তবে ভারতীয় নাগরিক বুঝে নিয়েছেন, কম টাকায় দ্রুত যাতায়াত করতে হলে বিনামূল্যের খাবারের মোহ ছাড়তে হবে৷ খিদে পেলে বিমানেও খাবার কিনে খেতে হবে৷ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই সস্তার বিমানের এটাই ধরন৷ দু'দশকে ভারত সেই মনোভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে৷
ভারতে বিমান যাতায়াতে সুবিধা অসুবিধাগুলো কী কী? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷